৫৭/১. অধ্যায়ঃ
খুমুস নির্ধারণ প্রসঙ্গে।
সহিহ বুখারী : ৩০৯১
সহিহ বুখারীহাদিস নম্বর ৩০৯১
حَدَّثَنَا عَبْدَانُ، أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللَّهِ، أَخْبَرَنَا يُونُسُ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، قَالَ أَخْبَرَنِي عَلِيُّ بْنُ الْحُسَيْنِ، أَنَّ حُسَيْنَ بْنَ عَلِيٍّ، عَلَيْهِمَا السَّلاَمُ أَخْبَرَهُ أَنَّ عَلِيًّا قَالَ كَانَتْ لِي شَارِفٌ مِنْ نَصِيبِي مِنَ الْمَغْنَمِ يَوْمَ بَدْرٍ، وَكَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم أَعْطَانِي شَارِفًا مِنَ الْخُمُسِ، فَلَمَّا أَرَدْتُ أَنْ أَبْتَنِيَ بِفَاطِمَةَ بِنْتِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَاعَدْتُ رَجُلاً صَوَّاغًا مِنْ بَنِي قَيْنُقَاعَ، أَنْ يَرْتَحِلَ مَعِيَ فَنَأْتِيَ بِإِذْخِرٍ أَرَدْتُ أَنْ أَبِيعَهُ الصَّوَّاغِينَ، وَأَسْتَعِينَ بِهِ فِي وَلِيمَةِ عُرْسِي، فَبَيْنَا أَنَا أَجْمَعُ لِشَارِفَىَّ مَتَاعًا مِنَ الأَقْتَابِ وَالْغَرَائِرِ وَالْحِبَالِ، وَشَارِفَاىَ مُنَاخَانِ إِلَى جَنْبِ حُجْرَةِ رَجُلٍ مِنَ الأَنْصَارِ، رَجَعْتُ حِينَ جَمَعْتُ مَا جَمَعْتُ، فَإِذَا شَارِفَاىَ قَدِ اجْتُبَّ أَسْنِمَتُهُمَا وَبُقِرَتْ خَوَاصِرُهُمَا، وَأُخِذَ مِنْ أَكْبَادِهِمَا، فَلَمْ أَمْلِكْ عَيْنَىَّ حِينَ رَأَيْتُ ذَلِكَ الْمَنْظَرَ مِنْهُمَا، فَقُلْتُ مَنْ فَعَلَ هَذَا فَقَالُوا فَعَلَ حَمْزَةُ بْنُ عَبْدِ الْمُطَّلِبِ، وَهْوَ فِي هَذَا الْبَيْتِ فِي شَرْبٍ مِنَ الأَنْصَارِ. فَانْطَلَقْتُ حَتَّى أَدْخُلَ عَلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَعِنْدَهُ زَيْدُ بْنُ حَارِثَةَ، فَعَرَفَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم فِي وَجْهِي الَّذِي لَقِيتُ، فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم " مَا لَكَ " فَقُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهَ، مَا رَأَيْتُ كَالْيَوْمِ قَطُّ، عَدَا حَمْزَةُ عَلَى نَاقَتَىَّ، فَأَجَبَّ أَسْنِمَتَهُمَا وَبَقَرَ خَوَاصِرَهُمَا، وَهَا هُوَ ذَا فِي بَيْتٍ مَعَهُ شَرْبٌ. فَدَعَا النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم بِرِدَائِهِ فَارْتَدَى ثُمَّ انْطَلَقَ يَمْشِي، وَاتَّبَعْتُهُ أَنَا وَزَيْدُ بْنُ حَارِثَةَ حَتَّى جَاءَ الْبَيْتَ الَّذِي فِيهِ حَمْزَةُ، فَاسْتَأْذَنَ فَأَذِنُوا لَهُمْ فَإِذَا هُمْ شَرْبٌ، فَطَفِقَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَلُومُ حَمْزَةَ فِيمَا فَعَلَ، فَإِذَا حَمْزَةُ قَدْ ثَمِلَ مُحْمَرَّةً عَيْنَاهُ، فَنَظَرَ حَمْزَةُ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم، ثُمَّ صَعَّدَ النَّظَرَ فَنَظَرَ إِلَى رُكْبَتِهِ، ثُمَّ صَعَّدَ النَّظَرَ فَنَظَرَ إِلَى سُرَّتِهِ، ثُمَّ صَعَّدَ النَّظَرَ فَنَظَرَ إِلَى وَجْهِهِ ثُمَّ قَالَ حَمْزَةُ هَلْ أَنْتُمْ إِلاَّ عَبِيدٌ لأَبِي فَعَرَفَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أَنَّهُ قَدْ ثَمِلَ، فَنَكَصَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم عَلَى عَقِبَيْهِ الْقَهْقَرَى وَخَرَجْنَا مَعَهُ.
‘আলী (রাঃ) হতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, বদর যুদ্ধের গনীমতের মালের মধ্য হতে যে অংশ আমি পেয়েছিলাম, তাতে একটি জওয়ান উটনীও ছিল। আর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) খুমুসের মধ্য হতে আমাকে একটি জওয়ান উটনী দান করেন। আর আমি যখন আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর কন্যা ফাতিমা (রাঃ) -এর সঙ্গে বাসর যাপন করব, তখন আমি বানূ কায়নুকা গোত্রের এক স্বর্ণকারের সঙ্গে এ মর্মে চুক্তিবদ্ধ হলাম যে, সে আমার সঙ্গে যাবে এবং আমরা উভয়ে মিলে ইযখির ঘাস সংগ্রহ করে আনব। আমার ইচ্ছা ছিল তা স্বর্ণকারদের নিকট বিক্রয় করে তা দিয়ে আমার বিবাহের ওয়ালীমা সম্পন্ন করব। ইতোমধ্যে আমি যখন আমার জওয়ান উটনী দু’টির জন্য আসবাবপত্র যেমন পালান, থলে ও রশি ইত্যাদি একত্রিত করছিলাম, আর আমার উটনী দু’টি এক আনসারীর ঘরের পার্শ্বে বসা ছিল। আমি আসবাবপত্র যোগাড় করে এসে দেখি উট দু’টির কুঁজ কেটে ফেলা হয়েছে এবং কোমরের দিকে পেট কেটে কলিজা বের করে নেয়া হয়েছে। উটনী দু’টির এ হাল দেখে আমি অশ্রু চেপে রাখতে পারলাম না। আমি বললাম, কে এমনটি করেছে? লোকেরা বলল, ‘হামযা ইব্নু ‘আবদুল মুত্তালিব এমনটি করেছে। সে এ ঘরে আছে এবং শরাব পানকারী কতিপয় আনসারীর সঙ্গে আছে।’ আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর নিকট চলে গেলাম। তখন তাঁর নিকট যায়দ ইব্নু হারিসা (রাঃ) উপস্থিত ছিলেন। রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমার চেহারা দেখে আমার মানসিক অবস্থা উপলব্ধি করতে পারলেন। তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, তোমার কী হয়েছে? আমি বললাম, হে আল্লাহর রসূল! আমি আজকের মত দুঃখজনক অবস্থা দেখিনি। হামযা আমার উট দু’টির উপর অত্যাচার করেছে। সে দু’টির কুঁজ কেটে ফেলেছে এবং পাঁজর ফেড়ে ফেলেছে। আর সে এখন অমুক ঘরে শরাব পানকারী দলের সঙ্গে আছে।’ তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর চাদরখানি আনতে আদেশ করলেন এবং চাদরখানি জড়িয়ে পায়ে হেঁটে চললেন। আমি এবং যায়দ ইব্নু হারিসা (রাঃ) তাঁর অনুসরণ করলাম। হামযা যে ঘরে ছিল সেখানে পৌঁছে আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ঘরে প্রবেশের অনুমতি চাইলেন। তারা অনুমতি দিল। তখন তারা শরাব পানে বিভোর ছিল। আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হামযাকে তার কাজের জন্য তিরস্কার করতে লাগলেন। হামযা তখন পূর্ণ নেশাগ্রস্থ। তার চক্ষু দু’টি ছিল রক্তলাল। হামযা তখন আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর প্রতি তাকাল। অতঃপর সে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকাল এবং তাঁর হাঁটু পানে তাকাল। আবার তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাঁর নাভির দিকে তাকাল। আবার সে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাঁর মুখমণ্ডলের দিকে তাকাল। অতঃপর হামযা বলল, তোমরাই তো আমার পিতার গোলাম। এ অবস্থা দেখে আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বুঝতে পারলেন, সে এখন পূর্ণ নেশাগ্রস্থ আছে। তখন আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) পেছনে হেঁটে সরে আসলেন। আর আমরাও তাঁর সঙ্গে বেরিয়ে আসলাম।