পরিচ্ছেদ ০২.
পানির মূল পবিত্র অবস্থায় বহাল থাকা
বুলুগুল মারাম : ০২
বুলুগুল মারামহাদিস নম্বর ০২
وَعَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ - رضي الله عنه - قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ - صلى الله عليه وسلم -: «إِنَّ الْمَاءَ طَهُورٌ لَا يُنَجِّسُهُ شَيْءٌ» أَخْرَجَهُ الثَّلَاثَةُ، وَصَحَّحَهُ أَحْمَدُ
আবূ সা‘ঈদ খুদরী (রাঃ) হতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ ‘নিশ্চয়ই পানি পবিত্র জিনিস, কোন কিছুই তাকে অপবিত্র করতে পারে না।’-৩ জনে; [২] আহমাদ একে সহীহ্ বলেছেন। [৩]হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
[২] আবূ দাঊদ ৬৬, নাসায়ী ১৭৪, তিরমযী ৬৬। আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে বলা হলো, আমরা কি বুযা’আহ নামক কূপের পানি দিয়ে ওযূ করতে পারি? আর ঐ কূপটি এমন ছিল যে, তাতে হায়েযের নেকড়া, কুকুরের গোশ্ত এবং অন্যান্য ময়লা আবর্জনা ফেলা হতো। অতঃপর রাসূল এ হাদীস বর্ণনা করেন। মুহাক্কিক সুমাইর আয-যুহাইরি বুলুগুল মারামের ব্যাখ্যা বলেন, হাদীসটি বিশুদ্ধ, যদিও একজন রাবী অস্পষ্টতার কারণে হাদীসটিকে ত্রুটিযুক্ত বলা হয়েছে। কিন্তু এর অন্য একটি সনদ ও কয়েকটি শাহেদ রয়েছে যা হাদীসটি বিশুদ্ধ হাদীসের পরিণত করছে। বিঃ দ্রঃ হাদীসের কথা – “ (আরবী)” বিষয়ে ইমাম খাত্তাবী তাঁর মা’আলিমুস সুনান (১/৩৭) গ্রন্থে বলেন, এ হাদীস শ্রবণ করে অনেকের মনে এ ধারণা জন্মাতে পারে যে, তারা এ কাজটি ইচ্ছাকৃতভাবে করতো। তাদের সম্পর্কে এমন মন্দ ধারণা জায়েজ নয়; বিশেষ করে মুসলিমদের ক্ষেত্রে আরো নয়। তাছাড়া এমন (নোংরা) স্বভাব পূর্বেকার বা বর্তমানকালের কোন মানুষের সে মুসলিম হক বা কাফির হোক এমন (নোংরা) স্বভাব হতে পারে না। বরং তারা পানিকে সব সময় পবিত্র, পরিস্কার ও পরিচ্ছন্ন রাখতেন। অতএব এমন যুগের লোকদের সম্বন্ধে এমন ধারণা কিভাবে করা যায় অথচ তারা দ্বীনের অত্যন্ত উচ্চ পর্যায়ে ব্যক্তিত্ব এবং মুসলমানদের সবচেয়ে সন্মানিত দল! তাছাড়া সেদেশে পানি দুষ্প্রাপ্য অথচ তার প্রয়োজন নিতান্তই বেশি। তা সত্ত্বেও পানির সাথে এমন আচরণ কি অত্যন্ত কঠিন কথা নয়!? এদিকে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) পানির ঘাট এবং নালায় মলমূত্র ত্যাগকারীর উপর লানত করেছেন। তাহলে কি করে তারা পানির কূপ ও নালাসমূহকে ময়লা ফেলার জন্য নির্দিষ্ট করতে পারে; আর তাতে ময়লা আবর্জনা নিক্ষেপ করা হতে পারে? এমন আচরণ তাদের জন্য মোটেই মানানসই নয়। হ্যাঁ বিষয়টি এমন হতে পারে যে, ঐ কূপটি কোন মধ্যবর্তী স্থানে ছিল এবং পানির প্রবাহ রাস্তা ও ময়লা ফেলার স্থানের বর্জ্যকে ভাসিয়ে নিয়ে উক্ত কূপে নিক্ষেপ করতো। আর তাতে পানির পরিমাণ খুব বেশি হওয়ায় তাতে কোন প্রভাব পড়তো না এবং পানির স্বাভাবিক বৈশিষ্টের কোন পরিবর্তন করতো না।[৩] এ বিষয়টি ইমাম মুনজিরী তার ‘মুখতাসার’ নামক গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন।