পরিচ্ছদঃ

তৃতীয় অনুচ্ছেদ

মিশকাতুল মাসাবিহহাদিস নম্বর ৩৯

وَعَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ قَالَ كُنَّا قُعُودًا حَوْلَ رَسُولِ اللهِ ﷺ مَعَنَا أَبُوْ بَكْرٍ وَعُمَرُ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا فِي نَفَرٍ فَقَامَ رَسُولُ اللهِ ﷺ مِنْ بَيْنِ أَظْهُرِنَا فَأَبْطَأَ عَلَيْنَا وَخَشِينَا أَنْ يُقْتَطَعَ دُونَنَا وَفَزِعْنَا فَقُمْنَا فَكُنْتُ أَوَّلَ مَنْ فَزِعَ فَخَرَجْتُ أَبْتَغِي رَسُولَ اللهِ ﷺ حَتّى أَتَيْتُ حَائِطًا لِلْأَنْصَارِ لِبَنِي النَّجَّارِ فَسَاوَرْتُ بِه هَلْ أَجِدُ لَه بَابًا؟ فَلَمْ أَجِدْ فَإِذَا رَبِيعٌ يَدْخُلُ فِي جَوْفِ حَائِطٍ مِنْ بِئْرٍ خَارِجَةٍ وَالرَّبِيعُ الْجَدْوَلُ قَالَ فَاحْتَفَزْتُ فَدَخَلْتُ عَلى رَسُولِ اللهِ ﷺ فَقَالَ : أَبُوْ هُرَيْرَةَ؟ فَقُلْتُ نَعَمْ يَا رَسُولَ اللهِ! قَالَ مَا شَأْنُكَ؟ قُلْتُ كُنْتَ بَيْنَ أَظْهُرِنَا فَقُمْتَ فَأَبْطَأْتَ عَلَيْنَا فَخَشِينَا أَنْ تُقْتَطَعَ دُونَنَا فَفَزِعْنَا فَكُنْتُ أَوَّلَ مِنْ فَزِعَ فَأَتَيْتُ هذَا الْحَائِطَ فَاحْتَفَزْتُ كَمَا يَحْتَفِزُ الثَّعْلَبُ وَهَؤُلَاءِ النَّاسُ وَرَائِـي. فَقَالَ : يَا أَبَا هُرَيْرَةَ! وَأَعْطَانِي نَعْلَيْهِ فَقَالَ : اذْهَبْ بِنَعْلَيَّ هَاتَيْنِ فَمَنْ لَقِيتَ مِنْ وَرَاءِ هذَا الْحَائِطِ يَشْهَدُ أَنْ لَّا إِلهَ اِلَّا اللّهُ مُسْتَيْقِنًا بِهَا قَلْبُه فَبَشِّرْهُ بِالْجَنَّةِ» فَكَانَ أَوَّلَ مَنْ لَقِيتُ عُمَرُ فَقَالَ مَا هَاتَانِ النَّعْلَانِ يَا أَبَا هُرَيْرَةَ؟ فَقُلْتُ هَاتَانِ نَعْلَا رَسُولِ اللهِ ﷺ بَعَثَنِي بِهِمَا مَنْ لَقِيتُ يَشْهَدُ أَنْ لَّا إِلهَ اِلَّا اللّهُ مُسْتَيْقِنًا بِهَا قَلْبُه بَشَّرْتُه بِالْجَنَّةِ فَضَرَبَ عُمَرُ بَيْنَ ثَدْيَيَّ فَخَرَرْتُ لِاسْتِي فَقَالَ اِرْجِعْ يَا أَبَا هُرَيْرَةَ فَرَجَعْتُ إِلى رَسُولِ اللهِ ﷺ فَأَجْهَشْتُ بُكَاءً وَرَكِبَنِي عُمَرُ وَإِذَا هُوَ عَلى أَثَرِي فَقَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ : «مَا لَكَ يَا أَبَا هُرَيْرَةَ؟» قُلْتُ لَقِيتُ عُمَرَ فَأَخْبَرْتُه بِالَّذِي بَعَثْتَنِي بِه فَضَرَبَ بَيْنَ ثَدْيَيَّ ضَرْبَةً خَرَرْتُ لِاسْتِي فَقَالَ ارْجِعْ فَقَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ : «يَا عُمَرُ! مَا حَمَلَكَ عَلى مَا فَعَلْتَ؟» قَالَ يَا رَسُولَ اللهِ بِأَبِي أَنْتَ وَأُمِّي أَبَعَثْتَ أَبَا هُرَيْرَةَ بِنَعْلَيْكَ مَنْ لَقِيَ يَشْهَدُ أَنْ لَّا إِلهَ اِلَّا اللّهُ مُسْتَيْقِنًا بِهَا قَلْبُه بَشَّرَه بِالْجَنَّةِ؟ قَالَ : «نَعَمْ». قَالَ فَلَا تَفْعَلْ فَإِنِّي أَخْشَى أَنْ يَتَّكِلَ النَّاسُ عَلَيْهَا فَخَلِّهِمْ يَعْمَلُونَ قَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ : فَخَلِّهِمْ. رَوَاهُ مُسْلِمٌ

আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, একদা আমরা কয়েকজন রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে ঘিরে বসা ছিলাম। আমাদের সাথে আবূ বাকর ও ‘উমার (রাঃ) ও ছিলেন। হঠাৎ রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদের মধ্য হতে উঠে চলে গেলেন এবং এত বিলম্ব করলেন যাতে আমরা শঙ্কাগ্রস্ত হয়ে পড়লাম। না জানি আমাদের হতে বিচ্ছিন্ন হয়ে আবার কোন বিপদে পড়লেন কিনা। এতে আমরা ঘাবড়িয়ে গেলাম এবং উঠে বের হয়ে পড়লাম। অবশ্য সকলের মধ্যে আমিই প্রথম ভীত হয়ে পড়েছিলাম। তাই রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সন্ধানে আমি সকলের আগে বের হলাম। এমনকি খুঁজতে খুঁজতে আমি বানী নাজ্জার গোত্রের জনৈক আনসারীর প্রাচীরবেষ্টিত বাগানের নিকট পৌছলাম। ভিতরে প্রবেশ করার জন্য তার চারদিকে দরজা খুঁজতে লাগলাম। হঠাৎ দেখি, বাইরের একটি কূপ হতে একটি ছোট নালা এসে বাগানের মধ্যে প্রবেশ করেছে। তিনি বলেন, আমি জড়োসড়ো হয়ে তাতে প্রবেশ করলাম এবং ধীরে ধীরে রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট যেয়ে পৌছলাম। তিনি (আমাকে তাঁর সামনে দেখে বিস্ময় প্রকাশ করে) বললেন, আবূ হুরায়রাহ্ নাকি! আমি বললাম, হাঁ, হে আল্লাহর রসূল! তিনি বললেন, কি ব্যাপার? (তুমি এখানে?) আমি বললাম, হে আল্লাহর রসূল! আপনি আমাদের মধ্যে বসা ছিলেন, হঠাৎ উঠে চলে আসলেন। অনেকক্ষন অপেক্ষা করে আপনাকে ফিরে আসতে না দেখে আমরা ভয় পেয়ে গেলাম। (আল্লাহ্ না করুন) আমাদের হতে বিচ্ছিন্ন হয়ে আপনি কোনরূপ বিপদের সম্মুখীন হলেন কিনা। এজন্য আমরা সকলেই ব্যতিব্যস্ত হয়ে পড়ি এবং সকলের মধ্যে আমিই প্রথম ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে পড়ি। অতঃপর (আপনাকে খোঁজ করতে করতে) এ বাগানের দিকে আসি এবং শিয়ালের ন্যায় খুব সরু হয়ে বাগানে প্রবেশ করি। আর অন্যান্যরাও (আপনার জন্য) আমার পেছনে আসছে। রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর জুতাদ্বয় আমার হাতে তুলে দিয়ে বললেন, হে আবূ হুরায়রাহ্! আমার জুতা দু‘টি সাথে নিয়ে যাও! (তুমি আমার কাছে এসেছিলে লোকেরা যেন বুঝতে পারে তার নিদর্শনস্বরূপ) আর বাগানের বাইরে যাদের সাথে তোমার সাক্ষাৎ হবে তাদের মধ্যে যারা সত্য দৃঢ় মনে ‘আক্বীদার সাথে এ ঘোষণা দিবে, ‘আল্লাহ্ ব্যতীত প্রকৃত কোন ইলাহ্ নেই”, তাদেরকে তুমি জান্নাতের সুসংবাদ দিয়ে দাও। আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) বলেন, (রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নিদর্শন নিয়ে বাইরে আসলে) প্রথমেই ‘উমার-এর সাথে আমার সাক্ষাৎ হল। তিনি জিজ্ঞেস করলেন, আবূ হুরায়রাহ্! এ জুতা দুটি কার ? আমি বললাম, এ জুতা দুটি রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর। তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এ জুতা দুটি আমার কাছে দিয়ে বলেছেন, যে ব্যক্তি সত্য দৃঢ় মনে ‘আক্বীদার সাথে এ সাক্ষ্য দিবে যে, “আল্লাহ্ ছাড়া প্রকৃত কোন ইলাহ্ নেই”, আমি যেন তাকে জান্নাতের সুসংবাদ দেই। এ কথা শুনা মাত্রই ‘উমার আমার বুকের উপর এমন ঘুষি মারলেন যে, আমি চিৎ হয়ে পড়ে গেলাম। অতঃপর ‘উমার আমাকে বললেন, ফিরে যাও, হে আবূ হুরায়রাহ্! তাই আমি কাঁদতে কাঁদতে রসুলের কাছে ফিরে এলাম। (আমার মনে ‘উমারের ভয় ছিল) পিছন ফিরে দেখি ‘উমার আমার সাথে এসে পৌছেছেন। রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) (কাঁদতে দেখে) জিজ্ঞেস করলেন, হে ‘উমার! এমন করলে কেন? ‘উমার (রাঃ) বললেন, হে আল্লাহর রসূল! আপনার জন্য আমার পিতা-মাতা কুরবান হোক। আপনি আপনার জুতা দু’টি দিয়ে আবূ হুরায়রাহ কে পাঠিয়েছেন এ বলে, যে ব্যক্তি অন্তরের স্থির বিশ্বাসের সাথে এ সাক্ষ্য দিবে, আল্লাহ্ ছাড়া প্রকৃত কোন ইলাহ্ নেই, তাকে যেন সে জান্নাতের সুসংবাদ দেয়? রসুলূল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, হাঁ। ‘উমার বললেন, (হে আল্লাহর রসূল! অনুগ্রহ করে) এরূপ বলবেন না। আমার আশঙ্কা হয় (এ কথা শুনে) পরবর্তী লোকেরা এর উপর নির্ভর করে বসবে (‘আমাল’ করা ছেড়ে দিবে)। সুতরাং তাদেরকে যথাযথভাবে ‘আমাল করতে দিন। এ কথা শুনে রসুলূল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, ঠিক আছে! তাদেরকে ‘আমাল করতে দাও। [১]

[১] সহীহ: মুসলিম ৩২, সহীহ ইবনু হিব্বান ৪৫৪৩।

সেটিংস

ফন্ট সেটিংস

আরবি ফন্ট ফেস

আরবি ফন্ট সাইজ

২৪

অনুবাদ ফন্ট সাইজ

১৮

আল হাদিস অ্যাপ ডাউনলোড করুন

App Banner

ইসলামের জ্ঞান প্রচারে সহায়ক হোন

আপনার নিয়মিত সহায়তা আমাদের দ্বীনি ভাই-বোনের কাছে ইসলামের দাওয়াত পৌঁছাতে সাহয্য করবে। আমাদের মিশনে আপনিও অংশ নিন এবং বড় পরিবর্তনের অংশীদার হোন।

সাপোর্ট করুন