পরিচ্ছেদঃ
আল্লাহর দয়ার আশা রাখার গুরুত্ব
আল্লাহ তাআলা বলেন,(আরবি)অর্থাৎ, ঘোষণা করে দাও (আমার এ কথা), হে আমার দাসগণ! তোমরা যারা নিজেদের প্রতি যুলুম করেছ, তারা আল্লাহর করুণা হতে নিরাশ হয়ে না; নিশ্চয় আল্লাহ সমস্ত পাপ মাফ ক’রে দেবেন। নিশ্চয় তিনিই চরম ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। (সূরা যুমার ৫৩ আয়াত)তিনি আরো বলেন, (আরবি)অর্থাৎ, আমি অকৃতজ্ঞ (বা অস্বীকারকারী)কেই শাস্তি দিয়ে থাকি। (সূরা সাবা ১৭ আয়াত)আরো অন্য জায়গায় তিনি বলেন, (আরবি)অর্থাৎ, নিশ্চয় আমাদের প্রতি অহী (প্রত্যাদেশ) প্রেরণ করা হয়েছে যে, শাস্তি তার জন্য, যে মিথ্যা মনে করে ও মুখ ফিরিয়ে নেয়। (সূরা ত্বাহা ৪৮ আয়াত) আল্লাহ তাআলা বলেন,(আরবি)অর্থাৎ, আমার দয়া তা তো প্রত্যেক বস্তুতে পরিব্যাপ্ত। (সূরা আ'রাফ ১৫৬ আয়াত)
হাদিস সম্ভার : ৪৪৯
হাদিস সম্ভারহাদিস নম্বর ৪৪৯
وَعَنْ أَبيْ هُرَيْرَةَ أَوْ أَبي سَعِيدٍ الخُدرِي رَضِيَ اللهُ عَنهُمَا شَكَّ الرَّاوِي ولاَ يَضُرُّ الشَّكُّ في عَينِ الصَّحَابيّ لأنَّهُمْ كُلُّهُمْ عُدُولٌ – قَالَ : لَمَّا كَانَ غَزوَةُ تَبُوكَ أصَابَ النَّاسَ مَجَاعَةٌ فَقَالُوْا: يَا رَسُولَ اللهِ لَوْ أذِنْتَ لَنَا فَنَحَرْنَا نَواضِحَنَا فَأكَلْنَا وَادَّهَنَّا؟ فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللّٰهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم افْعَلُوا فَجاء عُمَرُ فَقَالَ : يَا رَسُولَ اللهِ إنْ فَعَلْتَ قَلَّ الظَّهْرُ وَلَكِن ادعُهُمْ بفَضلِ أزْوَادِهِمْ ثُمَّ ادعُ الله لَهُمْ عَلَيْهَا بِالبَرَكَةِ لَعَلَّ الله أنْ يَجْعَلَ في ذلِكَ البَرَكَةَ فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللّٰهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم نَعَمْ فَدَعَا بِنَطْع فَبَسَطَهُ ثُمَّ دَعَا بِفضلِ أزْوَادِهِمْ فَجَعَلَ الرَّجُلُ يَجِيءُ بكَفّ ذُرَةٍ وَيَجِيءُ بِكَفّ تَمرٍ وَيَجِيءُ الآخرُ بِكِسرَةٍ حَتَّى اجْتَمَعَ عَلَى النَّطعِ مِنْ ذلِكَ شَيءٌ يَسيرٌ فَدَعَا رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللّٰهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم بِالبَرَكَةِ ثُمَّ قَالَ خُذُوا في أوعِيَتِكُمْ فَأَخَذُوا في أوْعِيَتِهِم حَتَّى مَا تَرَكُوا في العَسْكَرِ وِعَاءً إلاَّ مَلأُوهُ وَأَكَلُوا حَتَّى شَبعُوا وَفَضَلَ فَضْلَةٌ فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللّٰهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم أشْهَدُ أنْ لاَ إلهَ إلاَّ اللهُ وَأنّي رَسُولُ اللهِ لا يَلْقَى الله بِهِمَا عَبْدٌ غَيْرَ شَاكٍّ فَيُحْجَبَ عَن الجَنَّةِ رواه مسلم
আবু হুরাইরাহ (রাঃ) অথবা আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) হতে বর্ণিতঃ
(বর্ণনাকারী সন্দেহে পড়েছেন। অবশ্য সাহাবীর ব্যক্তিত্ব নির্ণয়ে সন্দেহ ক্ষতিকর কিছু নয়। কেননা সকল সাহাবাই নির্ভরযোগ্য) সাহাবী বলেন, তাবুকের যুদ্ধের সময় সাহাবীগণ অতিশয় খাদ্য-সংকটে পড়লেন। সুতরাং তারা বললেন, হে আল্লাহর রসূল! যদি আপনি অনুমতি দেন, তাহলে আমরা আমাদের সেচক উট জবাই করে তার গোশ্ত ভক্ষণ এবং চর্বি ব্যবহার করি?’ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, ‘(ঠিক আছে) তোমরা কর’। (এ সংবাদ শুনে) উমর (রাঃ) এসে বললেন, ‘হে আল্লাহর রসূল! যদি আপনি (এমন) করেন, তাহলে সওয়ারী কমে যাবে। বরং আপনি (এই করুন যে,) তাদেরকে নিজেদের অবশিষ্ট খাদ্যদ্রব্য আনতে বলুন এবং তাদের জন্য তাতে আল্লাহর কাছে বরকতের দু’আ করুন। সম্ভবতঃ আল্লাহ তাতে বরকত দেবেন। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, “হ্যাঁ, (তাই-ই করি।)” সুতরাং তিনি চামড়ার একখানি দস্তরখান আনিয়ে নিয়ে তা বিছালেন। অতঃপর তিনি তাদের অবশিষ্ট খাদ্যদ্রব্য জমা করার নির্দেশ দিলেন। ফলে কেউ তো এক খাবল ভুটা আনলেন, কেউ তো এক খাবল খুরমা এবং কেউ তো রুটির একটি টুকরাও আনলেন। পরিশেষে কিছু পরিমাণ খাদ্য জমা হয়ে গেল। তারপর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বরকতের দুআ করলেন। অতঃপর বললেন, “তোমরা আপন আপন পাত্রে নিয়ে নাও।” সুতরাং তারা স্ব স্ব পাত্রে নিতে আরম্ভ করলেন। এমনকি সৈন্যের মধ্যে কোন পাত্র শূন্য রইল না। তাঁরা সকলেই খেয়ে তৃপ্ত হলেন এবং কিছু বেঁচেও গেল। অবশেষে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, “আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ছাড়া সত্য কোন উপাস্য নেই এবং আমি আল্লাহর রসূল। যে কোন বান্দা সন্দেহমুক্ত হয়ে এ দু’টি (সাক্ষ্য) নিয়ে আল্লাহর সাথে সাক্ষাৎ করবে, তাকে যে জান্নাতে যেতে বাধা দেওয়া হবে -তা হতেই পারে না (বরং সে বিনা বাধায় জান্নাতে প্রবেশ করবে)।” (মুসলিম ১৪৮নং)