পরিচ্ছদঃ ২৫
আমানত আদায় করার গুরুত্ব
আল্লাহ তা‘আলা বলেন,﴿ ۞إِنَّ ٱللَّهَ يَأۡمُرُكُمۡ أَن تُؤَدُّواْ ٱلۡأَمَٰنَٰتِ إِلَىٰٓ أَهۡلِهَا ﴾ [النساء: ٥٨] অর্থাৎ “আল্লাহ তোমাদেরকে নির্দেশ দিচ্ছেন যে, আমানত তার মালিককে প্রত্যর্পণ করবে।” (সূরা নিসা ৫৮ আয়াত)তিনি আরো বলেন,﴿ إِنَّا عَرَضۡنَا ٱلۡأَمَانَةَ عَلَى ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلۡأَرۡضِ وَٱلۡجِبَالِ فَأَبَيۡنَ أَن يَحۡمِلۡنَهَا وأَشۡفَقۡنَ مِنۡهَا وَحَمَلَهَا ٱلۡإِنسَٰنُۖ إِنَّهُۥ كَانَ ظَلُومٗا جَهُولٗا ٧٢ ﴾ [الاحزاب: ٧٢] অর্থাৎ “নিশ্চয়ই আমি আকাশ, পৃথিবী ও পর্বতমালার প্রতি এ আমানত অর্পণ করতে চেয়েছিলাম। ওরা ভয়ে বহন করতে অস্বীকার করল; কিন্তু মানুষ তা বহন করল। নিশ্চয় সে অতিশয় যালেম ও অতিশয় অজ্ঞ।” (সূরা আহযাব ৭২ আয়াত)
রিয়াদুস সলেহিন : ২০৫
রিয়াদুস সলেহিনহাদিস নম্বর ২০৫
وَعَن حُذَيفَةَ بنِ اليَمَانِ رضي الله عنه، قَالَ: حَدَّثَنَا رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم حَدِيثَينِ قَدْ رأيْتُ أحَدَهُمَا وأنا أنتظرُ الآخَر : حَدَّثَنَا أَنَّ الأمَانَةَ نَزلَت في جَذرِ قُلُوبِ الرِّجَالِ، ثُمَّ نَزَلَ القُرآنُ فَعَلِمُوا مِنَ القرآن، وَعَلِمُوا مِنَ السُّنَّةِ، ثُمَّ حَدَّثَنَا عَن رَفعِ الأمَانَةِ، فَقَالَ: «يَنَامُ الرَّجُلُ النَّوْمَةَ فَتُقْبَضُ الأَمَانَةُ مِنْ قَلْبهِ، فَيَظَلُّ أثَرُهَا مِثلَ الوَكْتِ، ثُمَّ يَنَامُ النَّومَةَ فَتُقْبَضُ الأَمَانَةُ مِنْ قَلْبهِ، فَيَظَلُّ أثَرُهَا مِثلَ أَثَرِ المَجْلِ، كَجَمْرٍ دَحْرَجْتَهُ عَلَى رِجْلِكَ فَنَفِطَ، فَتَرَاهُ مُنْتَبراً وَلَيسَ فِيهِ شَيءٌ» ثُمَّ أخَذَ حَصَاةً فَدَحْرَجَهُ عَلَى رِجْلِهِ «فَيُصْبحُ النَّاسُ يَتَبَايعُونَ، فَلا يَكَادُ أحدٌ يُؤَدّي الأَمَانَةَ حَتَّى يُقَالَ : إنَّ في بَني فُلان رَجُلاً أميناً، حَتَّى يُقَالَ لِلرَّجُلِ : مَا أجْلَدَهُ ! مَا أَظْرَفَهُ ! مَا أعْقَلَهُ ! وَمَا في قَلْبِهِ مِثْقَالُ حَبَّة مِن خَرْدَل مِنْ إيمَان».وَلَقدْ أتَى عَلَيَّ زَمَانٌ وَمَا أُبَالِي أيُّكُمْ بَايَعْتُ : لَئن كَانَ مُسْلِماً لَيَرُدَّنَّهُ عليَّ دِينهُ، وَإنْ كَانَ نَصْرانِيّاً أَوْ يَهُودِياً لَيَرُدَّنَّهُ عَلَيَّ سَاعِيهِ، وَأَمَّا اليَوْمَ فَمَا كُنْتُ أُبَايعُ مِنْكُمْ إلاَّ فُلاناً وَفُلاناً». مُتَّفَقٌ عَلَيهِ
হুযাইফাহ (রাঃ) হতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের নিকট দু’টি হাদীস বর্ণনা করেছেন। একটি তো আমি প্রত্যক্ষ করেছি এবং দ্বিতীয়টির জন্য অপেক্ষায় রয়েছি। তিনি আমাদের কাছে বর্ণনা করেছেন যে, আমানত মানুষের অন্তরের অন্তঃস্তলে অবতীর্ণ হয়েছে। অতঃপর কুরআন অবতীর্ণ হয়েছে। তারপর তারা কুরআন থেকে জ্ঞানার্জন করেছে। তারপর তারা নবীর হাদীস থেকেও জ্ঞানার্জন করেছে। এরপর আমাদেরকে আমানত তুলে নেওয়া সম্পর্কে বর্ণনা করেছেন, ‘‘মানুষ এক ঘুম ঘুমানোর পর তার অন্তর থেকে আমানত তুলে নেওয়া হবে। তখন একটি বিন্দুর মত তার চিহ্ন অবশিষ্ট থাকবে। পুনরায় মানুষ এক ঘুম ঘুমাবে।আবারো তার অন্তর থেকে আমানত উঠিয়ে নেওয়া হবে। তখন জ্বলন্ত আগুন গড়িয়ে তোমার পায়ে পড়লে যেমন একটা ফোস্কা পড়ে কালো দাগ দেখতে পাওয়া যায় তার মত চিহ্ন থাকবে। তুমি তাকে ফোলা দেখবে; কিন্তু বাস্তবে তাতে কিছুই থাকবে না।’’ অতঃপর (উদাহরণস্বরূপ) তিনি একটি কাঁকর নিয়ে নিজ পায়ে গড়িয়ে দিলেন। (তারপর বলতে লাগলেন,) ‘‘সে সময় লোকেরা বেচা-কেনা করবে কিন্তু প্রায় কেউই আমানত আদায় করবে না। এমনকি লোকে বলাবলি করবে যে, অমুক বংশে একজন আমানতদার লোক আছে। এমনকি (দুনিয়াদার) ব্যক্তি সম্পর্কে মন্তব্য করা হবে, সে কতই না অদম্য! সে কতই না বিচক্ষণ! সে কতই না বুদ্ধিমান! অথচ তার অন্তরে সরিষার দানা পরিমাণ ঈমানও থাকবে না।’’(হুযাইফা বলেন,) ইতোপূর্বে আমার উপর এমন যুগ অতিবাহিত হয়ে গেছে, যখন কারো সাথে বেচাকেনা করতে কোন পরোয়া করতাম না। কারণ সে মুসলিম হলে তার দ্বীন তাকে আমার (খিয়ানত থেকে) বিরত রাখবে। আর খ্রিষ্টান অথবা ইয়াহূদী হলে তার শাসকই আমার হক ফিরিয়ে দেবে। কিন্তু বর্তমানের অবস্থা হচ্ছে এই যে, আমি অমুক অমুক ছাড়া বেচা-কেনা করতে প্রস্তুত নই।[১]
[১] সহীহুল বুখারী ৬৪৯৭, ৭০৮৬, ৭২৭৬, মুসলিম ১৪৩, তিরমিযী ২১৭৯, ইবনু মাজাহ ৪০৫৩, আহমাদ ২২৭৪৪