৬৪/৫৬. অধ্যায়ঃ
আওতাসের যুদ্ধ
সহিহ বুখারী : ৪৩২৩
সহিহ বুখারীহাদিস নম্বর ৪৩২৩
مُحَمَّدُ بْنُ الْعَلَاءِ حَدَّثَنَا أَبُوْ أُسَامَةَ عَنْ بُرَيْدِ بْنِ عَبْدِ اللهِ عَنْ أَبِيْ بُرْدَةَ عَنْ أَبِيْ مُوْسَى رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ لَمَّا فَرَغَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم مِنْ حُنَيْنٍ بَعَثَ أَبَا عَامِرٍ عَلَى جَيْشٍ إِلَى أَوْطَاسٍ فَلَقِيَ دُرَيْدَ بْنَ الصِّمَّةِ فَقُتِلَ دُرَيْدٌ وَهَزَمَ اللهُ أَصْحَابَهُ قَالَ أَبُوْ مُوْسَى وَبَعَثَنِيْ مَعَ أَبِيْ عَامِرٍ فَرُمِيَ أَبُوْ عَامِرٍ فِيْ رُكْبَتِهِ رَمَاهُ جُشَمِيٌّ بِسَهْمٍ فَأَثْبَتَهُ فِيْ رُكْبَتِهِ فَانْتَهَيْتُ إِلَيْهِ فَقُلْتُ يَا عَمِّ مَنْ رَمَاكَ فَأَشَارَ إِلَى أَبِيْ مُوْسَى فَقَالَ ذَاكَ قَاتِلِي الَّذِيْ رَمَانِيْ فَقَصَدْتُ لَهُ فَلَحِقْتُهُ فَلَمَّا رَآنِيْ وَلَّى فَاتَّبَعْتُهُ وَجَعَلْتُ أَقُوْلُ لَهُ أَلَا تَسْتَحْيِيْ أَلَا تَثْبُتُ فَكَفَّ فَاخْتَلَفْنَا ضَرْبَتَيْنِ بِالسَّيْفِ فَقَتَلْتُهُ ثُمَّ قُلْتُ لِأَبِيْ عَامِرٍ قَتَلَ اللهُ صَاحِبَكَ قَالَ فَانْزِعْ هَذَا السَّهْمَ فَنَزَعْتُهُ فَنَزَا مِنْهُ الْمَاءُ قَالَ يَا ابْنَ أَخِيْ أَقْرِئْ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم السَّلَامَ وَقُلْ لَهُ اسْتَغْفِرْ لِيْ وَاسْتَخْلَفَنِيْ أَبُوْ عَامِرٍ عَلَى النَّاسِ فَمَكُثَ يَسِيْرًا ثُمَّ مَاتَ فَرَجَعْتُ فَدَخَلْتُ عَلَى النَّبِيِّ فِيْ بَيْتِهِ عَلَى سَرِيْرٍ مُرْمَلٍ وَعَلَيْهِ فِرَاشٌ قَدْ أَثَّرَ رِمَالُ السَّرِيْرِ بِظَهْرِهِ وَجَنْبَيْهِ فَأَخْبَرْتُهُ بِخَبَرِنَا وَخَبَرِ أَبِيْ عَامِرٍ وَقَالَ قُلْ لَهُ اسْتَغْفِرْ لِيْ فَدَعَا بِمَاءٍ فَتَوَضَّأَ ثُمَّ رَفَعَ يَدَيْهِ فَقَالَ اللهُمَّ اغْفِرْ لِعُبَيْدٍ أَبِيْ عَامِرٍ وَرَأَيْتُ بَيَاضَ إِبْطَيْهِ ثُمَّ قَالَ اللهُمَّ اجْعَلْهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ فَوْقَ كَثِيْرٍ مِنْ خَلْقِكَ مِنْ النَّاسِ فَقُلْتُ وَلِيْ فَاسْتَغْفِرْ فَقَالَ اللهُمَّ اغْفِرْ لِعَبْدِ اللهِ بْنِ قَيْسٍ ذَنْبَهُ وَأَدْخِلْهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ مُدْخَلًا كَرِيْمًا قَالَ أَبُوْ بُرْدَةَ إِحْدَاهُمَا لِأَبِيْ عَامِرٍ وَالْأُخْرَى لِأَبِيْ مُوْسَى.
আবূ মূসা (রাযিআল্লাহু তাআলা আনহু) হতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, হুনায়ন যুদ্ধ অতিক্রান্ত হওয়ার পর নবী (সল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম) আবূ আমির (রাযিআল্লাহু তাআলা আনহু)- কে একটি সৈন্যবাহিনীর অধিনায়ক নিযুক্ত করে আওতাস গোত্রের [৭৪] বিরুদ্ধে পাঠালেন। যুদ্ধে তিনি দুরাইদ ইবনু সিম্মার সঙ্গে মুকাবালা করলে দুরাইদ নিহত হয় এবং আল্লাহ তার সঙ্গীদেরকেও পরাস্ত করেন। আবূ মূসা (রাযিআল্লাহু তাআলা আনহু) বলেন, নবী (সল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম) আবূ আমির (রাযিআল্লাহু তাআলা আনহু)-এর সঙ্গে আমাকেও পাঠিয়েছিলেন। এ যুদ্ধে আবূ আমির (রাযিআল্লাহু তাআলা আনহু)- এর হাঁটুতে একটি তীর নিক্ষিপ্ত হয়। জুশাম গোত্রের এক লোক তীরটি নিক্ষেপ করে তাঁর হাটুর মধ্যে বসিয়ে দিয়েছিল। তখন আমি তাঁর কাছে গিয়ে বললাম, চাচাজান! কে আপনার উপর তীর ছুঁড়েছে? তখন তিনি আবূ মূসা (রাযিআল্লাহু তাআলা আনহু)- কে ইশারার মাধ্যমে দেখিয়ে দিয়ে বললেন, ঐ যে, ঐ ব্যক্তি আমাকে তীর মেরেছে। আমাকে হত্যা করেছে। আমি লোকটিকে লক্ষ্য করে তার কাছে গিয়ে পৌছালাম আর সে আমাকে দেখামাত্র ভাগতে শুরু করল। আমি এ কথা বলতে বলতে তার পিছু নিলাম- তোমার লজ্জা করে না, তুমি দাঁড়াও। লোকটি থেমে গেল। এবার আমরা দু'জনে তরবারি দিয়ে পরস্পরকে আক্রমণ করলাম এবং আমি ওকে হত্যা করে ফেললাম। তারপর আমি আবূ আমির (রাযিআল্লাহু তাআলা আনহু)- কে বললাম, আল্লাহ আপনার আঘাতকারীকে হত্যা করেছেন। তিনি বললেন, এখন এ তীরটি বের করে দাও। আমি তীরটি বের করে দিলাম। তখন ক্ষতস্থান থেকে কিছু পানি বের হল। তিনি আমাকে বললেন, হে ভাতিজা! তুমি নবী (সল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম)- কে আমার সালাম জানাবে এবং আমার মাগফিরাতের জন্য দু'আ করতে বলবে। আবূ আমির (রাযিআল্লাহু তাআলা আনহু) তাঁর স্থলে আমাকে সেনাদলের অধিনায়ক নিয়োগ করলেন। এরপর তিনি কিছুক্ষণ বেঁচেছিলাম, তারপর ইন্তিকাল করলেন। (যুদ্ধ শেষে) আমি ফিরে এসে নবী (সল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম)- এর গৃহে প্রবেশ করলাম। তিনি তখন পাকানো দড়ির তৈরি একটি খাটিয়ায় শায়িত ছিলেন। খাটিয়ার উপর (যৎসামান্য) একটি বিছানা ছিল। কাজেই তাঁর পৃষ্ঠে এবং দুইপার্শ্বে পাকানো দড়ির দাগ পড়ে গিয়েছিল। আমি তাঁকে আমাদের এবং আবূ 'আমির (রাযিআল্লাহু তাআলা আনহু)– এর সংবাদ জানালাম। তাঁকে এ কথাও বললাম যে, (মৃত্যুর পূর্বে বলে গিয়েছেন) তাঁকে [নাবী (সল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম)- কে] আমার মাগফিরাতের জন্য দু'আ করতে বলবে। এ কথা শুনে নবী (সল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম) পানি আনতে বললেন এবং 'উযু করলেন। তারপর তাঁর দু'হাত উপরে তুলে তিনি বললেন। হে আল্লাহ! তোমার প্রিয় বান্দা আবূ আমিরকে ক্ষমা করো। (হস্তদ্বয় উত্তোলনের কারণে) আমি তাঁর বগলদ্বয়ের শুভ্রাংশ দেখতে পেয়েছি। তারপর তিনি বললেন, হে আল্লাহ! ক্বিয়ামাত দিবসে তুমি তাঁকে তোমার অনেক মাখলুকের উপর, অনেক মানুষের উপর শ্রেষ্ঠত্ব দান কর। আমি বললামঃ আমার জন্যও (দু'আ করুন)। তিনি দু'আ করলেন এবং বললেন, হে আল্লাহ! 'আবদুল্লাহ ইবনু কায়সের গুনাহ ক্ষমা করে দাও এবং ক্বিয়ামাত দিবসে তুমি তাঁকে সম্মানিত স্থানে প্রবেশ করাও। বর্ণনাকারী আবূ বুরদা (রাযিআল্লাহু তাআলা আনহু) বলেন, দু'টি দু'আর একটি ছিল আবূ আমির (রাযিআল্লাহু তাআলা আনহু)- এর জন্য আর অপরটি ছিল আবূ মূসা (আশআরী) (রাযিআল্লাহু তাআলা আনহু)- এর জন্য। [২৮৮৪; মুসলিম ৪৪/৩৮, হাঃ ২৪৯৮, আহ্মাদ ১৯৭১৩] (আ.প্র. ৩৯৮০, ই.ফা. ৩৯৮৪)
[৭৪] তায়িফের অদূরে একটি উপত্যকার অধিবাসীদের কওমে আওতাস বলা হতো। অষ্টম হিজরী সনে হুনায়ন যুদ্ধের পর পরই তাদেরকে দমন করার জন্য আবূ মূসা আশ'আরীর ভাতিজা আবূ আমির (রাযিআল্লাহু তাআলা আনহু)- কে পাঠানো হয়েছিল।