অনুচ্ছেদ-১০

সূরা আত-তাওবাহ্

জামে' আত-তিরমিজিহাদিস নম্বর ৩১০২

حَدَّثَنَا عَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، أَخْبَرَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، أَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ كَعْبِ بْنِ مَالِكٍ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ لَمْ أَتَخَلَّفْ عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فِي غَزْوَةٍ غَزَاهَا حَتَّى كَانَتْ غَزْوَةُ تَبُوكَ إِلاَّ بَدْرًا وَلَمْ يُعَاتِبِ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم أَحَدًا تَخَلَّفَ عَنْ بَدْرٍ إِنَّمَا خَرَجَ يُرِيدُ الْعِيرَ فَخَرَجَتْ قُرَيْشٌ مُغْوِثِينَ لِعِيرِهِمْ فَالْتَقَوْا عَنْ غَيْرِ مَوْعِدٍ كَمَا قَالَ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ وَلَعَمْرِي إِنَّ أَشْرَفَ مَشَاهِدِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فِي النَّاسِ لَبَدْرٌ وَمَا أُحِبُّ أَنِّي كُنْتُ شَهِدْتُهَا مَكَانَ بَيْعَتِي لَيْلَةَ الْعَقَبَةِ حَيْثُ تَوَاثَقْنَا عَلَى الإِسْلاَمِ ثُمَّ لَمْ أَتَخَلَّفْ بَعْدُ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم حَتَّى كَانَتْ غَزْوَةُ تَبُوكَ وَهِيَ آخِرُ غَزْوَةٍ غَزَاهَا وَآذَنَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم بِالرَّحِيلِ ‏.‏ فَذَكَرَ الْحَدِيثَ بِطُولِهِ قَالَ فَانْطَلَقْتُ إِلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَإِذَا هُوَ جَالِسٌ فِي الْمَسْجِدِ وَحَوْلَهُ الْمُسْلِمُونَ وَهُوَ يَسْتَنِيرُ كَاسْتِنَارَةِ الْقَمَرِ وَكَانَ إِذَا سُرَّ بِالأَمْرِ اسْتَنَارَ فَجِئْتُ فَجَلَسْتُ بَيْنَ يَدَيْهِ فَقَالَ ‏"‏ أَبْشِرْ يَا كَعْبُ بْنَ مَالِكٍ بِخَيْرِ يَوْمٍ أَتَى عَلَيْكَ مُنْذُ وَلَدَتْكَ أُمُّكَ ‏"‏ ‏.‏ فَقُلْتُ يَا نَبِيَّ اللَّهِ أَمِنْ عِنْدِ اللَّهِ أَمْ مِنْ عِنْدِكَ قَالَ ‏"‏ بَلْ مِنْ عِنْدِ اللَّهِ ‏"‏ ‏.‏ ثُمَّ تَلاَ هَؤُلاَءِ الآيَاتِ ‏:‏ ‏(‏ لَقََدْ تَابَ اللَّهُ عَلَى النَّبِيِّ وَالْمُهَاجِرِينَ وَالأَنْصَارِ الَّذِينَ اتَّبَعُوهُ فِي سَاعَةِ الْعُسْرَةِ ‏)‏ حَتَّى بَلَغََّ اللَّهَ هُوَ التَّوَّابُ الرَّحِيمُ ‏)‏ قَالَ وَفِينَا أُنْزِلَتْ أَيْضًا ‏:‏ ‏(‏ اتَّقُوا اللَّهَ وَكُونُوا مَعَ الصَّادِقِينَ ‏)‏ قَالَ قُلْتُ يَا نَبِيَّ اللَّهِ إِنَّ مِنْ تَوْبَتِي أَنْ لاَ أُحَدِّثَ إِلاَّ صِدْقًا وَأَنْ أَنْخَلِعَ مِنْ مَالِي كُلِّهِ صَدَقَةً إِلَى اللَّهِ وَإِلَى رَسُولِهِ ‏.‏ فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم ‏"‏ أَمْسِكْ عَلَيْكَ بَعْضَ مَالِكَ فَهُوَ خَيْرٌ لَكَ ‏"‏ ‏.‏ فَقُلْتُ فَإِنِّي أُمْسِكُ سَهْمِي الَّذِي بِخَيْبَرَ قَالَ فَمَا أَنْعَمَ اللَّهُ عَلَىَّ نِعْمَةً بَعْدَ الإِسْلاَمِ أَعْظَمَ فِي نَفْسِي مِنْ صِدْقِي رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم حِينَ صَدَقْتُهُ أَنَا وَصَاحِبَاىَ لاَ نَكُونُ كَذَبْنَا فَهَلَكْنَا كَمَا هَلَكُوا وَإِنِّي لأَرْجُو أَنْ لاَ يَكُونَ اللَّهُ أَبْلَى أَحَدًا فِي الصِّدْقِ مِثْلَ الَّذِي أَبْلاَنِي مَا تَعَمَّدْتُ لِكَذِبَةٍ بَعْدُ وَإِنِّي لأَرْجُو أَنْ يَحْفَظَنِي اللَّهُ فِيمَا بَقِيَ ‏.‏ قَالَ وَقَدْ رُوِيَ عَنِ الزُّهْرِيِّ هَذَا الْحَدِيثُ بِخِلاَفِ هَذَا الإِسْنَادِ وَقَدْ قِيلَ عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ كَعْبِ بْنِ مَالِكٍ عَنْ عَمِّهِ عُبَيْدِ اللَّهِ عَنْ كَعْبٍ وَقَدْ قِيلَ غَيْرُ هَذَا وَرَوَى يُونُسُ بْنُ يَزِيدَ هَذَا الْحَدِيثَ عَنِ الزُّهْرِيِّ عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ كَعْبِ بْنِ مَالِكٍ أَنَّ أَبَاهُ حَدَّثَهُ عَنْ كَعْبِ بْنِ مَالِكٍ ‏.‏

কা'ব ইবনু মালিক (রাঃ) হতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যতগুলো যুদ্ধ করেছেন, একমাত্র বদরের যুদ্ধ ব্যতীত অন্য কোন যুদ্ধেই আমি অনুপস্থিত ছিলাম না। এভাবে তাবূকের যুদ্ধ সমুপস্থিত হয়। যারা বদরের যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেনি, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাদের কোনরূপ ভর্ৎসনা করেননি। কারণ তিনি বের হয়েছিলেন কাফিলা অবরোধের উদ্দেশ্যেই। ওদিকে কুরাইশরাও তাদের কাফিলার সাহায্যার্থে বের হয়েছিল। প্রতিশ্রুত স্থান ব্যতীত উভয় পক্ষ পরস্পর মুকাবিলায় অবতীর্ণ হয়, যেমন আল্লাহ তা'আল বলেছেন। আমার জীবনের শপথ! মানুষদের দৃষ্টিতে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর উপস্থিতির সর্বোৎকৃষ্ট স্থান হচ্ছে বদরই কিন্তু আমি 'আক্বাবার রাতে আমার বাই'আতের উপর মর্যাদা দিয়ে তাতে (বদরে) অংশগ্রহণ করাকে পছন্দ করিনি। কারণ সেই লাইলাতুল 'আক্বাবাতেই আমি বাই'আত করেছি এবং আমরা এখানেই ইসলামের উপর সুদৃঢ হয়ে গিয়েছি। অতঃপর আমি কখনো রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর সাথে কোন অভিযান হতে পেছনে ছিলাম না। এভাবে তাবূকের যুদ্ধের পালা আসে। আর তাবূক যুদ্ধই ছিল রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর নেতৃত্বে পরিচালিত সর্বশেষ যুদ্ধ। যোদ্ধাদের যাত্রা শুরুর জন্যে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নির্দেশ দিলেন। তারপর বর্ণনাকারী দীর্ঘ হাদীস বর্ণনা করেন।আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর নিকট গেলাম। তিনি তখন মাসজিদে বসা ছিলেন। তাঁর আশেপাশে মুসলিমগণ সমবেত ছিল। তাঁর মুখমণ্ডল চাঁদের ন্যায় চমকাচ্ছিল। তিনি কোন বিষয়ে আনন্দিত হলে তাঁর চেহারা মুবারাক দীপ্তিমান হয়ে উঠত। আমি উপস্থিত হয়ে তাঁর সামনে বসে পড়লাম। তিনি বললেনঃ "হে কা'ব ইবনু মালিক! তোমার মা তোমাকে প্রসব করার পর হতে যতগুলো দিন তোমার কাছে এসেছে তার মধ্যে একটি সর্বোৎকৃষ্ট দিনের সুসংবাদ তোমার জন্য। আমি বললাম, হে আল্লাহর নাবী! আল্লাহ তা'আলার পক্ষ হতে না আপনার পক্ষ হতে? তিনি বললেনঃ বরং আল্লাহ তা'আলার পক্ষ হতে। তারপর তিনি এ আয়াতগুলো তিলাওয়াত করলেন (অনুবাদ) : "আল্লাহ তা'আলা অবশ্যই অনুগ্রহপরায়ণ হলেন নাবীর প্রতি এবং মুহাজির ও আনসারদের প্রতি, যারা বড় দুঃসময়ে তার অনুসরণ করেছিল, এমনকি যখন তাদের মধ্যকার একদলের হৃদয় বক্র হওয়ার উপক্রম হয়েছিল। তারপর আল্লাহ তা'আলা তাদের মাফ করলেন। তিনি তো তাদের প্রতি দয়ার্দ্র, পরম দয়ালু এবং অপর তিনজনকে যাদেরকে পিছনে রাখা হয়েছিল, যখন পৃথিবী বিস্তৃত হওয়া সত্ত্বেও তাদের জন্য সংকুচিত হয়ে গেল এবং তাদের জীবন দুর্বিসহ হয়ে উঠল, তারা বুঝতে পারলো যে আল্লাহ ব্যতীত আর কোন আশ্রয়স্থল নেই, অতঃপর তিনি তাদের প্রতি সদয় হলেন যাতে তারা ফিরে আসে। অবশ্যই আল্লাহ তাওবাহ্ ক্ববুলকারী দয়াময়। (সূরা আত্‌-তাওবাহ্ ১১৭-১১৮)।বর্ণাকারী বলেন, এ আয়াতগুলোও আমাদের সম্পর্কেই অবতীর্ণ হয়েছে (অনুবাদ) : "হে ঈমানদার লোকেরা! তোমরা আল্লাহ তা'আলাকে ভয় কর এবং সত্যবাদীদের সঙ্গী হও’-(সূরা আত্‌-তাওবাহ্ ১১৯)। কা’ব (রাঃ) বলেন, আমি বললাম, হে আল্লাহ্‌র নাবী! আমার তাওবার মধ্যে এও অন্তর্ভুক্ত যে, আমি সর্বদা সত্য কথাই বলব এবং আমি আমার সমস্ত মাল আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের উদ্দেশে দান করে দিব। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ তোমার কিছু মাল তোমার নিজের জন্য রাখ। এটাই তোমার জন্য ভালো। আমি বললাম, আমি আমার নিজের জন্য খাইবারের অংশটুকু রেখে দিচ্ছি। কা'ব (রাঃ) বলেন, ইসলাম ক্ববুল করার পর হতে আল্লাহ তা'আলা আমাকে যত নি'আমাতে ধন্য করেছেন আমার মতে তার মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ নি'আমাত হচ্ছে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর নিকট আমার ও আমার সঙ্গীদ্বয়ের সত্য কথা বলা এবং আমাদের মিথ্যাবাদী না হওয়া। অন্যথায় তারা যেভাবে ধ্বংস হয়েছে আমরাও তদ্রুপ ধ্বংস হতাম। আমি আশা করি সত্য বলার ব্যাপারে আল্লাহ তা'আলা যেন আমার ন্যায় এতো বড় পরীক্ষায় আর কাউকে না ফেলেন। আমি আর কখনো মিথ্যা বলিনি। আমি আরো আশা করি অবশিষ্ট দিনগুলোও যেন আল্লাহ তা'আলা আমাকে হিফাযাত করেন।সহীহ : সহীহ আবূ দাঊদ (১৯১২), বুখারী (৪৬৭৬), মুসলিম।

এ হাদীস উপরোক্ত সনদের বিপরীত সনদে যুহরী (রহঃ) হতে বর্ণিত হয়েছে। কথিত আছে যে, সনদটি 'আবদুর রাহমান ইবনু 'আবদুল্লাহ ইবনু কা'ব ইবনু মালিক- তার চাচা 'উবাইদুল্লাহ হতে, তিনি কা'ব (রাঃ) হতে। আবার কেউ কেউ এ ব্যতীত অন্য সূত্রেও বর্ণনা করেছেন। অনন্তর এ হাদীস যুহরী হতে, তিনি 'আবদুর রাহমান ইবনু 'আবদুল্লাহ ইবনু কা'ব ইবনু মালিক হতে, তিনি তার বাবা হতে, তিনি কা'ব ইবনু মালিক (রাঃ) হতে এই সূত্রে ইউনুস ইবনু ইযাযীদ বর্ণনা করেছেন।

সেটিংস

ফন্ট সেটিংস

আরবি ফন্ট ফেস

আরবি ফন্ট সাইজ

২৪

অনুবাদ ফন্ট সাইজ

১৮

আল হাদিস অ্যাপ ডাউনলোড করুন

App Banner

ইসলামের জ্ঞান প্রচারে সহায়ক হোন

আপনার নিয়মিত সহায়তা আমাদের দ্বীনি ভাই-বোনের কাছে ইসলামের দাওয়াত পৌঁছাতে সাহয্য করবে। আমাদের মিশনে আপনিও অংশ নিন এবং বড় পরিবর্তনের অংশীদার হোন।

সাপোর্ট করুন