পরিচ্ছেদঃ
১ থেকে ১০০ নং হাদিস
জাল জয়িফ হাদিস সিরিজ : ৬১
জাল জয়িফ হাদিস সিরিজহাদিস নম্বর ৬১
বর্ণনাকারী হতে বর্ণিতঃ
অবশ্যই আমার সাথীগণ নক্ষত্রতুল্য। অতএব তোমরা তাদের যে কারো কথা গ্রহণ করলে সঠিক পথপ্রাপ্ত হবে।হাদীসটি জাল।হাদীসটি ইবনু আব্দিল বার মু’য়াল্লাক হিসাবে (২/৯০) বর্ণনা করেছেন এবং তার থেকে ইবনু হাযম মারফূ’ হিসাবে আবূ শিহাব হান্নাত সূত্রে হামযা যাযারী হতে ... বর্ণনা করেছেন।এছাড়া আব্দু ইবনে হুমায়েদ “আল-মুনতাখাব মিনাল মুসনাদ” (১/৮৬) গ্রন্থে, এবং ইবনু বাত্তা “আল-ইবনাহ” গ্রন্থে (৪/১১/২) ভিন্ন ভিন্ন সূত্রে বর্ণনা করেছেন।অতঃপর ইবনু আব্দিল বার বলেছেনঃ (আরবি) ‘এ সনদটি সহীহ নয়, হাদীসটি নাফে‘ হতে এমন কেউ বর্ণনা করেননি যার দ্বারা দলীল গ্রহণ করা যায়।’আমি (আলবানী) বলছিঃ এ হামযা হচ্ছে আবূ হামযার ছেলে; দারাকুতনী তার সম্পর্কে বলেনঃ তিনি মাতরূক।ইবনু আদী বলেনঃ (আরবি) তার অধিকাংশ বর্ণনা জাল [বানোয়াট]ইবনু হিব্বান বলেনঃ (আরবি) ‘তিনি নির্ভরযোগ্যদের উদ্ধৃতিতে এককভাবে জাল (বানোয়াট) হাদীস বর্ণনা করেছেন। তিনি যেন তা ইচ্ছাকৃতই করেছেন। সুতরাং তার থেকে হাদীস বর্ণনা করাই হালাল নয়।যাহাবী “আল-মীযান” গ্রন্থে তার জাল হাদীসগুলো উল্লেখ করেছেন। সেগুলোর একটি হচ্ছে এটি।ইবনু হাযম “আল-মুহাল্লা” গ্রন্থে (৬/৮৩) বলেনঃএটিই স্পষ্ট হয়েছে যে, এ বর্ণনাটি আসলে সাব্যস্ত হয়নি। বরং বর্ণনাটি যে মিথ্যা তাতে কোন সন্দেহ নেই। কারণ আল্লাহ তাঁর নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর গুণাগুণ বর্ণনা করে বলেছেনঃ (আরবি) অর্থঃ “আর তিনি মনোবৃত্তি হতে কিছু বলেন না। তাঁর উক্তি অহী ছাড়া আর অন্য কিছু নয়।” (সূরা নাজম: ৩-৪)যখন নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সকল কথা শরীয়তের মধ্যে সত্য এবং তা গ্রহণ করা ওয়াজিব, তখন তিনি যা বলেন তা নিঃসন্দেহে আল্লাহর নিকট হতেই আসে। আর আল্লাহর নিকট হতে যা আসে তাতে মতভেদ থাকতে পারে না, তাঁর এ বাণীর কারণে।(আরবি)অর্থঃ “আর যদি আল্লাহ ব্যতীত অন্য কারো নিকট হতে হতো, তাহলে তারা তাতে বহু মতভেদ পেত।” (সূরা নিসা:৮২)আল্লাহ্ তা’আলা মতভেদ ও দ্বন্দ্ব করতে নিষেধ করেছেন, তাঁর এ বাণী দ্বারা (আরবী) “আর তোমরা আপোষে বিবাদ করো না।” আনফালঃ ৪৬।অতএব এটি অসম্ভবমূলক কথা যে রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর সাহাবীগণের প্রত্যেকটি কথার অনুসরণ করার নির্দেশ দিবেন, অথচ তাদের মধ্য হতে কেউ কোন বস্তুকে হালাল বলেছেন আবার অন্যজন সেটিকে হারাম বলেছেন।ইবনু হাযম এ বিষয়ে বলেছেনঃ সাহাবীগণের মধ্য হতে এমন মতামতও আছে যে, রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর জীবদ্দশায় তারা তাতে ভুল করেছেন সুন্নাত বিরোধী হওয়ার কারণে। অতঃপর (৬/৮৬) বলেছেনঃ কীভাবে সম্ভব তাদের অন্ধ অনুসরণ করা যারা ভুল করেছেন, আবার সঠিকও করেছেন?ইবনু হাযম মতভেদ নিন্দনীয় অধ্যায়ে (৫/৬৪) আরো বলেনঃআমাদের উপর ফরয হচ্ছে আল্লাহর নিকট হতে কুরআনের মধ্যে যা এসেছে ইসলাম ধর্মের শারী’য়াত হিসাবে তার অনুসরণ করা এবং নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে সহীহ বর্ণনায় যা এসেছে তার অনুসরণ করা। কারণ সেগুলোও আল্লাহর নির্দেশ হিসাবে তাঁর নিকট ধর্মের ব্যাখ্যায় এসেছে। অতএব মতভেদ কখনও রহমত হতে পারে না। আবার তা গ্রহণীয় হতে পারে না।মোটকথা হাদীসটি মিথ্যা, বানোয়াট, বাতিল, কখনও সহীহ নয়, যেমন ইবনু হাযম বলেছেন।