পরিচ্ছদঃ ৪২.
দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ
মিশকাতুল মাসাবিহ : ১৩৫৯
মিশকাতুল মাসাবিহহাদিস নম্বর ১৩৫৯
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ: خَرَجْتُ إِلَى الطُّورِ فَلَقِيتُ كَعْبَ الْأَحْبَارِ فَجَلَسْتُ مَعَه فَحَدَّثَنِىْ عَنِ التَّوْرَاةِ وَحَدَّثْتُه عَنْ رَسُولِ اللّهِ ﷺ فَكَانَ فِيمَا حَدَّثْتُه أَنْ قُلْتُ: قَالَ رَسُولُ اللّهِ ﷺ: «خَيْرُ يَوْمٍ طَلَعَتْ عَلَيْهِ الشَّمْسُ يَوْمُ الْجُمُعَةِ فِيهِ خُلِقَ ادَمُ وَفِيهِ أُهْبِطَ وَفَيْهِ تِيبَ عَلَيْهِ وَفِيهِ مَاتَ وَفِيهِ تَقُومُ السَّاعَةُ وَمَا من دَابَّةٍ إِلَّا وَهِىْ مَسِيْخَةٌ يَوْمَ الْجُمُعَةِ مِنْ حِينَ تُصْبِحُ حَتّى تَطْلُعَ الشَّمْسُ شَفَقًا مِنَ السَّاعَةِ إِلَّا الْجِنَّ وَالْإِنْسَ وفيهَا سَاعَةٌ لَا يُصَادِفُهَا عَبْدٌ مُسْلِمٌ وَهُوَ يُصَلِّىْ يسْأَل اللهَ شَيْئًا إِلَّا أعطَاهُ إِيَّاهَا. قَالَ كَعْبٌ: ذلِكَ فِىْ كُلِّ سَنَةٍ يَوْمٌ. فَقُلْتُ: بَلْ فِىْ كُلِّ جُمُعَةٍ قَالَ فَقَرَأَ كَعْبٌ التَّوْرَاةَ. فَقَالَ: صَدَقَ رَسُولُ اللّهِ ﷺ. قَالَ أَبُو هُرَيْرَةَ: لَقِيتُ عَبْدَ اللّهِ بْنَ سَلَامٍ فَحَدَّثْتُه بِمَجْلِسِىْ مَعَ كَعْب وَمَا حَدَّثْتُه فِي يَوْمِ الْجُمُعَةِ فَقُلْتُ لَه: قَالَ كَعْب: ذلِكَ فِىْ كُلِّ سَنَةٍ يَوْمٌ؟ قَالَ عَبْدُ اللّهِ بْنُ سَلَامٍ: كَذَبَ كَعْبٌ. فَقُلْتُ لَه ثُمَّ قَرَأَ كَعْبٌ التَّوْرَاةَ. فَقَالَ: بَلْ هِيَ فِي كُلِّ جُمُعَةٍ. فَقَالَ عَبْدُ اللّهِ بْنُ سَلَامٍ: صَدَقَ كَعْبٌ ثُمَّ قَالَ عَبْدُ اللّهِ بْنُ سَلَامٍ: قَدْ عَلِمْتُ أَيَّةَ سَاعَةٍ هِيَ. قَالَ أَبُو هُرَيْرَة فَقلت لَه: فَأَخْبرْنِىْ بِهَا. فَقَالَ عَبْدُ اللّهِ بْنُ سَلَامٍ: هِيَ اخِرُ سَاعَةٍ فِي يَوْمِ الْجُمُعَةِ. قَالَ أَبُو هُرَيْرَةَ: فَقُلْتُ: وَكَيْفَ تَكُونُ اخِرَ سَاعَةٍ فِي يَوْمِ الْجُمُعَةِ وَقَدْ قَالَ رَسُولُ اللّهِ ﷺ: «لَا يُصَادِفُهَا عَبْدٌ مُسْلِمٌ وَهُوَ يُصَلِّىْ وَتِلْكَ السَّاعَةُ لَا يُصَلِّىْ فِيهَا؟» فَقَالَ عَبْدُ اللّهِ بْنُ سَلَامٍ: أَلَمْ يَقُلْ رَسُولُ اللّهِ ﷺ: «مَنْ جَلَسَ مَجْلِسًا يَنْتَظِرُ الصَّلَاةَ فَهُوَ فِي صَلَاةٍ حَتّى يُصَلِّيَ؟» قَالَ أَبُو هُرَيْرَةَ: فَقُلْتُ: بلى. قَالَ: فَهُوَ ذَاكَ. رَوَاهُ مَالِكٌ وَأَبُو دَاوُدَ وَالتِّرْمِذِيُّ وَالنَّسَائِيُّ وَرَوى أَحْمَدُ إِلى قَوْلِه: صَدَقَ كَعْبٌ
আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি তূর (বর্তমান ফিলিস্তীনের সিনাই) পর্বতের দিকে গেলাম। সেখানে কা'ব আহবার-এর সঙ্গে আমার দেখা হলো। আমি তার কাছে বসে গেলাম। তিনি আমাকে তাওরাতের কিছু কথা বলতে লাগলেন। আমি তার সামনে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর কিছু হাদীস বর্ণনা করলাম। আমি যেসব হাদীস বর্ণনা করলাম তার একটি হলো, আমি তাকে বললাম, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন: যেসব দিনে সূর্য উদিত হয় তার মধ্যে সর্বোত্তম দিন হলো জুমু’আর দিন। জুমু’আর দিনে আদামকে সৃষ্টি করা হয়েছে। ওই দিন তাঁকে জান্নাত থেকে জমিনে বের করা হয়েছে। এ দিনেই তাঁর তাওবাহ কবুল করা হয়। এ দিনেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে। এ দিনেই ক্বিয়ামাত হবে। আর জিন্ ইনসান ছাড়া এমন কোন চতুস্পদ জন্তু নেই যারা এ জুমু’আর দিনে সূর্য উদয় হতে অস্ত পর্যন্ত কিয়ামাত হবার মুহুর্তের জন্য অপেক্ষা না করে। জুমু’আর দিন এমন একটি মুহূর্ত আছে, যে সময় যদি কোন মুসলিম সলাত আদায় করে এবং আল্লাহর নিকট কিছু চায়, আল্লাহ তাকে অবশ্যই তা দান করেন। কা’ব আহবার এ কথা শুনে বললেন, এ রকম দিন বা সময় বছরে একবার আসে। আমি বললাম, বরং প্রতিটি জুমু’আর দিনে আসে।তখন কা'ব তাওরাত পাঠ করতে লাগলেন, এরপর বললেন, "রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সত্য বলেছেন।" আবূ হুরায়রাহ (রাঃ) বলেন, এরপর আমি ‘আবদুল্লাহ ইবনু সালাম (রাঃ) এর সাথে দেখা করলাম। অতঃপর কাব-এর কাছে আমি যে হাদীসের উল্লেখ করেছি তা তাকেও বললাম। এরপর আমি ‘আবদুল্লাহ ইবনু সালাম (রাঃ) কে এ কথাও বললাম যে, কা'ব বলছেন, ‘এ দিন’ বছরে একবারই আসে। ‘আবদুল্লাহ ইবনু সালাম (রাঃ) বললেন, “কাব ভুল কথা বলেছে।" তারপর আমি বললাম, কিন্তু কাব এরপর তাওরাত পড়ে বলেছে যে, এ সময়টা প্রত্যেক জুমু’আর দিনই আসে। ইবনু সালাম (রাঃ) বললেন, কা’ব এ কথা ঠিক বলেছে। এরপর বলতে লাগলেন, আমি জানি সে কোন সময়? আবূ হুরায়রাহ (রাঃ) বলেন, আমি বললাম, পুনরায় আমাকে বলুন। গোপন করবেন না। তখন ‘আবদুল্লাহ ইবনু সালাম (রাঃ) বললেন, সেটা জুমু’আর দিনের শেষ প্রহর কি করে হয়, যেখানে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, যে মু’মিন বান্দা এ ক্ষণটি পাবে ও সে এ সময়ে সলাত আদায় করে থাকে.....? (আর আপনি বলছেন সে সময়টি জুমু’আর দিনের শেষ প্রহর। সে সময় তো সলাত আদায় করা হয় না। সেটা মাকরূহ সময়)। ‘আবদুল্লাহ ইবনু সালাম (রাঃ) বলেন, (এটা তো সত্য কথা কিন্তু) এটা কি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর কথা নয় যে, যে ব্যক্তি সলাতের অপেক্ষায় নিজের স্থানে বসে থাকে সে সলাত অবস্থায়ই আছে, আবার সলাত পড়া পর্যন্ত। আবূ হুরায়রাহ বলেন, আমি এ কথা শুনে বললাম, হ্যাঁ। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এ কথা বলেছেন। 'আবদুল্লাহ বলেন, তাহলে সলাত অর্থ হলো, সলাতের জন্য অপেক্ষা করা। আর দিনের শেষাংশে সলাতের জন্য বসে থাকা নিষেধ নয়। সে সময় যদি কেউ দু’আ করে, তা কবুল হবে। (মালিক, আবূ দাউদ, তিরমিযী, নাসায়ী ইমাম আহমদও এ বর্ণনাটি [আরবি] পর্যন্ত বর্ণনা করেছেন) [১]
[১] সহীহ : আবূ দাঊদ ১০৪৬, আত্ তিরমিযী ৪৯১, নাসায়ী ১৪৩০, মুয়াত্ত্বা মালিক ৩৬৪, আহমাদ ১০৩০৩, ইবনু হিব্বান ২৭৭২, মুসতাদরাক লিল হাকিম ১০৩০, সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ৬০০২, শু‘আবুল ঈমান ২৭১৪।