২৪. অধ্যায়ঃ
‘জাসসা-সাহ্’ জন্তুর ঘটনা
সহিহ মুসলিম : ৭২৭৬
সহিহ মুসলিমহাদিস নম্বর ৭২৭৬
حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَارِثِ بْنُ عَبْدِ الصَّمَدِ بْنِ عَبْدِ الْوَارِثِ، وَحَجَّاجُ بْنُ الشَّاعِرِ، كِلاَهُمَا عَنْ عَبْدِ الصَّمَدِ، - وَاللَّفْظُ لِعَبْدِ الْوَارِثِ بْنِ عَبْدِ الصَّمَدِ - حَدَّثَنَا أَبِي، عَنْ جَدِّي، عَنِ الْحُسَيْنِ، بْنِ ذَكْوَانَ حَدَّثَنَا ابْنُ بُرَيْدَةَ، حَدَّثَنِي عَامِرُ بْنُ شَرَاحِيلَ الشَّعْبِيُّ، شَعْبُ هَمْدَانَ أَنَّهُ سَأَلَ فَاطِمَةَ بِنْتَ قَيْسٍ أُخْتَ الضَّحَّاكِ بْنِ قَيْسٍ وَكَانَتْ مِنَ الْمُهَاجِرَاتِ الأُوَلِ فَقَالَ حَدِّثِينِي حَدِيثًا سَمِعْتِيهِ مِنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم لاَ تُسْنِدِيهِ إِلَى أَحَدٍ غَيْرِهِ فَقَالَتْ لَئِنْ شِئْتَ لأَفْعَلَنَّ فَقَالَ لَهَا أَجَلْ حَدِّثِينِي . فَقَالَتْ نَكَحْتُ ابْنَ الْمُغِيرَةِ وَهُوَ مِنْ خِيَارِ شَبَابِ قُرَيْشٍ يَوْمَئِذٍ فَأُصِيبَ فِي أَوَّلِ الْجِهَادِ مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَلَمَّا تَأَيَّمْتُ خَطَبَنِي عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ عَوْفٍ فِي نَفَرٍ مِنْ أَصْحَابِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَخَطَبَنِي رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم عَلَى مَوْلاَهُ أُسَامَةَ بْنِ زَيْدٍ وَكُنْتُ قَدْ حُدِّثْتُ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ " مَنْ أَحَبَّنِي فَلْيُحِبَّ أُسَامَةَ " . فَلَمَّا كَلَّمَنِي رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قُلْتُ أَمْرِي بِيَدِكَ فَأَنْكِحْنِي مَنْ شِئْتَ فَقَالَ " انْتَقِلِي إِلَى أُمِّ شَرِيكٍ " . وَأُمُّ شَرِيكٍ امْرَأَةٌ غَنِيَّةٌ مِنَ الأَنْصَارِ عَظِيمَةُ النَّفَقَةِ فِي سَبِيلِ اللَّهِ يَنْزِلُ عَلَيْهَا الضِّيفَانُ فَقُلْتُ سَأَفْعَلُ فَقَالَ " لاَ تَفْعَلِي إِنَّ أُمَّ شَرِيكٍ امْرَأَةٌ كَثِيرَةُ الضِّيفَانِ فَإِنِّي أَكْرَهُ أَنْ يَسْقُطَ عَنْكِ خِمَارُكِ أَوْ يَنْكَشِفَ الثَّوْبُ عَنْ سَاقَيْكِ فَيَرَى الْقَوْمُ مِنْكِ بَعْضَ مَا تَكْرَهِينَ وَلَكِنِ انْتَقِلِي إِلَى ابْنِ عَمِّكِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرٍو ابْنِ أُمِّ مَكْتُومٍ " . - وَهُوَ رَجُلٌ مِنْ بَنِي فِهْرٍ فِهْرِ قُرَيْشٍ وَهُوَ مِنَ الْبَطْنِ الَّذِي هِيَ مِنْهُ - فَانْتَقَلْتُ إِلَيْهِ فَلَمَّا انْقَضَتْ عِدَّتِي سَمِعْتُ نِدَاءَ الْمُنَادِي مُنَادِي رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يُنَادِي الصَّلاَةَ جَامِعَةً . فَخَرَجْتُ إِلَى الْمَسْجِدِ فَصَلَّيْتُ مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَكُنْتُ فِي صَفِّ النِّسَاءِ الَّتِي تَلِي ظُهُورَ الْقَوْمِ فَلَمَّا قَضَى رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم صَلاَتَهُ جَلَسَ عَلَى الْمِنْبَرِ وَهُوَ يَضْحَكُ فَقَالَ " لِيَلْزَمْ كُلُّ إِنْسَانٍ مُصَلاَّهُ " . ثُمَّ قَالَ " أَتَدْرُونَ لِمَ جَمَعْتُكُمْ " . قَالُوا اللَّهُ وَرَسُولُهُ أَعْلَمُ . قَالَ " إِنِّي وَاللَّهِ مَا جَمَعْتُكُمْ لِرَغْبَةٍ وَلاَ لِرَهْبَةٍ وَلَكِنْ جَمَعْتُكُمْ لأَنَّ تَمِيمًا الدَّارِيَّ كَانَ رَجُلاً نَصْرَانِيًّا فَجَاءَ فَبَايَعَ وَأَسْلَمَ وَحَدَّثَنِي حَدِيثًا وَافَقَ الَّذِي كُنْتُ أُحَدِّثُكُمْ عَنْ مَسِيحِ الدَّجَّالِ حَدَّثَنِي أَنَّهُ رَكِبَ فِي سَفِينَةٍ بَحْرِيَّةٍ مَعَ ثَلاَثِينَ رَجُلاً مِنْ لَخْمٍ وَجُذَامَ فَلَعِبَ بِهِمُ الْمَوْجُ شَهْرًا فِي الْبَحْرِ ثُمَّ أَرْفَئُوا إِلَى جَزِيرَةٍ فِي الْبَحْرِ حَتَّى مَغْرِبِ الشَّمْسِ فَجَلَسُوا فِي أَقْرُبِ السَّفِينَةِ فَدَخَلُوا الْجَزِيرَةَ فَلَقِيَتْهُمْ دَابَّةٌ أَهْلَبُ كَثِيرُ الشَّعَرِ لاَ يَدْرُونَ مَا قُبُلُهُ مِنْ دُبُرِهِ مِنْ كَثْرَةِ الشَّعَرِ فَقَالُوا وَيْلَكِ مَا أَنْتِ فَقَالَتْ أَنَا الْجَسَّاسَةُ . قَالُوا وَمَا الْجَسَّاسَةُ قَالَتْ أَيُّهَا الْقَوْمُ انْطَلِقُوا إِلَى هَذَا الرَّجُلِ فِي الدَّيْرِ فَإِنَّهُ إِلَى خَبَرِكُمْ بِالأَشْوَاقِ . قَالَ لَمَّا سَمَّتْ لَنَا رَجُلاً فَرِقْنَا مِنْهَا أَنْ تَكُونَ شَيْطَانَةً - قَالَ - فَانْطَلَقْنَا سِرَاعًا حَتَّى دَخَلْنَا الدَّيْرَ فَإِذَا فِيهِ أَعْظَمُ إِنْسَانٍ رَأَيْنَاهُ قَطُّ خَلْقًا وَأَشَدُّهُ وِثَاقًا مَجْمُوعَةٌ يَدَاهُ إِلَى عُنُقِهِ مَا بَيْنَ رُكْبَتَيْهِ إِلَى كَعْبَيْهِ بِالْحَدِيدِ قُلْنَا وَيْلَكَ مَا أَنْتَ قَالَ قَدْ قَدَرْتُمْ عَلَى خَبَرِي فَأَخْبِرُونِي مَا أَنْتُمْ قَالُوا نَحْنُ أُنَاسٌ مِنَ الْعَرَبِ رَكِبْنَا فِي سَفِينَةٍ بَحْرِيَّةٍ فَصَادَفْنَا الْبَحْرَ حِينَ اغْتَلَمَ فَلَعِبَ بِنَا الْمَوْجُ شَهْرًا ثُمَّ أَرْفَأْنَا إِلَى جَزِيرَتِكَ هَذِهِ فَجَلَسْنَا فِي أَقْرُبِهَا فَدَخَلْنَا الْجَزِيرَةَ فَلَقِيَتْنَا دَابَّةٌ أَهْلَبُ كَثِيرُ الشَّعَرِ لاَ يُدْرَى مَا قُبُلُهُ مِنْ دُبُرِهِ مِنْ كَثْرَةِ الشَّعَرِ فَقُلْنَا وَيْلَكِ مَا أَنْتِ فَقَالَتْ أَنَا الْجَسَّاسَةُ . قُلْنَا وَمَا الْجَسَّاسَةُ قَالَتِ اعْمِدُوا إِلَى هَذَا الرَّجُلِ فِي الدَّيْرِ فَإِنَّهُ إِلَى خَبَرِكُمْ بِالأَشْوَاقِ فَأَقْبَلْنَا إِلَيْكَ سِرَاعًا وَفَزِعْنَا مِنْهَا وَلَمْ نَأْمَنْ أَنْ تَكُونَ شَيْطَانَةً فَقَالَ أَخْبِرُونِي عَنْ نَخْلِ بَيْسَانَ قُلْنَا عَنْ أَىِّ شَأْنِهَا تَسْتَخْبِرُ قَالَ أَسْأَلُكُمْ عَنْ نَخْلِهَا هَلْ يُثْمِرُ قُلْنَا لَهُ نَعَمْ . قَالَ أَمَا إِنَّهُ يُوشِكُ أَنْ لاَ تُثْمِرَ قَالَ أَخْبِرُونِي عَنْ بُحَيْرَةِ الطَّبَرِيَّةِ . قُلْنَا عَنْ أَىِّ شَأْنِهَا تَسْتَخْبِرُ قَالَ هَلْ فِيهَا مَاءٌ قَالُوا هِيَ كَثِيرَةُ الْمَاءِ . قَالَ أَمَا إِنَّ مَاءَهَا يُوشِكُ أَنْ يَذْهَبَ . قَالَ أَخْبِرُونِي عَنْ عَيْنِ زُغَرَ . قَالُوا عَنْ أَىِّ شَأْنِهَا تَسْتَخْبِرُ قَالَ هَلْ فِي الْعَيْنِ مَاءٌ وَهَلْ يَزْرَعُ أَهْلُهَا بِمَاءِ الْعَيْنِ قُلْنَا لَهُ نَعَمْ هِيَ كَثِيرَةُ الْمَاءِ وَأَهْلُهَا يَزْرَعُونَ مِنْ مَائِهَا . قَالَ أَخْبِرُونِي عَنْ نَبِيِّ الأُمِّيِّينَ مَا فَعَلَ قَالُوا قَدْ خَرَجَ مِنْ مَكَّةَ وَنَزَلَ يَثْرِبَ . قَالَ أَقَاتَلَهُ الْعَرَبُ قُلْنَا نَعَمْ . قَالَ كَيْفَ صَنَعَ بِهِمْ فَأَخْبَرْنَاهُ أَنَّهُ قَدْ ظَهَرَ عَلَى مَنْ يَلِيهِ مِنَ الْعَرَبِ وَأَطَاعُوهُ قَالَ لَهُمْ قَدْ كَانَ ذَلِكَ قُلْنَا نَعَمْ . قَالَ أَمَا إِنَّ ذَاكَ خَيْرٌ لَهُمْ أَنْ يُطِيعُوهُ وَإِنِّي مُخْبِرُكُمْ عَنِّي إِنِّي أَنَا الْمَسِيحُ وَإِنِّي أُوشِكُ أَنْ يُؤْذَنَ لِي فِي الْخُرُوجِ فَأَخْرُجَ فَأَسِيرَ فِي الأَرْضِ فَلاَ أَدَعَ قَرْيَةً إِلاَّ هَبَطْتُهَا فِي أَرْبَعِينَ لَيْلَةً غَيْرَ مَكَّةَ وَطَيْبَةَ فَهُمَا مُحَرَّمَتَانِ عَلَىَّ كِلْتَاهُمَا كُلَّمَا أَرَدْتُ أَنْ أَدْخُلَ وَاحِدَةً أَوْ وَاحِدًا مِنْهُمَا اسْتَقْبَلَنِي مَلَكٌ بِيَدِهِ السَّيْفُ صَلْتًا يَصُدُّنِي عَنْهَا وَإِنَّ عَلَى كُلِّ نَقْبٍ مِنْهَا مَلاَئِكَةً يَحْرُسُونَهَا قَالَتْ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَطَعَنَ بِمِخْصَرَتِهِ فِي الْمِنْبَرِ " هَذِهِ طَيْبَةُ هَذِهِ طَيْبَةُ هَذِهِ طَيْبَةُ " . يَعْنِي الْمَدِينَةَ " أَلاَ هَلْ كُنْتُ حَدَّثْتُكُمْ ذَلِكَ " . فَقَالَ النَّاسُ نَعَمْ " فَإِنَّهُ أَعْجَبَنِي حَدِيثُ تَمِيمٍ أَنَّهُ وَافَقَ الَّذِي كُنْتُ أُحَدِّثُكُمْ عَنْهُ وَعَنِ الْمَدِينَةِ وَمَكَّةَ أَلاَ إِنَّهُ فِي بَحْرِ الشَّامِ أَوْ بَحْرِ الْيَمَنِ لاَ بَلْ مِنْ قِبَلِ الْمَشْرِقِ ما هُوَ مِنْ قِبَلِ الْمَشْرِقِ مَا هُوَ مِنْ قِبَلِ الْمَشْرِقِ مَا هُوَ " . وَأَوْمَأَ بِيَدِهِ إِلَى الْمَشْرِقِ . قَالَتْ فَحَفِظْتُ هَذَا مِنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم .
‘আমির ইবনু শারাহীল শা’বী (রহ:) হতে বর্ণিতঃ
তিনি যাহ্হাক ইবনু কায়স-এর বোন ফাতিমাহ্ বিনতু কায়স (রাযি:)-কে প্রশ্ন করলেন। যে সকল মহিলাগণ প্রথমে হিজরত করেছিলেন, তিনি তাদের মধ্যে অন্যতম। তিনি বলেন, আপনি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে যে হাদীস শুনেছেন, অন্যের দিকে সম্বোধন করা ছাড়া, এমন একটি হাদীস আপনি আমার কাছে পেশ করুন। তিনি বললেন, তবে তুমি যদি শুনতে চাও, অবশ্যই আমি তা বর্ণনা করব। সে বলল, হ্যাঁ, আপনি বর্ণনা করুন। তিনি বললেন, আমি ইবনু মুগীরাকে বিয়ে করেছিলাম। তিনি কুরাইশী যুবকদের উত্তম ব্যক্তি ছিলেন। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাথে প্রথম যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেই তিনি শাহীদ হয়ে যান। আমি বিধবা হয়ে যাবার পর ‘আবদুর রহমান ইবনু ‘আওফ (রাযি:) আমার কাছে বিয়ের প্রস্তাব পাঠান। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর আরো কতিপয় সহাবারাও প্রস্তাব পাঠান। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নিজেও তাঁর আযাদকৃত গোলাম উসামাহ্ ইবনু যায়দ-এর জন্য প্রস্তাব পাঠান। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর হাদীসটি আমি আগেই শুনেছিলাম যে, তিনি বলেছেন, যে লোক আমাকে ভালবাসে সে যেন উসামাকেও ভালবাসে। ফাতিমাহ্ (রাযি:) বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এ সম্পর্কে আমার সাথে আলোচনা করার পর আমি তাকে বললাম, আমার বিষয়টি আপনার ইচ্ছামাফিক ছেড়ে দিলাম। আপনি যার সঙ্গে ইচ্ছা আমাকে বিবাহ দিয়ে দিন। তারপর তিনি বললেন, তুমি উম্মু শারীক-এর কাছে চলে যাও। উম্মু শারীক একজন আনসারী ধনবান মহিলা, আল্লাহর রাস্তায় সে বেশি খরচ করে এবং তার কাছে অনেক অতিথি আসে। এ কথা শুনে আমি বললাম, আমি তা-ই করব। তখন তিনি বললেন, তুমি উম্মু শারীকের নিকট যেয়োনা। কেননা উম্মু শারীক আপ্যায়নপ্রিয় মহিলা এবং আমি এটাও পছন্দ করি না যে, তোমার উড়না পড়ে যাক বা তোমার পায়ের গোছা বস্ত্রহীন হয়ে যাক আর লোকেরা তোমার শরীরের এমন স্থান দেখে নিক যা তুমি কক্ষনো পছন্দ করো না। তবে তুমি তোমার চাচাতো ভাই ‘আব্দুল্লাহ ইবনু উম্মু মাকতূম-এর নিকট চলে যাও। তিনি বানী ফিহ্র-এর এক ব্যক্তি। ফিহ্র কুরাইশেরই একটি শাখা গোত্র। ফাতিমাহ্ যে খান্দানের লোক তিনিও সে খান্দানেরই লোক। আমি তার কাছে চলে গেলাম। তারপর আমার ইদ্দত শেষ হলে আমি এক আহ্বানকারীর আওয়াজ শুনতে পেলাম। বস্তুত: তিনি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কর্তৃক নির্ধারিত আহ্বানকারী ছিলেন। তিনি এ মর্মে আহ্বান করছিলেন যে, সালাতের উদ্দেশ্যে তোমরা সমবেত হয়ে যাও। এরপর আমি মাসজিদের দিকে অগ্রসর হলাম এবং রাসূলু্ল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাথে সলাত আদায় করলাম। তিনি বলেন, সম্প্রদায়ের পেছনে যে কাতারে মহিলাগণ ছিলেন আমি সে কাতারেই ছিলাম। রসূলূল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সালাত আদায়ন্তে হাস্যোজ্জ্বল অবস্থায় মিম্বারে বসে গেলেন। অত:পর বললেন, প্রত্যেকেই আপন আপন স্থানে বসে যাও। তারপর তিনি বললেন, তোমরা কি জান, আমি কি জন্য তোমাদেরকে সমবেত করেছি? সাহাবায়ে কিরাম বললেন, আল্লাহ ও তাঁর রসূলই অধিক জ্ঞাত। তিনি বললেন, আল্লাহর শপথ! আমি তোমাদেরকে কোন আশা বা ভয়-ভীতির জন্য জমায়েত করিনি। তবে আমি তোমাদেরকে কেবল এজন্য জমায়েত করেছি যে, তামীম আদ্ দারী (রাযি:) প্রথমে খ্রীস্টান ছিল। সে আমার কাছে এসে বাই’আত গ্রহণ করেছে এবং ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছে। সে আমার নিকট এমন একটি কাহিনী বর্ণনা করেছে যদ্বারা আমার সে বর্ণনার সত্যায়ন হয়ে যায়, যা আমি দাজ্জালের ব্যাপারে তোমাদের নিকট বর্ণনা করেছিলাম। সে আমাকে বলেছে যে, একবার সে লাখ্ম ও জুযাম গোত্রের ত্রিশজন লোকসহ একটি সামুদ্রিক জাহাজে আরোহণ করেছিল। সামুদ্রিক ঝড় এক মাস পর্যন্ত তাদেরকে নিয়ে খেলা করতে থাকে। অত:পর সূর্যাস্তের সময় তারা সমুদ্রের এক দ্বীপে আশ্রয় গ্রহণ করে। তারপর তারা ছোট ছোট নৌকায় বসে ঐ দ্বীপে প্রবেশ করে। দ্বীপে নামতেই জন্তুর ন্যায় একটি জিনিস তাদের দেখতে পায়। তার পূর্ণ দেহ পশমে ভরা ছিল। পশমের কারণে তার আগা-পাছা চেনার উপায় ছিল না। লোকেরা তাকে বলল, হতভাগা, তুই কে? সে বলল, আমি জাস্সা-সাহ্। লোকেরা বলল, ‘জাস্সা-সাহ্’ আবার কি? সে বলল! ঐ যে গীর্জা দেখা যায়, সেখানে চলো। সেখানে এক লোক গভীর আগ্রহে তোমাদের অপেক্ষা করছে। তামীম আদ্ দারী (রাযি:) বলেন, তার মুখে এক লোকের কথা শুনে আমরা ভয়ে শঙ্কিত হলাম যে, সে আবার শাইতান তো নয়! আমরা দ্রুত পদব্রজে গীর্জায় প্রবেশ করতেই এক দীর্ঘাকৃতির এক লোককে দেখতে পেলাম। যা ইতোপূর্বে এমন আমরা আর কক্ষনো দেখিনি। লোহার শিকলে বাঁধা অবস্থায় দু’ হাটুর মধ্য দিয়ে তার উভয় হাত ঘাড়ের সাথে মিলানো। আমরা তাকে বললাম, তোর সর্বনাশ হোক, তুই কে? সে বলল, তোমরা আমার সন্ধান কিছু না কিছু পেয়েই গেছ। এখন তোমরা বলো, তোমাদের পরিচয় কি? তারা বলল, আমরা আরবের বাসিন্দা। আমরা সমুদ্রে নৌকায় চড়ে ভ্রমণ করছিলাম। আমরা সমুদ্রকে উত্তাল তরঙ্গে উদ্বেলিত অবস্থায় পেয়েছি। এক মাস পর্যন্ত ঝড়ের কবলে থেকে অবশেষে আমরা তোমার এ দ্বীপে এসে পৌঁছেছি। অত:পর ছোট ছোট নৌকায় আরোহন করে এ দ্বীপে আমরা প্রবেশ করেছি। এখানে আমরা একটি সর্বাঙ্গ পশমে আবৃত জন্তুকে দেখতে পেয়েছি। পশমের মাত্রাতিরিক্তের কারণে আমরা তার আগা-পাছা চিনতে পারছি না। আমরা তাকে বলেছি, তোর সর্বনাশ হোক! তুই কে? সে বলেছে, সে নাকি জাস্সা-সাহ্। আমরা বললাম, ‘জাসসা-সাহ্’ আবার কি? তখন সে বলেছে, ঐ যে গীর্জা দেখা যায়, তোমরা সেখানে চলো। সেখানে এক লোক গভীর আগ্রহে তোমাদের অপেক্ষায় আছে। তাই আমরা দ্রুত তোর কাছে এসে গেছি। আমরা তার কথায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েছি; না জানি এ আবার কোন জিন ভূত কিনা? অত:পর সে বলল, তোমরা আমাকে বাইসানের খেজুর বাগানের সংবাদ বলো। আমরা বললাম, এর কোন্ বিষয়টি সম্পর্কে তুই সংবাদ জানতে চাচ্ছিস? সে বলল, বাইসানের খেজুর বাগানে ফল আসে কি না, এ সম্পর্কে আমি তোমাদেরকে জিজ্ঞেস করছি। তাকে আমরা বললাম, হ্যাঁ, আছে। সে বলল, সেদিন নিকটেই যেদিন এগুলোতে কোন ফল ধরবে না। তারপর সে বলল, আচ্ছা, তিবরিয়্যা সমুদ্রের ব্যাপারে আমাকে অবগত করো। আমরা বললাম, এর কোন্ বিষয় সম্পর্কে তুই আমাদের থেকে জানতে চাচ্ছিস? সে বলল, এর মধ্যে পানি আছে কি? তারা বলল, হ্যাঁ, সেখানে বহু পানি আছে। অত:পর সে বলল, সেদিন বেশী দূরে নয়, যখন এ সাগরে পানি থাকবে না। সে আবার বলল, ‘যুগার’-এর ঝর্ণার ব্যাপারে তোমরা আমাকে অবহিত করো। তারা বলল, তুই এর কি সম্পর্কে আমাদের নিকট জানতে চাচ্ছিস? সে বলল, এর ঝর্ণাতে পানি আছে কি? আর এ জনপদের লোকেরা তাদের ক্ষেত্রে এ ঝর্ণার পানি দেয় কি? আমরা বললাম, হ্যাঁ, এতে অনেক পানি আছে এবং এ জনপদের লোকেরা এ পানির মাধ্যমেই তাদের ক্ষেত আবাদ করে। সে আবার বলল, তোমরা আমাকে উম্মীদের নাবীর ব্যাপারে খবর দাও। সে এখন কি করছে? তারা বলল, তিনি মাক্কাহ্ থেকে হিজরত করে মাদীনায় চলে এসেছেন। সে জিজ্ঞেস করল, আরবের লোকেরা তার সাথে যুদ্ধ করেছে কি? আমরা বললাম, হ্যাঁ, করেছে। সে বলল, সে তাদের সঙ্গে কিরূপ আচরণ করেছে। আমরা তাকে খবর দিলাম যে, তিনি আরবের পার্শ্ববর্তী এলাকায় জয়ী হয়েছেন এবং তাঁরা তার বশ্যতা স্বীকার করে নিয়েছে। সে বলল, এ কি হয়েই গেছে? আমরা বললাম, হ্যাঁ। সে বলল, বশ্যতা স্বীকার করে নেয়াই জনগনের জন্য কল্যাণকর ছিল। এখন আমি নিজের ব্যাপারে তোমাদেরকে বলছি, আমিই মাসীহ্ দাজ্জাল। অতি সত্ত্বরই আমি এখান থেকে বাইরে যাবার অনুমতি পেয়ে যাব। বাইরে যেয়ে আমি সমগ্র ভূ-পৃষ্ঠ প্রদক্ষিণ করব। চল্লিশ দিনের ভেতর এমন কোন জনপদ থাকবে না, যেখানে আমি প্রবেশ না করব। তবে মাক্কাহ্ ও তাইবাহ্ এ দু’টি স্থানে আমার প্রবেশ নিষিদ্ধ। যখন আমি এ দু’টির কোন স্থানে প্রবেশের ইচ্ছা করব, তখন এক ফেরেশতা উম্মুক্ত তরবারি হাতে সম্মুখে এসে আমাকে বাধা দিবে। এ দু’টি স্থানের সকল রাস্তায় ফেরেশতাদের পাহারা থাকবে। বর্ণনাকারী বলেন, তখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর ছড়ি দ্বারা মিম্বারে আঘাত করে বললেন, এ হচ্ছে তাইবাহ্, এ হচ্ছে তাইবাহ, এ হচ্ছে তাইবাহ্। অর্থাৎ তাইবাহ্ অর্থ এ মাদীনাই। সাবধান! আমি কি এ কথাটি ইতোপূর্বে তোমাদেরকে বলিনি? তখন লোকেরা বলল, হ্যাঁ, আপনি বলেছেন। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, তামীম আদ্ দারীর কথাটি আমার খুবই ভালো লেগেছে। যেহেতু তা সামঞ্জস্যপূর্ণ আমার ঐ বর্ণনার, যা আমি তোমাদেরকে দাজ্জাল, মাদীনাহ্ ও মাক্কাহ্ বিষয়ে ইতোপূর্বে বলেছি। জেনে রেখ! উল্লেখিত দ্বীপ সিরিয়া সাগরে অথবা ইয়ামান সাগরের পার্শ্বস্থ সাগরের মাঝে অবস্থিত। যা পৃথিবীর পূর্বদিকে অবস্থিত, পৃথিবীর পূর্বদিকে অবস্থিত, পৃথিবীর পূর্বদিকে অবস্থিত। এ সময় তিনি নিজ হাত দ্বারা পূর্ব দিকে ইশারাও করলেন। বর্ণনাকারী ফাতিমাহ্ বিনতু কায়স (রাযি:) বলেন, এ হাদীস আমি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে সংরক্ষণ করেছি। (ই.ফা. ৭১১৯, ই.সে. ৭১৭২)