৫০/১. অধ্যায়ঃ
মুকাতাব বা চুক্তির ভিত্তিতে অর্থের কিস্তি প্রসঙ্গে। প্রতি বছর এক কিস্তি করে আদায় করা।
আল্লাহ তা‘আলার বাণীঃ “তোমাদের এবং তোমাদের মালিকানাধীন দাস-দাসীদের মধ্যে কেউ তার মুক্তির জন্য চুক্তিপত্র লিখতে চাইলে তাদের সাথে তোমরা চুক্তিবদ্ধ হও, যদি তোমরা ওদের মধ্যে মঙ্গলের সন্ধান পাও এবং আল্লাহ তোমাদের যে সম্পদ দিয়েছেন, তা হতে তোমরা ওদের দান করবে”- (আন-নূর ৩২)। রাওয়াহ (রহঃ) বলেন, ইবনু জুরাইজ (রহঃ) বর্ণনা করেন, আমি ‘আতা (রহঃ)-কে জিজ্ঞাসা করলাম, যদি আমি জানতে পারি যে, তার (গোলামের) অর্থ-সম্পদ রয়েছে, তবে কি তার সাথে কিতাবের চুক্তি করা আমার জন্য ওয়াজিব হবে? তিনি বললেন, আমি তো ওয়াজিব ছাড়া অন্য কিছু মনে করি না। ‘আম্র ইবনু দীনার (রহঃ) বলেন, আমি ‘আতা (রহঃ)-কে জিজ্ঞেস করলাম, এ মতামত কি আপনি (পূর্ববর্তী) কারো কাছ হতে বর্ণনা করেছেন? তিনি বললেন, না। তারপর ‘আতা (রহঃ) আমার কাছে বর্ণনা করেছেন যে, মূসা ইবনু আনাস (রহঃ) তাকে অবহিত করেছেন যে, আনাস (রাঃ)-এর কাছে তার ক্রীতদাস সীরীন মুকাতাব (চুক্তিবদ্ধ) হবার আবেদন জানাল। সে বিত্তশালী ছিল। কিন্তু আনাস (রাঃ) তাতে অস্বীকৃতি জানালেন। সীরীন তখন ‘উমর (রাঃ)-এর কাছে বিষয়টি উত্থাপন করল। ‘উমর (রাঃ) তখন তাকে [আনাস (রাঃ)-কে] বেত্রাঘাত করলেন এবং নিম্নোক্ত আয়াত পাঠ করলেন, “তোমরা তাদের সঙ্গে চুক্তিতে আবদ্ধ হও, যদি তোমরা তাদের মধ্যে মঙ্গলের সন্ধান পাও”- (আন-নূর ৩৩)।
সহিহ বুখারী : ২৫৬০
সহিহ বুখারীহাদিস নম্বর ২৫৬০
وَقَالَ اللَّيْثُ حَدَّثَنِي يُونُسُ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، قَالَ عُرْوَةُ قَالَتْ عَائِشَةُ ـ رضى الله عنها ـ إِنَّ بَرِيرَةَ دَخَلَتْ عَلَيْهَا تَسْتَعِينُهَا فِي كِتَابَتِهَا وَعَلَيْهَا خَمْسَةُ أَوَاقٍ، نُجِّمَتْ عَلَيْهَا فِي خَمْسِ سِنِينَ، فَقَالَتْ لَهَا عَائِشَةُ وَنَفِسَتْ فِيهَا أَرَأَيْتِ إِنْ عَدَدْتُ لَهُمْ عَدَّةً وَاحِدَةً، أَيَبِيعُكِ أَهْلُكِ، فَأُعْتِقَكِ، فَيَكُونَ وَلاَؤُكِ لِي فَذَهَبَتْ بَرِيرَةُ إِلَى أَهْلِهَا، فَعَرَضَتْ ذَلِكَ عَلَيْهِمْ فَقَالُوا لاَ إِلاَّ أَنْ يَكُونَ لَنَا الْوَلاَءُ. قَالَتْ عَائِشَةُ فَدَخَلْتُ عَلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَذَكَرْتُ ذَلِكَ لَهُ. فَقَالَ لَهَا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " اشْتَرِيهَا فَأَعْتِقِيهَا، فَإِنَّمَا الْوَلاَءُ لِمَنْ أَعْتَقَ ". ثُمَّ قَامَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ " مَا بَالُ رِجَالٍ يَشْتَرِطُونَ شُرُوطًا لَيْسَتْ فِي كِتَابِ اللَّهِ، مَنِ اشْتَرَطَ شَرْطًا لَيْسَ فِي كِتَابِ اللَّهِ فَهْوَ بَاطِلٌ، شَرْطُ اللَّهِ أَحَقُّ وَأَوْثَقُ ".
‘আয়িশা (রাঃ) হতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেছেন, বারীরা (রাঃ) একবার মুকাতাবাতের সাহায্য চাইতে তাঁর কাছে আসলেন। প্রতিবছর এক ‘উকিয়া’ করে পাঁচ বছরে পাঁচ ‘উকিয়া’ তাকে পরিশোধ করতে হবে। তার প্রতি ‘আয়িশা (রাঃ) আগ্রহান্বিত হলেন। তাই তিনি বললেন, যদি আমি এককালীন মূল্য পরিশোধ করে দেই তবে কি তোমার মালিক তোমাকে বিক্রি করবে? তখন আমি তোমাকে মুক্ত করে দিব এবং তোমার ওয়ালার অধিকার আমার হবে। বারীরা (রাঃ) তার মালিকের কাছে গিয়ে উক্ত প্রস্তাব পেশ করলেন। কিন্তু তারা বলল, না; তবে যদি ওয়ালার অধিকার আমাদের হয়। ‘আয়িশা (রাঃ) বলেন, আমি রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর খিদমতে গেলাম এবং বিষয়টি তাঁকে বললাম। (রাবী বলেন) তখন রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁকে বললেন, তাকে খরিদ করে মুক্ত করে দাও। কেননা, ওয়ালা তারই হবে, যে মুক্ত করবে। তারপর তিনি দাঁড়িয়ে বললেন, মানুষের কী হল, তারা এমন সব শর্তারোপ করে, যা আল্লাহর কিতাবে নেই ! আল্লাহর কিতাবে নেই এমন শর্ত কেউ আরোপ করলে তা বাতিল বলে গণ্য হবে। আল্লাহর দেয়া শর্তই সঠিক এবং নির্ভরযোগ্য।