পরিচ্ছেদ ২১ :
অগ্রিম টাকা দিয়ে নির্দিষ্ট মেয়াদে হস্তগত করার শর্তে খাদ্যশস্য ক্রয় করা
মুয়াত্তা ইমাম মালিক : ১৩১৬
মুয়াত্তা ইমাম মালিকহাদিস নম্বর ১৩১৬
حَدَّثَنِي يَحْيَى عَنْ مَالِك عَنْ نَافِعٍ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عُمَرَ أَنَّهُ قَالَ: لَا بَأْسَ بِأَنْ يُسَلِّفَ الرَّجُلُ الرَّجُلَ فِي الطَّعَامِ الْمَوْصُوفِ بِسِعْرٍ مَعْلُومٍ إِلَى أَجَل مُسَمًّى مَا لَمْ يَكُنْ فِي زَرْعٍ لَمْ يَبْدُ صَلَاحُهُ أَوْ تَمْرٍ لَمْ يَبْدُ صَلَاحُهُ قَالَ مَالِك الْأَمْرُ عِنْدَنَا فِيمَنْ سَلَّفَ فِي طَعَامٍ بِسِعْرٍ مَعْلُومٍ إِلَى أَجَلٍ مُسَمًّى فَحَلَّ الْأَجَلُ فَلَمْ يَجِدْ الْمُبْتَاعُ عِنْدَ الْبَائِعِ وَفَاءً مِمَّا ابْتَاعَ مِنْهُ فَأَقَالَهُ فَإِنَّهُ لَا يَنْبَغِي لَهُ أَنْ يَأْخُذَ مِنْهُ إِلَّا وَرِقَهُ أَوْ ذَهَبَهُ أَوْ الثَّمَنَ الَّذِي دَفَعَ إِلَيْهِ بِعَيْنِهِ وَإِنَّهُ لَا يَشْتَرِي مِنْهُ بِذَلِكَ الثَّمَنِ شَيْئًا حَتَّى يَقْبِضَهُ مِنْهُ وَذَلِكَ أَنَّهُ إِذَا أَخَذَ غَيْرَ الثَّمَنِ الَّذِي دَفَعَ إِلَيْهِ أَوْ صَرَفَهُ فِي سِلْعَةٍ غَيْرِ الطَّعَامِ الَّذِي ابْتَاعَ مِنْهُ فَهُوَ بَيْعُ الطَّعَامِ قَبْلَ أَنْ يُسْتَوْفَى قَالَ مَالِك وَقَدْ نَهَى رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَنْ بَيْعِ الطَّعَامِ قَبْلَ أَنْ يُسْتَوْفَقَالَ مَالِك فَإِنْ نَدِمَ الْمُشْتَرِي فَقَالَ لِلْبَائِعِ أَقِلْنِي وَأُنْظِرُكَ بِالثَّمَنِ الَّذِي دَفَعْتُ إِلَيْكَ فَإِنَّ ذَلِكَ لَا يَصْلُحُ وَأَهْلُ الْعِلْمِ يَنْهَوْنَ عَنْهُ وَذَلِكَ أَنَّهُ لَمَّا حَلَّ الطَّعَامُ لِلْمُشْتَرِي عَلَى الْبَائِعِ أَخَّرَ عَنْهُ حَقَّهُ عَلَى أَنْ يُقِيلَهُ فَكَانَ ذَلِكَ بَيْعَ الطَّعَامِ إِلَى أَجَلٍ قَبْلَ أَنْ يُسْتَوْفَىقَالَ مَالِك وَتَفْسِيرُ ذَلِكَ أَنَّ الْمُشْتَرِيَ حِينَ حَلَّ الْأَجَلُ وَكَرِهَ الطَّعَامَ أَخَذَ بِهِ دِينَارًا إِلَى أَجَلٍ وَلَيْسَ ذَلِكَ بِالْإِقَالَةِ وَإِنَّمَا الْإِقَالَةُ مَا لَمْ يَزْدَدْ فِيهِ الْبَائِعُ وَلَا الْمُشْتَرِي فَإِذَا وَقَعَتْ فِيهِ الزِّيَادَةُ بِنَسِيئَةٍ إِلَى أَجَلٍ أَوْ بِشَيْءٍ يَزْدَادُهُ أَحَدُهُمَا عَلَى صَاحِبِهِ أَوْ بِشَيْءٍ يَنْتَفِعُ بِهِ أَحَدُهُمَا فَإِنَّ ذَلِكَ لَيْسَ بِالْإِقَالَةِ وَإِنَّمَا تَصِيرُ الْإِقَالَةُ إِذَا فَعَلَا ذَلِكَ بَيْعًا وَإِنَّمَا أُرْخِصَ فِي الْإِقَالَةِ وَالشِّرْكِ وَالتَّوْلِيَةِ مَا لَمْ يَدْخُلْ شَيْئًا مِنْ ذَلِكَ زِيَادَةٌ أَوْ نُقْصَانٌ أَوْ نَظِرَةٌ فَإِنْ دَخَلَ ذَلِكَ زِيَادَةٌ أَوْ نُقْصَانٌ أَوْ نَظِرَةٌ صَارَ بَيْعًا يُحِلُّهُ مَا يُحِلُّ الْبَيْعَ وَيُحَرِّمُهُ مَا يُحَرِّمُ الْبَيْعَقَالَ مَالِك مَنْ سَلَّفَ فِي حِنْطَةٍ شَامِيَّةٍ فَلَا بَأْسَ أَنْ يَأْخُذَ مَحْمُولَةً بَعْدَ مَحِلِّ الْأَجَلِ ىىقَالَ مَالِك وَكَذَلِكَ مَنْ سَلَّفَ فِي صِنْفٍ مِنْ الْأَصْنَافِ فَلَا بَأْسَ أَنْ يَأْخُذَ خَيْرًا مِمَّا سَلَّفَ فِيهِ أَوْ أَدْنَى بَعْدَ مَحِلِّ الْأَجَلِ وَتَفْسِيرُ ذَلِكَ أَنْ يُسَلِّفَ الرَّجُلُ فِي حِنْطَةٍ مَحْمُولَةٍ فَلَا بَأْسَ أَنْ يَأْخُذَ شَعِيرًا أَوْ شَامِيَّةً وَإِنْ سَلَّفَ فِي تَمْرٍ عَجْوَةٍ فَلَا بَأْسَ أَنْ يَأْخُذَ صَيْحَانِيًّا أَوْ جَمْعًا وَإِنْ سَلَّفَ فِي زَبِيبٍ أَحْمَرَ فَلَا بَأْسَ أَنْ يَأْخُذَ أَسْوَدَ إِذَا كَانَ ذَلِكَ كُلُّهُ بَعْدَ مَحِلِّ الْأَجَلِ إِذَا كَانَتْ مَكِيلَةُ ذَلِكَ سَوَاءً بِمِثْلِ كَيْلِ مَا سَلَّفَ فِيْهِ ىى.
আবদুল্লাহ ইবনু উমার (রাঃ) হতে বর্ণিতঃ
এক ব্যক্তি আর এক ব্যক্তিকে (অর্থাৎ ক্রেতা বিক্রেতাকে) নির্দিষ্ট খাদ্যদ্রব্য নির্দিষ্ট মূল্যে ও নির্দিষ্ট মেয়াদে অগ্রিম মূল্য আদায় করলে কোন দোষ নেই এই শর্তে যে, খেজুর ও শস্য যেন অপরিপুষ্ট না হয়। (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন)মালিক (রহঃ) বলেনঃ আমাদের নিকট মাসআলা এই, যে ব্যক্তি ধার্যকৃত মূল্যে নির্ধারিত সময়ে খাদ্যশস্যে সলফ [১] করল, তারপর নির্ধারিত সময় উপস্থিত হল। কিন্তু বিক্রেতার নিকট হতে যা ক্রয় করা হয়েছিল ক্রেতা তার নিকট উহা পূর্ণরূপে পায়নি। তাই সে সলফ বাতিল করতে মনস্থ করল। (এইরূপ হলে) তার (ক্রেতার) পক্ষে বিক্রেতা হতে চাঁদি বা স্বর্ণ কিংবা যে মূল্য উহাকে আদায় করেছে অবিকল তা ছাড়া অন্য কিছু গ্রহণ করা জায়েয হবে না।সে হস্তগত করার পূর্বে সেই মূল্যের বিনিময়ে অন্য কোন দ্রব্য তা হতে ক্রয় করবে না। কারণ সে যেই মূল্য উহাকে প্রদান করেছে তা ছাড়া যদি অন্য কিছু গ্রহণ করে অথবা খাদ্যদ্রব্য ছাড়া অন্য কোন বস্তুতে উহা ব্যয় করে, তবে খাদ্যদ্রব্য পূর্ণ হস্তগত করার পূর্বে বিক্রয় করা হবে (যা বৈধ নয়)।মালিক (রহঃ) বলেনঃ রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম পূর্ণরূপে হস্তগত করার পূর্বে খাদ্যদ্রব্য বিক্রয় করতে নিষেধ করেছেন।মালিক (রহঃ) বলেনঃ যদি ক্রেতা (মাল ক্রয় করার পর) লজ্জিত হয় এবং বিক্রেতাকে বলে এই (সলফ বিক্রয়) বাতিল করে দিন। আমি যে মূল্য আপনাকে দিয়েছি সেই মূল্য আদায়ের ব্যাপারে সময় প্রদান করব (অর্থাৎ বিলম্বে নিব)- এটা জায়েয হবে না। আলিমগণ এইরূপ করতে নিষেধ করেন। কারণ এই যে, যখন বিক্রেতার নিকট প্রাপ্ত খাদ্যদ্রব্য ক্রেতাকে দেওয়ার সময় উপস্থিত হয়েছে, তখন ক্রেতা তার (অগ্রিম দেয়া) হোক (মূল্য আদায় করাকে) এই শর্তে পিছিয়ে দিল যে বিক্রেতা এই বিক্রয় বাতিল করিয়ে দিবে। টো হল খাদ্যশস্য পূর্ণরূপে হস্তগত করার পূর্বে উহাকে ধারে বিক্রয় করা (যা অবৈধ)।মালিক (রহঃ) বলেনঃ এর ব্যাখ্যা এই, যখন (ক্রয়কৃত শস্য) ক্রেতার নিকট অর্পণ করার নির্ধারিত সময় উপস্থিত হল, ক্রেতা খাদ্যশস্য অপছন্দ করল। তাই তিনি (বিক্রয় ফেরত চাইলেন) [সলম বিক্রয়ে যে খাদ্যদ্রব্য দেয়ার কথা ছিল] সেই খাদ্যদ্রব্যের বিনিময়ে দীনার ধারে গ্রহণ করলেন। এটা [আসলে কিন্তু] ইকালা [বিক্রয় ফেরত দেয়া] নয়। ইকালা তখন হয় যখন ক্রেতা বিক্রেতা কেউ এতে কোন কিছু বৃদ্ধি না করে। যখন উহাতে কিছু বর্ধিত করা হল, মূল্য আদায়ে নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত বিলম্ব করার সুযোগ প্রদান করে কিংবা অন্য কোন (টাকা-পয়সার মতো) বস্তু একে অপরের উপর বর্ধিত করে অথবা অন্য এমন কোন বস্তু বর্ধিত করে যদ্বারা (ক্রেতা-বিক্রেতা) উভয়ের একজন উপকৃত হয় তবে উহা ইকালা নয়।ইকালা হয় (কখন) যখন পূর্বে তারা উভয়ে বিনাশর্তে বেচাকেনা করে থাকে। ইকালা, শরীকানা এবং তওলিয়ত (খরিদ দামে) বিক্রয়কারী-এর অনুমতি দেয়া হয়েছে যাবত সেইসবে বর্ধন, কমকরণ কিংবা সময় প্রদান ইত্যাদি প্রবিষ্ট করান না হয়। যদি বর্ধন লোকসানকরণ, মেয়াদ বর্ধিতকরণ (ইত্যাদি) সেই সবে প্রবিষ্ট হয়, তবে উহা হবে (নূতনভাবে) বেচাকেনা, একে জায়েয করবে যা ক্রয়-বিক্রয়কে জায়েয করে থাকে এবং একে হারাম করবে যা ক্রয়-বিক্রয়কে হারাম করে দেয়।মালিক (রহঃ) বলেনঃ যে ব্যক্তি সলফে সিরীয় গম ক্রয় করেছে (গম গ্রহণ করার) নির্ধারিত সময় আসার পর (তৎপরিবর্তে) ছোট দানার গম (মাহমুলা) গ্রহণ করতে কোন দোষ নেই। মালিক (রহঃ) বলেন- অনুরূপ যে ব্যক্তি বিশেষ রকমের বস্তুতে সলফ করেছে, নির্ধারিত মেয়াদ উপস্থিত হওয়ার পর তার পক্ষে সেই বিশেষ রকমের বস্তু হতে উত্তম কিংবা নিকৃষ্ট বস্তু গ্রহণ করতে কোন দোষ নেই। এর ব্যাখ্যা এইরূপ যেমন কোন ব্যক্তি মাহমুলা গম সলফে ক্রয়-করেছে, (উহা হতে নিকৃষ্ট শস্য) সব কিংবা (উৎকৃষ্ট শস্য) সিরীয় গম গ্রহণ করতে কোন দোষ নেই। আর যদি কেউ সলফ মারফত ‘আজওয়াহ খেজুর ক্রয় করে, তার পক্ষে (উহা হতে উত্তম খেজুর) সায়হানী কিংবা নিকৃষ্ট খেজুর জমা‘ গ্রহণ করাতে কোন দোষ নেই। আর যদি লাল কিশমিশ সলফ মারফত ক্রয় করেছে, তবে (উহার পরিবর্তে) কালো কিশমিশ গ্রহণ করাতে কোন দোষ নেই। যদি এইসব নির্ধারিত মেয়াদ উপস্থিত হওয়ার পর হয়ে থাকে। [সলফ মারফত ক্রয়কৃত দ্রব্যের পরিবর্তে যে দ্রব্য ক্রেতা গ্রহণ করেছে] যদি তা সলফ মারফত ক্রয়কৃত দ্রব্যের পরিমাপে সমান হতে হবে।
[১] সলফ: ফসল কাটার পূর্বে অথবা পরে কৃষক বা ফল গাছের বাগানের মালিককে পঞ্চাশটি টাকা দেওয়া হল। কথা রইল, অমুক মাসের অমুক তারিখে সে ক্রেতাকে এক মণ মাঝারি ধরনের সাদা গম অথবা এক সা’ ‘আজওয়াহ খেজুর দিবে। এইরূপ বিক্রয় দুরস্ত আছে একে বলা হয় সলম বিক্রি বা সলফ বিক্রি। যেই দরে সাব্যস্ত হয়েছে সেই দরে যেই মাসের যেই তারিখে খেজুর বা গম দেয়ার কথা সে মাসের সে তারিখে গম বা খেজুর ক্রেতার নিকট সোপর্দ করতে হবে।ক. সলফ বিক্রয়ে বিক্রিত দ্রব্যের গুণাগুণের বর্ননা থাকতে হবে। পরিমাপ ঠিক করতে হবে। মূল্য নগদ মাল বাকী হতে হবে, ক্রেতার নিকট মাল সোপর্দ করার সময় নির্ধারিত হতে হবে। নির্ধারিত সময়ে সেই মাল মওজুদ থাকতে হবে। - আওজাযুল মাসালিক