পরিচ্ছদঃ ৭.
তৃতীয় অনুচ্ছেদ
মিশকাতুল মাসাবিহ : ১৭৪২
মিশকাতুল মাসাবিহহাদিস নম্বর ১৭৪২
وَعَنْ عَبْدِ اللّهِ بْنِ أَبِىْ مُلَيْكَةَ قَالَ: تُوُفِّيَتْ بِنْتٌ لِعُثْمَانَ بْنِ عَفَّانَ بِمَكَّةَ فَجِئْنَا لِنَشْهَدَهَا وَحَضَرَهَا ابْنُ عُمَرَ وَابْنُ عَبَّاسٍ فَإِنِّىْ لَجَالِسٌ بَيْنَهُمَا فَقَالَ عَبْدُ اللّهِ بْنِ عُمَرَ لعَمْرو بْنِ عُثْمَانَ وَهُوَ مُوَاجِهُه: أَلَا تَنْهى عَنِ الْبُكَاءِ؟ فَإِنَّ رَسُولَ اللّهِ ﷺ قَالَ: «إِنَّ الْمَيِّتَ لَيُعَذَّبُ بِبُكَاءِ أَهْلِه عَلَيْهِ» . فَقَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ: قَدْ كَانَ عُمَرُ يَقُولُ بَعْضَ ذلِكَ. ثُمَّ حَدَّثَ فَقَالَ: صَدَرْتُ مَعَ عُمَرَ مِنْ مَكَّةَ حَتّى إِذَا كُنَّا بِالْبَيْدَاءِ فَإِذَا هُوَ بِرَكْبٍ تَحْتَ ظِلِّ سَمُرَةٍ فَقَالَ: اذْهَبْ فَانْظُرْ مَنْ هَؤُلَاءِ الرَّكْبُ؟ فَنَظَرْتُ فَإِذَا هُوَ صُهَيْبٌ. قَالَ: فَأَخْبَرْتُه فَقَالَ: ادْعُه فَرَجَعْتُ إِلى صُهَيْبٍ فَقُلْتُ: ارْتَحِلْ فَالْحَقْ أَمِيرَ الْمُؤْمِنِينَ فَلَمَّا أَنْ أُصِيبَ عُمَرُ دَخَلَ صُهَيْبٌ يَبْكِىْ يَقُوْلُ: وَا أَخَاهُ وَاصَاحِبَاهُ. فَقَالَ عُمَرُ: يَا صُهَيْبُ أَتَبْكِىْ عَلَيَّ وَقَدْ قَالَ رَسُولُ اللّهِ ﷺ: «إِنَّ الْمَيِّتَ لَيُعَذَّبُ بِبَعْضِ بُكَاءِ أَهْلِه عَلَيْهِ؟» فَقَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ: فَلَمَّا مَاتَ عُمَرُ ذَكَرْتُ ذلِكَ لعَائِشَة فَقَالَت: يَرْحَمُ اللّهُ عُمَرَ لَا وَاللّهِ مَا حَدَّثَ رَسُولُ اللّهِ ﷺ : أَن الْمَيِّتَ لَيُعَذَّبُ بِبُكَاءِ أَهْلِه عَلَيْهِ وَلَكِنْ: إِنَّ اللّهَ يَزِيْدُ الْكَافِرَ عَذَابًا بِبُكَاءِ أَهْلِه عَلَيْهِ. وَقَالَتْ عَائِشَةُ: حَسْبُكُمُ الْقُرْانُ: ﴿وَلَا تَزِرُ وَازِرَةٌ وِزْرَ أُخْرى﴾ [الإسراء 17 : 15]. قَالَ ابْن عَبَّاس عِنْد ذلِك: وَاللهُ أَضَح وأَبْكى. قَالَ ابْنُ أَبِىْ مُلَيْكَةَ: فَمَا قَالَ ابْنُ عُمَرَ شَيْئْا. (مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ)
আবদুল্লাহ ইবনু আবূ মুলায়কাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, ‘উসমান ইবনু ‘আফফান–এর কন্যা মাক্কায় মৃত্যুবরণ করলেন। আমরা তাঁর জানাযাহ্ ও দাফনের কাজে যোগ দিতে মাক্কায় এলাম। ইবনু ‘উমার ও ইবনু ‘আব্বাসও এখানে আসলেন। আমি এ দু’জনের মধ্যে বসেছিলাম। এমন সময় ‘আব্দুল্লাহ ইবনু ‘উমার, ‘আম্র ইবনু ‘উসমানকে বললেন, আর তিনি তখন তাঁর মুখোমুখি বসেছিলেন। তুমি (পরিবারের লোকজনকে আওয়াজ করে) কান্নাকাটি করতে কেন নিষেধ করছ না? অথচ রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ মৃত ব্যক্তিকে তার পরিবার-পরিজনের কান্নাকাটির জন্য ‘আযাব দেয়া হয়। তখন ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) বললেন, ‘উমার (রাঃ) এ ধরনের কথা বলতেন। তারপর তিনি ঘটনা বর্ণনা করলেন, “আমি যখন ‘উমার (রাঃ)-এর সাথে মাক্কাহ্ হতে ফেরার পথে ‘বায়দা’ নামক স্থানে পৌছালাম, হঠাৎ করে ‘উমার একটি কাঁকর গাছের ছায়ার নিচে এক কাফেলা দেখতে পেলেন। তিনি আমাকে বললেন, তুমি ওখানে গিয়ে দেখো কাফেলায় কে কে আছে। আমি সুহায়বকে দেখতে পাই। ইবনু ‘আব্বাস বলেন, আমি ফিরে এসে ‘উমারকে জানালাম। তিনি বললেন, তাকে ডেকে আনো। আমি আবার সুহায়াব-এর নিকট গেলাম। তাকে বললাম, ‘চলুন, আমীরুল মু’মিনীন ‘উমারের সাথে দেখা করুন’। এরপর যখন মাদীনায় ‘উমারকে আহত করা হলো সুহায়াব কাঁদতে কাঁদতে তাঁর কাছে এলেন এবং বলতে থাকলেন, হায় আমার ভাই, হায় আমার বন্ধু! (এটা কি হলো!) সে অবস্থায়ই ‘উমার বললেন, সুহায়ব! তুমি আমার জন্য কাঁদছ অথচ রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ মৃত ব্যক্তিকে তার পরিবার-পরিজনের কান্নাকাটির দরুন ‘আযাব দেয়া হয়। ‘আব্দুল্লাহ ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) বলেন, যখন ‘উমার (রাঃ) ইন্তিকাল করলেন, আমি এ কথা ‘আয়িশাহ (রাঃ) এর কাছে বললাম। তিনি শুনে বলতে লাগলেন, আল্লাহ তা’আলা ‘উমারের উপর দয়া করুন। কথা এটা নয়। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এ কথা বলেননি যে, পরিবার-পরিজনের কান্নাকাটির জন্য মৃত ব্যক্তিকে ‘আযাব দেয়া হয়। বরং আল্লাহ তা’আলা পরিবার-পরিজনের কান্নাকাটির জন্য কাফিরের ‘আযাব বাড়িয়ে দেন। তারপর ‘আয়িশাহ (রাঃ) বললেন, কুরআনের এ আয়াতই দলীল হিসেবে তোমাদের জন্য যথেষ্ট, অর্থাৎ “কোন ব্যক্তি অন্য কারো বোঝা বহন করবে না”- (সুরা ইসরা ১৭:১৫) ইবনু ‘আব্বাস বলেন, এ আয়াতের মর্মবাণীও প্রায় এ রকমই, অর্থাৎ আল্লাহ তা’আলাই হাসান ও কাঁদান। ইবনু আবূ মুলায়কাহ্ বলেন, ‘আব্দুল্লাহ ইবনু ‘উমার এসব কথা শুনার পর কিছুই বললেন না। (বুখারী, মুসলিম) [১]
[১] সহীহ : বুখারী ১২৮৬, ১২৮৭, ১২৮৮, মুসলিম ৯২৮, ৯২৯, ৯৩০, মুসনাদুশ্ শাফি‘ঈ ৫৫৮।