অনুচ্ছেদ-৫

সূরা আন –নিসা

জামে' আত-তিরমিজিহাদিস নম্বর ৩০৩৬

حَدَّثَنَا الْحَسَنُ بْنُ أَحْمَدَ بْنِ أَبِي شُعَيْبٍ أَبُو مُسْلِمٍ الْحَرَّانِيُّ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ سَلَمَةَ الْحَرَّانِيُّ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ إِسْحَاقَ، عَنْ عَاصِمِ بْنِ عُمَرَ بْنِ قَتَادَةَ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ جَدِّهِ، قَتَادَةَ بْنِ النُّعْمَانِ قَالَ كَانَ أَهْلُ بَيْتٍ مِنَّا يُقَالُ لَهُمْ بَنُو أُبَيْرِقٍ بِشْرٌ وَبَشِيرٌ وَمُبَشِّرٌ وَكَانَ بَشِيرٌ رَجُلاً مُنَافِقًا يَقُولُ الشِّعْرَ يَهْجُو بِهِ أَصْحَابَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ثُمَّ يَنْحَلُهُ بَعْضَ الْعَرَبِ ثُمَّ يَقُولُ قَالَ فُلاَنٌ كَذَا وَكَذَا قَالَ فُلاَنٌ كَذَا وَكَذَا فَإِذَا سَمِعَ أَصْحَابُ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ذَلِكَ الشِّعْرَ قَالُوا وَاللَّهِ مَا يَقُولُ هَذَا الشِّعْرَ إِلاَّ هَذَا الْخَبِيثُ أَوْ كَمَا قَالَ الرَّجُلُ وَقَالُوا ابْنُ الأُبَيْرِقِ قَالَهَا قَالَ وَكَانَ أَهْلُ بَيْتِ حَاجَةٍ وَفَاقَةٍ فِي الْجَاهِلِيَّةِ وَالإِسْلاَمِ وَكَانَ النَّاسُ إِنَّمَا طَعَامُهُمْ بِالْمَدِينَةِ التَّمْرُ وَالشَّعِيرُ وَكَانَ الرَّجُلُ إِذَا كَانَ لَهُ يَسَارٌ فَقَدِمَتْ ضَافِطَةٌ مِنَ الشَّامِ مِنَ الدَّرْمَكِ ابْتَاعَ الرَّجُلُ مِنْهَا فَخَصَّ بِهَا نَفْسَهُ وَأَمَّا الْعِيَالُ فَإِنَّمَا طَعَامُهُمُ التَّمْرُ وَالشَّعِيرُ فَقَدِمَتْ ضَافِطَةٌ مِنَ الشَّامِ فَابْتَاعَ عَمِّي رِفَاعَةُ بْنُ زَيْدٍ حِمْلاً مِنَ الدَّرْمَكِ فَجَعَلَهُ فِي مَشْرَبَةٍ لَهُ وَفِي الْمَشْرَبَةِ سِلاَحٌ وَدِرْعٌ وَسَيْفٌ فَعُدِيَ عَلَيْهِ مِنْ تَحْتِ الْبَيْتِ فَنُقِبَتِ الْمَشْرَبَةُ وَأُخِذَ الطَّعَامُ وَالسِّلاَحُ فَلَمَّا أَصْبَحَ أَتَانِي عَمِّي رِفَاعَةُ فَقَالَ يَا ابْنَ أَخِي إِنَّهُ قَدْ عُدِيَ عَلَيْنَا فِي لَيْلَتِنَا هَذِهِ فَنُقِبَتْ مَشْرَبَتُنَا فَذُهِبَ بِطَعَامِنَا وَسِلاَحِنَا ‏.‏ قَالَ فَتَحَسَّسْنَا فِي الدَّارِ وَسَأَلْنَا فَقِيلَ لَنَا قَدْ رَأَيْنَا بَنِي أُبَيْرِقٍ اسْتَوْقَدُوا فِي هَذِهِ اللَّيْلَةِ وَلاَ نُرَى فِيمَا نُرَى إِلاَّ عَلَى بَعْضِ طَعَامِكُمْ ‏.‏ قَالَ وَكَانَ بَنُو أُبَيْرِقٍ قَالُوا وَنَحْنُ نَسْأَلُ فِي الدَّارِ وَاللَّهِ مَا نُرَى صَاحِبَكُمْ إِلاَّ لَبِيدَ بْنَ سَهْلٍ رَجُلٌ مِنَّا لَهُ صَلاَحٌ وَإِسْلاَمٌ فَلَمَّا سَمِعَ لَبِيدٌ اخْتَرَطَ سَيْفَهُ وَقَالَ أَنَا أَسْرِقُ فَوَاللَّهِ لَيُخَالِطَنَّكُمْ هَذَا السَّيْفُ أَوْ لَتُبَيِّنُنَّ هَذِهِ السَّرِقَةَ ‏.‏ قَالُوا إِلَيْكَ عَنْهَا أَيُّهَا الرَّجُلُ فَمَا أَنْتَ بِصَاحِبِهَا ‏.‏ فَسَأَلْنَا فِي الدَّارِ حَتَّى لَمْ نَشُكَّ أَنَّهُمْ أَصْحَابُهَا فَقَالَ لِي عَمِّي يَا ابْنَ أَخِي لَوْ أَتَيْتَ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَذَكَرْتَ ذَلِكَ لَهُ ‏.‏ قَالَ قَتَادَةُ فَأَتَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقُلْتُ إِنَّ أَهْلَ بَيْتٍ مِنَّا أَهْلَ جَفَاءٍ عَمَدُوا إِلَى عَمِّي رِفَاعَةَ بْنِ زَيْدٍ فَنَقَبُوا مَشْرَبَةً لَهُ وَأَخَذُوا سِلاَحَهُ وَطَعَامَهُ فَلْيَرُدُّوا عَلَيْنَا سِلاَحَنَا فَأَمَّا الطَّعَامُ فَلاَ حَاجَةَ لَنَا فِيهِ ‏.‏ فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم ‏"‏ سَآمُرُ فِي ذَلِكَ ‏"‏ ‏.‏ فَلَمَّا سَمِعَ بَنُو أُبَيْرِقٍ أَتَوْا رَجُلاً مِنْهُمْ يُقَالُ لَهُ أَسِيرُ بْنُ عُرْوَةَ فَكَلَّمُوهُ فِي ذَلِكَ فَاجْتَمَعَ فِي ذَلِكَ نَاسٌ مِنْ أَهْلِ الدَّارِ فَقَالُوا يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنَّ قَتَادَةَ بْنَ النُّعْمَانِ وَعَمَّهُ عَمَدَا إِلَى أَهْلِ بَيْتٍ مِنَّا أَهْلِ إِسْلاَمٍ وَصَلاَحٍ يَرْمُونَهُمْ بِالسَّرِقَةِ مِنْ غَيْرِ بَيِّنَةٍ وَلاَ ثَبْتٍ ‏.‏ قَالَ قَتَادَةُ فَأَتَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَكَلَّمْتُهُ فَقَالَ ‏"‏ عَمَدْتَ إِلَى أَهْلِ بَيْتٍ ذُكِرَ مِنْهُمْ إِسْلاَمٌ وَصَلاَحٌ تَرْمِيهِمْ بِالسَّرِقَةِ عَلَى غَيْرِ ثَبْتٍ وَلاَ بَيِّنَةٍ ‏"‏ ‏.‏ قَالَ فَرَجَعْتُ وَلَوَدِدْتُ أَنِّي خَرَجْتُ مِنْ بَعْضِ مَالِي وَلَمْ أُكَلِّمْ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فِي ذَلِكَ فَأَتَانِي عَمِّي رِفَاعَةُ فَقَالَ يَا ابْنَ أَخِي مَا صَنَعْتَ فَأَخْبَرْتُهُ بِمَا قَالَ لِي رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ اللَّهُ الْمُسْتَعَانُ فَلَمْ يَلْبَثْ أَنْ نَزَلَ الْقُرْآنُ ‏:‏ ‏(‏ إِنَّا أَنْزَلْنَا إِلَيْكَ الْكِتَابَ بِالْحَقِّ لِتَحْكُمَ بَيْنَ النَّاسِ بِمَا أَرَاكَ اللَّهُ وَلاَ تَكُنْ لِلْخَائِنِينَ خَصِيمًا ‏)‏ بَنِي أُبَيْرِقٍ ‏:‏ ‏(‏ وَاسْتَغْفِرِ اللَّهَ ‏)‏ أَىْ مِمَّا قُلْتَ لِقَتَادَةَ ‏:‏ ‏(‏ إِنَّ اللَّهَ كَانَ غَفُورًا رَحِيمًا * وَلاَ تُجَادِلْ عَنِ الَّذِينَ يَخْتَانُونَ أَنْفُسَهُمْ إِنَّ اللَّهَ لاَ يُحِبُّ مَنْ كَانَ خَوَّانًا أَثِيمًا * يَسْتَخْفُونَ مِنَ النَّاسِ وَلاَ يَسْتَخْفُونَ مِنَ اللَّهِ ‏)‏ إِلَى قَوْلِهِ ‏:‏ ‏(‏ غَفُورًا رَحِيمًا ‏)‏ أَىْ لَوِ اسْتَغْفَرُوا اللَّهَ لَغَفَرَ لَهُمْ ‏:‏ ‏(‏ وَمَنْ يَكْسِبْ إِثْمًا فَإِنَّمَا يَكْسِبُهُ عَلَى نَفْسِهِ ‏)‏ إِلَى قَوْلِهِ ‏:‏ ‏(‏ إِثْمًا مُبِينًا ‏)‏ قَوْلُهُمْ لِلَبِيدٍ ‏:‏ وَلَوْلاَ فَضْلُ اللَّهِ عَلَيْكَ وَرَحْمَتُهُ ‏)‏ إِلَى قَوْلِهِ ‏:‏ ‏(‏ فَسَوْفَ نُؤْتِيهِ أَجْرًا عَظِيمًا ‏)‏ فَلَمَّا نَزَلَ الْقُرْآنُ أُتِيَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم بِالسِّلاَحِ فَرَدَّهُ إِلَى رِفَاعَةَ فَقَالَ قَتَادَةُ لَمَّا أَتَيْتُ عَمِّي بِالسِّلاَحِ وَكَانَ شَيْخًا قَدْ عَسِيَ أَوْ عَشِيَ فِي الْجَاهِلِيَّةِ وَكُنْتُ أُرَى إِسْلاَمَهُ مَدْخُولاً فَلَمَّا أَتَيْتُهُ بِالسِّلاَحِ قَالَ يَا ابْنَ أَخِي هُوَ فِي سَبِيلِ اللَّهِ فَعَرَفْتُ أَنَّ إِسْلاَمَهُ كَانَ صَحِيحًا فَلَمَّا نَزَلَ الْقُرْآنُ لَحِقَ بَشِيرٌ بِالْمُشْرِكِينَ فَنَزَلَ عَلَى سُلاَفَةَ بِنْتِ سَعْدِ ابْنِ سُمَيَّةَ فَأَنْزَلَ اللَّهُ ‏:‏ ‏(‏ وَمَنْ يُشَاقِقِ الرَّسُولَ مِنْ بَعْدِ مَا تَبَيَّنَ لَهُ الْهُدَى وَيَتَّبِعْ غَيْرَ سَبِيلِ الْمُؤْمِنِينَ نُوَلِّهِ مَا تَوَلَّى وَنُصْلِهِ جَهَنَّمَ وَسَاءَتْ مَصِيرًا * إِنَّ اللَّهَ لاَ يَغْفِرُ أَنْ يُشْرَكَ بِهِ وَيَغْفِرُ مَا دُونَ ذَلِكَ لِمَنْ يَشَاءُ وَمَنْ يُشْرِكْ بِاللَّهِ فَقَدْ ضَلَّ ضَلاَلاً بَعِيدًا ‏)‏ فَلَمَّا نَزَلَ عَلَى سُلاَفَةَ رَمَاهَا حَسَّانُ بْنُ ثَابِتٍ بِأَبْيَاتٍ مِنْ شِعْرِهِ فَأَخَذَتْ رَحْلَهُ فَوَضَعَتْهُ عَلَى رَأْسِهَا ثُمَّ خَرَجَتْ بِهِ فَرَمَتْ بِهِ فِي الأَبْطَحِ ثُمَّ قَالَتْ أَهْدَيْتَ لِي شِعْرَ حَسَّانَ مَا كُنْتَ تَأْتِينِي بِخَيْرٍ ‏.‏ قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ لاَ نَعْلَمُ أَحَدًا أَسْنَدَهُ غَيْرَ مُحَمَّدِ بْنِ سَلَمَةَ الْحَرَّانِيِّ ‏.‏ وَرَوَى يُونُسُ بْنُ بُكَيْرٍ وَغَيْرُ وَاحِدٍ هَذَا الْحَدِيثَ عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ إِسْحَاقَ عَنْ عَاصِمِ بْنِ عُمَرَ بْنِ قَتَادَةَ مُرْسَلٌ لَمْ يَذْكُرُوا فِيهِ عَنْ أَبِيهِ عَنْ جَدِّهِ وَقَتَادَةُ بْنُ النُّعْمَانِ هُوَ أَخُو أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ لأُمِّهِ وَأَبُو سَعِيدٍ الْخُدْرِيُّ اسْمُهُ سَعْدُ بْنُ مَالِكِ بْنِ سِنَانٍ ‏.

ক্বাতাদাহ্‌ ইবনুন নু’মান (রাঃ) হতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমাদের মধ্যে বানূ উবাইরিক্ব নামে একটি পরিবার ছিল। ঐ পরিবারে বিশ্‌র, বুশাইর ও মুবাশশির নামে তিনজন লোক ছিল। বুশাইর ছিল মুনাফিক্ব। সে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সঙ্গী সাথীদের কুৎসা বর্ণনামূলক কবিতা রচনা করত, তারপর অপরাপর আরবদের প্রতি সেগুলো আরোপ করে বলত, অমুকে এরূপ এরূপ কথা বলেছে। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সাহাবীগণ যখন তা শুনতেন তখন বলতেন, আল্লাহর শপথ! ঐ অপদার্থ (খবীস) লোকটি ব্যতীত আর কেউ এ কবিতা রচনা করেনি বা একই রকম কোন মন্তব্য করতেন। যাই হোক তারা বলতেন, এটা ইবনুল উবাইরক্বেই (বুশাইর) কবিতা। বর্ণনাকারী বলেন, জাহিলী ও ইসলামী উভয় যুগে এ পরিবারটি ছিল অভাবগ্রস্ত ও দুর্ভিক্ষ পীড়িত। মাদীনায় লোকদের প্রধান খাদ্য ছিল খেজুর ও আটা। কেউ সম্পদশালী হলে সিরিয়া হতে কোন খাদ্যদ্রব্যের ব্যবসায়ী সাদা আটা বা ময়দা নিয়ে এলে সে ঐ (ব্যবসায়ী) কাফিলা হতে ময়দা কিনে নিয়ে সঞ্চয় করে রাখত নিজের ব্যবহারের জন্য। অবশিষ্ট পরিবার-পরিজনের জন্য থাকতো খেজুর ও গম।একবারের ঘটনা, সিরিয়া হতে একটি খাদ্য ব্যবসায়ী কাফিলা এলো। আমার চাচা রিফা’আহ্‌ ইবনু যাইদ (তাদের হতে) এক বস্তা ময়দা কিনলেন এবং ভাঁড়ার ঘরে রেখে দিলেন। একই জায়গায় অস্ত্রশস্ত্র, বর্ম ও তলোয়ারও ছিল। এদিকে ঘরের নিচ দিয়ে তার মাল আসবাব চুরি হয়ে গেল। গোপনে সিঁদ কেটে উক্ত ঘরে রক্ষিত ময়দা ও অস্ত্রশস্ত্র লাপাত্তা হয়ে গেল। ভোরবেলা আমার চাচা রিফাআহ আমার নিকট আসলেন এবং বললেন, হে ভাতিজা! আমার উপর তো এরাতে যুলুম হয়ে গেল। আমার ভাঁড়ারের ঘরে সিঁদ কেটে খাবার (ময়দা) ও অস্ত্রশস্ত্র চুরি করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। মহল্লায় অনুসন্ধান চালিয়ে দেখলাম ও জিজ্ঞাসাবাদ করলাম। আমাদের বলা হল, আমরা আজ রাতে বানূ উবাইরিক্বদের ঘরে আলো জ্বালাতে দেখেছি। আমাদের ধারণা মতে তারা তোমাদের খাদ্যাদির তালাশেই আলো জ্বালিয়েছিল। রিফা’আহ্‌ বললেন, আমরা যখন এ ব্যাপারে জিজ্ঞাসাবাদ করছিলাম তখন উবাইরিক্বের লোকেরা বলল, আল্লাহর শপথ! আমরা মনে করি তোমাদের এই চোর লাবীদ ইবনু সাহল ব্যতীত আর কেউ নয়। আমরা আগেই মহল্লাবাসীর এ বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। লাবীদ ছিলেন আমাদেরই মধ্যকার একজন সৎ ও ভালো মুসলিম। লাবীদ এ কথা শুনামাত্র খাপ হতে তলোয়ার বের করে বললেন, আমি চুরি করি? আল্লাহর কসম! হয় আমার এ তলোয়ারের সাথে তোমার সাক্ষাত হবে অথবা তোমরা এ চুরির সাক্ষ্য-প্রমাণ হাযির করবে। তখন লোকেরা বলল, যাও তুমি আমাদের সামনে থেকে সরে দাঁড়াও। তুমি এ কাজ করোনি। এরপরও আমরা এ ব্যাপারে মহল্লায় জিজ্ঞাসাবাদ করে নিশ্চিত হলাম যে, বানূ উবাইরিক্বই এ কান্ড ঘটিয়েছে। অবশেষে আমার চাচা আমাকে বললেন, হে ভাতিজা! তুমি ঘটনার বৃত্তান্ত রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নিকট জানালে ভালো হত। ক্বাতাদাহ (রাঃ) বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নিকট এসে তাঁকে বললাম, আমাদের মহল্লায় একটি যালিম পরিবার আছে এবং তারা আমার চাচা রিফা’আহ ইবনু যাইদের ভান্ডার কক্ষে সিঁদ কেটে তাঁর অস্ত্রশস্ত্র ও খাদ্যাদি চুরি করে নিয়ে গেছে। আমাদের অস্ত্রশস্ত্র ফিরিয়ে দেয়ার ব্যবস্থা করুন, খাদ্যদ্রব্যাদির প্রয়োজন নেই। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ আমি শীঘ্রই এ ব্যাপারে একটিা ফাইসালা করে দিচ্ছি। বনূ উবাইরিক্ব এ কথা শুনার পর তাদের নিজেদের এক লোকের নিকট এলো, যার নাম ছিল উসাইর ইবনু উরওয়াহ। তারা তার সাথে এ বিষয়ে আলাপ-আলোচনা করল। এ বাড়ির কিছু লোক একত্র হয়ে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নিকট এসে বলল, হে আল্লাহর রাসূল! ক্বাতাদাহ ইবনুন নুমান ও তার চাচা আমাদের এক সৎ ও মুসলিম পরিবারের পেছনে লেগেছে এবং কোন প্রমাণ ব্যতীতই তারা তাদের বিরুদ্ধে চুরির অভিযোগ করছে। ক্বতাদাহ (রাঃ) বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নিকট এসে (বিষয়টি নিয়ে) তাঁর সাথে কথা বললাম। তিনি বললেনঃ তুমি এমন এক পরিবারের বিরুদ্ধে বিনা প্রমাণে চুরির অপবাদ দিচ্ছ, যাদের সততা ও ইসলাম সম্পর্কে সুনাম আছে। ক্বাতাদাহ (রাঃ) বলেন, আমি ফিরে আসলাম। আমি মনে মনে বললাম, আমার এ সামান্য মাল হাতছাড়া হয়ে যাওয়া সত্ত্বেও আমি যদি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সাথে এ বিষয়ে আলাপ না করতাম! এরপর আমার চাচা রিফা’আহ আমার নিকট এসে বললেন, হে ভাতিজা! (আমার ব্যাপারে) কি করেছ? রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে যা কিছু বলেছেন, আমি তাকে তা জানালাম। তিনি বললেন, আল্লাহ তাআলাই প্রকৃত সাহায্যকারী। এরপর কিছু সময় না যেতেই কুরআনের আয়াত অবতীর্ণ হয় (ব্যাখ্যাসহ অনুবাদ) : “নিশ্চয়ই আমি এ কিতাব সত্য সহকারে তোমার প্রতি অবতীর্ণ করেছি, যেন আল্লাহ তা’আলা তোমাকে যা জ্ঞাত করেছেন তদনুসারে লোকদের মধ্যে মীমাংসা করতে পার। তুমি খিয়ানাতকারীদের পক্ষে (যেমন বনূ উবাইরিক্বের সমর্থনে) বিতর্ককারী হয়ো না। আর তুমি আল্লাহ তা’আলার নিকট ক্ষমা প্রার্থনা কর (ক্বাতাদাহকে যা বলেছ তার জন্য)। নিশ্চয় আল্লাহ তা’আলা বড়ই ক্ষমাশীল ও দয়াবান। যারা নিজেদেরকে প্রতারিত করে তুমি তাদের সাহায্য করো না। আল্লাহ তা’আলা খিয়ানাতকারী পাপিষ্ঠদেরকে পছন্দ করেন না। এরা মানুষের হতে লুকাতে পারে, কিন্তু আল্লাহ তা’আলা হতে গোপন হতে পারে না, কেননা তিনি তাদের সঙ্গেই থাকেন, যখন তারা রাতের বেলা গোপনে গোপনে তাঁর মর্জি বিরুদ্ধ পরামর্শ করে। এদের সমস্ত কাজই আল্লাহ তা’আলা জ্ঞাত। আহা! তোমরাই এসব অপরাধীর পক্ষ সমর্থনে পার্থিব জীবনে বিতর্ক করছ, কিন্তু ক্বিয়ামাতের দিন আল্লাহ তা’আলার সামনে এদের পক্ষে কে ঝগড়া করবে অথবা কে তাদের উকিল হবে? কেউ কোন পাপকর্ম করলে বা নিজের উপর যুলুম করলে তারপর আল্লাহ তা’আলার নিকট ক্ষমা প্রার্থণা করলে সে আল্লাহ তা’আলাকে ক্ষমাকারী ও অনুগ্রহশীল পাবে (অর্থাৎ তারা আল্লাহ তা’আলার নিকট ক্ষমা প্রার্থণা করলে আল্লাহ তা’আলা তাদেরকে ক্ষমা করে দিবেন)। কেউ গুনাহের কাজ করলে সে তা নিজের ক্ষতির জন্যই করে। আল্লাহ তা’আলা সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়। কেউ কোন সমস্যা বা পাপকর্ম করে তারপর তা কোন নির্দোষ ব্যক্তির প্রতি আরোপ করলে (যেমন লাবীদ প্রসঙ্গে তাদের বক্তব্য) সে তো সাংঘাতিক মিথ্যা অপবাদ ও প্রকাশ্য পাপের বোঝা বহন করে। তোমার প্রতি আল্লাহ তা’আলার অনুগ্রহ ও দয়া না থাকলে তাদের একটি দল তোমাকে পথভ্রষ্ট করতে চাইত। কিন্তু তারা নিজেদের ব্যতীত অন্য কাউকে পথভ্রষ্ট করতে পারে না এবং তোমার কোন ক্ষতিও করতে পারে না। আল্লাহ তা’আলা তোমার প্রতি কিতাব ও হিকমাত অবতীর্ণ করেছেন এবং তোমাকে এমন জ্ঞান জানিয়ে দিয়েছেন যা তুমি জানতে না। তোমার প্রতি আল্লাহ তা’আলার বিরাট অনুগ্রহ আছে। তাদের বেশির ভাগ গোপন সলা-পরামর্শে কোন কল্যাণ নেই। অবশ্য কেউ কাউকে দান-খাইরাতের কিংবা কোন ভালো কাজের জন্য অথবা লোকদের মাঝে শান্তি স্থাপনের উপদেশ দিলে তাতে কল্যাণ আছে। আল্লাহ তা’আলার সন্তুষ্টি লাভের জন্য যে কেউ এরূপ করলে তাকে অবশ্যই আমি মহাপুরষ্কার দিব”।(সূরা আন – নিসাঃ ১০৫-১১৪)কুরআনের আয়াত অবতীর্ণ হওয়ার পর রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নিকট অপহৃত অস্ত্র ফেরত আনা হল। তিনি তা রিফা’আহ (রাঃ) কে ফিরিয়ে দিলেন। ক্বাতাদাহ্‌ (রাঃ) বলেন, আমার চাচা ছিলেন বৃদ্ধ। জাহিলিয়াতের যুগে তার রাতকানা রোগ হয়েছিল, অথবা বলেছেন, জাহিলিয়াতের আমলেই বৃদ্ধ হয়ে গিয়েছিলেন (আবূ ‘ঈসার সন্দেহ)। আমার ধারণা ছিল যে, তিনি ইসলামে দাখিল ছিলেন। আমি তার নিকট অস্ত্র ফেরত নিয়ে আসলে তিনি বললেন, হে ভাতিজা! এটা আমি আল্লাহ তা’আলার রাস্তায় দান করে দিলাম। এবার আমার প্রত্যয় জন্মালো যে, নিঃসন্দেহে তিনি একজন খাঁটি মুসলিম। কুরআনের উক্ত আয়াতসমূহ অবতীর্ণ হওয়ার পর বুশাইর মুশরিকদের সাথে গিয়ে মিলিত হয় এবং সাদ ইবনু সুমাইয়্যার কন্যা সুলাফার নিকট অবস্থান গ্রহণ করে। তখন আল্লাহ তা’আলা অবতীর্ণ করেন : “কারো নিকট সৎপথ প্রকাশিত হওয়ার পর সে যদি রাসূলের বিরুদ্ধাচরণ করে এবং মু’মিনদের পথ ব্যতীত অন্য পথের অনুসরণ করে, তবে যেদিকে সে ফিরে যায় আমরা সেদিকেই তাকে ফিরিয়ে দিব এবং জাহান্নামে তাকে দগ্ধ করব। আর তা কত মন্দ আবাস। নিশ্চয়ই আল্লাহ তা’আলা তাঁর সাথে শারীক করাকে ক্ষমা করেন না, তা ব্যতীত সবকিছু যাকে ইচ্ছা ক্ষমা করেন এবং কেউ আল্লাহ তা’আলার সাথে শারীক করলে সে ভীষণভাবে পথভ্রষ্ট হয়”- (সূরা আন –নিসা ১১৫-১১৬)।বুশাইর যখন সুলাফার নিকট আশ্রয় নিল, তখন হাসসান ইবনু সাবিত (রাঃ) কিছু কবিতার চরণ দ্বারা সুলাফার নিন্দাবাদ করেন। এতে সুলাফা বুশাইরের মালপত্র নিজ মাথায় তুলে নিয়ে তা আবতাহ নামক স্থানে গিয়ে ফেলে দিল। সে আরো বলল, তুমি আমার জন্য হাসসানের (নিন্দাসূচক) কবিতা উপহার নিয়ে এলে, আমার জন্য উত্তম কিছু নিয়ে আসতে পারলে না।

আবূ ‘ঈসা বলেন, এ হাদীসটি গারীব। মুহাম্মদ ইবনু সালামাহ্‌ আল –হাররানী ব্যতীত আর কেউ এটিকে মুসনাদরূপে রিওয়ায়াত করেছেন বলে আমাদের জানা নেই। এ হাদীসটি মুহাম্মদ ইবনু ইসহাক্ব – আসিম ইবনু ‘উমার ইবনু ক্বাতাদাহ সূত্রে ইউনুস ইবনু বুকাইর প্রমুখ মুরসালরূপে বর্ণনা করেছেন। তাতে “তাঁর বাবা-তার দাদা” সূত্রের উল্লেখ নেই। ক্বাতাদাহ ইবনুন নুমান মাতার দিক হতে আবূ সাঈদ আল খুদরী (রাঃ) এর ভাই। আবূ সা’ঈদ (রাঃ) এর নাম সা’দ ইবনু মালিক ইবনু সিনান।

সেটিংস

ফন্ট সেটিংস

আরবি ফন্ট ফেস

আরবি ফন্ট সাইজ

২৪

অনুবাদ ফন্ট সাইজ

১৮

আল হাদিস অ্যাপ ডাউনলোড করুন

App Banner

ইসলামের জ্ঞান প্রচারে সহায়ক হোন

আপনার নিয়মিত সহায়তা আমাদের দ্বীনি ভাই-বোনের কাছে ইসলামের দাওয়াত পৌঁছাতে সাহয্য করবে। আমাদের মিশনে আপনিও অংশ নিন এবং বড় পরিবর্তনের অংশীদার হোন।

সাপোর্ট করুন