৭৭/৩১. অধ্যায়ঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কী ধরনের পোশাক ও বিছানা গ্রহণ করতেন।
সহিহ বুখারী : ৫৮৪৩
সহিহ বুখারীহাদিস নম্বর ৫৮৪৩
سُلَيْمَانُ بْنُ حَرْبٍ حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ عَنْ يَحْيٰى بْنِ سَعِيدٍ عَنْ عُبَيْدِ بْنِ حُنَيْنٍ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ لَبِثْتُ سَنَةً وَأَنَا أُرِيدُ أَنْ أَسْأَلَ عُمَرَ عَنْ الْمَرْأَتَيْنِ اللَّتَيْنِ تَظَاهَرَتَا عَلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَجَعَلْتُ أَهَابُه“ فَنَزَلَ يَوْمًا مَنْزِلاً فَدَخَلَ الأَرَاكَ فَلَمَّا خَرَجَ سَأَلْتُه“ فَقَالَ عَائِشَةُ وَحَفْصَةُ ثُمَّ قَالَ كُنَّا فِي الْجَاهِلِيَّةِ لاَ نَعُدُّ النِّسَاءَ شَيْئًا فَلَمَّا جَاءَ الإِسْلاَمُ وَذَكَرَهُنَّ اللهُ رَأَيْنَا لَهُنَّ بِذ‘لِكَ عَلَيْنَا حَقًّا مِنْ غَيْرِ أَنْ نُدْخِلَهُنَّ فِي شَيْءٍ مِنْ أُمُورِنَا وَكَانَ بَيْنِي وَبَيْنَ امْرَأَتِي كَلاَمٌ فَأَغْلَظَتْ لِي فَقُلْتُ لَهَا وَإِنَّكِ لَهُنَاكِ قَالَتْ تَقُولُ هٰذَا لِي وَابْنَتُكَ تُؤْذِي النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم فَأَتَيْتُ حَفْصَةَ فَقُلْتُ لَهَا إِنِّي أُحَذِّرُكِ أَنْ تَعْصِي اللهَ وَرَسُوْلَه“ وَتَقَدَّمْتُ إِلَيْهَا فِي أَذَاه“ فَأَتَيْتُ أُمَّ سَلَمَةَ فَقُلْتُ لَهَا فَقَالَتْ أَعْجَبُ مِنْكَ يَا عُمَرُ قَدْ دَخَلْتَ فِي أُمُورِنَا فَلَمْ يَبْقَ إِلاَّ أَنْ تَدْخُلَ بَيْنَ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَأَزْوَاجِه„ فَرَدَّدَتْ وَكَانَ رَجُلٌ مِنْ الأَنْصَارِ إِذَا غَابَ عَنْ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَشَهِدْتُه“ أَتَيْتُه“ بِمَا يَكُونُ وَإِذَا غِبْتُ عَنْ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَشَهِدَ أَتَانِي بِمَا يَكُونُ مِنْ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَكَانَ مَنْ حَوْلَ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَدْ اسْتَقَامَ لَه“ فَلَمْ يَبْقَ إِلاَّ مَلِكُ غَسَّانَ بِالشَّأْمِ كُنَّا نَخَافُ أَنْ يَأْتِيَنَا فَمَا شَعَرْتُ إِلاَّ بِالأَنْصَارِيِّ وَهُوَ يَقُوْلُ إِنَّه“ قَدْ حَدَثَ أَمْرٌ قُلْتُ لَه“ وَمَا هُوَ أَجَاءَ الْغَسَّانِيُّ قَالَ أَعْظَمُ مِنْ ذَاكَ طَلَّقَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم نِسَاءَه“ فَجِئْتُ فَإِذَا الْبُكَاءُ مِنْ حُجَرِهِنَّ كُلِّهَا وَإِذَا النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم قَدْ صَعِدَ فِي مَشْرُبَةٍ لَه“ وَعَلٰى بَابِ الْمَشْرُبَةِ وَصِيفٌ فَأَتَيْتُه“ فَقُلْتُ اسْتَأْذِنْ لِي فَأَذِنَ لِي فَدَخَلْتُ فَإِذَا النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم عَلٰى حَصِيرٍ قَدْ أَثَّرَ فِي جَنْبِه„ وَتَحْتَ رَأْسِه„ مِرْفَقَةٌ مِنْ أَدَمٍ حَشْوُهَا لِيفٌ وَإِذَا أُهُبٌ مُعَلَّقَةٌ وَقَرَظٌ فَذَكَرْتُ الَّذِي قُلْتُ لِحَفْصَةَ وَأُمِّ سَلَمَةَ وَالَّذِي رَدَّتْ عَلَيَّ أُمُّ سَلَمَةَ فَضَحِكَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَلَبِثَ تِسْعًا وَعِشْرِينَ لَيْلَةً ثُمَّ نَزَلَ.
ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি এক বছর যাবৎ অপেক্ষায় ছিলাম যে ‘উমার (রাঃ) -এর কাছে সে দু’টি মহিলা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করবো যারা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর বিরুদ্ধে জোট বদ্ধ হয়েছিল। কিন্তু আমি তাঁকে খুব ভয় করে চলতাম। একদিন তিনি কোন এক স্থানে নামলেন এবং (প্রাকৃতিক প্রয়োজনে) আরাক গাছের নিকটে গেলেন। যখন তিনি বেরিয়ে এলেন, আমি তাকে (সে সম্পর্কে) জিজ্ঞেস করলাম। তিনি বললেনঃ (তাঁরা হলেন) ‘আয়িশা ও হাফ্সাহ। এরপর তিনি বললেনঃ জাহিলী যুগে আমরা নারীদের কোন কিছু বলে গণ্যই করতাম না। যখন ইসলাম আবির্ভূত হলো এবং (কুরআনে) আল্লাহ তাদের (মর্যাদার কথা) উল্লেখ করলেন, তাতে আমরা দেখলাম যে, আমাদের উপর তাদের হক আছে এবং এতে আমাদের হস্তক্ষেপ করা চলবে না। একদা আমার স্ত্রী ও আমার মধ্যে কিছু কথাবার্তা হচ্ছিল। সে আমার উপর শক্ত ভাষা ব্যবহার করলো। আমি তাকে বললামঃ তুমি তো সে স্থানেই। স্ত্রী বললেনঃ তুমি আমাকে এমন বলছ, অথচ তোমার কন্যা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে কষ্ট দিচ্ছে। এরপর আমি হাফসাহ্র কাছে এলাম এবং বললামঃ আল্লাহ ও আল্লাহ্র রসূলের নাফরমানী করা থেকে আমি তোমাকে সতর্ক করে দিচ্ছি। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে কষ্ট দেয়ায় আমি হাফসার কাছেই প্রথমে আসি। এরপর আমি উম্মু সালমাহ (রাঃ) -এর কাছে এলাম এবং তাঁকেও তেমনি বললাম। তিনি বললেনঃ তোমার প্রতি আমার বিস্ময় হে উমার! তুমি আমার সকল ব্যাপারেই হস্তক্ষেপ করছ, কিছুই বাকী রাখনি, এমনকি রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ও তাঁর স্ত্রীদের ব্যাপারেও হস্তক্ষেপ করছ। এ কথা বলে তিনি (আমাকে) প্রত্যাখ্যান করলেন। এক লোক ছিলেন আনসারী। তিনি যখন রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর মজলিস থেকে দূরে থাকতেন এবং আমি উপস্থিত থাকতাম, যা কিছু হতো সে সব আমি তাঁকে জানাতাম। আর আমি যখন রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর মজলিস থেকে অনুপস্থিত থাকতাম, আর তখন তিনি উপস্থিত থাকতেন, তখন রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর এখানে যা কিছু ঘটতো তা এসে আমাকে জানাতেন। রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর চারপাশে যারা (রাজা-সম্রাট) ছিল তাঁদের উপর রসুলের কর্তৃত্ব কায়িম হয়েছিল। কেবল বাকী ছিল শামের (সিরিয়ার) গাস্সান শাসক। তার আক্রমনের আমরা আশঙ্কা করতাম। হঠাৎ আনসারী যখন বললঃ এক বড় ঘটনা ঘটে গেছে। আমি তাকে বললামঃ কী সে ঘটনা! গাস্সানী কি এসে পড়েছে? তিনি বললেনঃ এর চেয়েও ভয়াবহ। রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর সকল স্ত্রীকে তালাক দিয়েছেন। আমি সেখানে গেলাম। দেখলাম সকল কক্ষ থেকে কান্নার শব্দ আসছে। রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর কক্ষের কুঠুরিতে অবস্থান করছেন। প্রবেশ দ্বারে অল্প বয়স্ক একজন খাদিম বসে আছেন। আমি তার কাছে গেলাম এবং বললামঃ আমার জন্যে অনুমতি চাও। অনুমতি পেয়ে আমি ভিতরে ঢুকলাম। দেখলাম নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একটি চাটাইয়ের উপর শুয়ে আছেন, যাতে তাঁর পার্শ্বদেশে দাগ পড়ে গেছে। তাঁর মাথার নীচে চামড়ার একটি বালিশ, তার ভেতরে রয়েছে খেজুর গাছের ছাল। কয়েকটি চামড়া ঝুলানো রয়েছে এবং বিশেষ গাছের পাতা। এরপর হাফসাহ ও উম্মু সালামাকে আমি যা বলেছিলাম এবং উম্মু সালামাহ আমাকে যা বলে প্রত্যাখ্যান করেছিলেন, সে সব আমি তাঁর কাছে ব্যক্ত করলাম। রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হাসলেন। তিনি ঊনত্রিশ রাত সেখানে থাকার পর নামলেন।(আধুনিক প্রকাশনী- ৫৪১৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৩১৩)