৬৪/১২. অধ্যায়ঃ
পরিচ্ছেদ নেই
সহিহ বুখারী : ৪০০৩
সহিহ বুখারীহাদিস নম্বর ৪০০৩
عَبْدَانُ أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللهِ أَخْبَرَنَا يُوْنُسُ ح و حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ صَالِحٍ حَدَّثَنَا عَنْبَسَةُ حَدَّثَنَا يُوْنُسُ عَنْ الزُّهْرِيِّ أَخْبَرَنَا عَلِيُّ بْنُ حُسَيْنٍ أَنَّ حُسَيْنَ بْنَ عَلِيٍّ عَلَيْهِمْ السَّلَام أَخْبَرَهُ أَنَّ عَلِيًّا قَالَ كَانَتْ لِيْ شَارِفٌ مِنْ نَصِيْبِيْ مِنَ الْمَغْنَمِ يَوْمَ بَدْرٍ وَكَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم أَعْطَانِيْ مِمَّا أَفَاءَ اللهُ عَلَيْهِ مِنَ الْخُمُسِ يَوْمَئِذٍ فَلَمَّا أَرَدْتُ أَنْ أَبْتَنِيَ بِفَاطِمَةَ عَلَيْهَا السَّلَام بِنْتِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَاعَدْتُ رَجُلًا صَوَّاغًا فِيْ بَنِيْ قَيْنُقَاعَ أَنْ يَرْتَحِلَ مَعِيْ فَنَأْتِيَ بِإِذْخِرٍ فَأَرَدْتُ أَنْ أَبِيْعَهُ مِنْ الصَّوَّاغِيْنَ فَنَسْتَعِيْنَ بِهِ فِيْ وَلِيْمَةِ عُرْسِيْ فَبَيْنَا أَنَا أَجْمَعُ لِشَارِفَيَّ مِنَ الْأَقْتَابِ وَالْغَرَائِرِ وَالْحِبَالِ وَشَارِفَايَ مُنَاخَانِ إِلَى جَنْبِ حُجْرَةِ رَجُلٍ مِنَ الْأَنْصَارِ حَتَّى جَمَعْتُ مَا جَمَعْتُ فَإِذَا أَنَا بِشَارِفَيَّ قَدْ أُجِبَّتْ أَسْنِمَتُهَا وَبُقِرَتْ خَوَاصِرُهُمَا وَأُخِذَ مِنْ أَكْبَادِهِمَا فَلَمْ أَمْلِكْ عَيْنَيَّ حِيْنَ رَأَيْتُ الْمَنْظَرَ قُلْتُ مَنْ فَعَلَ هَذَا قَالُوْا فَعَلَهُ حَمْزَةُ بْنُ عَبْدِ الْمُطَّلِبِ وَهُوَ فِيْ هَذَا الْبَيْتِ فِيْ شَرْبٍ مِنَ الْأَنْصَارِ عِنْدَهُ قَيْنَةٌ وَأَصْحَابُهُ فَقَالَتْ فِيْ غِنَائِهَا.أَلَا يَا حَمْزُ لِلشُّرُفِ النِّوَاءِ فَوَثَبَ حَمْزَةُ إِلَى السَّيْفِ فَأَجَبَّ أَسْنِمَتَهُمَا وَبَقَرَ خَوَاصِرَهُمَا وَأَخَذَ مِنْ أَكْبَادِهِمَا قَالَ عَلِيٌّ فَانْطَلَقْتُ حَتَّى أَدْخُلَ عَلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَعِنْدَهُ زَيْدُ بْنُ حَارِثَةَ وَعَرَفَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم الَّذِيْ لَقِيْتُ فَقَالَ مَا لَكَ قُلْتُ يَا رَسُوْلَ اللهِ مَا رَأَيْتُ كَالْيَوْمِ عَدَا حَمْزَةُ عَلَى نَاقَتَيَّ فَأَجَبَّ أَسْنِمَتَهُمَا وَبَقَرَ خَوَاصِرَهُمَا وَهَا هُوَ ذَا فِيْ بَيْتٍ مَعَهُ شَرْبٌ فَدَعَا النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم بِرِدَائِهِ فَارْتَدَى ثُمَّ انْطَلَقَ يَمْشِيْ وَاتَّبَعْتُهُ أَنَا وَزَيْدُ بْنُ حَارِثَةَ حَتَّى جَاءَ الْبَيْتَ الَّذِيْ فِيْهِ حَمْزَةُ فَاسْتَأْذَنَ عَلَيْهِ فَأُذِنَ لَهُ فَطَفِقَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يَلُوْمُ حَمْزَةَ فِيْمَا فَعَلَ فَإِذَا حَمْزَةُ ثَمِلٌ مُحْمَرَّةٌ عَيْنَاهُ فَنَظَرَ حَمْزَةُ إِلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم ثُمَّ صَعَّدَ النَّظَرَ فَنَظَرَ إِلَى رُكْبَتِهِ ثُمَّ صَعَّدَ النَّظَرَ فَنَظَرَ إِلَى وَجْهِهِ ثُمَّ قَالَ حَمْزَةُ وَهَلْ أَنْتُمْ إِلَّا عَبِيْدٌ لِأَبِيْ فَعَرَفَ النَّبِيُّ أَنَّهُ ثَمِلٌ فَنَكَصَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم عَلَى عَقِبَيْهِ الْقَهْقَرَى فَخَرَجَ وَخَرَجْنَا مَعَهُ
‘আলী (রাঃ) হতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, বদর দিনের গানীমাতের মাল থেকে আমার ভাগে আমি একটি উট পেয়েছিলাম। ‘ফায়’ থেকে প্রাপ্ত এক পঞ্চমাংশ থেকেও সেদিন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে একটি উট দান করেন। আমি যখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কন্যা ফাতিমার সঙ্গে বাসর রাত যাপন করার ইচ্ছে করলাম এবং বানু কায়নুকা গোত্রের একজন ইয়াহূদী স্বর্ণকারকে ঠিক করলাম যেন সে আমার সঙ্গে যায়। আমরা ইয্খির ঘাস সংগ্রহ করে নিয়ে আসব। অতঃপর সেই ঘাস স্বর্ণকারদের নিকট বিক্রি করে তা আমি আমার বিয়ের ওয়ালিমায় খরচ করার ইচ্ছে করেছিলাম। আমি আমার উট দু’টোর জন্য গদি, বস্তা এবং দড়ির ব্যবস্থা করছিলাম আর উট দু’টো এক আনসারীর ঘরের পাশে বসানো ছিল। আমার যা কিছু জোগাড় করার তা জোগাড় করে এনে দেখলাম উট দু’টির চূড়া কেটে দেয়া হয়েছে এবং সে দু’টির বুক ফেড়ে কলিজা বের করে নেয়া হয়েছে। এ দৃশ্য দেখে আমি আমার অশ্রু সংবরণ করতে পারলাম না। আমি জিজ্ঞেস করলাম, এ কাজ কে করেছে? তারা বললেন, আবদুল মুত্তালিবের পুত্র হামযা এ কাজ করেছেন। এখন তিনি এ ঘরে আনসারদের কিছু মদ্যপায়ীদের সঙ্গে মদপান করছেন। সেখানে আছে একদল গায়িকা ও কতিপয় সঙ্গী সাথী। গায়িকা ও তার সঙ্গীগণ গানের মধ্যে বলেছিল, “হে হামযা! মোটা উট দু’টির প্রতি ঝাঁপিয়ে পড়।’’ একথা শুনে হামযায় দৌড়িয়ে গিয়ে তলোয়ার হাতে নিল এবং উট দু’টির চূড়া দু’টো কেটে নিল আর তাদের পেট ফেড়ে কলিজা বের করে নিয়ে আসল। ‘আলী (রাঃ) বলেন, তখন আমি পথ চলতে চলতে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট চলে গেলাম। তখন তাঁর নিকট যায়দ ইব্নু হারিসাহ (রাঃ) উপস্থিত ছিলেন। আমি যে বিপদের সম্মুখীন হয়েছি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তা বুঝে ফেলেছেন। তিনি বললেন, তোমার কী হয়েছে? আমি বললাম, হে আল্লাহ্র রসূল! আজকের মত কষ্টদায়ক ঘটনা আমি কখনো দেখিনি। হামযা আমার উট দু’টোর উপর খুব যুলুম করেছেন, তিনি উট দু’টোর চূড়া কেটে ফেলেছেন এবং বুক ফেড়ে দিয়েছেন। এখন তিনি একটি ঘরে একদল মদ পানকারীর সঙ্গে আছেন। তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর চাদরখানা চেয়ে নিলেন এবং তা গায়ে দিয়ে হেঁটে চললেন। (‘আলী বলেন) এরপর আমি এবং যায়দ ইব্নু হারিসাহ (রাঃ) তাঁর পেছনে চললাম। (হাঁটতে হাঁটতে) তিনি যে ঘরে হামযা অবস্থান করছিলেন সে ঘরের কাছে পৌছে তার নিকট অনুমতি চাইলেন। তাঁকে অনুমতি দেয়া হলে রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হামযাকে তার কর্মের জন্য ভর্ৎসনা করতে শুরু করলেন। হামযাহ তখন নেশাগ্রস্ত। [১৩] চোখ দু’টো তার লাল। তিনি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর দিকে তাকালেন এবং দৃষ্টি উপর উঠিয়ে তারপর তিনি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর হাঁটুর দিকে তাকালেন। এরপর দৃষ্টি আরো একটু উপর দিকে উঠিয়ে তিনি তাঁর চেহারার প্রতি তাকালেন। এরপর হামযা বললেন, তোমরা তো আমার পিতার দাস। (শুনে) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বুঝলেন যে, তিনি এখন নেশাগ্রস্ত। তাই রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) পিছনের দিকে হটে বেরিয়ে পড়লেন, আমরাও তাঁর সঙ্গে বেরিয়ে পড়লাম। [২০৮৯] (আ.প্র. ৩৭০৬, ই.ফা. ৩৭১১)
[১৩] মদ হারাম হবার পূর্বে এ ঘটনা ঘটেছিল। মদ হারাম হয়ে যাবার পর কোন সাহাবী কখনো মদ পান করেননি বরং পরিপূর্ণভাবে বর্জন করেছেন।