পরিচ্ছদঃ ২৬
অন্যায়-অত্যাচার করা হারাম এবং অন্যায়ভাবে নেওয়া জিনিস ফেরৎ দেওয়া জরুরী
আল্লাহ তা‘আলা বলেন,﴿مَا لِلظَّٰلِمِينَ مِنۡ حَمِيمٖ وَلَا شَفِيعٖ يُطَاعُ ﴾ [غافر: ١٨]অর্থাৎ “সীমালংঘনকারীদের জন্য অন্তরঙ্গ কোন বন্ধু নেই এবং এমন কোন সুপারিশকারীও নেই যার সুপারিশ গ্রাহ্য করা হবে।” (সূরা মুমিন ১৮ আয়াত)﴿ وَمَا لِلظَّٰلِمِينَ مِن نَّصِيرٖ ﴾ [الحج: ٧١]অর্থাৎ “যালেমদের কোন সাহায্যকারী নেই।” (সূরা হাজ্জ ৭১ আয়াত)
রিয়াদুস সলেহিন : ২১৮
রিয়াদুস সলেহিনহাদিস নম্বর ২১৮
وَعَنْ أَبِي بَكْرَةَ نُفَيْعِ بنِ الحَارِثِ رضي الله عنه عَنِ النَّبيّ صلى الله عليه وسلم قَالَ: « إنَّ الزَّمَانَ قَدِ اسْتَدَارَ كَهَيْئَتِهِ يَوْمَ خَلَقَ اللهُ السَّمَاوَاتِ وَالأَرضَ: السَّنَةُ اثْنَا عَشَرَ شَهْرَاً، مِنْهَا أرْبَعَةٌ حُرُمٌ: ثَلاثٌ مُتَوالِياتٌ: ذُو القَعْدَة، وذُو الحِجَّةِ، وَالمُحَرَّمُ، وَرَجَبُ مُضَرَ الَّذِي بَيْنَ جُمَادَى وَشعْبَانَ، أيُّ شَهْر هَذَا ؟» قُلْنَا : اللهُ وَرَسُولُهُ أعْلَمُ، فَسَكَتَ حَتَّى ظَننَّا أنَّهُ سَيُسَمِّيهِ بِغَيْرِ اسْمِهِ، قَالَ: «ألَيْسَ ذَا الحِجَّةِ ؟» قُلْنَا : بَلَى . قَالَ: «فَأيُّ بَلَد هَذَا ؟»قُلْنَا : اللهُ ورَسُولُهُ أعْلَمُ، فَسَكَتَ حَتَّى ظَنَنَّا أنَّهُ سَيُسَمِّيهِ بِغَيرِ اسْمِهِ . قَالَ: «ألَيْسَ البَلْدَةَ ؟»قُلْنَا : بَلَى . قَالَ: «فَأيُّ يَوْم هَذَا ؟»قُلْنَا : اللهُ ورَسُولُهُ أعْلَمُ، فَسَكَتَ حَتَّى ظَنَنَّا أنَّهُ سَيُسَمِّيهِ بغَيرِ اسْمِهِ . قَالَ: «ألَيسَ يَوْمَ النَّحْرِ ؟»قُلْنَا : بَلَى . قَالَ: «فَإنَّ دِمَاءكُمْ وَأمْوَالَكُمْ وَأَعْرَاضَكُمْ عليكم حَرَامٌ، كَحُرْمَةِ يَوْمِكُمْ هَذَا في بَلَدِكُمْ هَذَا في شَهْرِكُمْ هَذَا، وَسَتَلْقُونَ رَبَّكُمْ فَيَسْألُكُمْ عَنْ أعْمَالِكُمْ، ألا فَلا تَرْجعوا بعدي كُفّاراً يَضْرِبُ بَعْضُكُمْ رِقَابَ بَعْض، ألا لَيُبَلِّغ الشَّاهِدُ الغَائِبَ، فَلَعَلَّ بَعْضَ مَنْ يَبْلُغُهُ أنْ يَكُونَ أوْعَى لَهُ مِنْ بَعْض مَنْ سَمِعَهُ»، ثُمَّ قَالَ : «إلاَّ هَلْ بَلَّغْتُ، ألاَ هَلْ بَلَّغْتُ ؟» قُلْنَا : نَعَمْ . قَالَ: «اَللهمّ اشْهَدْ». مُتَّفَقٌ عَلَيهِ
আবূ বাকরাহ নুফাই ইবনুল হারেস (রাঃ) হতে বর্ণিতঃ
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘‘নিশ্চয় যামানা (কাল) নিজের ঐ অবস্থায় ফিরে এল যেদিন আল্লাহ তা‘আলা আসমানসমূহ ও যমীন সৃষ্টি করেছেন। (অর্থাৎ দুনিয়া সৃষ্টি করার সময় যেরূপ বছর ও মাসগুলো ছিল, এখন পুনর্বার সে পুরাতন অবস্থায় ফিরে এল এবং আরবের মুশরিকরা যে নিজেদের মন মত মাসগুলোকে আগে-পিছে করেছিল তা এখন থেকে শেষ করে দেওয়া হল।) বছরে বারটি মাস; তার মধ্যে চারটি হারাম (সম্মানীয়) মাস। তিনটি পরস্পরঃ যুল ক্বা‘দাহ, যুলহিজ্জাহ ও মুহাররাম। আর (চতুর্থ হল) মুদ্বার গোত্রের রজব; যা জুমাদা ও শা‘বান এর মধ্যে রয়েছে। এটা কোন্ মাস?’’ আমরা বললাম, ‘আল্লাহ ও তাঁর রাসূল সর্বাধিক জ্ঞাত।’অতঃপর তিনি কিছুক্ষণ নীরব থাকলেন। এমনকি আমরা ধারণা করলাম যে, তিনি হয়তো তার নাম ব্যতীত অন্য নাম বলবেন। তিনি বললেন, ‘‘এটা যুল-হিজ্জাহ নয় কি?’’ আমরা বললাম, ‘অবশ্যই।’ অতঃপর তিনি বললেন, ‘‘এটা কোন্ শহর?’’ আমরা বললাম, ‘আল্লাহ ও তাঁর রাসূল সর্বাধিক জ্ঞাত।’ অতঃপর তিনি কিছুক্ষণ নীরব থাকলেন। এমনকি আমরা ধারণা করলাম যে, তিনি হয়তো তার নাম ব্যতীত অন্য নাম বলবেন। তিনি বললেন, ‘‘এ শহর (মক্কা) নয় কি?’’ আমরা বললাম, ‘অবশ্যই।’ তিনি বললেন, ‘‘আজ কোন্ দিন?’’ আমরা বললাম, ‘আল্লাহ ও তাঁর রাসূল সর্বাধিক জ্ঞাত।’ অতঃপর তিনি চুপ থাকলেন। আমরা ভাবলাম, তিনি হয়তো এর অন্য নাম বলবেন।অতঃপর তিনি বললেন, ‘‘এটা কি কুরবানীর দিন নয়?’’ আমরা বললাম, ‘অবশ্যই।’ অতঃপর তিনি বললেন, ‘‘নিশ্চয় তোমাদের রক্ত, তোমাদের মাল এবং তোমাদের সম্ভ্রম তোমাদের (আপসের মধ্যে) এ রকমই হারাম (ও সম্মানীয়) যেমন তোমাদের এ দিনের সম্মান তোমাদের এ শহরে এবং তোমাদের এ মাসে রয়েছে। শীঘ্রই তোমরা তোমাদের প্রতিপালকের সাথে মিলিত হবে। অতঃপর তিনি তোমাদেরকে তোমাদের আমল সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করবেন। সুতরাং তোমরা আমার পর এমন কাফের হয়ে যেও না যে, তোমরা এক অপরের গর্দান মারবে। শোনো! উপস্থিত ব্যক্তি যেন অনুপস্থিতকে (এ সব কথা) পৌঁছে দেয়। কারণ, যাকে পৌঁছাবে সে শ্রোতার চেয়ে অধিক স্মৃতিধর হতে পারে।’’ অবশেষে তিনি বললেন, ‘‘সতর্ক হয়ে যাও! আমি কি পৌঁছে দিলাম?’’ আমরা বললাম, ‘হ্যাঁ।’ তিনি বললেন, ‘‘হে আল্লাহ! তুমি সাক্ষী থাক।’’[১]
[১] সহীহুল বুখারী ৩১৯৭, ৬৭, ১০৫, ১৭৪১, ৪৪০৬, ৪৬৬২, ৫৫৫০, ৭০৭৮, ৭৪৪৭, মুসলিম ১৬৭৯, ইবনু মাজাহ ২৩৩, আহমাদ ১৯৮৭৩, ১৯৮৯৪, ১৯৯৩৬, ১৯৯৮৫, দারেমী ১৯১৬