পরিচ্ছেদঃ
১ থেকে ১০০ নং হাদিস
জাল জয়িফ হাদিস সিরিজ : ৫০
জাল জয়িফ হাদিস সিরিজহাদিস নম্বর ৫০
বর্ণনাকারী হতে বর্ণিতঃ
যে ব্যক্তি তার পিতা-মাতা উভয়ের কবর প্রত্যেক জুম’আর দিবসে যিয়ারত করবে। অতঃপর তাদের উভয়ের নিকট অথবা পিতার কবরের নিকট সূরা ইয়াসিন পাঠ করবে, প্রতিটি আয়াত অথবা অক্ষরের সংখ্যার বিনিময়ে তাকে ক্ষমা করে দেয়া হবে।হাদীসটি জাল।হাদীসটি ইবনু আদী (১/২৮৬), আবূ নু’য়াইম “আখবারু আসবাহান” গ্রন্থে (২/৩৪৪-৩৪৫) ও আব্দুল গনী আল-মাকদেসী “সুনান” গ্রন্থে (২/৯১)............আম্র ইবনু যিয়াদ সূত্রে ............বর্ণনা করেছেন।কোন মুহাদ্দিস (আমার ধারণা তিনি হচ্ছেন ইবনু মুহিব কিংবা যাহাবী) “সুনানুল মাকদেসী” গ্রন্থের হাশিয়াতে (টীকাতে) লিখেছেন, (আরবি) এ হাদীসটি সাব্যস্ত হয়নি।ইবনু আদী বলেনঃ হাদীসটি বাতিল। এ সনদে এটির কোন ভিত্তি নেই। আম্র ইবনু যিয়াদ (তিনি হচ্ছেন আবুল হাসান আস-সাওবানী)-এর জীবনী বর্ণনা করতে গিয়ে তার অন্যান্য হাদীসের সাথে এ হাদীসটির ব্যাপারে উল্লেখিত মন্তব্যটি করেন। সে সব হাদীসের একটি সম্পর্কে বলেনঃ (আরবি) জাল (বানোয়াট)।অতঃপর বলেনঃ আম্র ইবনু যিয়াদ-এর এ হাদীসটি ছাড়া আরো হাদীস রয়েছে। সেগুলোর মধ্যে কিছু আছে নির্ভরযোগ্য থেকে চুরি করা এবং কিছু আছে বানোয়াট। তাকে সেগুলো জালকারী হিসাবে দোষী করা হয়েছে।দারাকুতনী বলেনঃ (আরবি) তিনি হাদীস জাল করতেন।এ কারণে ইবনুল জাওযী হাদীসটিকে তার “আল-মাওযূ’আত” গ্রন্থে (৩/২৩৯) ইবনু আদীর সূত্রে উল্লেখ করেছেন। তিনি ঠিকই করেছেন। অথচ সুয়ূতী তার সমালোচনা করে “আল-লাআলী” গ্রন্থে (২/২৪০) বলেছেনঃ হাদীসটির সমর্থনে শাহেদ আছে। অতঃপর তিনি এ হাদীসটিতে পূর্বের হাদীসের সনদটি উল্লেখ করেছেন। যেটি সম্পর্কে আপনি জেনেছেন যে, সেটিও জাল হাদীস। যদিও বলা হয়েছে সেটি শুধু দুর্বল। তা সত্ত্বেও সেটিকে হাদীসের শাহেদ হিসাবে ধরা যেতে পারে না। কারণ এটির সাথে সেটির ভাষার কোন মিল নেই। আর জাল হাদীস উল্লেখ করতে কোন উপকারিতাও নেই। [শাহেদ অর্থ জানতে দেখুনঃ ৫৬ নং পৃষ্ঠা]।উল্লেখ্য কবরের নিকট কুরআন পাঠ করা মুস্তাহাব এ মর্মে সহীহ সুন্নাহ হতে কোন প্রমাণ মিলে না। বরং সহীহ সুন্নাহ প্রমাণ করে যে, কবর যিয়ারতের সময় মৃত্যু ব্যক্তিদের জন্য শুধু সালাম প্রদান করা এবং আখেরাতের স্মরণ করাই হচ্ছে শারী’য়াত সম্মত। সালাফে সালেহীনের ‘আমল এর উপরেই হয়ে এসেছে। অতএব কবরের নিকট কুরআন পাঠ করা ঘৃণিত বিদ’আত। যেমনটি স্পষ্ট ভাবে পূর্ববর্তী একদল ওলামা বলেছেন। যাদের মধ্যে রয়েছেন ইমাম আবূ হানীফা, ইমাম মালিক, ইমাম আহমাদ ও অন্যন্য ইমামগণ, কারণ এ মর্মে কোন হাদীস বর্ণিত হয়নি।ইবনু উমার হতে দাফনের সময় সূরা বাকারার প্রথম এবং শেষ অংশ পাঠের যে কথা বলা হয়েছে তা সহীহ সনদে প্রমাণিত হয়নি। যদি ধরেইনি সহীহ তাহলে তা শুধু মাত্র দাফনের সময়ের সাথে সংশ্লিষ্ট। [কিন্তু ধরে নিয়ে সহীহ্ বানানো কী সঠিক ]।অতএব আমাদেরকে সুন্নাতকে আঁকড়ে ধরতে হবে আর বিদ’আত হতে সতর্ক হয়ে তা হতে বেঁচে চলতে হবে। যদিও লোকেরা বিদ’আতকে ভাল কাজ হিসাবে দেখে। কারণ রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ সকল বিদ’আতই পথভ্রষ্টতা।