পরিচ্ছেদ ৪১ :
শরীকানা [১] তাওলিয়া [২] ও ইকালা [৩]
[১] অধিকার বা ক্ষমতা প্রয়োগে একত্রিত হওয়াকে শিরকাত বা শরীকানা বলা হয়। শিরকাত কয়েক প্রকারের হয়, যেমন শিরকাতে ‘আনান, শিরকাতে আবদান, শিরকাতে মুফাওয়াযা, শিরকাতে উজূহ।[২] আসল মূল্যে ক্রয়কৃত বস্তুর কাউকেও মালিক করে দেয়ার নাম তাওলিয়া, যেমন রাসূলে করীম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর হিজরতের সময় আবূ বাকর সিদ্দীক (রা) তাঁর খরিদ মূল্যে উট রসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট বিক্রয় করেছিলেন।[৩] ক্রয় বিক্রয়ের চুক্তি বাতিল করা।
মুয়াত্তা ইমাম মালিক : ১৩৫৩
মুয়াত্তা ইমাম মালিকহাদিস নম্বর ১৩৫৩
قَالَ مَالِك فِي الرَّجُلِ يَبِيعُ الْبَزَّ الْمُصَنَّفَ وَيَسْتَثْنِي ثِيَابً بِرُقُومِهَا إِنَّهُ إِنْ اشْتَرَطَ أَنْ يَخْتَارَ مِنْ ذَلِكَ الرَّقْمَ فَلَا بَأْسَ بِهِ وَإِنْ لَمْ يَشْتَرِطْ أَنْ يَخْتَارَ مِنْهُ حِينَ اسْتَثْنَى فَإِنِّي أَرَاهُ شَرِيكًا فِي عَدَدِ الْبَزِّ الَّذِي اشْتُرِيَ مِنْهُ وَذَلِكَ أَنَّ الثَّوْبَيْنِ يَكُونُ رَقْمُهُمَا سَوَاءً وَبَيْنَهُمَا تَفَاوُتٌ فِي الثَّمَنِ.قَالَ مَالِك الْأَمْرُ عِنْدَنَا أَنَّهُ لَا بَأْسَ بِالشِّرْكِ وَالتَّوْلِيَةِ وَالْإِقَالَةِ مِنْهُ فِي الطَّعَامِ وَغَيْرِهِ قَبَضَ ذَلِكَ أَوْ لَمْ يَقْبِضْ إِذَا كَانَ ذَلِكَ بِالنَّقْدِ وَلَمْ يَكُنْ فِيهِ رِبْحٌ وَلَا وَضِيعَةٌ وَلَا تَأْخِيرٌ لِلثَّمَنِ فَإِنْ دَخَلَ ذَلِكَ رِبْحٌ أَوْ وَضِيعَةٌ أَوْ تَأْخِيرٌ مِنْ وَاحِدٍ مِنْهُمَا صَارَ بَيْعًا يُحِلُّهُ مَا يُحِلُّ الْبَيْعَ وَيُحَرِّمُهُ مَا يُحَرِّمُ الْبَيْعَ وَلَيْسَ بِشِرْكٍ وَلَا تَوْلِيَةٍ وَلَا إِقَالَةقَالَ مَالِك مَنْ اشْتَرَى سِلْعَةً بَزًّا أَوْ رَقِيقًا فَبَتَّ بِهِ ثُمَّ سَأَلَهُ رَجُلٌ أَنْ يُشَرِّكَهُ فَفَعَلَ وَنَقَدَا الثَّمَنَ صَاحِبَ السِّلْعَةِ جَمِيعًا ثُمَّ أَدْرَكَ السِّلْعَةَ شَيْءٌ يَنْتَزِعُهَا مِنْ أَيْدِيهِمَا فَإِنَّ الْمُشَرَّكَ يَأْخُذُ مِنْ الَّذِي أَشْرَكَهُ الثَّمَنَ وَيَطْلُبُ الَّذِي أَشْرَكَ بَيِّعَهُ الَّذِي بَاعَهُ السِّلْعَةَ بِالثَّمَنِ كُلِّهِ إِلَّا أَنْ يَشْتَرِطَ الْمُشَرِّكُ عَلَى الَّذِي أَشْرَكَ بِحَضْرَةِ الْبَيْعِ وَعِنْدَ مُبَايَعَةِ الْبَائِعِ الْأَوَّلِ وَقَبْلَ أَنْ يَتَفَاوَتَ ذَلِكَ أَنَّ عُهْدَتَكَ عَلَى الَّذِي ابْتَعْتُ مِنْهُ وَإِنْ تَفَاوَتَ ذَلِكَ وَفَاتَ الْبَائِعَ الْأَوَّلَ فَشَرْطُ الْآخَرِ بَاطِلٌ وَعَلَيْهِ الْعُهْدَةُقَالَ مَالِك فِي الرَّجُلِ يَقُولُ لِلرَّجُلِ اشْتَرِ هَذِهِ السِّلْعَةَ بَيْنِي وَبَيْنَكَ وَانْقُدْ عَنِّي وَأَنَا أَبِيعُهَا لَكَ إِنَّ ذَلِكَ لَا يَصْلُحُ حِينَ قَالَ انْقُدْ عَنِّي وَأَنَا أَبِيعُهَا لَكَ وَإِنَّمَا ذَلِكَ سَلَفٌ يُسْلِفُهُ إِيَّاهُ عَلَى أَنْ يَبِيعَهَا لَهُ وَلَوْ أَنَّ تِلْكَ السِّلْعَةَ هَلَكَتْ أَوْ فَاتَتْ أَخَذَ ذَلِكَ الرَّجُلُ الَّذِي نَقَدَ الثَّمَنَ مِنْ شَرِيكِهِ مَا نَقَدَ عَنْهُ فَهَذَا مِنْ السَّلَفِ الَّذِي يَجُرُّ مَنْفَعَةًاااقَالَ مَالِك وَلَوْ أَنَّ رَجُلًا ابْتَاعَ سِلْعَةً فَوَجَبَتْ لَهُ ثُمَّ قَالَ لَهُ رَجُلٌ أَشْرِكْنِي بِنِصْفِ هَذِهِ السِّلْعَةِ وَأَنَا أَبِيعُهَا لَكَ جَمِيعًا كَانَ ذَلِكَ حَلَالًا لَا بَأْسَ بِهِ وَتَفْسِيرُ ذَلِكَ أَنَّ هَذَا بَيْعٌ جَدِيدٌ بَاعَهُ نِصْفَ السِّلْعَةِ عَلَى أَنْ يَبِيعَ لَهُ النِّصْفَ الْآخَرَ ا.
মালিক (রহঃ) হতে বর্ণিতঃ
এক ব্যক্তি বিভিন্ন জাতের বস্ত্র বিক্রয় করিতেছে, তথা হইতে কয়েকটি বস্ত্র উহাদের চিহ্ন উল্লেখ করে বাদ দিয়ে দিল যদি সেই বর্ণিত চিহ্নের বস্ত্র অন্যান্য বস্ত্র হতে পছন্দ করার শর্ত করে থাকে তবে উহাতে কোন দোষ নাই, আর যদি ঐভাবে পছন্দ করে নির্ধারিত বস্ত্র হতে বস্ত্র লওয়ার বিক্রেতা শর্ত না করে থাকে, ইস্তিস্নার শর্ত করার সময়, তবে আমি মনে করি যে, ক্রেতা যেই বস্ত্র ক্রয় করেছে উহার সংখ্যাতে বিক্রেতা শরীক থাকবে। কারণ অনেক সময় এইরূপ হয় যে, দুটি বস্ত্রের (رقم) [১] নিশান বা চিহ্ন এক কিন্তু উহাদের মূল্যের মধ্যে তফাৎ রয়েছে।মালিক (রহঃ) বলেনঃ খাদ্যদ্রব্য ইত্যাদিতে শরীকানা, তাওলিয়া ও ইকালাতে আমাদের মতে কোন দোষ নাই; উহা আয়ত্তে আনুক বা না আনুক। যদি শরীকানার মূলধন নগদ হয় এবং উহাতে (অতিরিক্ত কিছু না থাকে) পূর্ণ মূল্য হতে কমানো না হয় ও মূল্য পরিশোধে বিলম্ব না করা হয়। তবে যদি শরীকানাতে মূল্য বৃদ্ধি বা মূল্য কমানো কিংবা বিলম্ব করা বিক্রেতা বা ক্রেতার পক্ষ হতে যুক্ত হয়, তবে উহা নূতনরূপে বেচাকেনা বলে গণ্য হবে। যেই আহকাম বেচাকেনাকে হালাল করে ইহাকেও সেই বিধান হালাল করবে, আর যে আহকাম ক্রয়-বিক্রয়কে হারাম করে সেই বিধান ইহাকেও হারাম করবে। ইহা প্রকৃতপক্ষে অংশীদারিত্ব ও তাওলিয়া কিংবা ইকালা নয়।মালিক (রহঃ) বলেনঃ যে ব্যক্তি (যেমন খালিদ) পণ্য ক্রয় করেঃ (বকর হতে) বস্ত্র বা ক্রীতদাস (অথবা অন্য কোন পণ্য) এবং নিশ্চিতরূপে ক্রয় করে (কোন শর্ত উহাতে না থাকে) অতঃপর জনৈক ব্যক্তি (যেমন মাইমুনা) উক্ত পণ্যে তাকে শরীক করার অনুরোধ জানাল।সে (খালিদ) উহাকে (মায়মুনাকে) অংশীদারিত্ব প্রদান করল এবং তারা উভয়ে পণ্যের মালিককে মূল্য নগদ পরিশোধ করল। অতঃপর পণ্যে এমন কোন কারণ উদ্ভব হল যাতে উভয়ের মালিকানা হতে পণ্য বের হয়ে গেল। [২] তবে যে তাকে শরীক করেছিল সেই ব্যক্তি (খালিদ) হতে যাকে পণ্যে শরীক করা হয়েছিল সে (অর্থাৎ মায়মুনা) মূল্য ফেরত নিবে এবং যে পণ্য বিক্রয় করেছে তার নিকট (খালিদের নিকট) মূল্য দাবি করবে। তবে যে ব্যক্তি শরীক করেছে সে (খালিদ) যাকে শরীক করেছে তার নিকট (মায়মুনার নিকট) (প্রথম) বিক্রয়ের সময় এবং প্রথম বিক্রেতার বেচাকেনার সময়, বেচাকেনার মজলিশ পরিবর্তিত হওয়ার পূর্বে যদি এই মর্মে শর্তারোপ করে থাকে, “আপনার দায়িত্ব যার নিকট হতে আপনি ক্রয় করলেন তার [৩] উপর।” পক্ষান্তরে যদি ক্রয়-বিক্রয়ের মজলিশ বদল হয় এবং প্রথম বিক্রেতা (অর্থাৎ বকর) মৃত্যুবরণ করে, তবে ক্রেতা ব্যক্তির (অর্থাৎ খালিদের) শর্ত বাতিল বলে গণ্য হবে এবং যাবতীয় দায়িত্ব তার উপরই ন্যস্ত থাকবে।মালিক (রহঃ) বলেনঃ এক ব্যক্তি অপর ব্যক্তিকে বলল- আপনি এই পণ্য ক্রয় করুন আপনার ও আমার মধ্যে শরীকানায়। আর আমার অংশের মূল্য আপনি নগদ পরিশোধ করুন, আমি আপনার অংশেরও বিক্রয়ের দায়িত্ব গ্রহণ করলাম, ইহা জায়েয নয়। যখন সে বলল, আমার পক্ষ হতে আপনি নগদ মূল্য পরিশোধ করুন আমি আপনার অংশের পণ্য বিক্রয় করে দিব। ইহা হচ্ছে ঋণ যা সে উহাকে সলফস্বরূপ প্রদান করল এই শর্তে যে, সে এই পণ্য তার জন্য বিক্রয় করে দিবে। যদি সেই পণ্য নষ্ট হয়ে যায় অথবা হারিয়ে যায় তবে নগদ মূল্য পরিশোধকারী তার শরীক হতে সেই মূল্য নগদ উশুল করবে, এটাই (অতিরিক্ত) মুনাফা আকর্ষণকারী সলফ বা ঋণ (যা হারাম)।মালিক (রহঃ) বলেনঃ যদি কোন ব্যক্তি কোন পণ্য ক্রয় করেছে এবং উক্ত ক্রয় তার জন্য ওয়াজিব হয়েছে (অর্থাৎ বাধ্যতামূলক হয়েছে) তারপর অন্য এক ব্যক্তি বলল, আমাকে এই পণ্যের অর্ধেকের মধ্যে শরীক কর। আমি উহা পূর্ণ বিক্রয় করে দিব, উহা হালাল হবে। এতে কোন দোষ নেই। এর ব্যাখ্যা এই- এটা একটি নূতন ক্রয়-বিক্রয় বিক্রেতা উহার নিকট অর্ধেক পণ্য এই শর্তে বিক্রয় করেছে যে, ক্রেতা তার অংশের বাকী অর্ধেক পণ্য বিক্রয় করে দিবে।
[১] কাপড়ের উপর লিখিত মূল্য কিংবা উহার জাত।[২] দৃষ্টান্তস্বরূপ বলা যেতে পারে, যেমন উক্ত পণ্যের মালিক অন্য কোন ব্যক্তি বলে প্রমাণিত হল, যাতে পণ্য তাদের মালিকানা ও হাত হতে চলে গেল।[৩] সেই ব্যক্তি হচ্ছে বকর।