৬৪/১৯. অধ্যায়ঃ
মহান আল্লাহর বাণীঃ
যেদিন উভয় দল পরস্পরের সম্মুখীন হয়েছিল, সেদিন তোমাদের মধ্য থেকে যারা ঘুরে দাঁড়িয়েছিল, তারা তো ছিল এমন, যাদের শয়তান পদঙ্খলন ঘটিয়েছিল তাদের কৃতকর্মের দরুন। অবশ্য আল্লাহ তাদের ক্ষমা করে দিয়েছেন। নিশ্চয় আল্লাহ পরম ক্ষমাশীল, পরম সহনশীল। (আলু ‘ইমরান ৩/১৫৫)
সহিহ বুখারী : ৪০৬৬
সহিহ বুখারীহাদিস নম্বর ৪০৬৬
عَبْدَانُ أَخْبَرَنَا أَبُوْ حَمْزَةَ عَنْ عُثْمَانَ بْنِ مَوْهَبٍ قَالَ جَاءَ رَجُلٌ حَجَّ الْبَيْتَ فَرَأَى قَوْمًا جُلُوْسًا فَقَالَ مَنْ هَؤُلَاءِ الْقُعُوْدُ قَالُوْا هَؤُلَاءِ قُرَيْشٌ قَالَ مَنْ الشَّيْخُ قَالُوا ابْنُ عُمَرَ فَأَتَاهُ فَقَالَ إِنِّيْ سَائِلُكَ عَنْ شَيْءٍ أَتُحَدِّثُنِيْ قَالَ أَنْشُدُكَ بِحُرْمَةِ هَذَا الْبَيْتِ أَتَعْلَمُ أَنَّ عُثْمَانَ بْنَ عَفَّانَ فَرَّ يَوْمَ أُحُدٍ قَالَ نَعَمْ قَالَ فَتَعْلَمُهُ تَغَيَّبَ عَنْ بَدْرٍ فَلَمْ يَشْهَدْهَا قَالَ نَعَمْ قَالَ فَتَعْلَمُ أَنَّهُ تَخَلَّفَ عَنْ بَيْعَةِ الرِّضْوَانِ فَلَمْ يَشْهَدْهَا قَالَ نَعَمْ قَالَ فَكَبَّرَ قَالَ ابْنُ عُمَرَ تَعَالَ لِأُخْبِرَكَ وَلِأُبَيِّنَ لَكَ عَمَّا سَأَلْتَنِيْ عَنْهُ أَمَّا فِرَارُهُ يَوْمَ أُحُدٍ فَأَشْهَدُ أَنَّ اللهَ عَفَا عَنْهُ وَأَمَّا تَغَيُّبُهُ عَنْ بَدْرٍ فَإِنَّهُ كَانَ تَحْتَهُ بِنْتُ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَكَانَتْ مَرِيْضَةً فَقَالَ لَهُ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم إِنَّ لَكَ أَجْرَ رَجُلٍ مِمَّنْ شَهِدَ بَدْرًا وَسَهْمَهُ وَأَمَّا تَغَيُّبُهُ عَنْ بَيْعَةِ الرِّضْوَانِ فَإِنَّهُ لَوْ كَانَ أَحَدٌ أَعَزَّ بِبَطْنِ مَكَّةَ مِنْ عُثْمَانَ بْنِ عَفَّانَ لَبَعَثَهُ مَكَانَهُ فَبَعَثَ عُثْمَانَ وَكَانَتْ بَيْعَةُ الرِّضْوَانِ بَعْدَمَا ذَهَبَ عُثْمَانُ إِلَى مَكَّةَ فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم بِيَدِهِ الْيُمْنَى هَذِهِ يَدُ عُثْمَانَ فَضَرَبَ بِهَا عَلَى يَدِهِ فَقَالَ هَذِهِ لِعُثْمَانَ اذْهَبْ بِهَذَا الْآنَ مَعَكَ
উসমান ইবনু মাওহাব (রহঃ) হতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, হাজ্জ পালনের উদ্দেশে এক ব্যক্তি বাইতুল্লাহ্য় এসে সেখানে একদল লোককে উপবিষ্ট অবস্থায় দেখে জিজ্ঞেস করলেন, এ উপবিস্ট লোকগুলো কে? তারা বললেন, এরা হচ্ছেন কুরাইশ গোত্রের লোক। লোকটি আবার জিজ্ঞেস করলেন, এ বৃদ্ধ লোকটি কে? তারা বললেন, ইনি হচ্ছেন ইবনু ‘উমার (রাঃ)। তখন লোকটি তাঁর কাছে গিয়ে বললেন, আমি আপনাকে কিছু কথা জিজ্ঞেস করব, আপনি আমাকে বলে দিবেন কি? এরপর লোকটি বললেন, আমি আপনাকে এই ঘরের সম্মানের কসম দিয়ে বলছি, উহূদের দিন ‘উসমান ইবনু আফফান (রাঃ) পালিয়েছিলেন, এ কথা আপনি কি জানেন? তিনি বললেন, হ্যাঁ। লোকটি আবার বললেন, তিনি বায়আতে রিদওয়ানেও অনুপস্থিত ছিলেন- এ কথাও কি আপনি জানেন? তিনি বললে্ন হ্যাঁ। বর্ণনাকারী বলেন, লোকটি তখন আল্লাহু আকবার ধ্বনি উচ্চারণ করল। তখন ইবনু ‘উমার (রাঃ) বললেন, এসো, এখন আমি তোমাকে সব ব্যাপারে জানিয়ে দেই এবং তোমার প্রশ্নগুলোর উত্তর খুলে বলি। (১) উহূদের দিন তাঁর পালানোর ব্যাপার সম্বন্ধে আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ তাঁকে ক্ষমা করে দিয়েছেন। (২) বদর থেকে তাঁর অনুপস্থিত থাকার কারণ এই যে, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কন্যা (রুকাইয়া) তাঁর স্ত্রী ছিলেন। তিনি ছিলেন অসুস্থ। তাই তাঁকে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছিলেন, বদর যুদ্ধে যোগদানকারীদের মতোই তুমি সাওয়াব পাবে এবং গানীমাতের অংশ পাবে। (৩) বায়’আতে রিদওয়ান থেকে তাঁর অনুপস্থিতির কারণ হল, মাক্কাহ্ উপত্যকায় ‘উসমান ইবনু আফফান (রাঃ) থেকে অধিক মর্যাদাবান কোন ব্যক্তি থাকলে অবশ্যই রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে তাঁর স্থলে মক্কা পাঠাতেন। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এ জন্য ‘উসমান (রাঃ)-কে পাঠালেন। ‘উসমান (রাঃ)-এর মক্কা গমনের পরই বাই’আতে রিদওয়ান সংঘটিত হয়েছিল। তাই নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর ডান হাতখানা অপর হাতের উপর রেখে বলেছিলেন, এটাই উসমানের হাত। [২৬] এরপর তিনি (‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘উমার) বললেন, এই হল ‘উসমান (রাঃ)-এর অনুপস্থিতির কারণ। এখন তুমি এ কথাগুলো তোমার সঙ্গে নিয়ে যাও। [৩১৩০] (আ.প্র. ৩৭৬৩, ই.ফা. ৩৭৬৬)
[২৬] হিজরী ৬ সনে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ১৪০০ সাহাবীসহ উমরাহ’র জন্য মাক্কাহ্ আসলে হুদাইবিয়া নামক স্থানে বাধাপ্রাপ্ত হয়ে অপেক্ষা করতে থাকেন। এরই মাঝে গুজব ছড়িয়ে পড়ে যে, ‘উসমান (রাঃ)-কে মাক্কাহ্তে হত্যা করা হয়েছে। অন্যায় হত্যার প্রতিশোধ স্পৃহা চরমে উঠলে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একটি বাবলা বৃক্ষের নিচে সকল সাহাবীদের নিকট হতে প্রতিশোধ গ্রহনের জন্য বাই’আত গ্রহণ করেন। এ বাই’আতকেই বাই’আতে রিযওয়ান বলা হয়। নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ‘উসমান (রাঃ)-এর মৃত্যুর ব্যাপারে নিশ্চিত ছিলেন না আর তাকে এ বাই’আতের মর্যাদা থেকে বঞ্চিত করা পছন্দ করলেন না। তাই তিনি ‘উসমানের পক্ষ হতে স্বীয় ডান হাত বাম হাতের উপর রেখে বাই’আত নিয়ে বললেন, এটিই ‘উসমানের হাত।