সাক্ষ্যদান
৫২/১. অধ্যায়ঃ
বাঁদীই প্রমাণ উপস্থাপন করবে।
আল্লাহ তা‘আলার বাণী : হে মু’মিনগণ! তোমরা যখন একে অন্যের সঙ্গে নির্ধারিত সময়ের জন্য ঋণের কারবার কর তখন তা লিখে রাখবে; তোমাদের মধ্যে কোন লেখক যে ন্যায্যভাবে লিখে দেয়; লেখক লিখতে অস্বীকার করবে না। যেমন আল্লাহ তাকে শিক্ষা দিয়েছেন, সুতরাং সে যেন লিখে এবং ঋণগ্রহীতা যেন লেখার বিষয়বস্তু বলে দেয় এবং তার প্রতিপালক আল্লাহকে ভয় করে, আর তার কিছু যেন না কমায়; কিন্তু ঋণ গ্রহীতা যদি নির্বোধ অথবা দুর্বল হয় অথবা লেখার বিষয়বস্তু বলে দিতে না পারে তবে যেন তার অভিভাবক ন্যায্যভাবে লেখার বিষয়বস্তু বলে দেয়। সাক্ষীদের মধ্যে যাদের উপর তোমরা রাযী তাদের মধ্যে দু’জন পুরুষ সাক্ষী রাখবে, যদি দু’জন পুরুষ না থাকে তবে একজন পুরুষ ও দু’জন স্ত্রীলোক; স্ত্রীলোকদের মধ্যে একজন ভুল করলে তাদের একজন অপরজনকে স্মরণ করিয়ে দিবে। সাক্ষীগণকে যখন ডাকা হবে তখন তারা যেন অস্বীকার না করে। এটা ছোট হোক অথবা বড় হোক, মেয়াদসহ লিখতে তোমরা কোন রূপ বিরক্ত হইও না। আল্লাহর নিকট এটা ন্যায্যতর ও প্রমাণের জন্য দৃঢ়তর এবং তোমাদের মধ্যে সন্দেহ উদ্রেক না হওয়ার নিকটতর; কিন্তু তোমরা পরস্পর যে ব্যবসার নগদ আদান-প্রদান কর তা তোমরা না লিখলে কোন দোষ নাই। তোমরা যখন পরস্পরের মধ্যে বেচাকেনা কর তখন সাক্ষী রাখিও, লেখক এবং সাক্ষী যেন ক্ষতিগ্রস্থ না হয়। যদি তোমরা ক্ষতিগ্রস্থ কর তবে তা তোমাদের জন্য পাপ। তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং তিনি তোমাদেরকে শিক্ষা দেন। আল্লাহ সর্ববিষয়ে সবিশেষ অবহিত। (সূরা আল-বাকারাহ : ২৮২)এবং মহান আল্লাহর বাণী : হে মু’মিনগণ! তোমরা ন্যায় বিচারে দৃঢ় প্রতিষ্ঠিত থাকবে আল্লাহর সাক্ষীস্বরূপ যদিও তা তোমাদের নিজেদের অথবা পিতামাতা এবং আত্মীয়-স্বজনের বিরুদ্ধে হয়; সে বিত্তবান হোক অথবা বিত্তহীন হোক আল্লাহ উভয়েরই ঘনিষ্টতর। সুতরাং তোমরা ন্যায়বিচার করতে প্রবৃত্তির অনুগামী হইও না। যদি তোমরা পেঁচালো কথা বল অথবা পাশ কাটিয়ে যাও তবে তোমরা যা কর আল্লাহ তার সম্যক খবর রাখেন। (সূরা আন-নিসা : ১৩৫)
৫২/২. অধ্যায়ঃ
যখন কেউ কারো চরিত্রের ব্যাপারে প্রত্যয়ন করে যে, তাকে তো ভালো বলেই জানি কিংবা বলে যে, এর সম্পর্কে তো ভালো বৈ কিছু জানি না।
সহিহ বুখারী : ২৬৩৭
সহিহ বুখারীহাদিস নম্বর ২৬৩৭
حَدَّثَنَا حَجَّاجٌ، حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عُمَرَ النُّمَيْرِيُّ، حَدَّثَنَا يُونُسُ،. وَقَالَ اللَّيْثُ حَدَّثَنِي يُونُسُ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، قَالَ أَخْبَرَنِي عُرْوَةُ، وَابْنُ الْمُسَيَّبِ، وَعَلْقَمَةُ بْنُ وَقَّاصٍ، وَعُبَيْدُ اللَّهِ، عَنْ حَدِيثِ، عَائِشَةَ ـ رضى الله عنها ـ وَبَعْضُ حَدِيثِهِمْ يُصَدِّقُ بَعْضًا، حِينَ قَالَ لَهَا أَهْلُ الإِفْكِ، فَدَعَا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم عَلِيًّا وَأُسَامَةَ حِينَ اسْتَلْبَثَ الْوَحْىُ يَسْتَأْمِرُهُمَا فِي فِرَاقِ أَهْلِهِ، فَأَمَّا أُسَامَةُ فَقَالَ أَهْلُكَ وَلاَ نَعْلَمُ إِلاَّ خَيْرًا. وَقَالَتْ بَرِيرَةُ إِنْ رَأَيْتُ عَلَيْهَا أَمْرًا أَغْمِصُهُ أَكْثَرَ مِنْ أَنَّهَا جَارِيَةٌ حَدِيثَةُ السِّنِّ تَنَامُ عَنْ عَجِينِ أَهْلِهَا، فَتَأْتِي الدَّاجِنُ فَتَأْكُلُهُ. فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " مَنْ يَعْذِرُنَا مِنْ رَجُلٍ بَلَغَنِي أَذَاهُ فِي أَهْلِ بَيْتِي فَوَاللَّهِ مَا عَلِمْتُ مِنْ أَهْلِي إِلاَّ خَيْرًا، وَلَقَدْ ذَكَرُوا رَجُلاً مَا عَلِمْتُ عَلَيْهِ إِلاَّ خَيْرًا ".
ইবনু শিহাব (রাঃ) হতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমার নিকট ‘আয়িশা (রাঃ)-এর ঘটনা সম্পর্কে ‘উরওয়াহ, ইবনু মুসায়্যাব, ‘আলক্বামাহ, ইবনু ওয়াক্কাস এবং ‘উবায়দুল্লাহ (রাঃ) বর্ণনা করেছেন, তাদের বর্ণিত হাদীসের এক অংশ অন্য অংশের সত্যতা প্রমাণ করে, যা অপবাদকারীরা ‘আয়িশা (রাঃ) সম্পর্কে রটনা করেছিল। এদিকে ওয়াহী অবতরণ বিলম্বিত হল। তখন আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ‘আলী ও উসামাহ (রাঃ) -কে স্বীয় স্ত্রীকে পৃথক রাখার ব্যাপারে পরামর্শের জন্য ডেকে পাঠালেন। উসামাহ (রাঃ) তখন বললেন, আপনার স্ত্রী সম্পর্কে ভাল ব্যতীত কিছুই আমরা জানি না। আর বারীরা (রাঃ) বললেন, তার সম্পর্কে একটি মাত্র কথাই আমি জানি, তা এই যে, অল্প বয়স্কা হবার কারণে পরিবারের লোকদের জন্য আটা খামির করার সময় তিনি ঘুমিয়ে পড়েন সেই ফাঁকে বকরী এসে তা খেয়ে ফেলে। আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তখন বললেন, সেই ব্যক্তির বিরুদ্ধে কে আমাকে সাহায্য করবে, যার জ্বালাতন আমার পরিবার-পরিজন পর্যন্ত পৌঁছেছে? আল্লাহর কসম! আমার স্ত্রী সম্পর্কে আমি ভাল ব্যতীত কিছু জানি না। আর এমন এক ব্যক্তির কথা তারা বলে, যার সম্পর্কে আমি ভাল ব্যতীত কিছু জানি না।