৩৬. অনুচ্ছেদঃ
আহলে সুফফার মধ্যে দুধ বন্টন
জামে' আত-তিরমিজি : ২৪৭৭
জামে' আত-তিরমিজিহাদিস নম্বর ২৪৭৭
حَدَّثَنَا هَنَّادٌ، حَدَّثَنَا يُونُسُ بْنُ بُكَيْرٍ، حَدَّثَنِي عُمَرُ بْنُ ذَرٍّ، حَدَّثَنَا مُجَاهِدٌ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ كَانَ أَهْلُ الصُّفَّةِ أَضْيَافَ أَهْلِ الإِسْلاَمِ لاَ يَأْوُونَ عَلَى أَهْلٍ وَلاَ مَالٍ وَاللَّهِ الَّذِي لاَ إِلَهَ إِلاَّ هُوَ إِنْ كُنْتُ لأَعْتَمِدُ بِكَبِدِي عَلَى الأَرْضِ مِنَ الْجُوعِ وَأَشُدُّ الْحَجَرَ عَلَى بَطْنِي مِنَ الْجُوعِ وَلَقَدْ قَعَدْتُ يَوْمًا عَلَى طَرِيقِهِمُ الَّذِي يَخْرُجُونَ فِيهِ فَمَرَّ بِي أَبُو بَكْرٍ فَسَأَلْتُهُ عَنْ آيَةٍ مِنْ كِتَابِ اللَّهِ مَا سَأَلْتُهُ إِلاَّ لِيَسْتَتْبِعَنِي فَمَرَّ وَلَمْ يَفْعَلْ ثُمَّ مَرَّ بِي عُمَرُ فَسَأَلْتُهُ عَنْ آيَةٍ مِنْ كِتَابِ اللَّهِ مَا أَسْأَلُهُ إِلاَّ لِيَسْتَتْبِعَنِي فَمَرَّ وَلَمْ يَفْعَلْ ثُمَّ مَرَّ بِي أَبُو الْقَاسِمِ صلى الله عليه وسلم فَتَبَسَّمَ حِينَ رَآنِي وَقَالَ " أَبَا هُرَيْرَةَ " . قُلْتُ لَبَّيْكَ يَا رَسُولَ اللَّهِ . قَالَ " الْحَقْ " . وَمَضَى فَاتَّبَعْتُهُ وَدَخَلَ مَنْزِلَهُ فَاسْتَأْذَنْتُ فَأَذِنَ لِي فَوَجَدَ قَدَحًا مِنْ لَبَنٍ فَقَالَ " مِنْ أَيْنَ هَذَا اللَّبَنُ لَكُمْ " . قِيلَ أَهْدَاهُ لَنَا فُلاَنٌ . فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " أَبَا هُرَيْرَةَ " . قُلْتُ لَبَّيْكَ . فَقَالَ " الْحَقْ إِلَى أَهْلِ الصُّفَّةِ فَادْعُهُمْ " . وَهُمْ أَضْيَافُ أَهْلِ الإِسْلاَمِ لاَ يَأْوُونَ عَلَى أَهْلٍ وَلاَ مَالٍ إِذَا أَتَتْهُ صَدَقَةٌ بَعَثَ بِهَا إِلَيْهِمْ وَلَمْ يَتَنَاوَلْ مِنْهَا شَيْئًا وَإِذَا أَتَتْهُ هَدِيَّةٌ أَرْسَلَ إِلَيْهِمْ فَأَصَابَ مِنْهَا وَأَشْرَكَهُمْ فِيهَا فَسَاءَنِي ذَلِكَ وَقُلْتُ مَا هَذَا الْقَدَحُ بَيْنَ أَهْلِ الصُّفَّةِ وَأَنَا رَسُولُهُ إِلَيْهِمْ فَسَيَأْمُرُنِي أَنْ أُدِيرَهُ عَلَيْهِمْ فَمَا عَسَى أَنْ يُصِيبَنِي مِنْهُ وَقَدْ كُنْتُ أَرْجُو أَنْ أُصِيبَ مِنْهُ مَا يُغْنِينِي وَلَمْ يَكُنْ بُدٌّ مِنْ طَاعَةِ اللَّهِ وَطَاعَةِ رَسُولِهِ فَأَتَيْتُهُمْ فَدَعَوْتُهُمْ فَلَمَّا دَخَلُوا عَلَيْهِ فَأَخَذُوا مَجَالِسَهُمْ فَقَالَ " أَبَا هُرَيْرَةَ خُذِ الْقَدَحَ وَأَعْطِهِمْ " . فَأَخَذْتُ الْقَدَحَ فَجَعَلْتُ أُنَاوِلُهُ الرَّجُلَ فَيَشْرَبُ حَتَّى يُرْوَى ثُمَّ يَرُدُّهُ فَأُنَاوِلُهُ الآخَرَ حَتَّى انْتَهَيْتُ بِهِ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَقَدْ رَوِيَ الْقَوْمُ كُلُّهُمْ فَأَخَذَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم الْقَدَحَ فَوَضَعَهُ عَلَى يَدَيْهِ ثُمَّ رَفَعَ رَأْسَهُ فَتَبَسَّمَ فَقَالَ " أَبَا هُرَيْرَةَ اشْرَبْ " . فَشَرِبْتُ ثُمَّ قَالَ " اشْرَبْ " . فَلَمْ أَزَلْ أَشْرَبُ وَيَقُولُ " اشْرَبْ " . حَتَّى قُلْتُ وَالَّذِي بَعَثَكَ بِالْحَقِّ مَا أَجِدُ لَهُ مَسْلَكًا فَأَخَذَ الْقَدَحَ فَحَمِدَ اللَّهَ وَسَمَّى ثُمَّ شَرِبَ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
আবু হুরাইরাহ (রাঃ) হতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, সুফফাবাসীগণ ছিলেন মুসলিমদের অতিথি, তাদের আশ্রয় লাভের মতো ধন-দৌলত, পরিবার-স্বজন কিছুই ছিল না। আল্লাহর শপথ, যিনি ব্যতীত আর কোন মা'বূদ নেই! আমি ক্ষুধার কষ্টে আমার পেট মাটিতে চেপে ধরে থাকতাম, আর কখনো পেটে পাথর বেঁধে রাখতাম। কোন একদিন আমি তাদের (সাহাবাদের) পথে বসে গেলাম। এমন সময় আবূ বাকর (রাঃ) আমাকে পাশ কাটিয়ে যাচ্ছিলেন। আমি আল্লাহর কিতাবের একটি আয়াত প্রসঙ্গে তাকে প্রশ্ন করলাম। উদ্দেশ্য ছিল তিনি আমাকে তার পিছনে যেতে বলেন (এবং কিছু খেতে দেন)। কিন্তু তিনি চলে গেলেন, কিছুই করলেন না। এরপর ‘উমার (রাঃ) এই পথ দিয়ে অতিক্রম করছিলেন। আমি তাকেও আল্লাহ তা'আলার কিতাবের একটি আয়াত প্রসঙ্গে সেই একই উদ্দেশ্যে প্রশ্ন করলাম, কিন্তু তিনিও চলে গেলেন এবং কিছুই করলেন না। তারপর আবুল কাসিম (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমার সামনে দিয়ে যাচ্ছিলেন। তিনি আমাকে দেখা মাত্রই (আসল ব্যাপার বুঝতে পেরে) মুচকি হাসলেন এবং বললেন, হে আবু হুরায়রা্! আমি বললাম, লাব্বাইকা ইয়া রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)। তিনি বললেন, চলো, তারপর তিনি চললেন, আমি তার অনুসরণ করলাম। তিনি তার গৃহে প্রবেশ করলেন, আমিও ঢোকার অনুমতি চাইলাম। তিনি আমাকে সম্মতি প্রদান করলেন। তিনি ঘরে এক পেয়ালা দুধ দেখে জিজ্ঞেস করলেন, তোমাদের জন্য এই দুধ কোথা হতে এসেছে? বলা হলো, আমাদের জন্য অমুক ব্যক্তি উপহারস্বরূপ পাঠিয়েছে। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ হে আবূ হুরায়রা্! আমি বললাম, লাব্বাইকা। তিনি বললেন, যাও সুফফাবাসীদেরকে ডেকে নিয়ে এসো, তারা তো মুসলিমদের অতিথি, তাদের নির্ভর করার মতো ধন-সম্পদ, পরিবার পরিজন বলতে কিছুই নেই। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট সাদাকাহর কোন মাল আসলে তিনি তার কোন অংশই না রেখে তাদের জন্য সবটুকু পাঠিয়ে দিতেন। আর উপহার আসলে তিনি তা হতে তাদের জন্য কিছু পাঠিয়ে দিতেন এবং নিজেও কিছু নিতেন। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর আদেশ শুনে আমি নিরাশ হয়ে গেলাম এবং (মনে মনে) বললাম, এই এক পেয়ালা দুধ দিয়ে আসহাবে সুফফার কি হবে? অথচ আমাকে তাদের নিকট পাঠানো হচ্ছে। এই দুধ তাদের মধ্যে পরিবেশন করার জন্য তো তিনি আমাকেই আদেশ করবেন। তখন তার কোন অংশই আমার জন্য জুটবে না। অথচ আমি আশা করছিলাম যে, আমি এটুকু পান করতে পারলে আমার জন্য যথেষ্ট হবে। কিন্তু আল্লাহ ও তার রাসূলের আদেশ পালন করা ব্যতীত আর কোন পথও নেই। অতএব আমি তাদের নিকট এসে তাদেরকে ডাকলাম। তারা এসে ঘরে প্রবেশ করে নিজ নিজ আসন গ্রহণ করলে তিনি বললেনঃ হে আবু হুরায়রা! পেয়ালাটা নিয়ে তাদেরকে দুধ পরিবেশন কর। আমি পেয়ালাটি নিলাম তারপর আমি একজন করে দিতে থাকলাম। সে পান করে পরিতৃপ্ত হয়ে পেয়ালাটি আমাকে ফিরত দিলে আমি অন্যজনকে দিতাম। সেও পরিতৃপ্ত হতো। এভাবে আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট পৌছলাম। সমবেত সকলেই পরিতৃপ্ত হলো। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) পেয়ালাটি তার হাতে নিয়ে মাথা তুলে আমার দিকে তাকিয়ে মুচুকি হাসলেন এবং বললেন, আবু হুরায়রা্! এখন তুমি পান কর। আমি পান করলাম। তিনি আবার বললেন, পান কর। তারপর আমি পান করতেই থাকলাম আর তিনি বলতেই থাকলেন, পান কর। অবশেষে আমি বলতে বাধ্য হলাম যে, আল্লাহর শপথ! যিনি আপনাকে সত্য দ্বীনসহকারে পাঠিয়েছেন, আমার পেটে আর জায়গা নেই। তারপর তিনি পেয়ালা হাতে নিয়ে আল্লাহ্ তা'আলার প্রশংসা করলেন এবং বিসমিল্লাহ বলে অবশিষ্ট দুধ পান করলেন।সহীহঃ বুখারী (৬৪৫২)।
আবু ঈসা বলেন, এই হাদীসটি হাসান সহীহ।