৬৮/১১. অধ্যায়ঃ

বাধ্য হয়ে, মাতাল ও পাগল অবস্থায় ত্বলাক্ব দেয়া আর এ দু‘য়ের বিধান সম্বন্ধে। ভূলবশতঃ ত্বলাক্ব দেয়া এবং শির্‌ক ইত্যাদি সম্বন্ধে। (এসব নিয়্যাতের উপর নির্ভরশীল)।

কেননা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ প্রতিটি কাজ নিয়্যাত অনুযায়ী গণ্য হয়। প্রত্যেক তা-ই পায়, যার সে নিয়্যাত করে। শা‘বী (রহঃ) পাঠ করেনঃ “হে আমাদের প্রতিপালক! আমরা যদি ভুলে যাই কিংবা ভুল করি, তাহলে আমাদেরকে পাকড়াও করো না।” (সূরাহ আল-বাকারাহ ২ : ২৮৬) ওয়াসওয়াসা সম্পন্ন ব্যক্তি স্বীকার করলে যা জায়িয হয় না।স্বীয় ব্যভিচারের কথা স্বীকারকারী এক ব্যক্তিকে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছিলেনঃ তুমি কি পাগল হয়েছ? ‘আলী (রাঃ) বলেন, হামযাহ (রাঃ) আমার দু‘টি উটনীর পার্শ্বদেশ ফেড়ে ফেললে, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হামযাকে তিরস্কার করতে থাকেন। হঠাৎ দেখা গেল নেশার ঘোরে হামযাহর চক্ষু দুটি লাল হয়ে গেছে। এরপর হামযাহ বললেন, তোমরা তো আমার বাবার গোলাম ব্যতীত নও। তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বুঝতে পারলেন, তিনি নিশাগ্রস্ত হয়েছেন। তিনি সেখান থেকে বেরিয়ে এলেন আমরাও তাঁর সঙ্গে বেরিয়ে এলাম। ‘উসমান (রাঃ) বলেন, পাগল ও নেশাগ্রস্ত ব্যক্তির ত্বলাক্ব জায়িয নয়। ‘উক্‌বাহ ইবনু 'আমির (রাঃ) বলেন, ওয়াসওয়াসা সম্পন্ন (সন্দেহের বাতিকগ্রস্ত) ব্যক্তির ত্বলাক্ব কার্যকর হয় না। ইবনু আব্বাস (রাঃ) বলেন, মাতাল ও বাধ্যকৃতের ত্বলাক্ব অবৈধ। ‘আত্বা (রহঃ) বলেনঃ শর্ত যুক্ত করে ত্বলাক্ব দিলে শর্ত পূরণের পরই ত্বলাক্ব হবে। নাফি (রহঃ) জিজ্ঞেস করলেন, ঘর থেকে বের হওয়ার শর্তে স্বীয় স্ত্রীকে জনৈক ব্যক্তি তিন ত্বলাক্ব দিল-(এর হুকুম কী?)। ইব্‌নু ‘উমার (রহঃ) বললেনঃ যদি সে মহিলা ঘর থেকে বের হয়, তাহলে সে তিন ত্বলাক্বপ্রাপ্তা হবে। আর যদি বের না হয়, তাহলে কিছুই হবেনা। যুহরী (রহঃ) বলেন, যে ব্যক্তি বললঃ যদি আমি এরূপ না করি, তবে আমার স্ত্রীর প্রতি তিন ত্বলাক্ব প্রযোজ্য হবে। তার সম্বন্ধে যুহরী (রহঃ) বলেন, উক্ত ব্যক্তিকে জিজ্ঞেস করা হবে, শপথকালে তার ইচ্ছা কী ছিল? যদি সে ইচ্ছে করে মেয়াদ নির্ধারণ করে থাকে এবং শপথকালে তার এ ধরণের নিয়্যাত থাকে, তাহলে এ বিষয়কে তার দ্বীন ও আমানতের উপর ন্যস্ত করা হবে। ইবরাহীম (রহঃ) বলেন, যদি সে বলে, “তোমাকে আমার কোন প্রয়োজন নেই”; তবে তার নিয়্যাত অনুসারে কাজ হবে। আর প্রত্যেক সম্প্রদায়ের লোক তাদের নিজস্ব ভাষায় ত্বলাক্ব দিতে পারে। ক্বাতাদাহ (রহঃ) বলেনঃ যদি কেউ বলে তুমি গর্ভবতী হলে, তোমার প্রতি তিন ত্বলাক্ব। তাহলে সে প্রতি তুহরে স্ত্রীর সঙ্গে একবার সহবাস করবে। যখনই গর্ভ প্রকাশিত হবে, তখনি সে স্বামী থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে। হাসান (রহঃ) বলেন, যদি কেউ বলে, “তুমি তোমার পরিবারের কাছে চলে যাও”, তবে তার নিয়্যাত অনুসারে ফায়সালা হবে। ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) বলেনঃ প্রয়োজনের তাগিদে ত্বলাক্ব দেয়া হয়। আর দাসমুক্তি আল্লাহ্‌র সন্তুষ্টির উদ্দেশ্য থাকলেই করা যায়। যুহরী (রহঃ) বলেন, যদি কেউ বলেঃ তুমি আমার স্ত্রী নও, তবে ত্বলাক্ব হওয়া না হওয়া নিয়্যাতের উপর নির্ভর করবে। যদি সে ত্বলাক্বের নিয়্যাত করে থাকে, তবে তাই হবে। ‘আলী (রাঃ) [উমার (রাঃ)- কে সম্বোধন করে] বলেনঃ আপনি কি জানেন না যে, তিন প্রকারের লোক থেকে কসম তুলে নেয়া হয়েছে। এক, পাগল ব্যক্তি, যতক্ষণ না সে জ্ঞান ফিরে পায়; দুই, শিশু যতক্ষণ না সে বয়ঃপ্রাপ্ত হয়; তিন, ঘুমন্ত ব্যক্তি যতক্ষন না সে জেগে উঠে। ‘আলী (রাঃ) (আরও) বলেনঃ পাগল ব্যতীত সকলের ত্বলাক্ব কার্যকর হয়।

সহিহ বুখারীহাদিস নম্বর ৫২৭১

أَبُو الْيَمَانِ أَخْبَرَنَا شُعَيْبٌ عَنْ الزُّهْرِيِّ قَالَ أَخْبَرَنِي أَبُو سَلَمَةَ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمٰنِ وَسَعِيدُ بْنُ الْمُسَيَّبِ أَنَّ أَبَا هُرَيْرَةَ قَالَ أَتٰى رَجُلٌ مِنْ أَسْلَمَ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَهُوَ فِي الْمَسْجِدِ فَنَادَاه“ فَقَالَ يَا رَسُوْلَ اللهِ إِنَّ الأَخِرَ قَدْ زَنٰى يَعْنِي نَفْسَه“ فَأَعْرَضَ عَنْه“ فَتَنَحّٰى لِشِقِّ وَجْهِهِ الَّذِي أَعْرَضَ قِبَلَه“ فَقَالَ يَا رَسُوْلَ اللهِ إِنَّ الأَخِرَ قَدْ زَنٰى فَأَعْرَضَ عَنْه“ فَتَنَحّٰى لِشِقِّ وَجْهِهِ الَّذِي أَعْرَضَ قِبَلَه“ فَقَالَ لَه“ ذ‘لِكَ فَأَعْرَضَ عَنْه“ فَتَنَحّٰى لَهُ الرَّابِعَةَ فَلَمَّا شَهِدَ عَلٰى نَفْسِه„ أَرْبَعَ شَهَادَاتٍ دَعَاه“ فَقَالَ هَلْ بِكَ جُنُونٌ قَالَ لاَ فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم اذْهَبُوا بِه„ فَارْجُمُوه“ وَكَانَ قَدْ أُحْصِنَ.

আবূ হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আসলাম গোত্রের এক ব্যক্তি রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- এর নিকট এল, তখন তিনি মসজিদে ছিলেন। লোকটি তাঁকে ডেকে বলল, হে আল্লাহ্‌র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! হতভাগা ব্যভিচার করেছে। সে এ কথা দিয়ে নিজেকে বোঝাতে চাইল। রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তার থেকে মুখ ফিরিয়ে নিলেন। তিনি যেদিকে ফিরলেন সে সেদিকে গিয়ে আবার বলল, হে আল্লাহ্‌র রসূল! হতভাগা ব্যভিচার করেছে। তিনি মুখ ফিরিয়ে নিলেন। অতঃপর সেও সে দিকে গেল যে দিকে তিনি মুখ ফিরালেন এবং আবার সে কথা বলল। তিনি চতুর্থবার মুখ ফিরিয়ে নিলে সেও সেদিকে গেল। যখন সে নিজের ব্যাপারে চারবার সাক্ষী দিল, তখন রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে ডেকে বললেনঃ তুমি কি পাগল হয়েছ? সে বলল, না। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ তাকে নিয়ে যাও এবং রজম কর। লোকটি ছিল বিবাহিত। [৬৮১৫, ৬৮২৫, ৭১৬৭; মুসলিম ২৯/৫, হাঃ ১৬৯১, আহমাদ ১৪৪৬৯] আধুনিক প্রকাশনী- ৪৮৮৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭৮০)

সেটিংস

ফন্ট সেটিংস

আরবি ফন্ট ফেস

আরবি ফন্ট সাইজ

২৪

অনুবাদ ফন্ট সাইজ

১৮

আল হাদিস অ্যাপ ডাউনলোড করুন

App Banner

ইসলামের জ্ঞান প্রচারে সহায়ক হোন

আপনার নিয়মিত সহায়তা আমাদের দ্বীনি ভাই-বোনের কাছে ইসলামের দাওয়াত পৌঁছাতে সাহয্য করবে। আমাদের মিশনে আপনিও অংশ নিন এবং বড় পরিবর্তনের অংশীদার হোন।

সাপোর্ট করুন