কাসামত বা কসম নেয়া অধ্যায়

পরিচ্ছেদঃ ১

প্রথমে ওয়ারিসদের কসম নেয়া হয়

মুয়াত্তা ইমাম মালিকহাদিস নম্বর ১৫৭৪

حَدَّثَنِي يَحْيَى عَنْ مَالِك عَنْ أَبِي لَيْلَى بْنِ عَبْدِ اللهِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ سَهْلٍ عَنْ سَهْلِ بْنِ أَبِي حَثْمَةَ أَنَّهُ أَخْبَرَهُ رِجَالٌ مِنْ كُبَرَاءِ قَوْمِهِأَنَّ عَبْدَ اللهِ بْنَ سَهْلٍ وَمُحَيِّصَةَ خَرَجَا إِلَى خَيْبَرَ مِنْ جَهْدٍ أَصَابَهُمْ فَأُتِيَ مُحَيِّصَةُ فَأُخْبِرَ أَنَّ عَبْدَ اللهِ بْنَ سَهْلٍ قَدْ قُتِلَ وَطُرِحَ فِيفَقِيرِ بِئْرٍ أَوْ عَيْنٍ فَأَتَى يَهُودَ فَقَالَ أَنْتُمْ وَاللهِ قَتَلْتُمُوهُ فَقَالُوا وَاللهِ مَا قَتَلْنَاهُ فَأَقْبَلَ حَتَّى قَدِمَ عَلَى قَوْمِهِ فَذَكَرَ لَهُمْ ذَلِكَ ثُمَّ أَقْبَلَ هُوَ وَأَخُوهُ حُوَيِّصَةُ وَهُوَ أَكْبَرُ مِنْهُ وَعَبْدُ الرَّحْمَنِ فَذَهَبَ مُحَيِّصَةُ لِيَتَكَلَّمَ وَهُوَ الَّذِي كَانَ بِخَيْبَرَ فَقَالَ لَهُ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَبِّرْ كَبِّرْ يُرِيدُ السِّنَّ فَتَكَلَّمَ حُوَيِّصَةُ ثُمَّ تَكَلَّمَ مُحَيِّصَةُ فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِمَّا أَنْ يَدُوا صَاحِبَكُمْ وَإِمَّا أَنْ يُؤْذِنُوا بِحَرْبٍ فَكَتَبَ إِلَيْهِمْ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي ذَلِكَ فَكَتَبُوا إِنَّا وَاللهِ مَا قَتَلْنَاهُ فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لِحُوَيِّصَةَ وَمُحَيِّصَةَ وَعَبْدِ الرَّحْمَنِ أَتَحْلِفُونَ وَتَسْتَحِقُّونَ دَمَ صَاحِبِكُمْ فَقَالُوا لَا قَالَ أَفَتَحْلِفُ لَكُمْ يَهُودُ قَالُوا لَيْسُوا بِمُسْلِمِينَ فَوَدَاهُ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مِنْ عِنْدِهِ فَبَعَثَ إِلَيْهِمْ بِمِائَةِ نَاقَةٍ حَتَّى أُدْخِلَتْ عَلَيْهِمْ الدَّارَ قَالَ سَهْلٌ لَقَدْ رَكَضَتْنِي مِنْهَا نَاقَةٌ حَمْرَاءُقَالَ مَالِك الْفَقِيرُ هُوَ الْبِئْرُ

সাহল ইবনু আবূ হাসমা (র) হতে বর্ণিতঃ

তাঁর বংশের কয়েকজন সম্ভ্রান্ত ব্যক্তি তাঁকে সংবাদ দিয়েছেন, আবদুল্লাহ ইবনু সাহল ও মুহায়্যিসা তাঁদের আর্থিক অসচ্ছলতার কারণে খায়বরে চলে গিয়েছিলেন। তথায় মুহায়্যিসার নিকট এক ব্যক্তি এসে বলল, কেউ আবদুল্লাহকে হত্যা করে কূপে ফেলে দিয়েছে। ইহা শুনে মুহায়্যিসা খায়বরের ইহুদীদের নিকট যেয়ে বলল, আল্লাহর কসম, তোমরাই তাকে হত্যা করেছ। ইহুদীরা বলল, আল্লাহর কসম, আমরা তাকে হত্যা করিনি। অতঃপর মুহায়্যিসা, নিজের গোত্রের নিকট এসে সমস্ত ঘটনা বর্ণনা করল। পরিশেষে মুহায়্যিসা তার বড় ভাই হুয়ায়্যিসা ও আবদুর রহমান ইবনু সাহলকে (নিহত ব্যক্তির ভাই) সঙ্গে নিয়ে রসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট উপস্থিত হল। মুহায়্যিসা যেহেতু খায়বর গিয়েছিল, তাই সে প্রথম কথা বলতে ইচ্ছা করল। কিন্তু রসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন বড়-র প্রতি লক্ষ্য কর (বড় ভাইকে কথা বলতে দাও)। তাই প্রথমে হুয়ায়্যিসা কথা বলার মুহায়্যিসা সমস্ত ঘটনা বর্ণনা করে শুনাল। শুনে রসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন ইহুদীরা হয় দিয়াত দিবে, না হয় যুদ্ধ করবে। অতঃপর তিনি এ ব্যাপারে ইহুদীগণকে লিখে জানালেন, এতে উত্তর লিখল যে, আল্লাহর কসম, আমরা হত্যা করি নি। অতঃপর রসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঐ তিন ব্যক্তিকে বললেন, তোমরা কসম করে বল যে, ইহুদীরা হত্যা করেছে। তা হলে তোমরা দিয়াতের মালিক হয়ে যাবে। তারা বলল, আমরা তো কসম খেতে পারি না। রসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আচ্ছা, তাহলে ইহুদীগণ কি কসম করেনি যে, তারা মারেনি ? তারা বলল, ইয়া রসূলাল্লাহ, তারা তো মুসলমান নয় (আমরা তাদের কথা বিশ্বাস করি কিভাবে)। অতঃপর রসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজের পক্ষ হতে দিয়াত আদায় করলেন। সাহল বলেন, রসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম, আমার নিকট আমার বাড়িতে একশত উট পাঠালেন। উহাদের মধ্য হতে একটি লাল উষ্ট্রী আমাকে লাথি মেরেছিল (আজও আমার উহা স্মরণ আছে)। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন)

মুয়াত্তা ইমাম মালিকহাদিস নম্বর ১৫৭৫

قَالَ يَحْيَى عَنْ مَالِك عَنْ يَحْيَى بْنِ سَعِيدٍ عَنْ بُشَيْرِ بْنِ يَسَارٍ أَنَّهُ أَخْبَرَهُ أَنَّ عَبْدَ اللهِ بْنَ سَهْلٍ الْأَنْصَارِيَّ وَمُحَيِّصَةَ بْنَ مَسْعُودٍ خَرَجَا إِلَى خَيْبَرَ فَتَفَرَّقَا فِي حَوَائِجِهِمَا فَقُتِلَ عَبْدُ اللهِ بْنُ سَهْلٍ فَقَدِمَ مُحَيِّصَةُ فَأَتَى هُوَ وَأَخُوهُ حُوَيِّصَةُ وَعَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ سَهْلٍ إِلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَذَهَبَعَبْدُ الرَّحْمَنِ لِيَتَكَلَّمَ لِمَكَانِهِ مِنْ أَخِيهِ فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَبِّرْ كَبِّرْ فَتَكَلَّمَ حُوَيِّصَةُ وَمُحَيِّصَةُ فَذَكَرَا شَأْنَ عَبْدِ اللهِ بْنِ سَهْلٍ فَقَالَ لَهُمْ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَتَحْلِفُونَ خَمْسِينَ يَمِينًا وَتَسْتَحِقُّونَ دَمَ صَاحِبِكُمْ أَوْ قَاتِلِكُمْ قَالُوا يَا رَسُولَ اللهِ لَمْ نَشْهَدْ وَلَمْ نَحْضُرْ فَقَالَ لَهُمْ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَتُبْرِئُكُمْ يَهُودُ بِخَمْسِينَ يَمِينًا فَقَالُوا يَا رَسُولَ اللهِ كَيْفَ نَقْبَلُ أَيْمَانَ قَوْمٍ كُفَّارٍ قَالَ يَحْيَى بْنُ سَعِيدٍ فَزَعَمَ بُشَيْرُ بْنُ يَسَارٍ أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَدَاهُ مِنْ عِنْدِهِقَالَ مَالِك الْأَمْرُ الْمُجْتَمَعُ عَلَيْهِ عِنْدَنَا وَالَّذِي سَمِعْتُ مِمَّنْ أَرْضَى فِي الْقَسَامَةِ وَالَّذِي اجْتَمَعَتْ عَلَيْهِ الْأَئِمَّةُ فِي الْقَدِيمِ وَالْحَدِيثِ أَنْ يَبْدَأَ بِالْأَيْمَانِ الْمُدَّعُونَ فِي الْقَسَامَةِ فَيَحْلِفُونَ وَأَنَّ الْقَسَامَةَ لَا تَجِبُ إِلَّا بِأَحَدِ أَمْرَيْنِ إِمَّا أَنْ يَقُولَ الْمَقْتُولُ دَمِي عِنْدَ فُلَانٍ أَوْ يَأْتِيَ وُلَاةُ الدَّمِ بِلَوْثٍ مِنْ بَيِّنَةٍ وَإِنْ لَمْ تَكُنْ قَاطِعَةً عَلَى الَّذِي يُدَّعَى عَلَيْهِ الدَّمُ فَهَذَا يُوجِبُ الْقَسَامَةَ لِلْمُدَّعِينَ الدَّمَ عَلَى مَنْ ادَّعَوْهُ عَلَيْهِ وَلَا تَجِبُ الْقَسَامَةُ عِنْدَنَا إِلَّا بِأَحَدِ هَذَيْنِ الْوَجْهَيْنِ قَالَ مَالِك وَتِلْكَ السُّنَّةُ الَّتِي لَا اخْتِلَافَ فِيهَا عِنْدَنَا وَالَّذِي لَمْ يَزَلْ عَلَيْهِ عَمَلُ النَّاسِ أَنَّ الْمُبَدَّئِينَ بِالْقَسَامَةِ أَهْلُ الدَّمِ وَالَّذِينَ يَدَّعُونَهُ فِي الْعَمْدِ وَالْخَطَإِ قَالَ مَالِك وَقَدْ بَدَّأَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ الْحَارِثِيِّينَ فِي قَتْلِ صَاحِبِهِمْ الَّذِي قُتِلَ بِخَيْبَرَقَالَ مَالِك فَإِنْ حَلَفَ الْمُدَّعُونَ اسْتَحَقُّوا دَمَ صَاحِبِهِمْ وَقَتَلُوا مَنْ حَلَفُوا عَلَيْهِ وَلَا يُقْتَلُ فِي الْقَسَامَةِ إِلَّا وَاحِدٌ لَا يُقْتَلُ فِيهَا اثْنَانِ يَحْلِفُ مِنْ وُلَاةِ الدَّمِ خَمْسُونَ رَجُلًا خَمْسِينَ يَمِينًا فَإِنْ قَلَّ عَدَدُهُمْ أَوْ نَكَلَ بَعْضُهُمْ رُدَّتْ الْأَيْمَانُ عَلَيْهِمْ إِلَّا أَنْ يَنْكُلَ أَحَدٌ مِنْ وُلَاةِ الْمَقْتُولِ وُلَاةِ الدَّمِ الَّذِينَ يَجُوزُ لَهُمْ الْعَفْوُ عَنْهُ فَإِنْ نَكَلَ أَحَدٌ مِنْ أُولَئِكَ فَلَا سَبِيل إِلَى الدَّمِ إِذَا نَكَلَ أَحَدٌ مِنْهُمْقَالَ يَحْيَى قَالَ مَالِك وَإِنَّمَا تُرَدُّ الْأَيْمَانُ عَلَى مَنْ بَقِيَ مِنْهُمْ إِذَا نَكَلَ أَحَدٌ مِمَّنْ لَا يَجُوزُ لَهُ عَفْوٌ فَإِنْ نَكَلَ أَحَدٌ مِنْ وُلَاةِ الدَّمِ الَّذِينَ يَجُوزُ لَهُمْ الْعَفْوُ عَنْ الدَّمِ وَإِنْ كَانَ وَاحِدًا فَإِنَّ الْأَيْمَانَ لَا تُرَدُّ عَلَى مَنْ بَقِيَ مِنْ وُلَاةِ الدَّمِ إِذَا نَكَلَ أَحَدٌ مِنْهُمْ عَنْ الْأَيْمَانِ وَلَكِنْ الْأَيْمَانُ إِذَا كَانَ ذَلِكَ تُرَدُّ عَلَى الْمُدَّعَى عَلَيْهِمْ فَيَحْلِفُ مِنْهُمْ خَمْسُونَ رَجُلًا خَمْسِينَ يَمِينًا فَإِنْ لَمْ يَبْلُغُوا خَمْسِينَ رَجُلًا رُدَّتْ الْأَيْمَانُ عَلَى مَنْ حَلَفَ مِنْهُمْ فَإِنْ لَمْ يُوجَدْ أَحَدٌ يَحْلِفُ إِلَّا الَّذِي ادُّعِيَ عَلَيْهِ حَلَفَ هُوَ خَمْسِينَ يَمِينًا وَبَرِئَقَالَ يَحْيَى قَالَ مَالِك وَإِنَّمَا فُرِقَ بَيْنَ الْقَسَامَةِ فِي الدَّمِ وَالْأَيْمَانِ فِي الْحُقُوقِ أَنَّ الرَّجُلَ إِذَا دَايَنَ الرَّجُلَ اسْتَثْبَتَ عَلَيْهِ فِي حَقِّهِ وَأَنَّ الرَّجُلَ إِذَا أَرَادَ قَتْلَ الرَّجُلِ لَمْ يَقْتُلْهُ فِي جَمَاعَةٍ مِنْ النَّاسِ وَإِنَّمَا يَلْتَمِسُ الْخَلْوَةَ ََََقَالَ فَلَوْ لَمْ تَكُنِ الْقَسَامَةُ إِلَّا فِيمَا تَثْبُتُ فِيهِ الْبَيِّنَةُ وَلَوْ عُمِلَ فِيهَا كَمَا يُعْمَلُ فِي الْحُقُوقِ هَلَكَتْ الدِّمَاءُ وَاجْتَرَأَ النَّاسُ عَلَيْهَا إِذَا عَرَفُوا الْقَضَاءَ فِيهَا وَلَكِنْ إِنَّمَا جُعِلَتْ الْقَسَامَةُ إِلَى وُلَاةِ الْمَقْتُولِ يُبَدَّءُونَ بِهَا فِيهَا لِيَكُفَّ النَّاسُ عَنْ الدَّمِ وَلِيَحْذَرَ الْقَاتِلُ أَنْ يُؤْخَذَ فِي مِثْلِ ذَلِكَ بِقَوْلِ الْمَقْتُولِقَالَ يَحْيَى وَقَدْ قَالَ مَالِك فِي الْقَوْمِ يَكُونُ لَهُمْ الْعَدَدُ يُتَّهَمُونَ بِالدَّمِ فَيَرُدُّ وُلَاةُ الْمَقْتُولِ الْأَيْمَانَ عَلَيْهِمْ وَهُمْ نَفَرٌ لَهُمْ عَدَدٌ أَنَّهُ يَحْلِفُ كُلُّ إِنْسَانٍ مِنْهُمْ عَنْ نَفْسِهِ خَمْسِينَ يَمِينًا وَلَا تُقْطَعُ الْأَيْمَانُ عَلَيْهِمْ بِقَدْرِ عَدَدِهِمْ وَلَا يَبْرَءُونَ دُونَ أَنْ يَحْلِفَ كُلُّ إِنْسَانٍ عَنْ نَفْسِهِ خَمْسِينَ يَمِينًا قَالَ مَالِك وَهَذَا أَحْسَنُ مَا سَمِعْتُ فِي ذَلِكَقَالَ وَالْقَسَامَةُ تَصِيرُ إِلَى عَصَبَةِ الْمَقْتُولِ وَهُمْ وُلَاةُ الدَّمِ الَّذِينَ يَقْسِمُونَ عَلَيْهِ وَالَّذِينَ يُقْتَلُ بِقَسَامَتِهِمْ

বুশাইর ইব্নু ইয়াসার (র) হতে বর্ণিতঃ

আবদুল্লাহ ইব্নু সাহল আনসারী ও মুহায়্যিসা খায়বর গিয়েছিল, সেখানে যেয়ে তারা নিজ নিজ কাজে ব্যস্ত হয়ে একে অপর হতে পৃথক হয়ে গেল। আবদুল্লাহকে কেউ হত্যা করল। মুহায়্যিসা ফিরে এসে তার ভাই হুয়ায়্যিসা ও আবদুর রহমানকে নিয়ে রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর খেদমতে উপস্থিত হল এবং আবদুর রহমান স্বীয় ভ্রাতার ব্যাপারে রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে কথা বলতে চাইল। রসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, যে বড় তার প্রতি লক্ষ্য কর। অতঃপর আবদুল্লাহর ঘটনা মুহায়্যিসা ও হুয়ায়্যিসা বর্ণনা করলেন। রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, যদি তোমরা পঞ্চাশবার কসম খেতে পার তবে তোমরা দিয়াত প্রাপ্ত হবে। তাঁরা বললেন ‘ইয়া রসূলাল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম! আমরা তো তখন তথায় ছিলাম না, আমরা দেখিওনি। রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তা হলে ইহুদীরা পঞ্চাশ কসম করে নির্দোষ হয়ে যাবে। তারা বলল, ইয়া রসূলাল্লাহ্, তারা তো কাফির! তাদের কসম কি করে গ্রহণ করা যাবে ? বুশাইর বলেন, অতঃপর রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজের পক্ষ হতে দিয়াত আদায় করলেন। (বুখারী ৬৮৯৮, ইমাম মুসলিম মুত্তাসিল সনদে বর্ণনা করেন মুসলিম ১৯৬৯, তবে ইমাম মালিক কর্তৃক বর্ণিত হাদীসটি মুরসাল)মালিক (র) বলেন, আমাদের কাছে ইহা একটি সর্বস্বীকৃত বিষয়, এ ব্যাপারে অনেক আলিমের নিকটও শ্রবণ করেছি এবং পূর্ব যুগের আর পরবর্তী যুগের ইমামগণও এতে একমত হয়েছেন যে, কসম নেওয়ার ব্যাপারে প্রথমত বাদীপক্ষের নিকট হতেই কসম নিতে হবে। বাদীগণই প্রথমত কসম করবে (যদি তারা কসম না করে তবে বিবাদী হতে কসম নিতে হবে। যদি তারা কসম করে, তবে তারা নির্দোষ সাব্যস্ত হবে)।নিম্নোক্ত দুটির যে কোন একটির জন্যই কসম নেয়া অনিবার্য হয়। প্রথমত মৃত্যুর পূর্বে নিহত ব্যক্তি নিজেই বলবে, যদি তার পক্ষে বলা সম্ভব হয়, আমাকে অমুক ব্যক্তি হত্যা করেছে, ইহা তখনই যখন কোন সাক্ষী না থাকে। দ্বিতীয়ত নিহত ব্যক্তির ওয়ারিসগণ যখন কারো উপর হত্যার সন্দেহ করে (অথচ কোন সাক্ষী পাওয়া না যায়)। আমাদের নিকট এই দুটি কারণেই কসম নেয়া অনিবার্য হয়। এতদ্ব্যতীত অন্য কোন কারণে কসম নেয়া অনিবার্য হয় না।মালিক (র) বলেন, আমাদের কাছে এই সুন্নাত সর্বসম্মত এবং এর উপর সর্বসাধারণের আমলও রয়েছে যে, প্রথমে বাদী পক্ষ হতেই কসম নিতে হবে। সে হত্যা ইচ্ছাকৃত হত্যাই হোক অথবা অনিচ্ছাকৃত হত্যাই হোক।মালিক (র) বলেন, রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বানী হারিসের কোন আত্মীয় খায়বরে মারা যাওয়ার পর প্রথমত বানী হারিসকেই কসম করতে বলেছিলেন।মালিক (র) বলেন, যদি বাদীপক্ষ কসম করে, তবে তারা যাদের ব্যাপারে কসম করেছে, তাদেরকে হত্যা করতে পারবে। তবে এ কসমের শুধুমাত্র একজনকে হত্যা করা যাবে। কিন্তু এমতাবস্থায় প্রথমে বাদী পক্ষ হতে পঞ্চাশ কসম নেয়া হবে। যদি তারা পঞ্চাশজন হয় তবে প্রত্যেকে একটি কসম করবে। আর যদি তারা সংখ্যায় পঞ্চাশ জনের কম হয় অথবা তাদের কেউ কসম করতে অনিচ্ছা প্রকাশ করে, তবে তাদের হতে দুই দুইবার অথবা তিন তিনবার কসম নিয়ে পঞ্চাশ পূর্ণ করতে হবে। কিন্তু যখন নিহত ব্যক্তির এমন ওয়ারিসগণ যাদের হত্যাকারীকে ক্ষমা করার অধিকার আছে, তাদের একজনও যদি কসম করতে অনিচ্ছা প্রকাশ করে, তবে এই একজনের কসম করতে অনিচ্ছা প্রকাশের ফলে কিসাস আর অনিবার্য হবে না।মালিক (র) বলেন, নিহত ব্যক্তির ওয়ারিসগণ যাদের ক্ষমা করবার অধিকার নাই এমন ব্যক্তিদের কেউ কসম করতে অনিচ্ছা প্রকাশ করলেও অবশিষ্ট ব্যক্তিদের হতে কসম নেয়া হবে।মালিক (র) বলেন, যাদের ক্ষমা করবার অধিকার রয়েছে এমন ওয়ারিসদের একজনও যদি কসম করতে অস্বীকৃতি জ্ঞাপন করে, তবে অবশিষ্ট ব্যক্তিদের হতে আর কসম নেয়া হবে না, বরং এমতাবস্থায় বিবাদীগণ হতে কসম নিতে হবে, বিবাদীদের পঞ্চাশজন পঞ্চাশ কসম করবে। যদি তাদের সংখ্যা পঞ্চাশজন হতে কম হয়, তবে দুই দুইবার, তিন তিন বার করে হলেও পঞ্চাশ পূর্ণ করতে হবে। যদি বিবাদী মাত্র একজন হয়, তবে এই একজন হতেই পঞ্চাশ কসম নিতে হবে। যদি এই এক ব্যক্তি পঞ্চাশ কসম করে ফেলে, তবে সে নির্দোষ সাব্যস্ত হবে।মালিক (র) বলেন, হত্যার বেলায় পঞ্চাশ কসম নেয়া হয়ে থাকে আর অন্যান্য দাবি আদায়ের জন্য শুধু এক কসমই নেয়া হয়। কেননা মানুষ কাউকেই কারো সম্মুখে হত্যা করে না। যদি অন্যান্য দাবির মতো হত্যার বেলায়ও মাত্র একটি কসমই নেয়া হত তা হলে অনেক হত্যাই বৃথা যেত এবং মানুষ হত্যার উৎসাহ পেত। কিন্তু হত্যার কসমের বেলায় প্রথম বাদী পক্ষ হতেই কসম নেয়ার প্রথা নির্ধারিত হয়েছে যেন মানুষ হত্যা করতে সাহস না করে এবং এই ভেবে ভীত থাকে যে, এ ব্যাপারে তো নিহত ব্যক্তির কথাই ধর্তব্য।মালিক (র) বলেন, যদি কোন একটি পূর্ণ সম্প্রদায়ের উপর হত্যার অভিযোগ আনা হয় যাতে অনেক লোক রয়েছে, আর নিহত ব্যক্তির ওয়ারিসগণ তাদের নিকট হতে কসম নিতে ইচ্ছা করে, তা হলে ঐ সমস্ত লোকের প্রত্যেক ব্যক্তি পঞ্চাশটি করে কসম করবে। সকলে মিলে পঞ্চাশটি কসম করলে চলবে না। এ ব্যাপারে আমি এটাই উত্তম শ্রবণ করেছি।মালিক (র) বলেন, নিহত ব্যক্তির আসাবা যারা এই হত্যার হকদার তাদেরকেই কসম করানো হবে। আর তাদের কসম করার পরই কিসাস নেয়া যাবে।(ইমাম আবূ হানীফা (র)-এর মতে কসমের দ্বারা কিসাস সাব্যস্ত হয় না, শুধু দিয়াত (রক্তপণ) সাব্যস্ত হয়ে থাকে।)

সেটিংস

ফন্ট সেটিংস

আরবি ফন্ট ফেস

আরবি ফন্ট সাইজ

২৪

অনুবাদ ফন্ট সাইজ

১৮

আল হাদিস অ্যাপ ডাউনলোড করুন

App Banner

ইসলামের জ্ঞান প্রচারে সহায়ক হোন

আপনার নিয়মিত সহায়তা আমাদের দ্বীনি ভাই-বোনের কাছে ইসলামের দাওয়াত পৌঁছাতে সাহয্য করবে। আমাদের মিশনে আপনিও অংশ নিন এবং বড় পরিবর্তনের অংশীদার হোন।

সাপোর্ট করুন