৬৪/১৭. অধ্যায়ঃ
উহূদ যুদ্ধ
মহান আল্লাহ্র বাণীঃ “[হে রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)!] আর স্মরণ কর, যখন তুমি পরিজনদের নিকট হতে ভোরবেলায় বের হয়ে মুমিনদের যুদ্ধের জন্য ঘাঁটিতে বিন্যস্ত করছিলেন, আর আল্লাহ্ তা’আলা তো সব শোনেন, সব জানেন”- (সূরা আলে ইমরান ৩:১২১)। আল্লাহ্র বাণীঃ আর তোমরা সাহস হারিয়ো না এবং দুঃখও কর না, তোমরাই পরিণামে বিজয়ী হবে, যদি তোমরা প্রকৃত মু’মিন হও। আর যদি তোমাদের আঘাত লেগে থাকে তবে অনুরূপ আঘাত তো তাদেরও লেগেছিল। আর এ দিনগুলোকে আমি মানুষের মাঝে পর্যায়ক্রমে আবর্তিত করি। যাতে আল্লাহ্ জানতে পারেন কারা ঈমান এনেছে এবং যাতে তিনি তোমাদের মধ্য থেকে কতক শাহিদরূপে গ্রহণ করতে পারেন। আল্লাহ্ যালিমদের ভালবাসেন না। এবং যাতে আল্লাহ্ নির্মল করতে পারেন মু’মিনদের আর নিপাত করতে পারেন কাফিরদের। তোমরা কি ধারণা কর যে, তোমরা জান্নাতে প্রবেশ করবে, অথচ এখনও আল্লাহ্ প্রকাশ করেননি তোমাদের মধ্যে কারা জিহাদ করেছে এবং কারা ধৈর্যশীল? আর তোমরা তো মরণ কামনা করতে মৃত্যুর সম্মুখীন হওয়ার পূর্বেই। এখন তো তোমরা তা স্বচক্ষে দেখতে পাচ্ছ”- (সূরা আলে- ইমরান ৩:১৩৯-১৪৩)। মহান আল্লাহ্র বাণীঃ “আর আল্লাহ্ তাঁর প্রতিশ্রুতি তোমাদের সত্যে পরিণত করে দেখিয়েছেন যখন তোমরা কাফিরদের খতম করেছিলে তাঁরই আদেশে। তারপর তোমরা সাহস হারিয়ে ফেললে এবং পরস্পর মতবিরোধ করলে নির্দেশ পালনে, আর যা তোমরা ভালবাস তা তোমাদের দেখবার পরও তোমরা অবাধ্য হলে। তোমাদের মাঝে কতক এরূপ আছে যারা কামনা করেছিল দুনিয়া এবং কতক কামনা করেছিল আখিরাত। তারপর পরীক্ষা করার জন্য তিনি তাদের থেকে তোমাদের ফিরিয়ে দিলেন। বস্তুতঃ তিনি তোমাদের ক্ষমা করেছে। আর আল্লাহ্ তো মু’মিনদের প্রতি অত্যন্ত অনুগ্রহশীল”- (সূরা আলে ইমরান ৩:১৫২)। মহান আল্লাহ্র বাণীঃ যারা আল্লাহ্র পথে নিহত হয় তোমরা কখনও তাদের মৃত ধারণা কর না। বরং তারা তাদের রবে কাছে আছে জীবিত এবং জীবিকাপ্রাপ্ত”- (সূরা আলে ইমরান ৩:১৬৯)
সহিহ বুখারী : ৪০৪২
সহিহ বুখারীহাদিস নম্বর ৪০৪২
مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ الرَّحِيْمِ أَخْبَرَنَا زَكَرِيَّاءُ بْنُ عَدِيٍّ أَخْبَرَنَا ابْنُ الْمُبَارَكِ عَنْ حَيْوَةَ عَنْ يَزِيْدَ بْنِ أَبِيْ حَبِيْبٍ عَنْ أَبِي الْخَيْرِ عَنْ عُقْبَةَ بْنِ عَامِرٍ قَالَ صَلَّى رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم عَلَى قَتْلَى أُحُدٍ بَعْدَ ثَمَانِيْ سِنِيْنَ كَالْمُوَدِّعِ لِلْأَحْيَاءِ وَالأَمْوَاتِ ثُمَّ طَلَعَ الْمِنْبَرَ فَقَالَ إِنِّيْ بَيْنَ أَيْدِيْكُمْ فَرَطٌ وَأَنَا عَلَيْكُمْ شَهِيْدٌ وَإِنَّ مَوْعِدَكُمُ الْحَوْضُ وَإِنِّيْ لَأَنْظُرُ إِلَيْهِ مِنْ مَقَامِيْ هَذَا وَإِنِّيْ لَسْتُ أَخْشَى عَلَيْكُمْ أَنْ تُشْرِكُوْا وَلَكِنِّيْ أَخْشَى عَلَيْكُمْ الدُّنْيَا أَنْ تَنَافَسُوْهَا قَالَ فَكَانَتْ آخِرَ نَظْرَةٍ نَظَرْتُهَا إِلَى رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم
উকবাহ ইবনু ‘আমির (রাঃ) হতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আট বছর পর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) উহূদের শহীদদের জন্য (কবরস্থানে) এমনভাবে দু’আ করলেন যেমন কোন বিদায় গ্রহণকারী জীবিত ও মৃতদের জন্য দু’আ করেন। তারপর তিনি (ফিরে এসে) মিম্বারে উঠে বললেন, আমি তোমাদের অগ্রে প্রেরিত এবং আমি তোমাদের সাক্ষীদাতা। এরপর (কাউসার) হাউযের ধারে তোমাদের সঙ্গে আমার সাক্ষাৎ ঘটবে। আমার এ স্থান থেকেই আমি হাউয দেখতে পাচ্ছি। তোমরা শিরকে জড়িয়ে যাবে আমি এ ভয় করি না। তবে আমার আশঙ্কা হয় যে, তোমরা দুনিয়ায় সুখ-শান্তি লাভে প্রতিযোগিতা করবে। বর্ণনাকারী বলেন, আমর এ দর্শনই ছিল রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে শেষবারের মতো দর্শন। (১৩৪৪, ৩৫৯৬, ৪০৮৫, ৬৪২৬, ৬৫৯০) [মুসলিম ৪৩/৯, হাঃ ২২৯৬, আহমদ ১৭৩৪৯] (আ.প্র. ৩৭৪০, ই.ফা. ৩৭৪৪)
আবূল ওয়াক্ত ও আসীলির বর্ণনাতে সেখানে ‘উকবাহ বিন ‘আমিরের পূর্বে ইবনু আব্বাস থেকে বর্ণিত হয়েছে, নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) উহূদের যুদ্ধে বলেছিলেনঃ সেহেতু তার মতে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) উক্ত কথাটি বাদরের দিন বলেছিলেন। এই তো জিবরীল, তার ঘোড়ার মস্তকে হাত রেখে আছেন।.......... হাদীসের শেষ পর্যন্ত। হাদীসটিতে দুটি কারনে পরিলক্ষিত হচ্ছে। প্রথমতঃ হাদীসটি সনদ ও মতন সহ অধ্যায়ে অতিবাহিত হয়েছে। ফলে এখানে আবূ যর ও বুখারীর অন্য কোন গ্রহণযোগ্য বর্ণনাকারীদের কেউই এটি বর্ণনা করেননি। ইমাম ইসমা’ঈলী ও আবূ না’ঈম কেউ এটিকে বর্ণনা করেননি। দ্বিতীয়তঃ এটি প্রসিদ্ধ যে, অত্র হাদীসের মতনে বাদ্র যুদ্ধের বর্ণনাটিই অধিক পরিচিত, উহূদ যুদ্ধ নয়। আল্লাহ্ সাহায্যকারী।