পরিচ্ছদঃ ৩.
দ্বিতীয় ‘অনুচ্ছেদ
মিশকাতুল মাসাবিহ : ৯৬
মিশকাতুল মাসাবিহহাদিস নম্বর ৯৬
وَعَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عَمْرٍو قَال خَرَجَ رَسُولُ اللهِ ﷺ وَفِي يَدِهِ كِتَابَانِ فَقَالَ أَتَدْرُونَ مَا هَذَانِ الْكِتَابَانِ؟ قُلْنَا لَا يَا رَسُولَ اللهِ اِلَّا أَنْ تُخْبِرَنَا فَقَالَ لِلَّذِي فِي يَدِهِ الْيُمْنَى هذَا كِتَابٌ مِنْ رَبِّ الْعَالَمِينَ فِيهِ أَسْمَاءُ أَهْلِ الْجَنَّةِ وَأَسْمَاءُ آبَائِهِمْ وَقَبَائِلِهِمْ ثُمَّ أُجْمِلَ عَلَى آخِرِهِمْ فَلَا يُزَادُ فِيهِمْ وَلَا يُنْقَصُ مِنْهُمْ أَبَدًا ثُمَّ قَالَ لِلَّذِي فِي شِمَالِهِ هَذَا كِتَابٌ مِنْ رَبِّ الْعَالَمِينَ فِيهِ أَسْمَاءُ أَهْلِ النَّارِ وَأَسْمَاءُ آبَائِهِمْ وَقَبَائِلِهِمْ ثُمَّ أُجْمِلَ عَلَى آخِرِهِمْ فَلَا يُزَادُ فِيهِمْ وَلَا يُنْقَصُ مِنْهُمْ أَبَدًا فَقَالَ أَصْحَابُه فَفِيمَ الْعَمَلُ يَا رَسُولَ اللهِ إِنْ كَانَ أَمْرٌ قَدْ فُرِغَ مِنْهُ فَقَالَ سَدِّدُوا وَقَارِبُوا فَإِنَّ صَاحِبَ الْجَنَّةِ يُخْتَمُ لَهُ بِعَمَلِ أَهْلِ الْجَنَّةِ وَإِنْ عَمِلَ أَيَّ عَمَلٍ وَإِنَّ صَاحِبَ النَّارِ يُخْتَمُ لَه بِعَمَلِ أَهْلِ النَّارِ وَإِنْ عَمِلَ أَيَّ عَمَلٍ ثُمَّ قَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ بِيَدَيْهِ فَنَبَذَهُمَا ثُمَّ قَالَ فَرَغَ رَبُّكُمْ مِنْ الْعِبَادِ فَرِيقٌ فِي الْجَنَّةِ وَفَرِيقٌ فِي السَّعِيرِ. رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ
আবদুল্লাহ ইবনু ‘আমর (রাঃ) হতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একদা রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) দুই হাতে দু’টি কিতাব নিয়ে বের হলেন এবং (সাহাবীগণের উদ্দেশ্যে) বললেন, তোমরা কি জান এ কিতাব দু’টি কি? আমরা বললাম, না, হে আল্লাহ্র রসূল! কিন্তু আপনি যদি আমাদের অবহিত করতেন। তিনি তাঁর ডান হাতের কিতাবের প্রতি ইশারা করে বললেন, আমার ডান হাতে কিতাবটি হচ্ছে আল্লাহ্ রব্বুল ‘আলামীনের পক্ষ থেকে একটি কিতাব। এতে সকল জান্নাতীদের নাম, তাদের পিতাদের নাম ও বংশ-পরম্পরার নাম রয়েছে এবং এদের সর্বশেষ ব্যক্তির নামের পর সর্বমোট যোগ করা হয়েছে। অতঃপর এতে আর কক্ষনো (কোন নাম) বৃদ্ধিও হবে না কমতিও করা হবে না। তারপর তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর বাম হাতের কিতাবের দিকে ইঙ্গিত করে বললেন, এটাও আল্লাহ্ রব্বুল ‘আলামীনের পক্ষ হতে একটি কিতাব। এ কিতাবে জাহান্নামীদের নাম আছে, তাদের বাপ-দাদাদের নাম আছে এবং তাদের বংশ-পরম্পরার নামও রয়েছে। অতঃপর তাদের সর্বশেষ ব্যক্তির নাম লিখে মোট যোগ করা হয়েছে। তাই এতে (আর কোন নাম কখনো) বৃদ্ধিও করা যাবে না কমানোও যাবে না। তাঁর এ বর্ণনা শুনার পর সহাবীগণ জিজ্ঞেস করলেন, হে আল্লাহ্র রসূল! এসব ব্যপার যদি আগে থেকে চূড়ান্ত হয়েই থাকে (অর্থাৎ জান্নাত ও জাহান্নামের বিষয়টি তাকদীরের উপর নির্ভর করে লিপিবদ্ধ হয়েছে) তবে ‘আমাল করার প্রয়োজন কী? উত্তরে তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, হাক্ব পথে থেকে দৃঢ়ভাবে ‘আমাল করতে থাক এবং আল্লাহ্র নৈকট্যার্জনের চেষ্টা কর। কেননা জান্নাতবাসীদের শেষ ‘আমাল (জান্নাত প্রাপ্তির ন্যায়) জান্নাতীদেরই কাজ হবে। (পূর্বে) দুনিয়ার জীবনে সে যা-ই করুক। আর জাহান্নামবাসীদের পরিসমাপ্তি জাহান্নামে যাবার ন্যায় ‘আমালের দ্বারা শেষ হবে। তার (জীবনের) আমাল যাই হোক। অতঃপর রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর দুই হাতে ইশারা করে কিতাব দু‘টিকে পেছনের দিকে ফেলে দিয়ে বললেন, তোমাদের রব বান্দাদের ব্যাপারে পূর্ব থেকেই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে রেখেছেন। একদল জান্নাতে যাবে আর অপর একদল জাহান্নামে যাবে- (সূরাহ্ আশ শুরা ৪২ : ৭)। [১]
[১] হাসান : তিরমিযী ২০৬৭, সিলসিলাহ্ আস্ সহীহাহ্ ৮৪৮। (قَوْلٌ মাসদারের সেলা যখন بَاء আসে তখন তার অর্থ হয় ইশারা, ইঙ্গিত করা)।ইমাম তিরমিযী ২/২১ নং পৃঃ হাদীসটির হুকুম সম্পর্কে বলেছেন : هذَا حَدِيْثٌ حَسَنْ غَرِيْبٌ صَحِيْحٌ।আলবানী (রহ) বলেন : হাদীসটি ইমাম আহমাদ (রহঃ) ও তার মুসনাদের ২/১৬৬ নং পৃঃ বর্ণনা করেছেন যার সানাদ সহীহ। আর শায়খ শান্ক্বীত্বী (রহঃ) তার ‘যাদুল মুসলিম’ নামক গ্রন্থের ১/৭ নং পৃঃ ভুলবশত হাদীসটিকে বুখারী ও মুসলিম (রহঃ)-এর সাথে সম্বন্ধযুক্ত বা সম্পৃক্ত করেছেন।