৬৫/১৮/২.অধ্যায়ঃ
পরিচ্ছেদ নাই।
وَإِذْ قَالَ مُوْسٰى لِفَتَاهُ لَا أَبْرَحُ حَتّٰىٓ أَبْلُغَ مَجْمَعَ الْبَحْرَيْنِ أَوْ أَمْضِيَ حُقُبًا} زَمَانًا وَجَمْعُهُ أَحْقَابٌ.আল্লাহ্ তা‘আলার বাণীঃ স্মরণ কর, যখন মূসা স্বীয় যুবক সঙ্গীকে বলেছিলেনঃ আমি অবিরত চলতে থাকব যে পর্যন্ত না দুই সাগরের মিলনস্থলে পৌঁছি, অথবা এভাবে আমি দীর্ঘকাল চলতে থাকব। (সূরাহ কাহাফ ১৮/৬০)حُقُبًا অর্থ যুগ, তার বহুবচন أَحْقَابٌ।
সহিহ বুখারী : ৪৭২৫
সহিহ বুখারীহাদিস নম্বর ৪৭২৫
الْحُمَيْدِيُّ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ حَدَّثَنَا عَمْرُوْ بْنُ دِيْنَارٍ قَالَ أَخْبَرَنِيْ سَعِيْدُ بْنُ جُبَيْرٍ قَالَ قُلْتُ لِابْنِ عَبَّاسٍ إِنَّ نَوْفًا الْبِكَالِيَّ يَزْعُمُ أَنَّ مُوْسَى صَاحِبَ الْخَضِرِ لَيْسَ هُوَ مُوْسَى صَاحِبَ بَنِيْ إِسْرَائِيْلَ فَقَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ كَذَبَ عَدُوُّ اللهِ حَدَّثَنِيْ أُبَيُّ بْنُ كَعْبٍ أَنَّهُ سَمِعَ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم يَقُوْلُ إِنَّ مُوْسَى قَامَ خَطِيْبًا فِيْ بَنِيْ إِسْرَائِيْلَ فَسُئِلَ أَيُّ النَّاسِ أَعْلَمُ فَقَالَ أَنَا فَعَتَبَ اللهُ عَلَيْهِ إِذْ لَمْ يَرُدَّ الْعِلْمَ إِلَيْهِ فَأَوْحَى اللهُ إِلَيْهِ إِنَّ لِيْ عَبْدًا بِمَجْمَعِ الْبَحْرَيْنِ هُوَ أَعْلَمُ مِنْكَ قَالَ مُوْسَى يَا رَبِّ فَكَيْفَ لِيْ بِهِ قَالَ تَأْخُذُ مَعَكَ حُوْتًا فَتَجْعَلُهُ فِيْ مِكْتَلٍ فَحَيْثُمَا فَقَدْتَ الْحُوْتَ فَهُوَ ثَمَّ فَأَخَذَ حُوْتًا فَجَعَلَهُ فِيْ مِكْتَلٍ ثُمَّ انْطَلَقَ وَانْطَلَقَ مَعَهُ بِفَتَاهُ يُوْشَعَ بْنِ نُوْنٍ حَتَّى إِذَا أَتَيَا الصَّخْرَةَ وَضَعَا رُءُوْسَهُمَا فَنَامَا وَاضْطَرَبَ الْحُوْتُ فِي الْمِكْتَلِ فَخَرَجَ مِنْهُ فَسَقَطَ فِي الْبَحْرِ فَاتَّخَذَ سَبِيْلَهُ فِي الْبَحْرِ سَرَبًا وَأَمْسَكَ اللهُ عَنِ الْحُوْتِ جِرْيَةَ الْمَاءِ فَصَارَ عَلَيْهِ مِثْلَ الطَّاقِ فَلَمَّا اسْتَيْقَظَ نَسِيَ صَاحِبُهُ أَنْ يُخْبِرَهُ بِالْحُوْتِ فَانْطَلَقَا بَقِيَّةَ يَوْمِهِمَا وَلَيْلَتَهُمَا حَتَّى إِذَا كَانَ مِنَ الْغَدِ قَالَ مُوْسَى لِفَتَاهُ آتِنَا غَدَاءَنَا لَقَدْ لَقِيْنَا مِنْ سَفَرِنَا هَذَا نَصَبًا قَالَ وَلَمْ يَجِدْ مُوْسَى النَّصَبَ حَتَّى جَاوَزَا الْمَكَانَ الَّذِيْ أَمَرَ اللهُ بِهِ فَقَالَ لَهُ فَتَاهُ أَرَأَيْتَ إِذْ أَوَيْنَا إِلَى الصَّخْرَةِ فَإِنِّيْ نَسِيْتُ الْحُوْتَ وَمَا أَنْسَانِيْهِ إِلَّا الشَّيْطَانُ أَنْ أَذْكُرَهُ وَاتَّخَذَ سَبِيْلَهُ فِي الْبَحْرِ عَجَبًا قَالَ فَكَانَ لِلْحُوْتِ سَرَبًا وَلِمُوْسَى وَلِفَتَاهُ عَجَبًا فَقَالَ مُوْسَى ذَلِكَ مَا كُنَّا نَبْغِيْ فَارْتَدَّا عَلَى آثَارِهِمَا قَصَصًا قَالَ رَجَعَا يَقُصَّانِ آثَارَهُمَا حَتَّى انْتَهَيَا إِلَى الصَّخْرَةِ فَإِذَا رَجُلٌ مُسَجًّى ثَوْبًا فَسَلَّمَ عَلَيْهِ مُوْسَى فَقَالَ الْخَضِرُ وَأَنَّى بِأَرْضِكَ السَّلَامُ قَالَ أَنَا مُوْسَى قَالَ مُوْسَى بَنِيْ إِسْرَائِيْلَ قَالَ نَعَمْ أَتَيْتُكَ لِتُعَلِّمَنِيْ مِمَّا عُلِّمْتَ رَشَدًا قَالَ إِنَّكَ لَنْ تَسْتَطِيْعَ مَعِيْ صَبْرًا يَا مُوْسَى إِنِّيْ عَلَى عِلْمٍ مِنْ عِلْمِ اللهِ عَلَّمَنِيْهِ لَا تَعْلَمُهُ أَنْتَ وَأَنْتَ عَلَى عِلْمٍ مِنْ عِلْمِ اللهِ عَلَّمَكَهُ اللهُ لَا أَعْلَمُهُ فَقَالَ مُوْسَى سَتَجِدُنِيْ إِنْ شَاءَ اللهُ صَابِرًا وَلَا أَعْصِيْ لَكَ أَمْرًا فَقَالَ لَهُ الْخَضِرُ فَإِنْ اتَّبَعْتَنِيْ فَلَا تَسْأَلْنِيْ عَنْ شَيْءٍ حَتَّى أُحْدِثَ لَكَ مِنْهُ ذِكْرًا فَانْطَلَقَا يَمْشِيَانِ عَلَى سَاحِلِ الْبَحْرِ فَمَرَّتْ سَفِيْنَةٌ فَكَلَّمُوْهُمْ أَنْ يَحْمِلُوْهُمْ فَعَرَفُوا الْخَضِرَ فَحَمَلُوْهُمْ بِغَيْرِ نَوْلٍ فَلَمَّا رَكِبَا فِي السَّفِيْنَةِ لَمْ يَفْجَأْ إِلَّا وَالْخَضِرُ قَدْ قَلَعَ لَوْحًا مِنَ الْوَاحِ السَّفِيْنَةِ بِالْقَدُوْمِ فَقَالَ لَهُ مُوْسَى قَوْمٌ قَدْ حَمَلُوْنَا بِغَيْرِ نَوْلٍ عَمَدْتَ إِلَى سَفِيْنَتِهِمْ فَخَرَقْتَهَا لِتُغْرِقَ أَهْلَهَا لَقَدْ جِئْتَ شَيْئًا إِمْرًا قَالَ أَلَمْ أَقُلْ إِنَّكَ لَنْ تَسْتَطِيْعَ مَعِيْ صَبْرًا قَالَ لَا تُؤَاخِذْنِيْ بِمَا نَسِيْتُ وَلَا تُرْهِقْنِيْ مِنْ أَمْرِيْ عُسْرًا.قَالَ : وَقَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَكَانَتْ الْأُوْلَى مِنْ مُوْسَى نِسْيَانًا قَالَ وَجَاءَ عُصْفُوْرٌ فَوَقَعَ عَلَى حَرْفِ السَّفِيْنَةِ فَنَقَرَ فِي الْبَحْرِ نَقْرَةً فَقَالَ لَهُ الْخَضِرُ مَا عِلْمِيْ وَعِلْمُكَ مِنْ عِلْمِ اللهِ إِلَّا مِثْلُ مَا نَقَصَ هَذَا الْعُصْفُوْرُ مِنْ هَذَا الْبَحْرِ ثُمَّ خَرَجَا مِنْ السَّفِيْنَةِ فَبَيْنَا هُمَا يَمْشِيَانِ عَلَى السَّاحِلِ إِذْ أَبْصَرَ الْخَضِرُ غُلَامًا يَلْعَبُ مَعَ الْغِلْمَانِ فَأَخَذَ الْخَضِرُ رَأْسَهُ بِيَدِهِ فَاقْتَلَعَهُ بِيَدِهِ فَقَتَلَهُ فَقَالَ لَهُ مُوْسَى أَقَتَلْتَ نَفْسًا زَاكِيَةً بِغَيْرِ نَفْسٍ لَقَدْ جِئْتَ شَيْئًا نُكْرًا قَالَ أَلَمْ أَقُلْ لَكَ إِنَّكَ لَنْ تَسْتَطِيْعَ مَعِيْ صَبْرًا قَالَ وَهَذِهِ أَشَدُّ مِنَ الْأُوْلَى قَالَ إِنْ سَأَلْتُكَ عَنْ شَيْءٍ بَعْدَهَا فَلَا تُصَاحِبْنِيْ قَدْ بَلَغْتَ مِنْ لَدُنِّيْ عُذْرًا فَانْطَلَقَا حَتَّى إِذَا أَتَيَا أَهْلَ قَرْيَةٍ اسْتَطْعَمَا أَهْلَهَا فَأَبَوْا أَنْ يُضَيِّفُوْهُمَا فَوَجَدَا فِيْهَا جِدَارًا يُرِيْدُ أَنْ يَنْقَضَّ قَالَ مَائِلٌ فَقَامَ الْخَضِرُ فَأَقَامَهُ بِيَدِهِ فَقَالَ مُوْسَى قَوْمٌ أَتَيْنَاهُمْ فَلَمْ يُطْعِمُوْنَا وَلَمْ يُضَيِّفُوْنَا لَوْ شِئْتَ لَاتَّخَذْتَ عَلَيْهِ أَجْرًا قَالَ {هٰذَا فِرَاقُ بَيْنِيْ وَبَيْنِكَ} إِلَى قَوْلِهِ {ذٰلِكَ تَأْوِيْلُ مَا لَمْ تَسْطِعْ عَّلَيْهِ صَبْرًا} فَقَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَدِدْنَا أَنَّ مُوْسَى كَانَ صَبَرَ حَتَّى يَقُصَّ اللهُ عَلَيْنَا مِنْ خَبَرِهِمَا.قَالَ سَعِيْدُ بْنُ جُبَيْرٍ فَكَانَ ابْنُ عَبَّاسٍ يَقْرَأُ وَكَانَ أَمَامَهُمْ مَلِكٌ يَأْخُذُ كُلَّ سَفِيْنَةٍ صَالِحَةٍ غَصْبًا وَكَانَ يَقْرَأُ {وَأَمَّا الْغُلَامُ فَكَانَ كَافِرًا وَّكَانَ أَبَوَاهُ مُؤْمِنَيْنِ}.
সা‘ঈদ ইব্নু যুবায়র (রাঃ) হতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি ইব্নু ‘আব্বাসকে বললাম, নওফ আল-বাক্কালীর ধারণা, খাযিরের সাথী মূসা, তিনি বানী ইসরাঈলের নাবী মূসা (‘আ.) ছিলেন না। ইব্নু ‘আব্বাস (রাঃ) বললেন, আল্লাহ্র দুশমন মিথ্যা কথা বলেছে। [ইব্নু ‘আব্বাস (রাঃ) বলেন] উবাই ইব্নু কা‘আব (রাঃ) আমাকে বলেছেন, তিনি রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে বলতে শুনেছেন, মূসা (‘আ.) একবার বানী ইসরাঈলের সম্মুখে বক্তৃতা দিচ্ছিলেন। তাঁকে প্রশ্ন করা হল, কোন্ ব্যক্তি সবচেয়ে জ্ঞানী? তিনি বললেন, আমি। এতে আল্লাহ্ তাঁর ওপর অসন্তুষ্ট হলেন। কেননা এ জ্ঞানের ব্যাপারটিকে তিনি আল্লাহ্র সঙ্গে সম্পৃক্ত করেননি। আল্লাহ্ তাঁর প্রতি ওয়াহী পাঠালেন, দু-সমুদ্রের সংযোগস্থলে আমার এক বান্দা রয়েছে, সে তোমার চেয়ে বেশি জ্ঞানী। মূসা (‘আ.) বললেন, ইয়া রব, আমি কীভাবে তাঁর সাক্ষাৎ পেতে পারি? আল্লাহ্ বললেন, তোমার সঙ্গে একটি মাছ নাও এবং সেটা থলের মধ্যে রাখ, যেখানে মাছটি হারিয়ে যাবে সেখানেই। তারপর তিনি একটি মাছ নিলেন এবং সেটাকে থলের মধ্যে রাখলেন। অতঃপর রওনা দিলেন। আর সঙ্গে চললেন তাঁর খাদেম ‘ইউশা’ ইব্নু নূন। তাঁরা যখন সমুদ্রের ধারে একটি বড় পাথরের কাছে এসে হাজির হলেন, তখন তারা উভয়েই তার ওপর মাথা রেখে ঘুমিয়ে পড়লেন। এ সময় মাছটি থলের ভিতর লাফিয়ে উঠল এবং থলে থেকে বের হয়ে সমুদ্রে চলে গেল। “মাছটি সুড়ঙ্গের মত পথ করে সমুদ্রে নেমে গেল।” আর মাছটি যেখান দিয়ে চলে গিয়েছিল, আল্লাহ্ সেখান থেকে পানির প্রবাহ বন্ধ করে দিলেন এবং সেখানে একটি সুড়ঙ্গের মত হয় গেল। যখন তিনি জাগ্রত হলেন, তাঁর সাথী তাঁকে মাছটির সংবাদ দিতে ভুলে গিয়েছিলেন। সেদিনের বাকী সময় ও পরবর্তী রাত তাঁরা চললেন। যখন ভোর হল, মূসা (‘আ.) তাঁর খাদিমকে বললেন ‘আমাদের সকালের আহার আন, আমরা তো আমাদের এ সফরে ক্লান্ত হয়ে পড়েছি।” রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, আল্লাহ্ যে স্থানের নির্দেশ করেছিলেন, সে স্থান অতিক্রম করার পূর্বে মূসা (‘আ.) ক্লান্ত হননি। তখন তাঁর খাদিম তাঁকে বলল, “আপনি কি লক্ষ্য করেছেন, আমরা যখন শিলাখণ্ডে বিশ্রাম নিচ্ছিলাম তখন আমি মাছের কথা ভুলে গিয়েছিলাম। শায়ত্বনই এ কথা বলতে আমাকে ভুলিয়ে দিয়েছিল। মাছটি বিস্ময়করভাবে নিজের পথ করে সমুদ্রে নেমে গেল ।”রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, মাছটি তার পথ করে সমুদ্রে নেমে গিয়েছিল এবং মূসা (‘আ.) ও তাঁর খাদেমকে তা আশ্চর্যানি¦ত করে দিয়েছিল। মূসা (‘আ.) বললেন ঃ “আমরা তো সে স্থানটিরই খোঁজ করছিলাম। তারপর তাঁরা নিজদের পদচিহ্ন ধরে ফিরে চলল। রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, তারা উভয়ে তাঁদের পদচিহ্ন ধরে সে শিলাখণ্ডের কাছে ফিরে আসলেন। সেখানে এক ব্যক্তিকে কাপড়ে জড়ানো অবস্থায় পেলেন। মূসা (‘আ.) তাকে সালাম দিলেন। খাযির (‘আ.) বললেন, তোমাদের এ স্থলে ‘সালাম’ আসলো কোত্থেকে? তিনি বললেন, আমি মূসা। খাযির (‘আ.) জিজ্ঞেস করলেন, বানী ইসরাঈলের মূসা? তিনি বললেন, হাঁ, আমি আপনার কাছে এসেছি এ জন্য যে, সত্য পথের যে জ্ঞান আপনাকে দান করা হয়েছে তা থেকে আমাকে শিক্ষা দিবেন। তিনি বললেন, তুমি কিছুতেই আমার সঙ্গে ধৈর্যধারণ করতে পারবে না।” হে মূসা! আল্লাহ্র জ্ঞান থেকে আমাকে এমন কিছু জ্ঞান দান করা হয়েছে যা তুমি জান না আর তোমাকে আল্লাহ্ তাঁর জ্ঞান থেকে যে জ্ঞান দান করেছেন, তা আমি জানি না। মূসা (‘আ.) বললেন, “ইনশাআল্লাহ, আপনি আমাকে ধৈর্যশীল পাবেন এবং আপনার কোন আদেশ আমি অমান্য করব না।” তখন খাযির (‘আ.) তাঁকে বললেন, “আচ্ছা, তুমি যদি আমার অনুসরণ করই, তবে কোন বিষয়ে আমাকে প্রশ্ন করবে না, যতক্ষণ আমি তোমাকে সে সম্পর্কে না বলি। তারপর উভয়ে চললেন।” তাঁরা সুমদ্রের পাড় ধরে চলতে লাগলেন, তখন একটি নৌকা যাচ্ছিল। তাঁরা তাদের নৌকায় উঠিয়ে নেয়ার ব্যাপারে নৌকার চালকদের সঙ্গে আলাপ করলেন। তারা খাযির (‘আ.)-কে চিনে ফেলল। তাই তাদেরকে বিনা পারিশ্রমিকে নৌকায় উঠিয়ে নিল। “যখন তাঁরা উভয়ে নৌকায় উঠলেন” খাযির (‘আ.) কুড়াল দিয়ে নৌকার একটি তক্তা ছিদ্র করে দিলেন। মূসা (‘আ.) তাঁকে বললেন, এ লোকেরা তো বিনা মজুরিতে আমাদের বহন করছে, অথচ আপনি এদের নৌকাটি নষ্ট করছেন। আপনি নৌকাটি ছিদ্র করে ফেললেন, যাতে আরোহীরা ডুবে যায়। আপনি তো এক অন্যায় কাজ করলেন, (খাযির বললেন) আমি কি বলিনি যে, তুমি আমার সঙ্গে কিছুতেই ধৈর্যধারণ করতে পারবে না। মূসা বললেন, আমার ভুলের জন্য আমাকে অপরাধী করবেন না ও আমার ব্যাপারে অতিরিক্ত কঠোরতা করবেন না।” রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, মূসা (‘আ.)-এর প্রথম এ অপরাধটি ভুল করে হয়েছিল। তিনি বললেন, এরপরে একটি চড়–ই পাখি এসে নৌকার পার্শ্বে বসে ঠোঁট দিয়ে সমুদ্রে এক ঠোকর মারল। খাযির (‘আ.) মূসা (‘আ.)-কে বললেন, এ সমুদ্র হতে চড়–ই পাখিটি যতটুকু পানি ঠোঁটে নিল, আমার ও তোমার জ্ঞান আল্লাহ্র জ্ঞানের তুলনায় ততটুকু। তারপর তাঁরা নৌকা থেকে নেমে সমুদ্রের পাড় ধরে চলতে লাগলেন। এমতাবস্থায় খাযির (‘আ.) একটি বালককে অন্য বালকদের সঙ্গে খেলতে দেখলেন। খাযির (‘আ.) হাত দিয়ে ছেলেটির মাথা ধরে তাকে হত্যা করলেন। মূসা (‘আ.) খাযির (‘আ.)-কে বললেন, “আপনি কি প্রাণের বদলা ব্যতিরেকেই নিষ্পাপ একটি প্রাণকে হত্যা করলেন? আপনি তো চরম এক অন্যায় কাজ করলেন। তিনি বললেন, আমি কি তোমাকে বলিনি যে, তুমি আমার সঙ্গে কিছুতেই ধৈর্যধারণ করে থাকতে পারবে না।” নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, এ অভিযোগটি ছিল প্রথমটির অপেক্ষাও মারাত্মক। [মূসা (‘আ.) বললেন] এরপর যদি আমি আপনাকে কোন ব্যাপারে প্রশ্ন করি তবে আপনি আমাকে সঙ্গে রাখবেন না; আপনার কাছে আমার ওযর আপত্তি চূড়ান্তে পৌঁছেছে। তারপর উভয়ে চলতে লাগলেন। শেষে তারা এক বসতির কাছে পৌঁছে তার বাসিন্দাদের কাছে খাদ্য চাইলেন। কিন্তু তারা তাদের আতিথেয়তা করতে অস্বীকৃতি জানাল। তারপর সেখানে তারা এক পতনোন্মুখ দেয়াল দেখতে পেলেন। বর্ণনাকারী বলেন, সেটি ঝুঁকে পড়েছিল। খাযির (‘আ.) নিজ হাতে সেটি সোজা করে দিলেন। মূসা (‘আ.) বললেন, এ লোকদের কাছে আমরা এলাম, তারা আমাদের খাদ্য দিল না এবং আমাদের আতিথেয়তাও করল না। “আপনি তো ইচ্ছা করলে এর জন্য পারিশ্রমিক নিতে পারতেন। তিনি বললেন, এখানেই তোমার এবং আমার মধ্যে বিচ্ছেদ ঘটল। .....যে বিষয়ে তুমি ধৈর্যধারণ করতে পারনি, এ তার ব্যাখ্যা।”রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, আমার মনের বাসনা যে, যদি মূসা (‘আ.) আর একটু ধৈর্যধারণ করতেন, তাহলে আল্লাহ্ তাঁদের আরও ঘটনা আমাদের জানাতেন। সা‘ঈদ ইব্নু যুবায়র (রাঃ) বলেন, ইব্নু ‘আব্বাস (রাঃ) এভাবে এ আয়াত পাঠ করতেন- وَكَانَ اَمَا مَهُمْ مَلِكٌ يَّاخُذُ كُلَّ سَفِيْنَةٍ صَالِحَةً غَصْبًاনিচের আয়াতটি এভাবে পাঠ করলেন- وَأَمَّا الْغُلاَمُ فَكَانَ كَافِرًا وَكَانَ أَبَوَاهُ مُؤْمِنَيْنِ। [৭৪] (আ.প্র. ৪৩৬৪, ই.ফা. ৪৩৬৬)
[১] নওফ আল-বাককালী- সে একজন মুসলিম। ইব্নু ‘আববাস তাকে আল্লাহর দুশমন বলেছেন রাগান্বিত অবস্থায়।[2] স্থানঃ যেখানে মাছটি হারিয়ে যাবে।