২৬. অধ্যায়ঃ
রাত্রিকালীণ সলাতে দু‘আ ও ক্বিয়াম
সহিহ মুসলিম : ১৬৯৭
সহিহ মুসলিমহাদিস নম্বর ১৬৯৭
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ أَبِي بَكْرٍ الْمُقَدَّمِيُّ، حَدَّثَنَا يُوسُفُ الْمَاجِشُونُ، حَدَّثَنِي أَبِي، عَنْ عَبْدِ، الرَّحْمَنِ الأَعْرَجِ عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي رَافِعٍ، عَنْ عَلِيِّ بْنِ أَبِي طَالِبٍ، عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أَنَّهُ كَانَ إِذَا قَامَ إِلَى الصَّلاَةِ قَالَ " وَجَّهْتُ وَجْهِيَ لِلَّذِي فَطَرَ السَّمَوَاتِ وَالأَرْضَ حَنِيفًا وَمَا أَنَا مِنَ الْمُشْرِكِينَ إِنَّ صَلاَتِي وَنُسُكِي وَمَحْيَاىَ وَمَمَاتِي لِلَّهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ لاَ شَرِيكَ لَهُ وَبِذَلِكَ أُمِرْتُ وَأَنَا مِنَ الْمُسْلِمِينَ اللَّهُمَّ أَنْتَ الْمَلِكُ لاَ إِلَهَ إِلاَّ أَنْتَ . أَنْتَ رَبِّي وَأَنَا عَبْدُكَ ظَلَمْتُ نَفْسِي وَاعْتَرَفْتُ بِذَنْبِي فَاغْفِرْ لِي ذُنُوبِي جَمِيعًا إِنَّهُ لاَ يَغْفِرُ الذُّنُوبَ إِلاَّ أَنْتَ وَاهْدِنِي لأَحْسَنِ الأَخْلاَقِ لاَ يَهْدِي لأَحْسَنِهَا إِلاَّ أَنْتَ وَاصْرِفْ عَنِّي سَيِّئَهَا لاَ يَصْرِفُ عَنِّي سَيِّئَهَا إِلاَّ أَنْتَ لَبَّيْكَ وَسَعْدَيْكَ وَالْخَيْرُ كُلُّهُ فِي يَدَيْكَ وَالشَّرُّ لَيْسَ إِلَيْكَ أَنَا بِكَ وَإِلَيْكَ تَبَارَكْتَ وَتَعَالَيْتَ أَسْتَغْفِرُكَ وَأَتُوبُ إِلَيْكَ " . وَإِذَا رَكَعَ قَالَ " اللَّهُمَّ لَكَ رَكَعْتُ وَبِكَ آمَنْتُ وَلَكَ أَسْلَمْتُ خَشَعَ لَكَ سَمْعِي وَبَصَرِي وَمُخِّي وَعَظْمِي وَعَصَبِي " . وَإِذَا رَفَعَ قَالَ " اللَّهُمَّ رَبَّنَا لَكَ الْحَمْدُ مِلْءَ السَّمَوَاتِ وَمِلْءَ الأَرْضِ وَمِلْءَ مَا بَيْنَهُمَا وَمِلْءَ مَا شِئْتَ مِنْ شَىْءٍ بَعْدُ " . وَإِذَا سَجَدَ قَالَ " اللَّهُمَّ لَكَ سَجَدْتُ وَبِكَ آمَنْتُ وَلَكَ أَسْلَمْتُ سَجَدَ وَجْهِي لِلَّذِي خَلَقَهُ وَصَوَّرَهُ وَشَقَّ سَمْعَهُ وَبَصَرَهُ تَبَارَكَ اللَّهُ أَحْسَنُ الْخَالِقِينَ " . ثُمَّ يَكُونُ مِنْ آخِرِ مَا يَقُولُ بَيْنَ التَّشَهُّدِ وَالتَّسْلِيمِ " اللَّهُمَّ اغْفِرْ لِي مَا قَدَّمْتُ وَمَا أَخَّرْتُ وَمَا أَسْرَرْتُ وَمَا أَعْلَنْتُ وَمَا أَسْرَفْتُ وَمَا أَنْتَ أَعْلَمُ بِهِ مِنِّي أَنْتَ الْمُقَدِّمُ وَأَنْتَ الْمُؤَخِّرُ لاَ إِلَهَ إِلاَّ أَنْتَ " .
‘আলী ইবনু আবূ ত্বলিব (রাঃ) হতে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন যে, তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন সলাত আদায় করতে দাঁড়াতেন তখন এ বলে শুরু করতেনঃ “ওয়াজ্জাহ্তু ওয়াজ্হিয়া লিল্লাযী ফাত্বারাস্ সামা-ওয়া-তি ওয়াল আর্যা হানীফাওঁ ওয়ামা– আনা-মিনাল মুশরিকীনা ইন্না সলা-তী ওয়া নুসুকী ওয়া মাহ্ইয়া-ইয়া ওয়া মামা-তী লিল্লা-হি রব্বিল ‘আ-লামীনা লা শারীকা লাহূ ওয়াবি যা-লিক উমিরতু ওয়া আনা- মিনাল মুসলিমীন, আল্ল-হুম্মা আনতাল মালিকু লা- ইলা-হা ইল্লা – আনতা আন্তা রব্বি ওয়া আনা- আব্দুকা যলাম্তু নাফ্সী ওয়া‘তারাফ্তু বিযাম্বী ফাগফিরলী যুনূবী জামী’আন ইন্নাহূ লা- ইয়াগ্ফিরুয্ যুনূবা ইল্লা-আন্তা ওয়াহদিনী লিআহ্সানিল আখলা-ক্বি লা-ইয়াহ্দী লিআহ্সানিহা- ইল্লা- আন্তা ওয়াস্রিফ ‘আন্নি সাইয়্যিআহা-লা- ইয়াস্রিফু ‘আন্নী সাইয়্যিআহা- ইল্লা- আন্তা লাব্বায়কা! ওয়া সা’দায়কা! ওয়াল খায়রু কুল্লুহূ ফী ইয়াদায়কা ওয়াশ্ শুর্রু লায়সা ইলায়কা আনা –বিকা ওয়া ইলায়কা তাবা-রাকতা ওয়াতা ‘আ-লাইয়তা আস্তাগ্ফিরুকা ওয়া আতূবু ইলায়ক” (অর্থাৎ- আমি একনিষ্ট হয়ে আমার মুখ সে মহান সত্তার দিকে ফিরিয়ে দিলাম যিনি আসমান ও জমিনকে সৃষ্টি করেছেন। আর আমি মুশরিকদের অন্তর্ভুক্ত নই। আমার সলাত , আমার কুরবানী, আমার জীবন ও মৃত্যু সবকিছুই আল্লাহর জন্য যিনি সারা বিশ্বজাহানের প্রতিপালক। তাঁর কোন শরীক নেই। আমি এ জন্যই আদিষ্ট হয়েছি। আমি মুসলীম বা আত্মসমর্পণকারী। হে আল্লাহ! তুমিই সার্বভৌম বাদশাহ। তুমি ছাড়া আর কোন ইলাহ নেই। তুমি আমার প্রতিপালক, আর আমি তোমার বান্দা। আমি নিজে আমার প্রতি যুলুম করেছি। আমি আমার পাপ স্বীকার করছি। সুতরাং তুমি আমার সব পাপ ক্ষমা করে দাও। কেননা তুমি ছাড়া আর কেউ পাপ ক্ষমা করতে পারে না।আমাকে সর্বোত্তম আখলাক বা নৈতিকতার পথ দেখাও। তুমি ছাড়া এ পথ আর কেউ দেখাতে সক্ষম নয়। আর আখলাক্ব বা নৈতিকতর মন্দ দিকগুলো আমার থেকে দূরে রাখ। তুমি ছাড়া আর কেউ মন্দগুলোকে দূরে রাখতে সক্ষম নয়। আমি তোমার সামনে হাজির আছি – তোমার আনুগত্য করতে প্রস্তত আছি। সব রকম কল্যাণের মালিক তুমিই। অকল্যাণের দায় দায়িত্ব তোমার নয়। আমার সব কামনা বাসনা তোমার কাছেই কাম্য। আমার শক্তি-সামর্থ্যও তোমারই দেয়া। তুমি কল্যাণময়, তুমি মহান। আমি তোমার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করছি এবং তোমার কাছেই তাওবাহ্ করছি)।আর রুকু করার সময় বলতেনঃ “আল্ল-হুম্মা লাকা রাকা’তু ওয়াবিকা আ-মান্তু ওয়ালাকা আস্লাম্তু খশা’আ লাকা সাম’ঈ ওয়া বাসারী ওয়া মুখ্খী ওয়া ‘আয্মী ওয়া ‘আসাবী” -(অর্থাৎ -হে আল্লাহ্! তোমার উদ্দেশ্যেই আত্মসমর্পণ করলাম। আমার কান, চোখ, মগজ, হাড় এবং সব স্নায়ুতন্ত্রী তোমার কাছে নত ও বশীভূত হ’ল)। আর রুকু থেকে বলতেনঃ “আল্ল-হুম্মা রব্বানা– লাকাল হা্মদু মিলআস্ সামা-ওয়া-তি ওয়ামিল আল আর্যি ওয়ামিলআ মা- বায়নাহুমা ওয়ামিলআ মা- শি’তা মিন শাইয়িন্ বা’দু”-( অর্থাৎ - হে আল্লাহ্! হে আমার প্রতিপালক, সব প্রশংসা তোমারই প্রাপ্য। আসমান ভর্তি প্রশংসা একমাত্র তোমারই প্রাপ্য)। আর যখন সিজদায় যেতেন তখন বলতেনঃ “আল্ল-হুম্মা লাকা সাজাদ্তু ওয়াবিকা আ-মান্তু ওয়ালাকা আস্লাম্তু সাজাদা ওয়াজহী লিল্লাহী খালাক্বাহূ ওয়াসাও্ ওয়ারাহূ ওয়াশাক্বক্বা সাম’আহূ ওয়া বাসারাহূ তাবা-রাকাল্ল-হু আহসানুল খ-লিক্বীন”- (অর্থাৎ- হে আল্লাহ! তোমারই উদ্দেশে আমি সাজদাহ্ করলাম। তোমারই প্রতি আমি ঈমান পোষণ করেছি। তোমার উদ্দেশে আমি আত্মসমর্পণ করেছি। আমার মুখমণ্ডল সে মহান সত্তার উদ্দেশে সাজদাহ্ করল যিনি তাকে সৃষ্টি করেছেন এবং আকৃতি দান করেছেন আর কান ও চোখ ফুটিয়ে শোনা ও দেখার উপযোগী করে তৈরী করেছেন। মহা কল্যাণময় আল্লাহ, তিনি কতই না উত্তম সৃষ্টিকারী)। অতঃপর সবশেষে তাশাহ্হুদ ও সালামের মধ্য বর্তী সময়ে তিনি বলতেনঃ “আল্ল-হুম্মাগ্ফীর্লী মা- ক্বদ্দাম্তু ওয়ামা- আখ্খার্তু ওয়ামা- আস্সরার্তু ওয়ামা- আ’লান্তু ওয়ামা- আস্রাফ্তু ওয়ামা- আন্তা আ’লামু বিহী মিন্নী আন্তাল মুক্বদ্দিমু ওয়া আন্তাল মুআখ্খিরু লা- ইলা-হা ইল্লা- আন্তা” (অর্থাৎ- হে আল্লাহ! তুমি আমার পূর্বের ও পরের, গোপনে এবং প্রকাশ্যে কৃত গুনাহ ক্ষমা করে দাও। আর যে সব ব্যাপারে আমি বাড়াবাড়ি করেছি তাও ক্ষমা করে দাও। আমার কৃত যেসব পাপ সম্পর্কে তুমি আমার চাইতে বেশী জান তাও ক্ষমা করে দাও। তুমিই আদি এবং তুমিই অন্ত, তুমি ছাড়া আর কেউ ইলাহ নেই )। (ই.ফা. ১৬৮২, ই.সে. ১৬৮৯)