পরিচ্ছদঃ ১.
প্রথম অনুচ্ছেদ
মিশকাতুল মাসাবিহ : ২২৬৭
মিশকাতুল মাসাবিহহাদিস নম্বর ২২৬৭
وَعَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُوْلُ اللّٰهِ ﷺ: «إِنَّ لِلّٰهِ مَلَائِكَةً يَطُوفُونَ فِى الطُّرُقِ يَلْتَمِسُونَ أَهْلَ الذِّكْرِ فَإِذَا وَجَدُوا قَوْمًا يَذْكُرُونَ اللّٰهَ تَنَادَوْا: هَلُمُّوا إِلٰى حَاجَتِكُمْ» قَالَ: «فَيَحُفُّونَهُمْ بِأَجْنِحَتِهِمْ إِلَى السَّمَاءِ الدُّنْيَا» قَالَ: «فَيَسْأَلُهُمْ رَبُّهُمْ وَهُوَ أَعْلَمُ بِهِمْ: مَا يَقُولُ عِبَادِىْ؟» قَالَ: «يَقُولُونَ: يُسَبِّحُونَكَ وَيُكَبِّرُونَكَ وَيُحَمِّدُونَكَ وَيُمَجِّدُونَكَ» قَالَ: «فَيَقُولُ: هَلْ رَأَوْنِىْ؟» قَالَ:«فَيَقُولُونَ: لَا وَاللّٰهِ مَا رَأَوْكَ» قَالَ فَيَقُولُ: كَيْفَ لَوْ رَأَوْنِىْ؟ قَالَ: «فَيَقُولُونَ: لَوْ رَأَوْكَ كَانُوا أَشَدَّ لَكَ عِبَادَةً وَأَشَدَّ لَكَ تَمْجِيدًا وَأَكْثَرَ لَكَ تَسْبِيحًا» قَالَ: «فَيَقُولُ: فَمَا يَسْأَلُونَ؟ قَالُوا: يَسْأَلُوْنَكَ الجنَّةَ» قَالَ: «يَقُوْلُ: وَهَلْ رَأَوْهَا؟» قَالَ: «فَيَقُولُونَ: لَا وَاللّٰهِ يَا رَبِّ مَا رَأَوْهَا» قَالَ: «فَيَقُولُ: فَكَيْفَ لَوْ رَأَوْهَا؟» قَالَ: «يَقُوْلُوْنَ: لَوْ أنَّهُمْ رَأَوْهَا كَانُوا أَشَدَّ حِرْصًا وَأَشَدَّ لَهَا طَلَبًا وَأَعْظَمَ فِيهَا رَغْبَةً قَالَ: فَمِمَّ يَتَعَوَّذُوْنَ؟» قَالَ: «يَقُولُونَ: مِنَ النَّارِ» قَالَ: «يَقُولُ: فَهَلْ رَأَوْهَا؟» قَالَ: يَقُولُونَ: «لَا وَاللّٰهِ يَا رَبِّ مَا رَأَوْهَا» قَالَ: «يَقُولُ: فَكَيْفَ لَوْ رَأَوْهَا؟» قَالَ: «يَقُولُونَ لَوْ رَأَوْهَا كَانُوا أَشَدَّ مِنْهَا فِرَارًا وَأَشَدَّ لَهَا مَخَافَةً» قَالَ: «فَيَقُولُ: فَأُشْهِدُكُمْ أَنِّىْ قَدْ غَفَرْتُ لَهُمْ» قَالَ: «يَقُولُ مَلَكٌ مِنَ الْمَلَائِكَةِ: فِيهِمْ فُلَانٌ لَيْسَ مِنْهُمْ إِنَّمَا جَاءَ لِحَاجَةٍ قَالَ: هُمُ الْجُلَسَاءُ لَا يَشْقٰى جَلِيسُهُمْ». رَوَاهُ الْبُخَارِىُّوَفِىْ رِوَايَةِ مُسْلِمٍ قَالَ: «إِنَّ لِلّٰهِ مَلَائِكَةً سَيَّارَةً فُضْلًا يَبْتَغُونَ مَجَالِسَ الذِّكْرِ فَإِذَا وَجَدُوْا مَجْلِسًا فِيهِ ذِكْرٌ قَعَدُوْا مَعَهُمْ وَحَفَّ بَعْضُهُمْ بَعْضًا بِأَجْنِحَتِهِمْ حَتّٰى يَمْلَأُوا مَا بَيْنَهُمْ وَبَيْنَ السَّمَاءِ الدُّنْيَا فَإِذَا تَفَرَّقُوا عَرَجُوا وَصَعِدُوا إِلَى السَّمَاءِ قَالَ: فَيَسْأَلُهُمُ اللّٰهُ وَهُوَ أَعْلَمُ: مِنْ أَيْنَ جِئْتُمْ؟ فَيَقُولُونَ: جِئْنَا مِنْ عِنْدِ عِبَادِكَ فِى الْأَرْضِ يُسَبِّحُونَكَ وَيُكَبِّرُونَكَ وَيُهَلِّلُونَكَ وَيُمَجِّدُونَكَ وَيَحْمَدُونَكَ وَيَسْأَلُونَكَ قَالَ: وَمَاذَا يَسْأَلُونِىْ؟ قَالُوا: يَسْأَلُونَكَ جَنَّتَكَ قَالَ: وَهَلْ رَأَوْا جَنَّتِىْ؟ قَالُوا: لَا أَىْ رَبِّ قَالَ: وَكَيْفَ لَوْ رَأَوْا جَنَّتِىْ؟ قَالُوا: وَيَسْتَجِيرُونَكَ قَالَ: وَمِمَّ يَسْتَجِيرُونِىْ؟ قَالُوا: مِنْ نَارِكَ قَالَ: وَهَلْ رَأَوْا نَارِىْ؟ قَالُوا: لَا. قَالَ: فَكَيْفَ لَوْ رَأَوْا نَارِىْ؟ قَالُوا: يَسْتَغْفِرُونَكَ» قَالَ: «فَيَقُولُ: قَدْ غَفَرْتُ لَهُمْ فَأَعْطَيْتُهُمْ مَا سَأَلُوا وَأَجَرْتُهُمْ مِمَّا اسْتَجَارُوْا» قَالَ: «يَقُولُونَ: رَبِّ فِيهِمْ فُلَانٌ عَبْدٌ خَطَّاءٌ وَإِنَّمَا مَرَّ فَجَلَسَ مَعَهُمْ» قَالَ: «فَيَقُولُ وَلَه غَفَرْتُ هُمُ الْقَوْمَ لَا يَشْقٰى بِهِمْ جَلِيْسُهُمْ
[আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ)] হতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আল্লাহর একদল মালাক (ফেরেশতা) রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে ঘুরে আল্লাহর জিকিরকারীদেরকে সন্ধান করেন। যখন তাঁরা কোন দলকে আল্লাহর জিকির করতে দেখে, তখন একে অপরকে বলেন, এসো! তোমাদের কামনার বিষয় এখানেই। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, এরপর তারা জিকিরকারী দলকে নিজেদের ডানা দিয়ে নিকটতম আসমান পর্যন্ত ঘিরে নেন। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, তাদেরকে তখন তাদের প্রতিপালক জিজ্ঞেস করেন, আমার বান্দারা কি বলছে? অথচ ব্যাপারটা তিনিই সবচেয়ে বেশি ভাল জানেন। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, তখন মালায়িকাহ্ (ফেরেশতা) (ফেরেশতাগণ) বলেন, তোমার বান্দারা তোমার পবিত্রতা বর্ণনা, মহত্ব ঘোষণা, প্রশংসা ও মর্যাদার বর্ণনা দিচ্ছে। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, তখন আল্লাহ তা‘আলা বলেন, তারা কি আমাকে দেখেছে? তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, তখন মালায়িকাহ্ (ফেরেশতা) বলেন, তোমার কসম! তারা কক্ষনো তোমাকে দেখেনি।তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, তখন আল্লাহ জিজ্ঞেস করেন। তারা যদি আমাকে দেখতে পেত, তাহলে অবস্থাটা কেমন হত? তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, তখন মালায়িকাহ্ (ফেরেশতা) বলেন, হে রব! যদি তারা তোমাকে দেখতে পেত, তাহলে তারা তোমার আরও বেশি ‘ইবাদাত করত, আরও বেশি তোমার গুণগান ও পবিত্রতা বর্ণনা করত। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, তখন আল্লাহ জিজ্ঞেস করেন, (প্রকৃতপক্ষে) তারা কি চায়? মালায়িকাহ্ (ফেরেশতা) বলেন, তারা তোমার কাছে জান্নাত চায়। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, তখন আল্লাহ তা‘আলা বলেন, তারা কি জান্নাত দেখেছে? মালায়িকাহ্ (ফেরেশতা) বলেন, হে রব! তোমার কসম! তারা কখনো জান্নাত দেখেনি। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, তখন আল্লাহ বলেন, তারা যদি জান্নাত দেখতে পেত, তাহলে কেমন হত? তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, মালায়িকাহ্ (ফেরেশতা) তখন বলেন, যদি তারা জান্নাত দেখতে পেত, অবশ্যই তারা তার জন্য খুবই লোভী হত, এর জন্য অনেক দু‘আ করত, তা পাওয়ার আগ্রহ বেশি দেখাত।তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, তখন আল্লাহ জিজ্ঞেস করেন, তারা কোন্ জিনিস হতে আশ্রয় চায়? তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, মালায়িকাহ্ (ফেরেশতা) তখন বলেন, তারা জাহান্নাম থেকে আশ্রয় চায়। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, তখন আল্লাহ জিজ্ঞেস করেন, তারা কি জাহান্নাম দেখেছে। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, মালায়িকাহ্ (ফেরেশতা) তখন বলেন, হে রব! তোমার কসম! তারা জাহান্নাম কক্ষনো দেখেনি। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, তখন আল্লাহ জিজ্ঞেস করেন, যদি তারা জাহান্নাম দেখতে পেত, কেমন হত? তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, মালায়িকাহ্ (ফেরেশতা) তখন উত্তরে বলেন, যদি তারা জাহান্নাম দেখতে পেত, তাহলে তারা জাহান্নাম থেকে অনেক দূরে পালিয়ে থাকত, একে বেশি ভয় করত। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, তখন আল্লাহ বলেন, তোমাদেরকে আমি সাক্ষী রেখে ঘোষণা করছি, আমি তাদেরকে ক্ষমা করে দিলাম। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, তখন মালায়িকাহ্’র (ফেরেশতা) একজন বলে ওঠেন, তাদের অমুক ব্যক্তি তাদের মধ্যে গণ্য নয়। সে তো শুধু তার কোন কাজেই এখানে এসেছে। তখন আল্লাহ বলেন, তাদের সাথে বসা কোন ব্যক্তিই তা থেকে বঞ্চিত হবে না। (বুখারী)সহীহ মুসলিম-এর এক বর্ণনায় আছে, আল্লাহ তা‘আলার অতিরিক্ত একদল পর্যটক মালাক রয়েছেন। তারা আল্লাহর জিকিরকারীদের মাজলিস খুঁজে বেড়ান। কোন মাজলিস পেয়ে গেলে তাদের সাথে বসে পড়েন। একে অন্যের সাথে পাখা মিলিয়ে জিকিরকারীদের হতে নিকটতম আসমান পর্যন্ত সব জায়গাকে ঘিরে নেন। মাজলিস ছেড়ে জিকিরকারীগণ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়লে মালায়িকাহ্ (ফেরেশতা) (ফেরেশতাগণ) আকাশের দিকে ও আরো উপরের দিকে উঠে যান। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, তখন আল্লাহ তাদেরকে জিজ্ঞেস করেন, অথচ ব্যাপারটি তিনি জানেন, তোমরা কোথা হতে এলে? তারা উত্তরে বলেন, আমরা তোমার এমন বান্দাদের কাছ থেকে এসেছি যারা জমিনে তোমার পবিত্রতা বর্ণনা করছে, মহত্ব ও একত্বের ঘোষণা দিচ্ছে, তোমার প্রশংসা করছে, তোমার কাছে দু‘আ করছে। তখন আল্লাহ জিজ্ঞেস করেন, তারা আমার কাছে কি চায়? মালায়িকাহ্ (ফেরেশতা) বলেন, তোমার জান্নাত চায়। তখন আল্লাহ বলেন, তারা কি আমার জান্নাত দেখেছে? তারা বলেন না, দেখেনি হে রব! তখন আল্লাহ বলেন, কেমন হত, যদি তারা আমার জান্নাত দেখতে পেত।তারপর মালায়িকাহ্ (ফেরেশতা) বলেন, তারা তোমার কাছে মুক্তিও চায়। তখন আল্লাহ জিজ্ঞেস করছেন, তারা কোন্ জিনিস হতে মুক্তি চায়? তারা বলেন, তোমার জাহান্নাম থেকে। তখন তিনি জিজ্ঞেস করেন, তারা কি আমার জাহান্নাম দেখেছে? তারা বলেন, না, হে আল্লাহ! তখন তিনি বলেন, কেমন হত যদি তারা আমার জাহান্নাম দেখতে পেত। তারপর তারা বলেন, তারা তোমার কাছে ক্ষমাও চায়। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, তখন আল্লাহ বলেন, আমি তাদেরকে ক্ষমা করে দিলাম। তাদেরকে আমি দান করলাম যা তারা আমার কাছে চায়। আর যে জিনিস হতে তারা মুক্তি চায় তার থেকে আমি তাদেরকে মুক্ত করে দিলাম। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, মালায়িকাহ্ (ফেরেশতা) তখন বলেন, হে রব! তাদের অমুক ব্যক্তি তো খুবই পাপী। সে তো পথ দিয়ে যাবার সময় (তাদেরকে দেখে) তাদের সাথে বসে গেছে। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, তখন আল্লাহ বলেন, তাকেও আমি ক্ষমা করে দিলাম। তারা এমন একদল যাদের সঙ্গী-সাথীরাও বঞ্চিত হয় না।[১]
[১] সহীহ : বুখারী ৬৪০৮, সহীহ আত্ তারগীব ১৫০২।