পরিচ্ছদঃ ৩১
(বিবাদমান) মানুষদের মধ্যে মীমাংসা (ও সন্ধি) করার গুরুত্ব
আল্লাহ তা‘আলা বলেন,﴿ ۞لَّا خَيۡرَ فِي كَثِيرٖ مِّن نَّجۡوَىٰهُمۡ إِلَّا مَنۡ أَمَرَ بِصَدَقَةٍ أَوۡ مَعۡرُوفٍ أَوۡ إِصۡلَٰحِۢ بَيۡنَ ٱلنَّاسِۚ ﴾ [النساء: ١١٤] অর্থাৎ “তাদের অধিকাংশ গোপন পরামর্শে কোন কল্যাণ নেই, তবে যে (তার পরামর্শে) দান খয়রাত, সৎকাজ ও মানুষের মধ্যে শান্তি স্থাপনের নির্দেশ দেয় (তাতে) কল্যাণ আছে।” (সুরা নিসা ১১৪ আয়াত)তিনি আরো বলেন,﴿وَٱلصُّلۡحُ خَيۡرٞۗ ﴾ [النساء: ١٢٨] অর্থাৎ “বস্তুতঃ আপোস করা অতি উত্তম।” (ঐ ১২৮ আয়াত)তিনি অন্যত্র বলেছেন,﴿ فَٱتَّقُواْ ٱللَّهَ وَأَصۡلِحُواْ ذَاتَ بَيۡنِكُمۡۖ ﴾ [الانفال: ١] অর্থাৎ “তোমরা আল্লাহর তাকওয়া অবলম্বন কর এবং নিজেদের মধ্যে সদ্ভাব স্থাপন কর।” (সূরা আনফাল ১ আয়াত)তিনি আরো বলেন,﴿ إِنَّمَا ٱلۡمُؤۡمِنُونَ إِخۡوَةٞ فَأَصۡلِحُواْ بَيۡنَ أَخَوَيۡكُمۡۚ﴾ [الحجرات: ١٠] অর্থাৎ “সকল বিশ্বাসীরা তো পরস্পর ভাই ভাই, সুতরাং তোমরা তোমাদের দুই ভাই-এর মধ্যে সন্ধি স্থাপন কর।” (সূরা হুজুরাত ১০ আয়াত)
রিয়াদুস সলেহিন : ২৫৬
রিয়াদুস সলেহিনহাদিস নম্বর ২৫৬
وَعَنْ أَبِي العَبَّاسِ سَهلِ بنِ سَعدٍ السَّاعِدِيّ رضي الله عنه: أنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم بَلَغَهُ أنَّ بَني عَمرِو بنِ عَوْفٍ كَانَ بَيْنَهُمْ شَرٌّ، فَخَرَجَ رَسولُ الله صلى الله عليه وسلم يُصْلِحُ بَينَهُمْ في أُنَاس مَعَهُ، فَحُبِسَ رَسُولُ الله صلى الله عليه وسلم وَحَانَتِ الصَّلاة، فَجَاءَ بِلالٌ إِلَى أَبي بَكرٍ رَضِيَ الله عنهما، فَقَالَ : يَا أَبا بَكْر، إنَّ رَسُولَ الله صلى الله عليه وسلم قَدْ حُبِسَ وَحَانَتِ الصَّلاةُ فَهَلْ لَكَ أنْ تَؤُمَّ النَّاس ؟ قَالَ : نَعَمْ، إنْ شِئْتَ، فَأقَامَ بِلالٌ الصَّلاةَ، وتَقَدَّمَ أَبُو بَكْرٍ فَكَبَّرَ وَكَبَّرَ النَّاسُ، وَجَاءَ رَسُول الله صلى الله عليه وسلم يَمشي في الصُّفُوفِ حَتَّى قَامَ في الصَّفِّ، فَأَخَذَ النَّاسُ في التَّصْفيقِ، وَكَانَ أَبُو بكرٍ رضي الله عنه لاَ يَلْتَفِتُ في الصَّلاةِ، فَلَمَّا أكْثَرَ النَّاسُ في التَّصْفيقِ الْتَفَتَ، فإِذَا رَسُول الله صلى الله عليه وسلم، فَأَشَارَ إِلَيْه رسولُ الله صلى الله عليه وسلم فَرَفَعَ أَبُو بَكْر رضي الله عنه يَدَهُ فَحَمِدَ اللهَ، وَرَجَعَ القَهْقَرَى وَرَاءهُ حَتَّى قَامَ في الصَّفِّ، فَتَقَدَّمَ رَسُول الله صلى الله عليه وسلم، فَصَلَّى للنَّاسِ، فَلَمَّا فَرَغَ أقْبَلَ عَلَى النَّاسِ، فَقَالَ: «أيُّهَا النَّاسُ، مَا لَكُمْ حِينَ نَابَكُمْ شَيْءٌ في الصَّلاةِ أخَذْتُمْ في التَّصفيق ؟! إِنَّمَا التَّصفيق للنِّساء . مَنْ نَابَهُ شَيْءٌ في صَلاتِهِ فَلْيَقُلْ : سُبْحَانَ الله، فَإِنَّهُ لاَ يَسْمَعُهُ أحدٌ حِينَ يقُولُ : سُبْحَانَ الله، إلاَّ الْتَفَتَ . يَا أَبَا بَكْر : مَا مَنَعَكَ أنْ تُصَلِّي بالنَّاسِ حِينَ أشَرْتُ إلَيْكَ ؟»، فَقَالَ أَبُو بَكْرٍ: مَا كَانَ يَنْبَغي لابْنِ أَبي قُحَافَةَ أنْ يُصَلِّي بالنَّاسِ بَيْنَ يَدَيْ رَسُول الله صلى الله عليه وسلم. مُتَّفَقٌ عَلَيهِ
আবূল আব্বাস সাহ্ল ইবনু সা‘দ সায়েদী (রাঃ) হতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, ‘আমর ইবনু ‘আউফ গোত্রের কিছু লোকের মাঝে কিছু ঝগড়া-বিবাদ ছিল। তাই রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর সাথে কিছু লোককে নিয়ে তাদের মধ্যে আপোস-মীগোশতা করে দেওয়ার জন্য সেখানে হাজির হলেন। সেখানে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আটকে গেলেন। অপর দিকে নামাযের সময় হয়ে গেল। সুতরাং বিলাল (রাঃ) আবূ বকর (রাঃ)-এর নিকট এসে বললেন, ‘রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আটকে গেছেন। এদিকে নামাযেরও সময় হয়ে গেছে। আপনি কি নামাযের লোকদের ইমামতি করবেন?’ তিনি বললেন, ‘হ্যাঁ, তুমি যদি চাও।’অতঃপর বিলাল (রাঃ) নামাযের ইকামত দিলেন এবং আবূ বকর (রাঃ) এগিয়ে গিয়ে (তাহরীমার) তকবীর বললেন এবং লোকেরাও তকবীর বলল। ইতোমধ্যে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এলেন এবং কাতারগুলো অতিক্রম করে (প্রথম) কাতারে এসে দাঁড়ালেন। (তা দেখে) লোকেরা হাততালি দিতে শুরু করল। আবূ বকর (রাঃ) নামাযরত অবস্থায় কোনো দিকে তাকান না, কিন্তু লোকেদের অধিক মাত্রায় হাততালির কারণে তিনি তাকিয়ে দেখতে পেলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উপস্থিত হয়েছেন।রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁকে হাতের ইশারায় (নিজের জায়গায় থাকতে) নির্দেশ দিলেন। আবূ বকর (রাঃ) তাঁর হাত উপরে তুলে আল্লাহর প্রশংসা করলেন। তারপর কিবলার দিকে মুখ রেখে পিছনে ফিরে এসে কাতারে শামিল হলেন। অতঃপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সামনে গিয়ে লোকদের ইমামতি করলেন এবং নামায শেষ করে লোকদের দিকে ফিরে বললেন, ‘‘হে লোক সকল! কি ব্যাপার যে, নামায অবস্থায় কিছু ঘটতে দেখে তোমরা হাততালি দিতে শুরু করলে? (জেনে রেখো, নামাযে) হাততালি দেওয়া তো মহিলাদের কর্তব্য।নামায অবস্থায় কারো কিছু ঘটলে সে যেন ‘সুবহানাল্লাহ’ বলে। কারণ, এটা শুনলে কেউ তার দিকে ভ্রূক্ষেপ না করে পারবে না। হে আবূ বকর! তোমাকে যখন ইশারা করলাম, তখন ইমামতি করতে তোমার কিসের বাধা ছিল?’’ তিনি বললেন, ‘আবূ কুহাফার ছেলের জন্য সঙ্গত ছিল না যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সামনে লোকদের ইমামতি করবে।’ (বুখারী ও মুসলিম) [১]
[১] সহীহুল বুখারী ৬৮৪, ১২০১, ১২০৪, ১২১৮, ১২৩৪, ২৬৯০, ২৬৯৩, ৭১৯০, মুসলিম ৪২১, নাসায়ী ৭৮৪, ৭৯৩, ১১৮৩, ৫৪১৩।