৯৭/৫৬. অধ্যায়ঃ
আল্লাহর বাণীঃ আল্লাহ্ই সৃষ্টি করেছেন তোমাদেরকে আর তোমরা যা তৈরী কর সেগুলোকেও- (সূরা আস সফ্ফাত ৩৭/৯৬)। আমি সব কিছু সৃষ্টি করেছি নির্ধারিত পরিমাপে। (সূরা আল ক্বামার ৫৪/৪৯)।
ছবি নির্মাতাদের বলা হবে, তোমরা যা তৈরি করেছ, তাতে জীবন দাও। তোমাদের প্রতিপালক আল্লাহ্ যিনি ছয় দিনে আকাশমন্ডলী ও পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন , অতঃপর আরশে সমুন্নত হয়েছেন। দিনকে তিনি রাতের পর্দা দিয়ে ঢেকে দেন, তারা একে অন্যকে দ্রুতগতিতে অনুসরণ করে এবং সূর্য, চন্দ্র, তারকারাজি তাঁরই আজ্ঞাবহ। জেনে রেখ, সৃষ্টি তাঁর, হুকুমও (চলবে) তাঁর, মহীয়ান, গরীয়ান আল্লাহ্ বিশ্বজগতের প্রতিপালক। (সূরা আল-আরাফ ৭/৫৪)।ইবনু ‘উয়াইনাহ (রহঃ) বলেন, আল্লাহ্ সৃষ্টিকে হুকুম থেকে পৃথক করে বর্ণনা করেছেন। কেননা তার বাণী হলোঃ ........................ জেনে রাখ সৃষ্টি ও হুকুম তাঁরই। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ঈমানকেও ‘আমল বলে উল্লেখ করেছেন। আবূ যার (রহঃ) ও আবূ হুরায়রা (রাঃ) বর্ণনা করেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে জিজ্ঞেস করা হল, কোন ‘আমলটি সর্বোত্তম? তিনি বললেনঃ আল্লাহ্র প্রতি ঈমান আনা, তাঁর পথে জিহাদ করা। মহান আল্লাহ্ বলেনঃ ............... এটা তাদের কাজেরই প্রতিদান। আবদুল কায়সের প্রতিনিধি দল নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর কাছে এসে বললেন, আমাদের কিছু সংক্ষিপ্ত বিষয়ের নির্দেশ দিন , যেগুলো মেনে চললে আমরা জান্নাতে প্রবেশ করতে পারব। তিনি তাদের আল্লাহর প্রতি ঈমান আনা,রাসুলের রিসালাতের সাক্ষ্য প্রদান, সালাত কায়িম করা এবং যাকাত আদায়ের হুকুম দিলেন। এ সবকেই তিনি ‘আমলরূপে উল্লেখ করেছেন।
সহিহ বুখারী : ৭৫৫৫
সহিহ বুখারীহাদিস নম্বর ৭৫৫৫
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عَبْدِ الْوَهَّابِ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَهَّابِ، حَدَّثَنَا أَيُّوبُ، عَنْ أَبِي قِلاَبَةَ، وَالْقَاسِمِ التَّمِيمِيِّ، عَنْ زَهْدَمٍ، قَالَ كَانَ بَيْنَ هَذَا الْحَىِّ مِنْ جُرْمٍ وَبَيْنَ الأَشْعَرِيِّينَ وُدٌّ وَإِخَاءٌ، فَكُنَّا عِنْدَ أَبِي مُوسَى الأَشْعَرِيِّ فَقُرِّبَ إِلَيْهِ الطَّعَامُ فِيهِ لَحْمُ دَجَاجٍ، وَعِنْدَهُ رَجُلٌ مِنْ بَنِي تَيْمِ اللَّهِ كَأَنَّهُ مِنَ الْمَوَالِي، فَدَعَاهُ إِلَيْهِ فَقَالَ إِنِّي رَأَيْتُهُ يَأْكُلُ شَيْئًا فَقَذِرْتُهُ، فَحَلَفْتُ لاَ آكُلُهُ. فَقَالَ هَلُمَّ فَلأُحَدِّثْكَ عَنْ ذَاكَ، إِنِّي أَتَيْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم فِي نَفَرٍ مِنَ الأَشْعَرِيِّينَ نَسْتَحْمِلُهُ قَالَ " وَاللَّهِ لاَ أَحْمِلُكُمْ وَمَا عِنْدِي مَا أَحْمِلُكُمْ ". فَأُتِيَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم بِنَهْبِ إِبِلٍ فَسَأَلَ عَنَّا فَقَالَ " أَيْنَ النَّفَرُ الأَشْعَرِيُّونَ ". فَأَمَرَ لَنَا بِخَمْسِ ذَوْدٍ غُرِّ الذُّرَى، ثُمَّ انْطَلَقْنَا قُلْنَا مَا صَنَعْنَا حَلَفَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم لاَ يَحْمِلُنَا، وَمَا عِنْدَهُ مَا يَحْمِلُنَا، ثُمَّ حَمَلَنَا، تَغَفَّلْنَا رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَمِينَهُ، وَاللَّهِ لاَ نُفْلِحُ أَبَدًا، فَرَجَعْنَا إِلَيْهِ فَقُلْنَا لَهُ فَقَالَ " لَسْتُ أَنَا أَحْمِلُكُمْ، وَلَكِنَّ اللَّهَ حَمَلَكُمْ، إِنِّي وَاللَّهِ لاَ أَحْلِفُ عَلَى يَمِينٍ فَأَرَى غَيْرَهَا خَيْرًا مِنْهَا، إِلاَّ أَتَيْتُ الَّذِي هُوَ خَيْرٌ مِنْهُ، وَتَحَلَّلْتُهَا ".
যাহদাম (রাঃ) হতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, জারমের এ কাওমটির সঙ্গে আশ’আরী কাওমের গভীর ভালবাসা ও ভ্রাতৃভাব ছিল। এক সময় আমরা আবু মুসা আশ’আরী (রাঃ) এর কাছে ছিলাম। তাঁর কাছে খাদ্য আনা হল। এতে মুরগীর গোশতও ছিল। এ সময় তাঁর নিকট বানী তায়মুল্লাহ্র এক লোক ছিল। সে (দেখতে) যেন আযাদকৃত গোলাম। তাকেও আবূ মুসা (রাঃ) খেতে ডাকলেন। সে বলল, আমি এ মুরগীকে এমন কিছু জিনিস খেতে দেখেছি, যার ফলে এটি খেতে আমি খেতে ঘৃনা করি। এ জন্য শপথ করেছি, আমি তা খাব না। আবূ মুসা (রাঃ) বললেন, তুমি এদিকে এসো, এ ব্যাপারে আমি তোমাকে একটি হাদীস শোনাব। আমি এক সময় আশ’আরী কওমের একটি প্রতিনিধি দলের সাথে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর কাছে বাহন চাওয়ার জন্য গেলাম। তিনি বললেন, আল্লাহর শপথ! আমি তোমাদের বাহন দেব না। আর তোমাদের দেয়ার মত আমার কাছে বাহন নেই। তারপর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর কাছে গনীমতের কিছু উট আনা হলে তিনি আমাদের সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলেন এবং বললেন, আশ’আরীদের দলটি কোথায়? তারপর তিনি পাঁচটি মোজা তাজা ও উৎকৃষ্ট উট আমাদের দেয়ার জন্য হুকুম করলেন। আমরা এগুলো নিয়ে রওনা দেয়ার সময় বললাম, আমরা কী কর্মটি করলাম! নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) শপথ করে বললেন, আমাদের বাহন দেবেন না এবং তাঁর কাছে দেয়ার মত বাহন নেই। তারপরও তো তিনি আমাদের বাহন দিয়ে দিলেন। হয়ত আমরা তাঁকে তাঁর শপথ সম্পর্কে বেখেয়াল করে দিয়েছি। আল্লাহর শপথ! আমরা কক্ষনো সফলকাম হবো না। তাই আমরা তাঁর কাছে আবার গেলাম এবং তা তাঁকে বললাম। তিনি বললেনঃ আমি তোমাদেরকে বাহন দেইনি, বরং দিয়েছেন আল্লাহ্ ! আল্লাহর শপথ! আমি কোন বিষয়ে শপথ করি আর যদি তার বিপরীতে কল্যাণ দেখতে পাই, তবে তাতেই ফিরে আসি এবং (কাফ্ফারা আদায় করে) তা বৈধ করে নেই। (আধুনিক প্রকাশনী- ৭০৩৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৭০৪৫)