পরিচ্ছদঃ ৭.
তৃতীয় অনুচ্ছেদ
মিশকাতুল মাসাবিহ : ৭৪৮
মিশকাতুল মাসাবিহহাদিস নম্বর ৭৪৮
عَنْ مُعَاذِ بْنِ جَبَلٍ قَالَ احْتُبِسَ عَنَّا رَسُولُ اللهِ ﷺ ذَاتَ غَدَاةٍ عَنْ صَلَاةِ الصُّبْحِ حَتّى كِدْنَا نَتَرَاءَى عَيْنَ الشَّمْسِ فَخَرَجَ سَرِيعًا فَثُوِّبَ بِالصَّلَاةِ فَصَلّى رَسُولُ اللهِ ﷺ وَتَجَوَّزَ فِي صَلَاتِه فَلَمَّا سَلَّمَ دَعَا بِصَوْتِه فَقَالَ لَنَا عَلَى مَصَافِّكُمْ كَمَا أَنْتُمْ ثُمَّ انْفَتَلَ إِلَيْنَا ثُمَّ قَالَ أَمَا إِنِّي سَأُحَدِّثُكُمْ مَا حَبَسَنِي عَنْكُمْ الْغَدَاةَ أَنِّي قُمْتُ مِنَ اللَّيْلِ فَتَوَضَّأْتُ وَصَلَّيْتُ مَا قُدِّرَ لِي فَنَعَسْتُ فِي صَلَاتِي فَاسْتَثْقَلْتُ فَإِذَا أَنَا بِرَبِّي تَبَارَكَ وَتَعَالى فِي أَحْسَنِ صُورَةٍ فَقَالَ يَا مُحَمَّدُ قُلْتُ لَبَّيْكَ رَبِّ قَالَ فِيمَ يَخْتَصِمُ الْمَلأَ الْأَعْلى قُلْتُ لَا أَدْرِي رَبِّ قَالَهَا ثَلَاثًا قَالَ فَرَأَيْتُه وَضَعَ كَفَّه بَيْنَ كَتِفَيَّ حَتّى وَجَدْتُ بَرْدَ أَنَامِلِه بَيْنَ ثَدْيَيَّ فَتَجَلّى لِي كُلُّ شَيْءٍ وَعَرَفْتُ فَقَالَ يَا مُحَمَّدُ قُلْتُ لَبَّيْكَ رَبِّ قَالَ فِيمَ يَخْتَصِمُ الْمَلأَ الْأَعْلى قُلْتُ فِي الْكَفَّارَاتِ قَالَ مَا هُنَّ قُلْتُ مَشْيُ الْأَقْدَامِ إِلَى الْجَمَاعَاتِ وَالْجُلُوسُ فِي الْمَسَاجِدِ بَعْدَ الصَّلَوَاتِ وَإِسْبَاغُ الْوُضُوءِ فِي الْمَكْرُوهَاتِ قَالَ ثُمَّ فِيمَ قُلْتُ إِطْعَامُ الطَّعَامِ وَلِينُ الْكَلَامِ وَالصَّلَاةُ بِاللَّيْلِ وَالنَّاسُ نِيَامٌ قَالَ سَلْ قُلْ اللّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ فِعْلَ الْخَيْرَاتِ وَتَرْكَ الْمُنْكَرَاتِ وَحُبَّ الْمَسَاكِينِ وَأَنْ تَغْفِرَ لِي وَتَرْحَمَنِي وَإِذَا أَرَدْتَ فِتْنَةَ قَوْمٍ فَتَوَفَّنِي غَيْرَ مَفْتُونٍ أَسْأَلُكَ حُبَّكَ وَحُبَّ مَنْ يُحِبُّكَ وَحُبَّ عَمَلٍ يُقَرِّبُ إِلى حُبِّكَ قَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ إِنَّهَا حَقٌّ فَادْرُسُوهَا ثُمَّ تَعَلِّمُوْهَا. رَوَاهُ أَحْمَد وَالتِّرْمِذِيُّ وقال هذَا حَدِيْثٌ حَسَنٌ صَحِيْحٌ وَسَالَتُ مُحَمَّدَ بْنَ اِسْمَاعِيْلَ عَنْ هذَا الْحَدِيْثَ فَقَالَ هذَا حَدِيْثٌ صَحِيْحٌ
মু‘আয ইবনু জাবাল (রাঃ) হতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একদিন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) (নিত্য দিনের অভ্যাসের বিপরীত) ফাজ্রের সলাতে আসতে এতটা দেরী করলেন যে, সূর্য প্রায় উঠে উঠে। এর মধ্যে তাড়াহুড়া করে তিনি আসলেন। সাথে সাথে সলাতের ইক্বামাত দেয়া হল। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সংক্ষিপ্ত করে সলাত আদায় করলেন। সালাম দেয়ার পর তিনি উচ্চ কণ্ঠে আমাদের উদ্দেশ্য করে বললেন, তোমরা সলাতের কাতারে যে যেভাবে আছ সেভাবে থাক। এরপর তিনি আমাদের দিকে ফিরলেন ও বললেন, শুন! আজ ভোরে তোমাদের কাছে আসতে যে কারণ আমার কাছে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল তা হল, আমি রাতে ঘুম থেকে উঠলাম। উযূ করলাম। পরে আমার পক্ষে যা সম্ভব হল সলাত আদায় করলাম। সলাতে আমার তন্দ্রা ধরল, ঘুমে অসাড় হয়ে পড়লাম। এ সময় দেখি, আমি আমার ‘প্রতিপালক’ তাবারাকা ওয়া তা’আলার কাছে উপস্থিত। তিনি খুবই উত্তম অবস্থায় আছেন। তিনি আমাকে ডাকলেন, হে মুহাম্মদ! আমি উত্তর দিলাম, হে আমার ‘রব’, আমি উপস্থিত। তিনি বললেন, “মালা-উল আ’লা-” অর্থাৎ শীর্ষস্থানীয় মালায়িকাহ্ কী নিয়ে বিতর্ক করছে? আমি উত্তরে বললাম, আমি তো কিছু জানি না, হে আমার ‘রব’! এভাবে তিনি আমাকে তিনবার জিজ্ঞেস করলেন। তারপর দেখি, তিনি আমার দু’কাঁধের মাঝখানে তাঁর হাত রেখে দিয়েছেন। এতে আমি আমার সিনায় তাঁর আঙ্গুলের শীতলতা অনুভব করতে লাগলাম। আমার নিকট তখন সব জিনিস প্রকাশ হয়ে পড়ল। আমি সকল ব্যাপার বুঝে গেলাম। তারপর তিনি আবার আমাকে ডাকলেন, হে মুহাম্মাদ! আমি বললাম, আমি উপস্থিত হে পরওয়ারদিগার। এখন বল দেখি “মালা-উল আ’লা-” কী নিয়ে তর্ক-বিতর্ক করছে? আমি বললাম, গুনাহ মিটিয়ে দেবার ব্যাপারসমূহ নিয়ে। আল্লাহ তা’আলা বললেন, সে সব জিনিস কী? আমি বললাম, সলাতের জন্য মাসজিদে যাওয়া, সলাতের পরে দু’আ ইত্যাদির জন্য মাসজিদে বসা এবং শীতের বা অন্য কারণে উযূ করা কষ্টকর হলেও তা উপেক্ষা করে উযূ করা। আবার আল্লাহ তা’আলা জিজ্ঞেস করলেন, আর কী ব্যাপারে তারা বিতর্ক করছে? আমি বললাম, দারাজাত অর্থাৎ মর্যাদার ব্যাপারে। তিনি বললেন, সে সব কী? আমি বললাম, গরীব-মিসকীনদের খাবার দেয়া, ভদ্রভাবে কথা বলা, রাতে মানুষ যখন ঘুমায় সে সময় উঠে (তাহাজ্জুদের) সলাত আদায় করা। তারপর আবার আল্লাহ তা’আলা বললেন, আচ্ছা ঠিক আছে। এখন তোমার যা চাওয়ার তা নিবেদন কর। তাই আমি দু’আ করলামঃ “হে আল্লাহ! আমি তোমার কাছে নেক কাজ করার, খারাপ কাজ থেকে বিরত থাকার, মিসকীনের বন্ধুত্ব, তোমার ক্ষমা ও রহমাত চাই। আর যখন তুমি কোন জাতির মধ্যে গুমরাহী ছড়াতে চাও, তার আগে আমাকে গুমরাহী ছাড়া উঠিয়ে নিও। আমি তোমার কাছে তোমার ভালোবাসা আর ঐ ব্যক্তির ভালোবাসা চাই, যে তোমাকে ভালোবাসে, আর আমি এমন ‘আমালকে ভালবাসতে চাই যে ‘আমাল আমাকে তোমার ভালোবাসার নিকটবর্তী করবে”। তারপর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, এ স্বপ্ন ষোলআনা সত্য। তাই তোমরা এ কথা স্মরণ রাখবে, আর লোকদেরকে শিখাবে। [১]
[১] সহীহ : তিরমিযী ৩২৩৫, আহমাদ ২২১০৯।