৫. অধ্যায়ঃ
যে ব্যক্তি নিজে ব্যভিচার স্বীকার করে
সহিহ মুসলিম : ৪৩২৪
সহিহ মুসলিমহাদিস নম্বর ৪৩২৪
وَحَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ نُمَيْرٍ، ح وَحَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ، اللَّهِ بْنِ نُمَيْرٍ - وَتَقَارَبَا فِي لَفْظِ الْحَدِيثِ - حَدَّثَنَا أَبِي، حَدَّثَنَا بَشِيرُ بْنُ الْمُهَاجِرِ، حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ بُرَيْدَةَ، عَنْ أَبِيهِ، أَنَّ مَاعِزَ بْنَ مَالِكٍ الأَسْلَمِيَّ، أَتَى رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنِّي قَدْ ظَلَمْتُ نَفْسِي وَزَنَيْتُ وَإِنِّي أُرِيدُ أَنْ تُطَهِّرَنِي . فَرَدَّهُ فَلَمَّا كَانَ مِنَ الْغَدِ أَتَاهُ فَقَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنِّي قَدْ زَنَيْتُ . فَرَدَّهُ الثَّانِيَةَ فَأَرْسَلَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم إِلَى قَوْمِهِ فَقَالَ " أَتَعْلَمُونَ بِعَقْلِهِ بَأْسًا تُنْكِرُونَ مِنْهُ شَيْئًا " . فَقَالُوا مَا نَعْلَمُهُ إِلاَّ وَفِيَّ الْعَقْلِ مِنْ صَالِحِينَا فِيمَا نُرَى فَأَتَاهُ الثَّالِثَةَ فَأَرْسَلَ إِلَيْهِمْ أَيْضًا فَسَأَلَ عَنْهُ فَأَخْبَرُوهُ أَنَّهُ لاَ بَأْسَ بِهِ وَلاَ بِعَقْلِهِ فَلَمَّا كَانَ الرَّابِعَةَ حَفَرَ لَهُ حُفْرَةً ثُمَّ أَمَرَ بِهِ فَرُجِمَ . قَالَ فَجَاءَتِ الْغَامِدِيَّةُ فَقَالَتْ يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنِّي قَدْ زَنَيْتُ فَطَهِّرْنِي . وَإِنَّهُ رَدَّهَا فَلَمَّا كَانَ الْغَدُ قَالَتْ يَا رَسُولَ اللَّهِ لِمَ تَرُدُّنِي لَعَلَّكَ أَنْ تَرُدَّنِي كَمَا رَدَدْتَ مَاعِزًا فَوَاللَّهِ إِنِّي لَحُبْلَى . قَالَ " إِمَّا لاَ فَاذْهَبِي حَتَّى تَلِدِي " . فَلَمَّا وَلَدَتْ أَتَتْهُ بِالصَّبِيِّ فِي خِرْقَةٍ قَالَتْ هَذَا قَدْ وَلَدْتُهُ . قَالَ " اذْهَبِي فَأَرْضِعِيهِ حَتَّى تَفْطِمِيهِ " . فَلَمَّا فَطَمَتْهُ أَتَتْهُ بِالصَّبِيِّ فِي يَدِهِ كِسْرَةُ خُبْزٍ فَقَالَتْ هَذَا يَا نَبِيَّ اللَّهِ قَدْ فَطَمْتُهُ وَقَدْ أَكَلَ الطَّعَامَ . فَدَفَعَ الصَّبِيَّ إِلَى رَجُلٍ مِنَ الْمُسْلِمِينَ ثُمَّ أَمَرَ بِهَا فَحُفِرَ لَهَا إِلَى صَدْرِهَا وَأَمَرَ النَّاسَ فَرَجَمُوهَا فَيُقْبِلُ خَالِدُ بْنُ الْوَلِيدِ بِحَجَرٍ فَرَمَى رَأْسَهَا فَتَنَضَّحَ الدَّمُ عَلَى وَجْهِ خَالِدٍ فَسَبَّهَا فَسَمِعَ نَبِيُّ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم سَبَّهُ إِيَّاهَا فَقَالَ " مَهْلاً يَا خَالِدُ فَوَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ لَقَدْ تَابَتْ تَ
বুরাইদাহ্ (রাঃ)-এর বরাতে তার পিতা হতে বর্ণিতঃ
মা’ইয ইবনু মালিক আসলামী নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর নিকট এসে বলল, ‘হে আল্লাহর রসূল! নিশ্চয়ই আমি আমার আত্মার উপর জুলুম করেছি, অর্থাৎ ব্যভিচার করেছি। আমি চাই যে, আপনি আমাকে পবিত্র করবেন।’ তখন তিনি তাকে ফিরিয়ে দিলেন। পরের দিন সে আবার তাঁর (নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ) কাছে এসে বলল, হে আল্লাহর রসূল! আমি ব্যভিচার করেছি। এবারও তিনি তাকে ফিরিয়ে দিলেন। এরপর রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) কোন এক ব্যক্তিকে তার সম্প্রদায়ের লোকের কাছে পাঠালেন। লোক সেখানে গিয়ে তাদেরকে জিজ্ঞেস করলেন, আপনারা কি মনে করেন যে, তার মস্তিষ্কের বিকৃতি ঘটেছে এবং সে মন্দ কাজে লিপ্ত হয়েছে? তারা প্রতি উত্তরে বললেন, আমরা তো তার মস্তিষ্কের বিকৃতি সম্পর্কে কোন কিছু জানি না। আমরা তো জানি যে, সে সম্পূর্ণ সুস্থ প্রকৃতির। এরপর মা’ইয তৃতীয়বার রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর কাছে আগমন করলো। তখন তিনি আবারও একজন লোককে তার গোত্রের কাছে তার সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য প্রেরণ করলেন। তখনও তারা তাঁকে জানালো যে, আমরা তার সম্পর্কে খারাপ কোন কিছু জানি না এবং তার মস্তিষ্কেরও কোন বিকৃতি ঘটেনি। এরপর যখন চতুর্থবার সে আগমন করলো, তখন তার জন্য একটি গর্ত খনন করা হলো এবং তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তার প্রতি (ব্যভিচারের শাস্তি প্রদানের) নির্দেশ প্রদান করলেন। সুতরাং তাকে পাথর নিক্ষেপ করা হলো।বর্ণনাকারী বলেন, এরপর গামিদী এক মহিলা এসে বলল, হে আল্লাহর রসূল! আমি ব্যভিচার করেছি। সুতরাং আপনি আমাকে পবিত্র করুন। তখন তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাকে ফিরিয়ে দিলেন। পরবর্তী দিন আবার ঐ মহিলা আগমন করলো এবং বলল, হে আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)! আপনি কেন আমাকে ফিরিয়ে দিচ্ছেন। আপনি সম্ভবত আমাকে ঐভাবে ফিরিয়ে দিতে চান, যেমনভাবে আপনি ফিরিয়ে দিয়েছিলেন মা’ইযকে? আল্লাহর শপথ করে বলছি, ‘নিশ্চয়ই আমি গর্ভবতী’। তখন তিনি বললেন, তুমি যদি ফিরে যেতে না চাও, তবে আপাততঃ এখনকার মত চলে যাও এবং প্রসবকাল পর্যন্ত অপেক্ষা কর। রাবী বলেন, এরপর যখন সে সন্তান প্রসব করলো- তখন ভূমিষ্ঠ সন্তানকে এক টুকরা কাপড়ের মধ্যে নিয়ে তাঁর কাছে আগমন করলো এবং বলল, এ সন্তান আমি প্রসব করেছি। তখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, যাও তাকে (সন্তানকে) দুধপান করাও। দুধপান করানোর সময় পার হলে পরে এসো। এরপর যখন তার দুধপান করানোর সময় শেষ হলো তখন ঐ মহিলা শিশু সন্তানটিকে নিয়ে তাঁর কাছে মহিলাটি আবার আগমন করলো-এমন অবস্থায় যে, শিশুটির হাতে এক টুকরা রুটি ছিল। এরপর বলল, হে আল্লাহর নবী! এইতো সেই শিশু, যাকে আমি দুধপান করানোর কাজ শেষ করেছি। সে এখন খাদ্য খায়। তখন শিশু সন্তানটিকে তিনি কোন একজন মুসলিমকে প্রদান করলেন। এরপর তার প্রতি (ব্যভিচারের শাস্তি) প্রদানের নির্দেশ দিলেন। মহিলার বক্ষ পর্যন্ত গর্ত খনন করানো হলো এরপর জনগণকে (তার প্রতি পাথর নিক্ষেপের) নির্দেশ দিলেন। তারা তাকে পাথর মারতে শুরু করলো। খালিদ ইবনু ওয়ালীদ (রাঃ) একটি পাথর নিয়ে অগ্রসর হলেন এবং মহিলার মাথায় নিক্ষেপ করলেন, তাতে রক্ত ছিটকে পড়লো খালিদ (ইবনু ওয়ালীদ) (রাঃ)-এর মুখমন্ডলে। তখন তিনি মহিলাকে গালি দিলেন। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তার গালি শুনতে পেলেন। তিনি বললেন, সাবধান! হে খালিদ! সে মহান আল্লাহর শপথ, যাঁর হস্তে আমার জীবন, জেনে রেখো! নিশ্চয়ই সে এমন তাওবাহ্ করেছে, যদি কোন “হক্কুল ইবাদ” বিনষ্টকারী ব্যক্তিও এমন তাওবাহ্ করতো, তবে তারও ক্ষমা হয়ে যেত। এরপর তার জানাযার সলাত আদায়ের নির্দেশ দিলেন। তিনি তার জানাযায় সলাত আদায় করলেন। এরপর তাকে দাফন করা হলো। (ই. ফা. ৪২৮৩, ই. সে. ৪২৮৪)