৮৬/১২. অধ্যায়ঃ
বাদশাহ্র নিকট যখন মামলা পেশ করা হয় তখন শারী’আতের শাস্তি দেয়ার বেলায় সুপারিশ করা অনুচিত।
সহিহ বুখারী : ৬৭৮৮
সহিহ বুখারীহাদিস নম্বর ৬৭৮৮
سَعِيدُ بْنُ سُلَيْمَانَ حَدَّثَنَا اللَّيْثُ عَنْ ابْنِ شِهَابٍ عَنْ عُرْوَةَ عَنْ عَائِشَةَ أَنَّ قُرَيْشًا أَهَمَّتْهُمْ الْمَرْأَةُ الْمَخْزُومِيَّةُ الَّتِي سَرَقَتْ فَقَالُوا مَنْ يُكَلِّمُ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَمَنْ يَجْتَرِئُ عَلَيْهِ إِلاَّ أُسَامَةُ بْنُ زَيْدٍ حِبُّ رَسُولِ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَكَلَّمَ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ أَتَشْفَعُ فِي حَدٍّ مِنْ حُدُودِ اللهِ ثُمَّ قَامَ فَخَطَبَ قَالَ يَا أَيُّهَا النَّاسُ إِنَّمَا ضَلَّ مَنْ قَبْلَكُمْ أَنَّهُمْ كَانُوا إِذَا سَرَقَ الشَّرِيفُ تَرَكُوهُ وَإِذَا سَرَقَ الضَّعِيفُ فِيهِمْ أَقَامُوا عَلَيْهِ الْحَدَّ وَايْمُ اللهِ لَوْ أَنَّ فَاطِمَةَ بِنْتَ مُحَمَّدٍ صلى الله عليه وسلم سَرَقَتْ لَقَطَعَ مُحَمَّدٌ يَدَهَا.
আয়িশা (রাঃ) হতে বর্ণিতঃ
মাখযুমী গোত্রের এক মহিলার ব্যাপারে কুরাইশ বংশের লোকদের খুব দুশ্চিন্তায় ফেলে দিয়েছিল যে চুরি করেছিল। সাহাবাগণ বললেন, রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) - এর সঙ্গে কে কথা বলতে পারবে? আর রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) - এর প্রিয় জন উসামাহ (রাঃ) ছাড়া এটা কেউ করতে পারবে না। তখন উসামাহ (রাঃ) রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) - এর সঙ্গে কথা বললেন। এতে তিনি বললেনঃ তুমি আল্লাহ্র শাস্তির বিধানের ব্যাপারে সুপারিশ করছ? এরপর তিনি দাঁড়িয়ে খুৎবাহ দিলেন এবং বললেনঃ হে মানবমন্ডলী! নিশ্চয়ই তোমাদের আগের লোকেরা গুমরাহ হয়ে গিয়েছে। কারণ, কোন সম্মানী ব্যক্তি যখন চুরি করত তখন তারা তাকে ছেড়ে দিত। আর যখন কোন দুর্বল লোক চুরি করত তখন তার উপর শরীয়াতের শাস্তি কায়েম করত। আল্লাহ্র কসম! মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) - এর কন্যা ফাতিমাও যদি চুরি করে তবে অবশ্যই মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর হাত কেটে দেবে। [১০১](আধুনিক প্রকাশনী- ৬৩১৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৩৩১)
[১০১] মাখযূমী মহিলাটির পরিচয়ঃ তিনি হচ্ছেন ফাতিমা বিনতে আসাদ বিন আব্দুল আসাদ বিন আব্দুল্লাহ বিন আমর বিন মাখযূম। সে উম্মু সালামার পূর্ব স্বামী আবূ সালামার ভাইয়ের মেয়ে।হাদীসটি হতে জানা যায়ঃ(১) বিচারকের একই বিষয়ের ফায়সালায় দ্বৈত নীতি অবলম্বনের ব্যাপারে ভীতি প্রদর্শন।(২) হুদূদ বা দন্ডের ব্যাপারে সুপারিশ নিষিদ্ধ।(৩) শাসকের কাছে বিচার পৌঁছলে তার দায়িত্ব ও কর্তব্য হল হাদ্দ কায়েম করা।(৪) চোরের তাওবা কবুল হওয়া।(৫) চুরির হাদ্দ বা শাস্তির ক্ষেত্রে পুরুষ-মহিলার একই বিধান।(৬) উসামা (রাঃ) এর মহান বৈশিষ্ট্য।(৭) রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- এর নিকট ফাতেমার (রাঃ) সুঊচ্চ মর্যাদা।(৮) হাদ্দ বা দন্ড কায়েমের পরে দন্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তির জন্য কষ্ট অনুভব করা জায়েয।(৯) পূর্ববর্তী জাতির পরিস্থিতি থেকে শিক্ষা নেয়া, বিশেষ করে যারা শার’য়ী বিধান লঙ্ঘন বা অমান্য করেছিল।(১০) হাদ্দ বা দণ্ড অপরিহার্য হয়ে পড়েছে এমন ব্যক্তির উপর হাদ্দ কায়েমের ক্ষেত্রে পক্ষপাতিত্ব পরিহার করা, যদিও সে তার ছেলে অথবা নিকটাত্নীয় অথবা মর্যাদাবান ব্যক্তি হোক না কেন।(১১) হাদ্দ কায়েমের ব্যাপারে খুব জোর দেয়া এবং যারা এ ব্যাপারে নমনীয় তাদের প্রত্যাখান করা।(১২) হাদ্দ অপরিহার্য হয়ে পড়েছে এমন ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে সুপারিশের জন্য যারা হস্তক্ষেপ করে তাদেরও প্রত্যাখান করা। (ফাতহুল বারী)