পরিচ্ছেদঃ ১
মুকাতাব [১]-এর ব্যাপারে ফয়সালা
[১] মুকাতাব [নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে নির্দিষ্ট অর্থের বিনিময়ে কর্তার সাথে আযাদী লাভের চুক্তি করাকে কিতাবাত বলা হয়। যে ক্রীতদাস আযাদীর জন্য অর্থ প্রদান করার চুক্তি করল তাকে মুকাতাব এবং যে কর্তা আযাদী প্রদানের চুক্তি করল তাকে মুকাতিব বলা হয়। আর যে অর্থের বিনিময়ে আযাদীর চুক্তি হয়েছে উহাকে “বদল-এ কিতাবাত” বলা হয়। সালমান ফারসী (রা) ও বরীরা (রা) এইরূপে আযাদী লাভ করে ছিলেন।
মুয়াত্তা ইমাম মালিক : ১৪৮৭
মুয়াত্তা ইমাম মালিকহাদিস নম্বর ১৪৮৭
و حَدَّثَنِي مَالِك عَنْ حُمَيْدِ بْنِ قَيْسٍ الْمَكِّيِّ أَنَّ مُكَاتَبًا كَانَ لِابْنِ الْمُتَوَكِّلِ هَلَكَ بِمَكَّةَ وَتَرَكَ عَلَيْهِ بَقِيَّةً مِنْ كِتَابَتِهِ وَدُيُونًا لِلنَّاسِ وَتَرَكَ ابْنَتَهُ فَأَشْكَلَ عَلَى عَامِلِ مَكَّةَ الْقَضَاءُ فِيهِ فَكَتَبَ إِلَى عَبْدِ الْمَلِكِ بْنِ مَرْوَانَ يَسْأَلُهُ عَنْ ذَلِكَ فَكَتَبَ إِلَيْهِ عَبْدُ الْمَلِكِ أَنْ ابْدَأْ بِدُيُونِ النَّاسِ ثُمَّ اقْضِ مَا بَقِيَ مِنْ كِتَابَتِهِ ثُمَّ اقْسِمْ مَا بَقِيَ مِنْ مَالِهِ بَيْنَ ابْنَتِهِ وَمَوْلَاهُ.قَالَ مَالِك الْأَمْرُ عِنْدَنَا أَنَّهُ لَيْسَ عَلَى سَيِّدِ الْعَبْدِ أَنْ يُكَاتِبَهُ إِذَا سَأَلَهُ ذَلِكَ وَلَمْ أَسْمَعْ أَنَّ أَحَدًا مِنْ الْأَئِمَّةِ أَكْرَهَ رَجُلًا عَلَى أَنْ يُكَاتِبَ عَبْدَهُ وَقَدْ سَمِعْتُ بَعْضَ أَهْلِ الْعِلْمِ إِذَا سُئِلَ عَنْ ذَلِكَ فَقِيلَ لَهُ إِنَّ اللهَ تَبَارَكَ وَتَعَالَى يَقُوْلُ { فَكَاتِبُوهُمْ إِنْ عَلِمْتُمْ فِيهِمْ خَيْرًا }يَتْلُو هَاتَيْنِ الْآيَتَيْنِ { وَإِذَا حَلَلْتُمْ فَاصْطَادُوا }{ فَإِذَا قُضِيَتْ الصَّلَاةُ فَانْتَشِرُوا فِي الْأَرْضِ وَابْتَغُوا مِنْ فَضْلِ اللهِ }قَالَ مَالِك وَإِنَّمَا ذَلِكَ أَمْرٌ أَذِنَ اللهُ عَزَّ وَجَلَّ فِيهِ لِلنَّاسِ وَلَيْسَ بِوَاجِبٍ عَلَيْهِمْ قَالَ مَالِك و سَمِعْت بَعْضَ أَهْلِ الْعِلْمِ يَقُولُ فِي قَوْلِ اللهِ تَبَارَكَ وَتَعَالَى { وَآتُوهُمْ مِنْ مَالِ اللهِ الَّذِي آتَاكُمْ }إِنَّ ذَلِكَ أَنْ يُكَاتِبَ الرَّجُلُ غُلَامَهُ ثُمَّ يَضَعُ عَنْهُ مِنْ آخِرِ كِتَابَتِهِ شَيْئًا مُسَمًّى قَالَ مَالِك فَهَذَا الَّذِي سَمِعْتُ مِنْ أَهْلِ الْعِلْمِ وَأَدْرَكْتُ عَمَلَ النَّاسِ عَلَى ذَلِكَ عِنْدَنَاقَالَ مَالِك وَقَدْ بَلَغَنِي أَنَّ عَبْدَ اللهِ بْنَ عُمَرَ كَاتَبَ غُلَامًا لَهُ عَلَى خَمْسَةٍ وَثَلَاثِينَ أَلْفَ دِرْهَمٍ ثُمَّ وَضَعَ عَنْهُ مِنْ آخِرِ كِتَابَتِهِ خَمْسَةَ آلَافِ دِرْهَمٍقَالَ مَالِك الْأَمْرُ عِنْدَنَا أَنَّ الْمُكَاتَبَ إِذَا كَاتَبَهُ سَيِّدُهُ تَبِعَهُ مَالُهُ وَلَمْ يَتْبَعْهُ وَلَدُهُ إِلَّا أَنْ يَشْتَرِطَهُمْ فِي كِتَابَتِهِقَالَ يَحْيَى سَمِعْت مَا لِكًا يَقُولُ فِي الْمُكَاتَبِ يُكَاتِبُهُ سَيِّدُهُ وَلَهُ جَارِيَةٌ بِهَا حَبَلٌ مِنْهُ لَمْ يَعْلَمْ بِهِ هُوَ وَلَا سَيِّدُهُ يَوْمَ كِتَابَتِهِ فَإِنَّهُ لَا يَتْبَعُهُ ذَلِكَ الْوَلَدُ لِأَنَّهُ لَمْ يَكُنْ دَخَلَ فِي كِتَابَتِهِ وَهُوَ لِسَيِّدِهِ فَأَمَّا الْجَارِيَةُ فَإِنَّهَا لِلْمُكَاتَبِ لِأَنَّهَا مِنْ مَالِهِ قَالَ مَالِك فِي رَجُلٍ وَرِثَ مُكَاتَبًا مِنْ امْرَأَتِهِ هُوَ وَابْنُهَا إِنَّ الْمُكَاتَبَ إِنْ مَاتَ قَبْلَ أَنْ يَقْضِيَ كِتَابَتَهُ اقْتَسَمَا مِيرَاثَهُ عَلَى كِتَابِ اللهِ وَإِنْ أَدَّى كِتَابَتَهُ ثُمَّ مَاتَ فَمِيرَاثُهُ لِابْنِ الْمَرْأَةِ وَلَيْسَ لِلزَّوْجِ مِنْ مِيرَاثِهِ شَيْءٌقَالَ مَالِك فِي الْمُكَاتَبِ يُكَاتِبُ عَبْدَهُ قَالَ يُنْظَرُ فِي ذَلِكَ فَإِنْ كَانَ إِنَّمَا أَرَادَ الْمُحَابَاةَ لِعَبْدِهِ وَعُرِفَ ذَلِكَ مِنْهُ بِالتَّخْفِيفِ عَنْهُ فَلَا يَجُوزُ ذَلِكَ وَإِنْ كَانَ إِنَّمَا كَاتَبَهُ عَلَى وَجْهِ الرَّغْبَةِ وَطَلَبِ الْمَالِ وَابْتِغَاءِ الْفَضْلِ وَالْعَوْنِ عَلَى كِتَابَتِهِ فَذَلِكَ جَائِزٌ لَهُقَالَ مَالِك فِي رَجُلٍ وَطِئَ مُكَاتَبَةً لَهُ إِنَّهَا إِنْ حَمَلَتْ فَهِيَ بِالْخِيَارِ إِنْ شَاءَتْ كَانَتْ أُمَّ وَلَدٍ وَإِنْ شَاءَتْ قَرَّتْ عَلَى كِتَابَتِهَا فَإِنْ لَمْ تَحْمِلْ فَهِيَ عَلَى كِتَابَتِهَاقَالَ مَالِك الْأَمْرُ الْمُجْتَمَعُ عَلَيْهِ عِنْدَنَا فِي الْعَبْدِ يَكُونُ بَيْنَ الرَّجُلَيْنِ إِنَّ أَحَدَهُمَا لَا يُكَاتِبُ نَصِيبَهُ مِنْهُ أَذِنَ لَهُ بِذَلِكَ صَاحِبُهُ أَوْ لَمْ يَأْذَنْ إِلَّا أَنْ يُكَاتِبَاهُ جَمِيعًا لِأَنَّ ذَلِكَ يَعْقِدُ لَهُ عِتْقًا وَيَصِيرُ إِذَا أَدَّى الْعَبْدُ مَا كُوتِبَ عَلَيْهِ إِلَى أَنْ يَعْتِقَ نِصْفُهُ وَلَا يَكُونُ عَلَى الَّذِي كَاتَبَ بَعْضَهُ أَنْ يَسْتَتِمَّ عِتْقَهُ فَذَلِكَ خِلَافُ مَا قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَنْ أَعْتَقَ شِرْكًا لَهُ فِي عَبْدٍ قُوِّمَ عَلَيْهِ قِيمَةَ الْعَدْلِقَالَ مَالِك فَإِنْ جَهِلَ ذَلِكَ حَتَّى يُؤَدِّيَ الْمُكَاتَبُ أَوْ قَبْلَ أَنْ يُؤَدِّيَ رَدَّ إِلَيْهِ الَّذِي كَاتَبَهُ مَا قَبَضَ مِنْ الْمُكَاتَبِ فَاقْتَسَمَهُ هُوَ وَشَرِيكُهُ عَلَى قَدْرِ حِصَصِهِمَا وَبَطَلَتْ كِتَابَتُهُ وَكَانَ عَبْدًا لَهُمَا عَلَى حَالِهِ الْأُولَىقَالَ مَالِك فِي مُكَاتَبٍ بَيْنَ رَجُلَيْنِ فَأَنْظَرَهُ أَحَدُهُمَا بِحَقِّهِ الَّذِي عَلَيْهِ وَأَبَى الْآخَرُ أَنْ يُنْظِرَهُ فَاقْتَضَى الَّذِي أَبَى أَنْ يُنْظِرَهُ بَعْضَ حَقِّهِ ثُمَّ مَاتَ الْمُكَاتَبُ وَتَرَكَ مَالًا لَيْسَ فِيهِ وَفَاءٌ مِنْ كِتَابَتِهِ قَالَ مَالِك يَتَحَاصَّانِ مَا تَرَكَ بِقَدْرِ مَا بَقِيَ لَهُمَا عَلَيْهِ يَأْخُذُ كُلُّ وَاحِدٍ مِنْهُمَا بِقَدْرِ حِصَّتِهِ فَإِنْ تَرَكَ الْمُكَاتَبُ فَضْلًا عَنْ كِتَابَتِهِ أَخَذَ كُلُّ وَاحِدٍ مِنْهُمَا مَا بَقِيَ مِنْ الْكِتَابَةِ وَكَانَ مَا بَقِيَ بَيْنَهُمَا بِالسَّوَاءِ فَإِنْ عَجَزَ الْمُكَاتَبُ وَقَدْ اقْتَضَى الَّذِي لَمْ يُنْظِرْهُ أَكْثَرَ مِمَّا اقْتَضَى صَاحِبُهُ كَانَ الْعَبْدُ بَيْنَهُمَا نِصْفَيْنِ وَلَا يَرُدُّ عَلَى صَاحِبِهِ فَضْلَ مَا اقْتَضَى لِأَنَّهُ إِنَّمَا اقْتَضَى الَّذِي لَهُ بِإِذْنِ صَاحِبِهِ وَإِنْ وَضَعَ عَنْهُ أَحَدُهُمَا الَّذِي لَهُ ثُمَّ اقْتَضَى صَاحِبُهُ بَعْضَ الَّذِي لَهُ عَلَيْهِ ثُمَّ عَجَزَ فَهُوَ بَيْنَهُمَا وَلَا يَرُدُّ الَّذِي اقْتَضَى عَلَى صَاحِبِهِ شَيْئًا لِأَنَّهُ إِنَّمَا اقْتَضَى الَّذِي لَهُ عَلَيْهِ وَذَلِكَ بِمَنْزِلَةِ الدَّيْنِ لِلرَّجُلَيْنِ بِكِتَابٍ وَاحِدٍ عَلَى رَجُلٍ وَاحِدٍ فَيُنْظِرُهُ أَحَدُهُمَا وَيَشِحُّ الْآخَرُ فَيَقْتَضِي بَعْضَ حَقِّهِ ثُمَّ يُفْلِسُ الْغَرِيمُ فَلَيْسَ عَلَى الَّذِي اقْتَضَى أَنْ يَرُدَّ شَيْئًا مِمَّا أَخَذَ.
হুমায়দ ইব্নু কায়স মক্কী (র) হতে বর্ণিতঃ
“ইব্নুল মুতাওয়াক্কিল”-এর একজন মুকাতাব মক্কাতে মারা যায় এবং সে রেখে যায় তার বদল-এ কিতাবাত-এর অবশিষ্ট এবং লোকের অনেক ঋণ। আরও রেখে যায় তার এক কন্যাকে। মক্কার শাসনকর্তা এই ব্যাপারে ফয়সালা করতে যেয়ে মুশকিলে পড়েন। (কারণ হুকুম তার জানা ছিল না) তাই তিনি এই ব্যাপারে প্রশ্ন করে পত্র লিখলেন আবদুল মালিক ইব্নু মারওয়ানের নিকট। আবদুল মালিক ইব্নু মারওয়ান তার নিকট (উত্তরে) লিখলেন, প্রথমে লোকের ঋণ পরিশোধ কর, তারপর “বদল-এ কিতাবাত”-এর বাকী অংশ পরিশোধ কর। অতঃপর তার যা অবশিষ্ট রইল উহা তার কন্যা ও কর্তার মধ্যে বন্টন করে দাও। (মাকতু, হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন)মালিক (র) বলেন আমাদের মতে ক্রীতদাস কিতাবাতের প্রার্থনা জানালে কর্তার জন্য উহার সাথে কিতাবাতের চুক্তি করা জরুরী নয় এবং কোন ইমামকে ইহা জরুরী বলে মত প্রকাশ করতে আমি শুনিনি। কোন কোন আলেমকে যখন এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হল এবং (কিতাবাত জরুরী হওয়ার প্রমাণ স্বরূপ) তাঁকে বলা হল আল্লাহ তা‘আলা কুরআনুল কারীমে ইরশাদ করেছে:فَكَاتِبُوهُمْ إِنْ عَلِمْتُمْ فِيهِمْ خَيْرًا.অর্থাৎ তাদের সাথে চুক্তিতে আবদ্ধ হও, যদি তোমরা জান তাদের মুক্তিদানে কল্যাণ আছে। (২৪:৩৩)আমি শুনেছি তিনি (উত্তরে) তিনি (পরে উল্লেখিত) এই আয়াতদ্বয় তিলাওয়াত করলেন:وَإِذَا حَلَلْتُمْ فَاصْطَادُوا.অর্থাৎ যখন তোমরা ইহরাম মুক্ত হবে শিকার করতে পার। (৫:২)فَإِذَا قُضِيَتْ الصَّلَاةُ فَانْتَشِرُوا فِي الْأَرْضِ وَابْتَغُوا مِنْ فَضْلِ اللهِ.অর্থাৎ সালাত সমাপ্ত হলে তোমরা বের হয়ে পড়বে এবং আল্লাহর অনুগ্রহ সন্ধান করবে। [১] (৬২:১০)মালিক (র) বলেন এটা একটি হুকুম, আল্লাহ্ তা‘আলা লোকদেরকে এর অনুমতি দিয়েছেন ইহা তাদের জন্য ওয়াজিব নয়।মালিক (র) বলেন, কোন কোন আলিম ব্যক্তিকে আল্লাহ্ তা‘আলার বাণী,وَآتُوهُمْ مِنْ مَالِ اللهِ الَّذِي آتَاكُمْ.“আল্লাহ্ তোমাদেরকে যে সম্পদ দিয়েছেন তা হতে তোমরা তাদেরকে দান করবে” (২৪ ৩৩) সম্পর্কে বলতে আমি শুনেছি, এটা এই যে, কোন ব্যক্তি গোলামের সাথে কিতাবাত করেছে কিতাবাতের সময় শেষ হয়ে এলে ক্রীতদাস হতে প্রাপ্য অংশের নির্দিষ্ট কিছু কমিয়ে দেয়া।মালিক (র) বলেন-“আহল ইলম”-এর নিকট হতে (এই ব্যাপারে) আমি যা শুনেছি তন্মধ্যে এটাই অতি উত্তম। আমি মদীনার লোকদেরকে এইরূপ আমল করতে দেখেছি।মালিক (র) বলেন আমার কাছে রেওয়ায়ত পৌঁছেছে যে, আবদুল্লাহ্ ইব্নু উমার (রা) তাঁর এক ক্রীতদাসের সাথে পঁয়ত্রিশ হাজার দিরহামের বিনিময়ে মুকাতাবাত করেছিলেন, অতঃপর কিতাবাতের শেষের দিকে পাঁচ হাজার দিরহাম কমিয়ে দিলেন।মালিক (র) বলেন আমাদের কাছে মাস‘আলা এই, মুকাতাব গোলামের সাথে তার কর্তা কিতাবাত চুক্তি করলে গোলামের মাল তারই গোলামের থাকবে কিন্তু সন্তানগণ তার অধিকারে থাকবে না। যদি কিতাবাত করার সময় সন্তানগণ গোলামের অধিকারে থাকবে বলে শর্ত করে থাকে তবে অন্য কথা।মালিক (র) বলেন যে মুকাতাবের সাথে তার কর্তা কিতাবাত চুক্তি করেছে চুক্তিকালে তার (ক্রীতদাসের) একটি দাসী ছিল, যে দাসী তার দ্বারা অন্তঃসত্ত্বা হয়েছে। অথচ তখন ইহা গোলাম ও তাঁর কর্তা কারো জানা ছিল না। তবে সে সন্তান ক্রীতদাসের হবে না। কারণ কিতাবাত চুক্তিতে এই সন্তানের কথা শামিল ছিল না। ফলে এই সন্তান কর্তার অধিকারে থাকবে। পক্ষান্তরে ক্রীতদাসটি (সন্তানের জননী) গোলামের মালিকানায় থাকবে। কারণ উহা তারই সম্পদ।মালিক (র) বলেন এক ব্যক্তি তার স্ত্রীর পক্ষ হতে মীরাস সূত্রে একটি মুকাতাব গোলাম লাভ করেছে, এবং স্বীয় এক ছেলেও আছে তবে সে এবং তারা উভয়ে “বদল-এ কিতাবাত” পরিশোধ করার পূর্বে যদি মুকাতাবের মৃত্যু হয় তবে তারা উভয়ে কুরআনে বর্ণিত মীরাস আইন অনুযায়ী পরস্পর মীরাস বন্টন করে নিবে। আর যদি “বদল-এ কিতাবাত” পরিশোধ করার পর উহার মৃত্যু হয় তবে উহার মীরাস লাভ করবে (স্ত্রীর) পুত্র, উহার মীরাসে স্বামীর কোন হক থাকবে না।মালিক (র) বলেন যে মুকাতাব তার ক্রীতদাসের সাথে কিতাবাত চুক্তি করেছে তার ব্যাপারে লক্ষ্য করতে হবে যে, যদি সে ক্রীতদাসের প্রতি উদারতা ও মমতা প্রকাশের উদ্দেশ্যে এটা করে থাকে এবং উহা জানাও যায় এভাবে যে, সে ক্রীতদাসের কিতাবাত চুক্তির নির্ধারিত অর্থ হতে কিছু পরিমাণ অর্থ ছেড়ে দেয় তবে এটা বৈধ হবে না। আর যদি উৎসাহ, অর্থ উপার্জন ও অতিরিক্ত অনুসন্ধান এবং তার আযাদীর পথে মদদ লাভের উদ্দেশ্যে স্বীয় এক ক্রীতদাসের সাথে মুকাতাবাত করে থাকে তবে (তার জন্য) এটা বৈধ হবে।মালিক (র) বলেন এক ব্যক্তি নিজের মুকাতাব ক্রীতদাসীর সাথে সঙ্গম করেছে, তাতে যদি সে অন্তঃসত্ত্বা হয়, তবে উহার ইখতিয়ার থাকবে, ইচ্ছা হলে (কর্তার) উম্মে ওয়ালাদ হিসেবে থাকবে, অথবা ইচ্ছা করলে (তার সাবেক) কিতাবাতের প্রতিশ্রুতি মুতাবিক অগ্রসর হতে থাকবে। আর যদি সে অন্তঃসত্ত্বা না হয়, তবে সে কিতাবাতের উপর বহাল থাকবে।মালিক (র) বলেন আমাদের কাছে যে সিদ্ধান্তে মতৈক্য স্থাপিত হয়েছে তা এই, যে ক্রীতদাস দুই ব্যক্তির মালিকানাতে থাকে, তাদের একজন ক্রীতদাস হতে নিজের অংশে কিতাবাত চুক্তি করতে পারবে না, তার অপর শরীক এর অনুমতি দিক বা না দিক। তবে যদি তারা উভয়ে একত্রে ক্রীতদাসের সহিত কিতাবাত চুক্তি করে (তা বৈধ হবে)। কারণ কিতাবাত হল ক্রীতদাসের জন্য আযাদ লাভের চুক্তি, যার উপর কিতাবাত নির্ধারিত হয়েছে-ক্রীতদাস যদি উহা পরিশোধ করে তবে ক্রীতদাস আযাদ হয়ে যাবে। পক্ষান্তরে যে শরীক কিছু অংশের কিতাবাত করেছে তার পক্ষে ক্রীতদাসের আযাদী পূর্ণরূপে সম্পন্ন করা জরুরী নয়। এটা রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যা বলেছেন তার বিপরীত। (তিনি বলেছেন) যে ব্যক্তি ক্রীতদাসে তার যে অংশ রয়েছে তা আযাদ করে দেয় ন্যায়সঙ্গতভাবে তার উপর (অবশিষ্ট অংশের) মূল্য নির্ধারণ করা হবে (ইহা আযাদীর ব্যাপারে প্রযোজ্য কিন্তু কিতাবাতের ব্যাপারে প্রযোজ্য নয়)।মালিক (র) বলেন যদি এক অংশীদার কিতাবাত করেছে, উহা সম্পর্কে অন্য অংশীদার জ্ঞাত নয়, মুকাতাব হতে সে সম্পূর্ণ বদল-এ কিতাবাত (বিনিময়ের মূল্য) আদায় করেছে অথবা বদল-এ কিতাবাত আদায় করেনি, অথচ অন্য শরীক তখনও ইহা জানে না-এই অবস্থায় সেই শরীক কিতাবাতের অর্থ হতে যা গ্রহণ করেছে উহা ফিরিয়ে দিবে। তারপর সে এবং তার শরীক হিস্সা মুতাবিক উহা ভাগ করে নিবে এবং তার কিতাবাত বাতিল হয়ে যাবে। ক্রীতদাস প্রথম অবস্থায় যেমন ক্রীতদাস ছিল এখনও উভয়ের ক্রীতদাস থাকবে।মালিক (র) বলেন যে মুকাতাব ক্রীতদাস দুই কর্তার মালিকানায় রয়েছে। এক কর্তা ক্রীতদাসকে তার হকের ব্যাপারে কিছু অবকাশ দিল। অপর কর্তা অবকাশ দিতে অস্বীকার করল। অতঃপর যে অবকাশ প্রদান করতে অস্বীকার করেছে সে তার কিছু হক (ক্রীতদাস হতে) আদায় করেছে। তারপর মুতাকাব-এর মৃত্যু হল। সে যা মাল রেখে গিয়েছে উহাতে “বদল-এক কিতাবাত” পূর্ণ হওয়ার নয়। মালিক (র) বলেন তারা (দুই শরীক) উভয়ে ভাগ করবে তাদের উভয়ের হিস্সা মুতাবিক। (অর্থাৎ) তাদের প্রত্যেকে নিজ নিজ অংশ পরিমাণ গ্রহণ করবে, আর যদি মুকাতাব “বদল-এ কিতাবাত” হতে অতিরিক্ত মাল রেখে যায়, তবে তাদের প্রত্যেকে ‘বদল-এ কিতাবাত”-এর স্ব-স্ব হিস্সা গ্রহণ করবে, অবশিষ্ট যা থাকে উহা উভয়ের মধ্যে সমভাবে বন্টন করে নিবে। আর যদি মুকাতাব অপারগ হয়, (অপর দিকে) যে অংশীদার অবকাশ দেয়নি সে তার অপর অংশীদার অপেক্ষা অধিক (অর্থ) গ্রহণ করেছে, তবে তাদের উভয়ের মধ্যে ক্রীতদাসের অংশ থাকবে অর্ধেক অর্ধেক। যে অতিরিক্ত অর্থ গ্রহণ করেছে সে তার অংশীদারকে উহা ফেরত দিবে না। কারণ সে অংশীদারের অনুমতি নিয়ে তার প্রাপ্য হক গ্রহণ করেছে। আর যদি এক অংশীদার তার প্রাপ্য অংশ মাফ করে দেয় অতঃপর তার অপর অংশীদার ক্রীতদাস হতে (তার প্রাপ্য হতে) কিছু অংশ গ্রহণ করেছে। তারপর মুকাতাব গোলাম অপারগ হয়েছে। তবে গোলাম উভয়ের মধ্যে (সমান সমান) হবে। আর যে শরীকদার কিছু অর্থ গ্রহণ করেছে সে আপন অংশীদারকে কিছুই ফেরত দিবে না। কারণ সে ক্রীতদাসের উপর তার যা প্রাপ্য ছিল উহা গ্রহণ করেছে। এর দৃষ্টান্ত এইরূপ, দুই ব্যক্তির এক ব্যক্তির উপর ঋণ রয়েছে একই সূত্রে, তাদের একজন (খাতককে) অবকাশ দিল, অপর ব্যক্তি কৃপণতা করল এবং তার কিছু প্রাপ্য উশুল করল, তারপর খাতক রিক্ত হস্ত হয়ে গেল। (এই অবস্থাতে) যে ব্যক্তি তার হক গ্রহণ করেছে তাকে যা গ্রহণ করেছে উহা হতে (অপর ঋণ তার জন্য) কিছু ফিরিয়ে দিতে হবে না।
[১] কুরআনুল কারীমে উক্ত দুটি আয়াত উদ্ধৃত করার উদ্দেশ্য হচ্ছে এই উভয় আয়াত “শিকার করতে পার” এবং “অনুগ্রহ সন্ধান করবে” এই নির্দেশের দ্বারা যেসব শিকার করা ও অনুগ্রহ সন্ধান করা জরুরী হওয়া প্রমাণিত হয় না, তদ্রূপ “কিতাবাত কর” এই নির্দেশের দ্বারাও কিতাবাত জরুরী বা ওয়াজিব বলে প্রমাণিত হয় না।