পরিচ্ছেদঃ
ইসলাম গ্রহণ ও ঈমান আনার ফাযীলাত
সহিহ ফাযায়েলে আমল : ২৮
সহিহ ফাযায়েলে আমলহাদিস নম্বর ২৮
ইবনু শিমাসাহ আল-মাহরী (রাঃ) হতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, ‘আমর ইবনুল ‘আস (রাঃ) যখন মৃত্যু শয্যায় ছিলেন, আমরা তাঁর কাছে উপস্থিত হলাম। তিনি দীর্ঘক্ষণ ধরে কাঁদলেন এবং দেয়ালের দিকে মুখ ফিরিয়ে ভাবছিলেন। তার ছেলে বলতে লাগলো, হে আব্বা, রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) কি আপনাকে এই সুসংবাদ দেননি? রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) কি আপনাকে এরূপ সুসংবাদ দেননি? বর্ণনাকারী বলেন, তখন তিনি মুখ ফিরিয়ে বললেন, অবশ্যই আমরা যা কিছু পুঁজি সঞ্চয় করেছি তন্মধ্যে “আল্লাহ্ ছাড়া কোন ইলাহ্ নেই এবং মুহাম্মাদ (সাঃ) আল্লাহর রাসূল”- সবচেয়ে উত্তম সঞ্চয়। আমি আমার জীবনে তিনটি পর্যায় অতিক্রম করে এসেছি। (প্রথম পর্যায়) আমি রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ)-এর প্রতি আমার চেয়ে অধিক বিদ্বেষ পোষণ করতে আর কাউকে দেখিনি। তখন আমার ইচ্ছা ছিল যে, যদি আমি সুযোগ পাই তাহলে তাঁকে হত্যা করে মনের ঝাল মেটাব। (দ্বিতীয় পর্যায় হলো) অতঃপর যখন আল্লাহ্ আমার অন্তরে ইসলামের প্রেরণা ঢেলে দিলেন, আমি নাবী (সাঃ)-এর কাছে এসে বললাম, আপনার ডান হাত প্রসারিত করুন। আমি আপনার কাছে বাই’আত করবো। তিনি তাঁর ডান হাত প্রসারিত করলে আমি আমার হাতখানা টেনে নিলাম। তিনি আমাকে জিজ্ঞেস করলেন, হে ‘আমর! তোমরা কি হয়েছে? আমি বললাম, আমি কিছু শর্ত করতে চাই। তিনি বললেন : তুমি কি শর্ত করতে চাও। আমি বললাম, আমি এই শর্ত করতে চাই যে, আমাকে ক্ষমা করা হোক। তিনি বললেন : হে ‘আমর! তুমি জান না ইসলাম পূর্বেকার সমস্ত অপরাধ ধ্বংস করে দেয়? অনুরূপভাবে হিজরাত ও হাজ্জের দ্বারাও পূর্বের সমস্ত অপরাধ ধ্বংস হয়ে যায়? তখন থেকে রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ)-এর চেয়ে অন্য কোন ব্যক্তি আমার কাছে অধিক প্রিয় ছিলো না। তার ব্যক্তিত্ব ও মর্যাদার এমনি এক প্রভাব ছিলো যে, আমি কখনো তাঁর চেহারার দিকে তাকিয়ে স্থির থাকতে পারতাম না। যদি কেউ আমাকে তাঁর দৈহিক সৌষ্ঠবের বর্ণনা করার জন্য অনুরোধ করতো তাও আমার দ্বারা সম্বব হতো না। যদি এ অবস্থায় আমার মৃত্যু হতো তাহলে আমি আশা করতে পারতাম যে, আমি জান্নাতবাসীদের অন্তর্ভূক্ত। (তৃতীয় পর্যায় হলো) অতঃপর আমার ওপর বিভিন্ন কাজের দায়িত্ব ন্যাস্ত হলো। আমি অবগত নই যে, এগুলোর মধ্যে আমার অবস্থা কেমন?। [১]
[১] হাদীস সহীহ : সহীহ্ মুসলিম হা/৩৩৬