পরিচ্ছেদঃ
১ থেকে ১০০ নং হাদিস
জাল জয়িফ হাদিস সিরিজ : ৮৭
জাল জয়িফ হাদিস সিরিজহাদিস নম্বর ৮৭
বর্ণনাকারী হতে বর্ণিতঃ
খতীব যখন মিম্বারে উঠে যাবে; তার পর সলাতও নেই, কোন কথাও নেই।হাদীসটি বাতিল। এ ব্যাকটি মুখে মুখে পরিচিতি লাভ করেছে, কিন্তু তার কোন ভিত্তি নেই।হাদীসটি তাবারানী “মু’জামুল কাবীর” গ্রন্থে ইবনু উমার (রাঃ) হতে মারফূ’ হিসাবে নিম্নের এ ভাষায় উল্লেখ করেছেনঃ (আরবি)“তোমাদের কেউ যখন মসজিদে প্রবেশ করবে এমতাবস্থায় যে, ইমাম মিম্বারের উপরে, তখন ইমামের খুৎবা শেষ না করা পর্যন্ত আর কোন সলাত পড়া যাবে না এবং কোন কথাও বলা যাবে না।”এ হাদীসের সনদে আইউব ইবনু নাহীক নামক এক বর্ণনাকারী আছেন। তার সম্পর্কে ইবনু আবী হাতীম “আল-জারহু ওয়াত-তা’দীল” গ্রন্থে (১/১/২৫৯) বলেনঃআমি আমার পিতা হতে শুনেছি তিনি বলেনঃ হাদীসের ক্ষেত্রে তিনি দুর্বল। আবূ যুর’য়াহ হতে শুনেছি, তিনি বলেনঃ আইউব ইবনু নাহীক হতে আমি হাদীস বর্ণনা করব না এবং তার হাদীস আমার নিকট পড়াও হয় না। অতঃপর বলেছেনঃ তিনি একজন মুনকারুল হাদীস।হায়সামী “মাজমা’উয যাওয়াইদ” গ্রন্থে (২/১৮৪) বলেনঃ (আরবী) ‘তিনি মাতরূক, তাকে মুহাদ্দিসগণের এক জামা’আত দুর্বল আখ্যা দিয়েছেন।’এ কারণেই হাফিয ইবনু হাজার “ফতহুল বারীর” মধ্যে (২/৩২৭) বলেছেনঃ হাদীসটি দুর্বল।আমি হাদীসটি বাতিল বলে হুকুম লাগিয়েছি। কারণ তার সনদে দুর্বলতা থাকা ছাড়াও এটি দু’টি সহীহ হাদীস বিরোধীঃ (আরবী)১। “তোমাদের কেউ জুম’আর দিবসে যখন (মসজিদে) আসবে এমতাবস্থায় যে, ইমাম খুৎবা দিচ্ছেন, তখন সে যেন সংক্ষেপে দু’রাকা’আত সলাত আদায় করে।”হাদীসটি মুসলিম শরীফে (৩/১৪/১৫) এবং আবূ দাউদে (১০২৩) বর্ণিত হয়েছে। বুখারী এবং মুসলিম এর বর্ণনাতেও জাবের (রাঃ) হতে অনুরূপ হাদিস এসেছে।(আরবি)২। রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ “তুমি যদি তোমার সঙ্গীকে জুম’আর দিবসে ইমাম খুৎবা দেয়ার সময় বল চুপ কর, তাহলে তুমি কটু কথা বললে।”প্রথম কথাটি অত্যন্ত স্পষ্ট, যা তাগিদ দিচ্ছে খুৎবা চলাকালীন সময়ে দু’রাকা’আত সলাত আদায় করার জন্য। রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর হাদীসের বিরোধিতা করে কিছু অজ্ঞ ইমাম/খতীব খুৎবা চলাকালীন সময়ে মসজিদে প্রবেশ করে যে ব্যক্তি দু’রাকা’আত সলাত আদায় করতে চাই তাকে নিষেধ করেন।আমার ভয় হয় তারা রসূলের হাদীসের বিরোধিতা করার কারণে নিম্নে বর্ণিত আয়াত দু’টিতে বর্ণিত শাস্তির অন্তর্ভুক্ত হয়ে যায় কিনা।(আরবি)অর্থঃ “কোন বান্দা যখন সলাত আদায় করে তখন তাকে যে নিষেধ করে তার সম্পর্কে আপনার সিদ্ধান্ত কী?” (সূরা আ’লাকঃ ৯-১০)(আরবি)অর্থঃ “যারা আল্লাহ্র হুকুমের বিরোধিতা করে তাদের ভয় করা উচিৎ যে, তাদের কোন বিপদ গ্রাস করবে বা তাদের উপর যন্ত্রণাদায়ক আযাব নাযিল হবে” (সূরা নূরঃ ৬৩)।দ্বিতীয় হাদীসটি হতে বুঝা যাচ্ছে ইমাম খুৎবা শুরু করলে কথা বলা নিষেধ। খুৎবা শুরু না করে মিম্বারে বসে থাকা অবস্থায় কথা বললে তা নিষেধ নয়। কারণ উমার (রাঃ)-এর যুগে তিনি যখন মিম্বারের উপর বসতেন তখনও লোকেরা মুয়াজ্জিন চুপ না হওয়া পর্যন্ত কথা বলতে থাকতেন। যখন তিনি মিম্বারে দাঁড়িয়ে যেতেন তখন দু’ খুৎবা শেষ না হওয়া পর্যন্ত আর কেউ কথা বলতেন না।অতএব মিম্বারে উঠলেই কথা বলা নিষেধ এটি সঠিক নয়।