৮৪. অধ্যায়ঃ
নিম্ন জান্নাতী, তথায় তার মর্যাদা
সহিহ মুসলিম : ৩৬৩
সহিহ মুসলিমহাদিস নম্বর ৩৬৩
حَدَّثَنَا أَبُو كَامِلٍ، فُضَيْلُ بْنُ حُسَيْنٍ الْجَحْدَرِيُّ وَمُحَمَّدُ بْنُ عُبَيْدٍ الْغُبَرِيُّ - وَاللَّفْظُ لأَبِي كَامِلٍ - قَالاَ حَدَّثَنَا أَبُو عَوَانَةَ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " يَجْمَعُ اللَّهُ النَّاسَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ فَيَهْتَمُّونَ لِذَلِكَ - وَقَالَ ابْنُ عُبَيْدٍ فَيُلْهَمُونَ لِذَلِكَ - فَيَقُولُونَ لَوِ اسْتَشْفَعْنَا عَلَى رَبِّنَا حَتَّى يُرِيحَنَا مِنْ مَكَانِنَا هَذَا - قَالَ - فَيَأْتُونَ آدَمَ صلى الله عليه وسلم فَيَقُولُونَ أَنْتَ آدَمُ أَبُو الْخَلْقِ خَلَقَكَ اللَّهُ بِيَدِهِ وَنَفَخَ فِيكَ مِنْ رُوحِهِ وَأَمَرَ الْمَلاَئِكَةَ فَسَجَدُوا لَكَ اشْفَعْ لَنَا عِنْدَ رَبِّكَ حَتَّى يُرِيحَنَا مِنْ مَكَانِنَا هَذَا . فَيَقُولُ لَسْتُ هُنَاكُمْ - فَيَذْكُرُ خَطِيئَتَهُ الَّتِي أَصَابَ فَيَسْتَحْيِي رَبَّهُ مِنْهَا - وَلَكِنِ ائْتُوا نُوحًا أَوَّلَ رَسُولٍ بَعَثَهُ اللَّهُ - قَالَ - فَيَأْتُونَ نُوحًا صلى الله عليه وسلم فَيَقُولُ لَسْتُ هُنَاكُمْ - فَيَذْكُرُ خَطِيئَتَهُ الَّتِي أَصَابَ فَيَسْتَحْيِي رَبَّهُ مِنْهَا - وَلَكِنِ ائْتُوا إِبْرَاهِيمَ صلى الله عليه وسلم الَّذِي اتَّخَذَهُ اللَّهُ خَلِيلاً . فَيَأْتُونَ إِبْرَاهِيمَ صلى الله عليه وسلم فَيَقُولُ لَسْتُ هُنَاكُمْ - وَيَذْكُرُ خَطِيئَتَهُ الَّتِي أَصَابَ فَيَسْتَحْيِي رَبَّهُ مِنْهَا - وَلَكِنِ ائْتُوا مُوسَى صلى الله عليه وسلم الَّذِي كَلَّمَهُ اللَّهُ وَأَعْطَاهُ التَّوْرَاةَ . قَالَ فَيَأْتُونَ مُوسَى - عَلَيْهِ السَّلاَمُ - فَيَقُولُ لَسْتُ هُنَاكُمْ - وَيَذْكُرُ خَطِيئَتَهُ الَّتِي أَصَابَ فَيَسْتَحْيِي رَبَّهُ مِنْهَا - وَلَكِنِ ائْتُوا عِيسَى رُوحَ اللَّهِ وَكَلِمَتَهُ . فَيَأْتُونَ عِيسَى رُوحَ اللَّهِ وَكَلِمَتَهُ فَيَقُولُ لَسْتُ هُنَاكُمْ . وَلَكِنِ ائْتُوا مُحَمَّدًا صلى الله عليه وسلم عَبْدًا قَدْ غُفِرَ لَهُ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِهِ وَمَا تَأَخَّرَ " . قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " فَيَأْتُونِي فَأَسْتَأْذِنُ عَلَى رَبِّي فَيُؤْذَنُ لِي فَإِذَا أَنَا رَأَيْتُهُ وَقَعْتُ سَاجِدًا فَيَدَعُنِي مَا شَاءَ اللَّهُ فَيُقَالُ يَا مُحَمَّدُ ارْفَعْ رَأْسَكَ قُلْ تُسْمَعْ سَلْ تُعْطَهْ اشْفَعْ تُشَفَّعْ . فَأَرْفَعُ رَأْسِي فَأَحْمَدُ رَبِّي بِتَحْمِيدٍ يُعَلِّمُنِيهِ رَبِّي ثُمَّ أَشْفَعُ فَيَحُدُّ لِي حَدًّا فَأُخْرِجُهُمْ مِنَ النَّارِ وَأُدْخِلُهُمُ الْجَنَّةَ ثُمَّ أَعُودُ فَأَقَعُ سَاجِدًا فَيَدَعُنِي مَا شَاءَ اللَّهُ أَنْ يَدَعَنِي ثُمَّ يُقَالُ ارْفَعْ رَأْسَكَ يَا مُحَمَّدُ قُلْ تُسْمَعْ سَلْ تُعْطَهْ اشْفَعْ تُشَفَّعْ . فَأَرْفَعُ رَأْسِي فَأَحْمَدُ رَبِّي بِتَحْمِيدٍ يُعَلِّمُنِيهِ ثُمَّ أَشْفَعُ فَيَحُدُّ لِي حَدًّا فَأُخْرِجُهُمْ مِنَ النَّارِ وَأُدْخِلُهُمُ الْجَنَّةَ - قَالَ فَلاَ أَدْرِي فِي الثَّالِثَةِ أَوْ فِي الرَّابِعَةِ قَالَ - فَأَقُولُ يَا رَبِّ مَا بَقِيَ فِي النَّارِ إِلاَّ مَنْ حَبَسَهُ الْقُرْآنُ أَىْ وَجَبَ عَلَيْهِ الْخُلُودُ " . - قَالَ ابْنُ عُبَيْدٍ فِي رِوَايَتِهِ قَالَ قَتَادَةُ أَىْ وَجَبَ عَلَيْهِ الْخُلُودُ .
আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) হতে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ইরশাদ করেন : হাশরের দিনে আল্লাহ তা‘আলা সকল মানুষকে একত্রিত করবেন। তখন সংকট মুক্তির জন্য ও সুপারিশ প্রার্থনার ব্যাপারে তারা তৎপর হবে। এখানে বর্ণনাকারী ইবনু ‘উবায়দ (আরবী) শব্দ ব্যবহার করেছেন। অর্থ অন্তরে উদয় হওয়া। তারা বলবে, আমরা যদি (কাউকে) আল্লাহর নিকট সুপারিশের জন্য অনুরোধ করতাম। যেন তিনি আমাদের এ (সংকটময়) স্থান থেকে মুক্তি দেন। সে মতে, তারা আদাম (‘আঃ)-এর নিকট এসে বলবে, আপনি আদাম (‘আঃ), আপনি মানুষের (আদি) পিতা, আল্লাহ তা‘আলা স্বহস্তে আপনাকে সৃষ্টি করেছেন, আপনার দেহে আত্মা ফুঁকেছেন, আপনাকে সাজদাহ করার জন্য ফেরেশতাদেরকে নির্দেশ দিয়েছেন, তাই তাঁরা আপনাকে সাজদাহও করেছেন। সুতরাং আপনি আমাদের পক্ষ হতে প্রতিপালকের নিকট সুপারিশ করুন। যেন তিনি আমাদেরকে এ (সংকটময়) স্থান থেকে মুক্তি দেন। তিনি তাঁর কৃত ত্রুটির কথা স্মরণ করবেন এবং প্রতিপালকের নিকট সুপারিশ করতে লজ্জাবোধ করবেন। তিনি বলবেন, আমি এর যোগ্য নই। তোমরা নূহ (‘আঃ) এর নিকটে যাও। তিনি প্রথম রসূল। আল্লাহ তা‘আলা তাঁকেই সর্বপ্রথম রসূলরুপে পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন। তখন সকল মানুষ নূহ (‘আঃ)-এর নিকট এসে (অনুরোধ) করবে। তিনিও তাঁর কৃত ত্রুটির কথা স্মরণ করবেন এবং প্রতিপালকের নিকট সুপারিশ করতে লজ্জাবোধ করবেন। তিনি বলবেনঃ আমি এর যোগ্য নই। তোমরা ইবরাহীমের নিকট যাও। তাঁকে আল্লাহ তা‘আলা বন্ধুরূপে গ্রহণ করেছেন। তখন সবাই ইবরাহীম (‘আঃ)-এর নিকট আসবে। তিনি স্বীয় কৃত ত্রুটির কথা স্মরণ করবেন এবং প্রতিপালকের নিকট সুপারিশ করতে লজ্জাবোধ করবেন এবং বলবেন, আমি এর যোগ্য নই। তোমরা মূসার নিকট যাও। আল্লাহ তাঁর সাথে কপোথোকথন করেছেন। তাঁকে আল্লাহ তাওরাত প্রদান করেছেন। তখন সবাই মূসা (‘আঃ)-এর নিকট আসবে। তিনি তাঁর কৃত ত্রুটির কথা স্মরণ করবেন এবং প্রতিপালকের নিকট সুপারিশ করতে লজ্জাবোধ করবেন এবং বলবেন, আমি এর উপযুক্ত নই। তোমরা ‘ঈসা (আঃ)-এর নিকট যাও, তিনি আল্লাহ প্রদত্ত ‘কালিমা’। তখন সবাই ‘ঈসা (‘আঃ)-এর নিকট আসবে। তিনি বলবেন, আমি তোমাদের এ কাজের যোগ্য নই, তবে তোমরা রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট যাও। তিনি আল্লাহর এমন বান্দা যে, তাঁর পূর্বাপর সকল ত্রুটি ক্ষমা করে দেয়া হয়েছে। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, তখন সবাই আমার নিকট আসবে, আর আমি আল্লাহর কাছে অনুমতি প্রার্থনা করবো। আমাকে অনুমতি দেয়া হবে। তখন আমি তাঁকে দেখামাত্র সাজদাহবনত হয়ে যাবো। যতক্ষণ আল্লাহ ইচ্ছা করবেন আমাকে এ অবস্থায় রেখে দিবেন; তারপর বলা হবে, হে মুহাম্মাদ! মাথা তুলুন, বলুন, আপনার অনুরোধ শোনা হবে, আপনি প্রার্থনা করুন তা পূর্ণ করা হবে, আপনি শাফা’আত করুন, আপনার শাফা’আত কবূল করা হবে। তারপর আমি মাথা তুলবো এবং আমার প্রতিপালকের এমন প্রশংসা করবো যা আমার রব আমাকে শিখিয়ে দিবেন। এরপর আমি সুপারিশ করবো। আমার জন্য (শাফা’আতের) সীমা নির্ধারিত করে দেয়া হবে। সে মতে, আমি তাদেরকে জাহান্নাম থেকে উদ্ধার করে এনে জান্নাতে প্রবেশ করাবো। পুনরায় আমি শাফা’আতের জন্য আসবো এবং সাজদাহবনত হব। যতক্ষণ আল্লাহ এ অবস্থায় আমাকে রাখতে ইচ্ছা করবেন, ততক্ষণ রেখে দিবেন। পরে বলা হবে : হে মুহাম্মাদ! (মাথা) তুলুন, বলুন, আপনার অনুরোধ শোনা হবে; প্রার্থনা করুন তা পূর্ণ করা হবে; সুপারিশ করুন, আপনার সুপারিশ কবূল করা হবে। তারপর আমি মাথা তুলব এবং আমার প্রতিপালকের এমন প্রশংসা করব যা আমার রব আমাকে শিখিয়ে দিবেন। অতঃপর আমি শাফা’আত করবো। আমার জন্য (শাফা’আতের) সীমা নির্ধারিত করে দেয়া হবে। সে মতে, আমি এদেরকে জাহান্নাম থেকে উদ্ধার করে জান্নাতে প্রবেশ করাবো। বর্ণনাকারী বলেন, নিশ্চিতভাবে স্মরণ নেই, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তৃতীয় কিংবা চতুর্থবারে এ কথা উল্লেখ করেছিলেন যে, আমি বলব : হে আমার প্রতিপালক! কুরআন যাদেরকে বাধা দিয়েছে অর্থাৎ যার উপর জাহান্নামে সর্বদা থাকা অবধারিত হয়েছে। তারা ছাড়া জাহান্নামে আর কেউ অবশিষ্ট নেই। ইবনু ‘উবায়দ বলেন, তাঁর বর্ণনায় কাতাদাহ (রহঃ) বলেছেন, তারা চিরস্থায়ী জাহান্নামে পড়ে থাকবে। (ই.ফা. ৩৭১; ই.সে. ৩৮২)