৫৩/১৯.
মাক্কাহ থেকে মদিনায় (নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর) হিজরাতের বর্ণনা।
আল লু'লু ওয়াল মারজান : ১৮৯২
আল লু'লু ওয়াল মারজানহাদিস নম্বর ১৮৯২
حديث أَبِي بَكْرٍ عَنِ الْبَرَاءِ بْنِ عَازِبٍ قَالَ: جَاءَ أَبُو بَكْرٍ، إِلى أَبِي فِي مَنْزِلِهِ فَاشْتَرَى مِنْهُ رَحْلاً فَقَالَ لِعَازِبٍ: ابْعَثِ ابْنَكَ يَحْمِلُهُ مَعِي قَالَ: فَحَمَلْتُهُ مَعَهُ وَخَرَجَ أَبِي يَنْتَقِدُ ثَمَنَهُ فَقَالَ لَهُ أَبِي: يَا أَبَا بَكْرٍ حَدِّثْنِي كَيْفَ صَنَعْتُمَا حِينَ سَرَيْتَ مَعَ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: نَعَمْ أَسْرَيْنَا لَيْلَتَنَا، وَمِنَ الْغَدِ، حَتَّى قَامَ قَائِمُ الظَّهِيرَةِ وَخَلاَ الطَّريقُ، لاَ يَمُرُّ فِيهِ أَحَدٌ فَرُفِعَتْ لَنَا صَخْرَةٌ طَوِيلَةٌ، لَهَا ظِلٌّ، لَمْ تَاتِ عَلَيْهِ الشَّمْسُ [ص: 330] فَنَزَلْنَا عِنْدَهُ، وَسَوَّيْتُ لِلنَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَكَانًا بِيَدِي يَنَامُ عَلَيْهِ وَبَسَطْتُ فِيهِ فَرْوَةً وَقُلْتُ: نَمْ يَا رَسُولَ اللهِ وَأَنَا أَنْفُضُ لَكَ مَا حَوْلَكَ، فَنَامَ وَخَرَجْتُ أَنْفُضُ مَا حَوْلَهُ، فَإِذَا أَنَا بِرَاعٍ مُقْبِلٍ بَغَنَمِهِ إِلَى الصَّخْرَةِ، يُرِيدُ مِنْهَا مِثْلَ الَّذِي أَرَدْنَا فَقُلْتُ: لِمَنْ أَنْتَ يَا غُلاَمُ فَقَالَ: لِرَجُلٍ مِنْ أَهْلِ الْمَدِينَةِ (أَوْ مَكَّةَ) قُلْتُ: أَفِي غَنَمِكَ لَبَنٌ قَالَ: نَعَمْ قلْتُ: أَفَتَحْلُبُ قَالَ: نَعَمْ فَأَخَذَ شَاةً فَقُلْتُ: انْفُضِ الضَّرْعَ مِنَ التُّرَابِ وَالشَّعَرِ وَالْقَذَى (قَالَ الرَّاوِي: فَرَأَيْتُ الْبَرَاءَ يَضْرِبُ إِحْدَى يَدَيْهِ عَلَى الأُخْرَى، يَنْفُضُ) فَحَلَبَ فِي قَعْبٍ كُثْبَةً مِنْ لَبَنٍ، وَمَعِي إِدَاوَةٌ حَمَلْتُهَا لِلنَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، يَرْتَوِي مِنْهَا، يَشْرَبُ وَيَتَوَضَّأُ فَأَتَيْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَكَرِهْتُ أَنْ أُوقِظَهُ فَوَافَقْتُهُ حِينَ اسْتَيْقَظَ فَصَبَبْتُ مِنَ الْمَاءِ عَلَى اللَّبَنِ، حَتَّى بَرَدَ أَسْفَلُهُ فَقُلْتُ: اشْرَبْ يَا رَسُولَ اللهِ قَالَ: فَشَرِبَ حَتَّى رَضِيتُ ثُمَّ قَالَ: أَلَمْ يَأْنِ لِلرَّحِيلِ قُلْتُ: بَلَى قَالَ: فَارْتَحَلْنَا بَعْدَ مَا مَالَتِ الشَّمْسُ وَاتَّبَعَنَا سُرَاقَةُ بْنُ مَالِكٍ فَقُلْتُ: أُتِينَا يَا رَسُولَ اللهِ فَقَالَ: لاَ تَحْزَنْ إِنَّ اللهَ مَعَنَا فَدَعَا عَلَيْهِ النَبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَارْتَطَمَتْ بِهِ فَرَسُهُ إِلَى بَطْنِهَا، أُرَى فِي جَلَدٍ مِنَ الأَرْضِ فَقَالَ: إِنِّي أُرَاكُمَا قَدْ دَعَوْتُمَا عَلَيَّ فَادْعُوَا لِي فَاللهُ لَكُمَا أَنْ أَرُدَّ عَنْكُمَا الطَّلَبَ فَدَعَا لَهُ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَنَجَا فَجَعَلَ لاَ يَلْقَى أَحَدًا إِلاَّ قَالَ: كَفَيْتُكُمْ مَا هُنَا فَلاَ يَلْقَى أَحَدًا إِلاَّ رَدَّهُ قَالَ: وَوَفى لَنَا
বারা ইব্নু ‘আযিব (রাঃ) হতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একদা আবূ বকর (রাঃ) আমার পিতার কাছে আমাদের বাড়িতে আসলেন। তিনি আমার পিতার কাছ হতে একটি হাওদা কিনলেন এবং আমার পিতাকে বললেন, তোমার ছেলে বারাকে আমার সঙ্গে হাওদাটি বয়ে নিয়ে যেতে বল। আমি হাওদাটি বয়ে তাঁর সঙ্গে চললাম। আমার পিতাও ওটার মূল্য নেয়ার জন্য আমাদের সঙ্গী হলেন। আমার পিতা তাঁকে বললেন, হে আবূ বকর! দয়া করে আপনি আমাদেরকে বলুন, আপনারা কী করেছিলেন যে রাতে আপনি নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর সাথী ছিলেন? তিনি বললেন, হাঁ। অবশ্যই আমরা সারা রাত পথ চলে পরদিন দিন দুপুর অবধি চললাম। যখন রাস্তাঘাট লোকশূন্য হয়ে পড়ল, রাস্তায় কোন মানুষের আনাগোনা ছিল না। হঠাৎ একটি লম্বা ও চওড়া পাথর আমাদের নযরে পড়লো, যার ছায়ায় সূর্যের তাপ প্রবেশ করছিল না। আমরা সেখানে গিয়ে নামলাম। আমি নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর জন্য নিজ হাতে একটি জায়গা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে নিলাম, যাতে সেখানে তিনি ঘুমাতে পারেন। আমি ওখানে একটি চামড়ার বিছানা পেতে দিলাম এবং বললাম, হে আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! আপনি শুয়ে পড়ুন। আমি আপনার নিরাপত্তার জন্য পাহারায় থাকলাম। তিনি শুয়ে পড়লেন। আর আমি চারপাশের অবস্থা দেখার জন্য বেরিয়ে পড়লাম। হঠাৎ দেখতে পেলাম, একজন মেষ রাখাল তার মেষপাল নিয়ে পাথরের দিকে ছুটে আসছে। সেও আমাদের মত পাথরের ছায়ায় আশ্রয় নিতে চায়। আমি বললাম, হে যুবক! তুমি কার রাখাল? সে মাদীনাহর কি মাক্কাহর এক লোকের নাম বলল। আমি জিজ্ঞেস করলাম, তোমার মেষপালে কি দুধেল মেষ আছে? সে বলল, হাঁ আছে। আমি বললাম, তুমি কি দুহে দিবে? সে বলল, হাঁ। অতঃপর সে একটি বক্রী ধরে নিয়ে এল। আমি বললাম, এর স্তন ধূলা-বালি, পশম ও ময়লা হতে পরিষ্কার করে নাও। রাবী আবূ ইসহাক (রহ.) বলেন, আমি বারাআ (রাঃ)-কে দেখলাম এক হাত অন্য হাতের উপর রেখে ঝাড়ছেন। অতঃপর ঐ যুবক একটি কাঠের বাটিতে কিছু দুধ দোহন করল। আমার সঙ্গেও একটি চামড়ার পাত্র ছিল। আমি নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর উযূর পানি ও পান করার পানি রাখার জন্য নিয়েছিলাম। আমি দুধ নিয়ে নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর নিকট আসলাম। তাঁকে জাগানো ভাল মনে করলাম না। কিছুক্ষণ পর তিনি জেগে উঠলেন। আমি দুধ নিয়ে হাযির হলাম। আমি দুধের মধ্যে কিছু পানি ঢেলেছিলাম তাতে দুধের নীচ পর্যন্ত ঠান্ডা হয়ে গেল। আমি বললাম, হে আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! আপনি দুধ পান করুন। তিনি পান করলেন, আমি তাতে সন্তুষ্ট হয়ে গেলাম। অতঃপর নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, এখন কি আমাদের যাত্রা শুরুর সময় হয়নি? আমি বললাম, হাঁ হয়েছে। পুনরায় শুরু হল আমাদের সফর। ততক্ষণে সূর্য পশ্চিম আকাশে ঢলে পড়েছে। সুরাকা ইব্নু মালিক আমাদের পিছন নিয়েছিল। আমি বললাম, হে আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! আমাদের অনুসরণে কে যেন আসছে। তিনি বললেন, চিন্তা করোনা, নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ্ আমাদের সঙ্গে রয়েছেন।তখন নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর বিরুদ্ধে দু’আ করলেন। তৎক্ষণাৎ আরোহীসহ ঘোড়া তার পেট পর্যন্ত মাটিতে দেবে গেল শক্ত মাটিতে। রাবী যুহায়র এ শব্দটি সম্পর্কে সন্দেহ প্রকাশ করে বলেন আমার ধারণা এ রকম শব্দ বলেছিলেন। সুরাকা বলল, আমার বিশ্বাস আপনারা আমার বিরুদ্ধে দু‘আ করেছেন। আমার জন্য আপনারা দু‘আ করে দিন। আল্লাহ্র কসম! আপনাদের খোঁজকারীদেরকে আমি ফিরিয়ে নিয়ে যাব। নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তার জন্য দু‘আ করলেন। সে বেঁচে গেল। ফিরে যাবার পথে যার সঙ্গে তার দেখা হত, সে বলত আমি সব দেখে এসেছি। যাকেই পেয়েছে, ফিরিয়ে দিয়েছে। আবূ বাকর (রাঃ) বলেন, সে আমাদের সঙ্গে করা অঙ্গীকার পূর্ণ করেছে। ১৮৯২. (বুখারী পর্ব ৬১ অধ্যায় ২৫ হাদীস নং ৩৬১৫; মুসলিম ৩৬/১০ হাঃ ২০০৯)