৫. অধ্যায়ঃ
যে ব্যক্তি নিজে ব্যভিচার স্বীকার করে
সহিহ মুসলিম : ৪৩২৩
সহিহ মুসলিমহাদিস নম্বর ৪৩২৩
وَحَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْعَلاَءِ الْهَمْدَانِيُّ، حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ يَعْلَى، - وَهُوَ ابْنُ الْحَارِثِ الْمُحَارِبِيُّ - عَنْ غَيْلاَنَ، - وَهُوَ ابْنُ جَامِعٍ الْمُحَارِبِيُّ - عَنْ عَلْقَمَةَ بْنِ مَرْثَدٍ، عَنْ سُلَيْمَانَ، بْنِ بُرَيْدَةَ عَنْ أَبِيهِ، قَالَ جَاءَ مَاعِزُ بْنُ مَالِكٍ إِلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ طَهِّرْنِي . فَقَالَ " وَيْحَكَ ارْجِعْ فَاسْتَغْفِرِ اللَّهَ وَتُبْ إِلَيْهِ " . قَالَ فَرَجَعَ غَيْرَ بَعِيدٍ ثُمَّ جَاءَ فَقَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ طَهِّرْنِي . فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " وَيْحَكَ ارْجِعْ فَاسْتَغْفِرِ اللَّهَ وَتُبْ إِلَيْهِ " . قَالَ فَرَجَعَ غَيْرَ بَعِيدٍ ثُمَّ جَاءَ فَقَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ طَهِّرْنِي . فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم مِثْلَ ذَلِكَ حَتَّى إِذَا كَانَتِ الرَّابِعَةُ قَالَ لَهُ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " فِيمَ أُطَهِّرُكَ " . فَقَالَ مِنَ الزِّنَى . فَسَأَلَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " أَبِهِ جُنُونٌ " . فَأُخْبِرَ أَنَّهُ لَيْسَ بِمَجْنُونٍ . فَقَالَ " أَشَرِبَ خَمْرًا " . فَقَامَ رَجُلٌ فَاسْتَنْكَهَهُ فَلَمْ يَجِدْ مِنْهُ رِيحَ خَمْرٍ . قَالَ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " أَزَنَيْتَ " . فَقَالَ نَعَمْ . فَأَمَرَ بِهِ فَرُجِمَ فَكَانَ النَّاسُ فِيهِ فِرْقَتَيْنِ قَائِلٌ يَقُولُ لَقَدْ هَلَكَ لَقَدْ أَحَاطَتْ بِهِ خَطِيئَتُهُ وَقَائِلٌ يَقُولُ مَا تَوْبَةٌ أَفْضَلَ مِنْ تَوْبَةِ مَاعِزٍ أَنَّهُ جَاءَ إِلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَوَضَعَ يَدَهُ فِي يَدِهِ ثُمَّ قَالَ اقْتُلْنِي بِالْحِجَارَةِ - قَالَ - فَلَبِثُوا بِذَلِكَ يَوْمَيْنِ أَوْ ثَلاَثَةً ثُمَّ جَاءَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَهُمْ جُلُوسٌ فَسَلَّمَ ثُمَّ جَلَسَ فَقَالَ " اسْتَغْفِرُوا لِمَاعِزِ بْنِ مَالِكٍ " . قَالَ فَقَالُوا غَفَرَ اللَّهُ لِمَاعِزِ بْنِ مَالِكٍ . - قَالَ - فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " لَقَدْ تَابَ تَوْبَةً لَوْ قُسِمَتْ بَيْنَ أُمَّةٍ لَوَسِعَتْهُمْ " . قَالَ ثُمَّ جَاءَتْهُ امْرَأَةٌ مِنْ غَامِدٍ مِنَ الأَزْدِ فَقَالَتْ يَا رَسُولَ اللَّهِ طَهِّرْنِي . فَقَالَ " وَيْحَكِ ارْجِعِي فَاسْتَغْفِرِي اللَّهَ وَتُوبِي إِلَيْهِ " . فَقَالَتْ أَرَاكَ تُرِيدُ أَنْ تُرَدِّدَنِي كَمَا رَدَّدْتَ مَاعِزَ بْنَ مَالِكٍ . قَالَ " وَمَا ذَاكِ " . قَالَتْ إِنَّهَا حُبْلَى مِنَ الزِّنَا . فَقَالَ " آنْتِ " . قَالَتْ نَعَمْ . فَقَالَ لَهَا " حَتَّى تَضَعِي مَا فِي بَطْنِكِ " . قَالَ فَكَفَلَهَا رَجُلٌ مِنَ الأَنْصَارِ حَتَّى وَضَعَتْ قَالَ فَأَتَى النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ قَدْ وَضَعَتِ الْغَامِدِيَّةُ . فَقَالَ " إِذًا لاَ نَرْجُمَهَا وَنَدَعَ وَلَدَهَا صَغِيرًا لَيْسَ لَهُ مَنْ يُرْضِعُهُ " . فَقَامَ رَجُلٌ مِنَ الأَنْصَارِ فَقَالَ إِلَىَّ رَضَاعُهُ يَا نَبِيَّ اللَّهِ . قَالَ فَرَجَمَهَا .
মুহাম্মাদ ইবনু ‘আলা হামদানী (রহঃ) সুলাইমান ইবনু বুরাইদাহ্ (রহঃ) তাঁর পিতার হতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, মা’ইয ইবনু মালিক নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর নিকট এসে বলল, হে আল্লাহর রসূল! আমাকে পবিত্র করুন। তখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, তোমার দুর্ভাগ্য। তুমি প্রত্যাবর্তন কর এবং আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা কর ও তাওবাহ্ কর। বর্ণনাকারী বলেন যে, লোকটি অল্প দূর চলে গিয়ে আবার ফিরে এলো। এরপর বলল, হে আল্লাহর রসূল! আমাকে পবিত্র করুন। বর্ণনাকারী বলেন যে, লোকটি অল্প দূর গিয়ে আবার ফিরে আসলো এবং বলল, হে আল্লাহর রসূল! আমাকে পবিত্র করুন। তখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, তোমার দুর্ভাগ্য। তুমি প্রত্যাবর্তন কর এবং আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা কর ও তাওবাহ্ কর। তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) পূর্বের মতই কথা বললেন, যখন চতুর্থবার মা’ইয একই কথা বলল, আমাকে পবিত্র করুন হে আল্লাহর রসূল! রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাকে বললেন, কোন বিষয়ে আমি তোমাকে পবিত্র করবো? তখন সে বলল, যিনার পাপ হতে। সুতরাং রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তার (সঙ্গী-সাথীদের নিকট) জিজ্ঞেস করলেন, তার মধ্যে কি কোন পাগলামী আছে? তখন তাঁকে জানানো হলো যে, সে পাগল নয়। এরপর তিনি জিজ্ঞেস করলেন, সে মদ্যপান করেছে কি? তখন এক ব্যক্তি দণ্ডায়মান হলো এবং তার মুখ শুঁকে দেখল, সে তার মুখ থেকে মদের গন্ধ পেল না। বর্ণনাকারী বলেন, এরপর রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ঐ ব্যক্তিকে জিজ্ঞেস করলেন, তুমি কি যিনা করেছ? প্রতি উত্তরে সে বলল, জী-হ্যাঁ। অতএব রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তার প্রতি (ব্যভিচারের শাস্তি প্রদানের) নির্দেশ দিলেন। এরপর তাকে পাথর নিক্ষেপ করা হলো। সুতরাং এ ব্যাপারে জনগণ দু’দলে বিভক্ত হয়ে গেল। একদল বলতে লাগল, নিশ্চয় সে (মা’ইয) ধ্বংস হয়ে গেছে। নিশ্চয় তার পাপ কার্যত তাকে ঘিরে ফেলেছে। দ্বিতীয় দল বলতে লাগল, মা’ইয এর তাওবার চেয়ে উত্তম (তাওবার অনুশোচনা) আর হয় না। সে প্রথমে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর কাছে আগমন করলো এবং নিজের হাত তাঁর হাতের উপর রাখলো। এরপর বলল,আমাকে পাথর দ্বারা হত্যা করুন। বর্ণনাকারী বলেন যে, দু’ তিন দিন পর্যন্ত মানুষ কেবল এ কথাই বলাবলি করছিল। এরপর রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আগমন করলেন এবং দেখলেন যে, সাহাবাগণ বসে আছেন। তিনি প্রথমে সালাম দিলেন, এরপর বসলেন এবং বললেন, তোমরা মা’ইয ইবনু মালিক-এর জন্য আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা কর। তখন তাঁরা বললেন, আল্লাহ! মা’ইয ইবনু মালিককে ক্ষমা করুন। এরপর রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, সে এমনভাবে ‘তাওবাহ্’ করেছে, যদি তা একটি উম্মাতের লোকদের মাঝে বণ্টিত হয় তবে সকলের জন্যই তা যথেষ্ট হতো।বর্ণনাকারী বলেন, এরপর তাঁর নিকট আযদ গোত্রের গামিদ পরিবারের এক মহিলা আগমন করলো এবং বলল, হে আল্লাহর রসূল! আমাকে পবিত্র করুন। তখন তিনি বললেন, তোমার দুর্ভাগ্য তুমি ফিরে যাও এবং আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা কর ও তাওবাহ্ কর। তখন মহিলা বলল, আপনি কি আমাকে সেভাবে ফিরিয়ে দিতে চান যেভাবে ফিরিয়ে দিয়েছিলেন মা’ইয ইবনু মালিককে? তখন তিনি বললেন, তোমার কী হয়েছে? মহিলা বলল, আমি ব্যভিচারের কারণে গর্ভবতী হয়েছি। তিনি (রসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) জিজ্ঞেস করলেন, তুমি কি এমন কাজ করেছ? সে প্রতি উত্তরে বলল, জী-হ্যাঁ। তখন তিনি তাকে বললেন, তোমার গর্ভের সন্তান প্রসব হওয়া পর্যন্ত তুমি অপেক্ষা কর। বর্ণনাকারী বলেন যে, এক আনসারী ব্যক্তি তার গর্ভের সন্তান প্রসবকাল পর্যন্ত তার দায়িত্ব গ্রহণ করলো। বর্ণনাকারী বলেন, কিছুদিন পর ঐ ব্যক্তি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর নিকট এসে বলল, গামিদীয় মহিলা তো সন্তান প্রসব করেছেন। তখন তিনি বললেন, এমতাবস্থায় তার ছোট শিশু সন্তানকে রেখে আমি তাকে ‘রজম’ করতে পারি না। কেননা তার শিশু সন্তানকে দুধপান করানোর মত কেউ নেই। তখন এক আনসারী লোক দাঁড়িয়ে বললেন, হে আল্লাহর রসূল! আমি তার দুধপান করানোর দায়িত্ব নিলাম। তখন তাকে পাথর নিক্ষেপ করে হত্যা করার আদেশ করলেন। (ই. ফা ৪২৮২, ই. সে. ৪২৮৩)