পরিচ্ছেদঃ

১ থেকে ১০০ নং হাদিস

জাল জয়িফ হাদিস সিরিজহাদিস নম্বর ২৫

বর্ণনাকারী হতে বর্ণিতঃ

আদম (আঃ) যখন গুনাহ করে ফেললেন, তিনি বললেনঃ হে আমার প্রভু! তোমার নিকট মুহাম্মদকে সত্য জেনে প্রার্থনা করছি। আমাকে ক্ষমা করে দাও। আল্লাহ বললেনঃ হে আদম। তুমি কীভাবে মুহাম্মদকে চিনলে, অথচ আমি তাকে সৃষ্টি করিনি ? আদম (আঃ) বললেনঃ হে আমার প্রভু। আপনি আমাকে যখন আপনার হাত দ্বারা সৃষ্টি করেছিলেন এবং আমার মধ্যে আপনার আত্মা থেকে আত্মার প্রবেশ ঘটান, তখন আমি আমার মাথা উঁচু করেছিলাম। অতঃপর আমি আরশের স্তম্ভগুলোতে (খুটি) লিখা দেখেছিলাম লা- ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রসূলুল্লাহ। আমি জেনেছি যে, আপনার কাছে সর্বাপেক্ষা ভালবাসার সৃষ্টি ব্যতীত অন্য কাউকে আপনি আপনার নামের সাথে সম্পৃক্ত করবেন না। সত্যই বলেছ, হে আদম। নিশ্চয়ই তিনি আমার নিকট সর্বাপেক্ষা ভালবাসার সৃষ্টি। তুমি তাঁকে হক জানার দ্বারা আমাকে ডাক। আমি তোমাকে ক্ষমা করে দিব। মুহাম্মদ যদি না হতো আমি তোমাকে সৃষ্টি করতাম না।হাদীসটি জাল।ইমাম হাকীম ’আল-মুসতাদরাক’ গ্রন্থে (২/৬১০) এবং তার সূত্রে ইবনু আসাকির (২/৩২৩/২) ও বাইহাকী ”দালায়েলুন নবুওয়াহ” গ্রন্থে (৫/৪৮৮) মারফূ’ হিসাবে আবুল হারিস আবদুল্লাহ ইবনু মুসলিম আল-ফিহরী সূত্রে আবদুর রহমান ইবনু যায়েদ ইবনে আসলাম হতে ...বর্ণনা করেছেন।হাকিম বলেনঃ হাদীসটির সনদ সহীহ।যাহাবী তার বিরোধীতা করে বলেছেনঃ বরং হাদীসটি বানোয়াট। আব্দুর রহমান দুর্বল আর আব্দুল্লাহ ইবনু মুসলিম আল-ফিহ্‌রী কে তা জানি না।আমি (আলবানী) বলছিঃ এ ফিহরীকে ”মীযানুল ই’তিদাল” গ্রন্থে এ হাদীসটির কারণে উল্লেখ করা হয়েছে। তিনি (যাহাবী) বলেছেনঃ হাদীসটি বাতিল।বাইহাকী বলেনঃ হাদীসটি আব্দুর রহমান ইবনু যায়েদ একক ভাবে বর্ণনা করেছেন। তিনি দুর্বল।ইবনু কাসীর তার ”আত-তারীখ” গ্রন্থে (২/৩২৩) তা সমর্থন করেছেন। আর হাফিয ইবনু হাজার ”আল-লিসান” গ্রন্থে যাহাবীর সাথে ঐকমত্য পোষণ করে বলেছেনঃ হাদীসটি বাতিল।আমি (আলবানী) বলছিঃ ইবনু হিব্বান বর্ণনাকারী আব্দুল্লাহ ইবনু মুসলিম ইবনে রাশীদ সম্পর্কে বলেনঃ তিনি হাদীস জাল করার দোষে দোষী। তিনি লাইস, মালেক এবং ইবনু লাহি’য়ার উপর হাদীস জাল করতেন। তার হাদীস লিখা হালাল নয়।হাকিম কর্তৃক এ হাদীসের বর্ণনা তার বিপক্ষেই গেছে। কারণ হাকিম সহীহ বললেও তিনি ”আল-মাদখাল ইলা মা’রিফাতিস সহীহে মিনাস সাকিমে” নামক গ্রন্থে বলেছেনঃ আব্দুর রহমান ইবনু যায়েদ ইবনে আসলাম তার পিতা হতে কতিপয় জাল হাদীস বর্ণনা করেছেন। একই কথা আবূ নু’য়াইমও বলেছেন।ইবনু তাইমিয়্যা বলেছেনঃ এ আব্দুর রহমান ইবনু আসলাম দুর্বল হওয়ার ব্যাপারে সকল মুহাদ্দিসগণ একমত। ইবনুল জাওযী বলেনঃ আপনি যদি হাদীস শাস্ত্রের পন্ডিতদের কিতাবগুলো খুঁজেন, তাহলে তাকে কেউ দুর্বল বলেননি এরূপ পাবেন না। বরং তাকে আলী ইবনুল মাদীনী এবং ইবনু সা’দ অত্যন্ত দুর্বল আখ্যা দিয়েছেন।ইমাম তাহাবী বলেনঃ তার হাদীসের বিদ্বানদের নিকটে চরম পর্যায়ের দুর্বল।ইবনু হিব্বান বলেনঃ তিনি না জেনে হাদীসকে উলট পালট করে ফেলতেন। তিনি বহু মুরসাল বর্ণনা ও মওকুফ সনদকে মারফূ’ করে ফেলেছেন। এ জন্য তাকে পরিত্যাগ করাই হচ্ছে তার প্রাপ্য।আমি (আলবানী ) বলছিঃ সম্ভবত হাদীসটি ইসরাইলী বর্ণনা হতে এসেছে। ভুল করে আব্দুর রহমান ইবনু যায়েদ মারফূ’ করে ফেলেছেন। কারণ আলোচিত ফেহরী সূত্রেই হাদীসটি মওকুফ হিসাবে বর্ণিত হয়েছে। আবূ বাক্‌র আজুরী ”আশ-শারী’য়াহ” গ্রন্থে (পৃ:৪২৭) তা উল্লেখ করেছেন। এছাড়া আবূ মারওয়ান উসমানী সূত্রে উসমান ইবনু খালিদ হতে মওকুফ হিসাবে বর্ণিত হয়েছে, কিন্তু তারা দু’জনই দুর্বল। ইবনু আসাকিরও অনুরূপ ভাবে (২/৩১০/২) মদিনাবাসী এক শাইখ হতে ইবনু মাস’উদ (রাঃ)-এর সাথীদের থেকে বর্ণনা করেছেন ; এটির সনদে একাধিক মাজহূল বর্ণনাকারী রয়েছেন।মোটকথা নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে হাদীসটির কোন ভিত্তি নেই। হাদীসটিকে দু’ হাফিয যাহাবী ও আসকালানী বাতিল বলে হুকুম লাগিয়েছেন। যেমনটি পূর্বে আলোচনা করা হয়েছে।পরবর্তীতে বর্ণিত ৪০৩ নং হাদীসটিও এ হাদীসটি বাতিল হওয়ার প্রমাণ বহন করে।বিঃদ্রঃ (কাওসারী এ জাল হাদীসকে সাব্যস্ত করার জন্য বহু চেষ্টা করেছেন। তার কথার বহুলাংশই স্ববিরোধীও বটে। এছাড়া তিনি তথাগত বহু ভুলও করেছেন। শাইখ আলবানী এ ”য’ঈফা” গ্রন্থেই বিস্তারিত আলোচনা করেছেন। এ পরিসরে তা বিষদভাবে উল্লেখ করা সম্ভব হলো না। যার একান্তই প্রয়োজন মূল কিতাব দেখে নেয়ার জন্য বিনীত অনুরোধ করছি)। (অনুবাদক)

সেটিংস

ফন্ট সেটিংস

আরবি ফন্ট ফেস

আরবি ফন্ট সাইজ

২৪

অনুবাদ ফন্ট সাইজ

১৮

আল হাদিস অ্যাপ ডাউনলোড করুন

App Banner

ইসলামের জ্ঞান প্রচারে সহায়ক হোন

আপনার নিয়মিত সহায়তা আমাদের দ্বীনি ভাই-বোনের কাছে ইসলামের দাওয়াত পৌঁছাতে সাহয্য করবে। আমাদের মিশনে আপনিও অংশ নিন এবং বড় পরিবর্তনের অংশীদার হোন।

সাপোর্ট করুন