পরিচ্ছেদঃ

মরণকে স্মরণ এবং কামনা-বাসনা কম করার গুরুত

আল্লাহ তাআলা বলেন,অর্থাৎ, জীব মাত্রই মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করবে। আর কিয়ামতের দিনই তোমাদের কর্মফল পূর্ণমাত্রায় প্রদান করা হবে। যাকে আগুন (দোযখ) থেকে দূরে রাখা হবে এবং (যে) বেহেণ্ডে প্রবেশলাভ করবে সেই হবে সফলকাম। আর পার্থিব জীবন ছলনাময় ভোগ ব্যতীত কিছুই নয়। (সূরা আলে ইমরান ১৮৫ আয়াত)তিনি আরো বলেন,অর্থাৎ, কেউ জানে না আগামী কাল সে কী অর্জন করবে এবং কেউ জানে না কোন দেশে তার মৃত্যু ঘটবে। (সূরা লুকমান ৩৪ আয়াত)।তিনি অন্যত্র বলেন,অর্থাৎ, অতঃপর যখন তাদের সময় আসে, তখন তারা মুহুর্তকালও বিলম্ব অথবা অগ্রগামী করতে পারে না। (সূরা নাহল ৬১ আয়াত)তিনি অন্য জায়গায় বলেছেন,অর্থাৎ, হে মু’মিনগণ! তোমাদের ধন-সম্পত্তি ও সন্তান-সন্ততি যেন তোমাদেরকে আল্লাহর স্মরণ হতে উদাসীন না করে, যারা উদাসীন হবে তারাই তো ক্ষতিগ্রস্ত। আমি তোমাদেরকে যে রুয়ী দিয়েছি তোমরা তা হতে ব্যয় কর তোমাদের কারো মৃত্যু আসার পূর্বে (অন্যথায় মৃত্যু আসলে সে বলবে), ‘হে আমার প্রতিপালক! আমাকে আরো কিছু কালের জন্য অবকাশ দিলে আমি সাদকা করতাম এবং সৎকর্মশীলদের অন্তর্ভুক্ত হতাম ।’ কিন্তু নির্ধারিত কাল যখন উপস্থিত হবে, তখন আল্লাহ কখনো কাউকেও অবকাশ দেবেন না। আর তোমরা যা কর আল্লাহ সে সম্বন্ধে সবিশেষ অবহিত। (সূরা মুনাফিকূন ৯-১১ আয়াত)তিনি আরো বলেন,অর্থাৎ যখন তাদের (অবিশ্বাসী ও পাপীদের) করে মৃত্যু উপস্থিত হয়, তখন সে বলে, ‘হে আমার প্রতিপালক! আমাকে পুনরায় (দুনিয়ায়) প্রেরণ কর। যাতে আমি আমার ছেড়ে আসা জীবনে সৎকর্ম করতে পারি ।’ না এটা হবার নয়; এটা তো তার একটা উক্তি মাত্র; তাদের সামনে বারযাখ (যবনিকা) থাকবে পুনরুত্থান দিবস পর্যন্ত। যেদিন শিংগায় ফুৎকার দেওয়া হবে সেদিন পরস্পরের মধ্যে আত্মীয়তার বন্ধন থাকবে না এবং একে অপরের খোঁজখবর নিবে না। সুতরাং যাদের (নেকীর) পাল্লা ভারী হবে, তারাই হবে সফলকাম। আর যাদের (নেকীর) পাল্লা হাল্কা হবে, তারাই নিজেদের ক্ষতি করেছে, তারা জাহান্নামে স্থায়ী হবে। আগুন তাদের মুখমন্ডলকে দগ্ধ করবে এবং তারা সেখানে থাকবে বীভৎস চেহারায়। তোমাদের নিকট কি আমার আয়াতসমূহ আবৃত্তি করা হতো না? অথচ তোমরা সেগুলিকে মিথ্যা মনে করতে। তারা বলবে, ‘হে আমাদের প্রতিপালক! দুর্ভাগ্য আমাদেরকে পেয়ে বসেছিল এবং আমরা ছিলাম এক বিভ্রান্ত সম্প্রদায়। হে আমাদের প্রতিপালক! এই আগুন হতে আমাদেরকে উদ্ধার কর অতঃপর আমরা যদি পুনরায় অবিশ্বাস করি তাহলে অবশ্যই আমরা সীমালংঘনকারী হব ।’ আল্লাহ বলবেন, “তোমরা হীন অবস্থায় এখানেই থাক এবং আমার সাথে কোন কথা বলো না। আমার বান্দাদের মধ্যে একদল ছিল যারা বলত, ‘হে আমাদের প্রতিপালক! আমরা বিশ্বাস করেছি, সুতরাং তুমি আমাদেরকে ক্ষমা ক’রে দাও ও আমাদের উপর দয়া কর, তুমি তো দয়ালুদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ দয়ালু ।’ কিন্তু তাদেরকে নিয়ে তোমরা এতো ঠাট্টা-বিদ্রপ করতে যে, তা তোমাদেরকে আমার কথা ভুলিয়ে দিয়েছিল; কারণে এমনভাবে পুরস্কৃত করলাম যে, তারাই হল সফলকাম।” তিনি বলবেন, ‘তোমরা পৃথিবীতে কত বছর অবস্থান করেছিলে?’ তারা বলবে, আমরা অবস্থান করেছিলাম একদিন অথবা একদিনের কিছু অংশ, তুমি না হয় গণনাকারীদেরকে জিজ্ঞেস ক’রে দেখ ।’ তিনি বলবেন, “তোমরা অল্পকালই অবস্থান করেছিলে; যদি তোমরা জানতে। তোমরা কি মনে করেছিলে যে, আমি তোমাদেরকে অনর্থক সৃষ্টি করেছি এবং তোমরা আমার নিকট প্রত্যাবর্তিত হবে না?’ (সূরা মু'মিনূন ৯৯-১১৫ আয়াত)তিনি অন্যত্র বলেন, অর্থাৎ, যারা বিশ্বাস স্থাপন করেছে তাদের সময় কি আসেনি যে, আল্লাহর স্মরণে এবং যে সত্য অবতীর্ণ হয়েছে তাতে তাদের হৃদয় ভক্তি-বিগলিত হবে? এবং পূর্বে যাদেরকে কিতাব দেওয়া হয়েছিল তাদের মত তারা হবে না? বহুকাল অতিক্রান্ত হয়ে গেলে যাদের অন্তর কঠিন হয়ে পড়েছিল। আর তাদের অধিকাংশই সত্যত্যাগী। (সূরা হাদীদ ১৬ আয়াত)এ প্রসঙ্গে আরো অনেক আয়াত রয়েছে। (হাদীস নিম্নরূপঃ-)

হাদিস সম্ভারহাদিস নম্বর ৩২৬

وَعَنْ أَبيْ بنِ كَعبٍ كَانَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللّٰهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم إِذَا ذَهَبَ ثُلُثُ اللَّيْلِ قَامَ فَقَالَ يَا أَيُّهَا النَّاسُ اذْكُرُوا اللهَ جَاءتِ الرَّاجِفَةُ تَتْبَعُهَا الرَّادِفَةُ جَاءَ المَوْتُ بِمَا فِيهِ جَاءَ المَوْتُ بِمَا فِيهِ قُلْتُ : يَا رَسُول اللهِ إنِّي أُكْثِرُ الصَّلاَةَ عَلَيْكَ فَكَمْ أجْعَلُ لَكَ مِنْ صَلاَتِي ؟ فَقَالَ مَا شِئْتَ قُلْتُ : الرُّبُع قَالَ مَا شِئْتَ فَإنْ زِدْتَ فَهُوَ خَيْرٌ لَكَ قُلْتُ : فَالنِّصْف ؟ قَالَ مَا شِئْتَ فَإنْ زِدْتَ فَهُوَ خَيْرٌ لَكَ قُلْتُ : فالثُّلُثَيْنِ ؟ قَالَ مَا شِئْتَ فَإنْ زِدْتَ فَهُوَ خَيْرٌ لَكَ قُلْتُ : أجعَلُ لَكَ صَلاَتِي كُلَّهَا ؟ قَالَ إذاً تُكْفَى هَمَّكَ وَيُغْفَر لَكَ ذَنْبُكَ رواه الترمذي و قَالَ حديث حسن

উবাই ইবনে কা’ব (রাঃ) হতে বর্ণিতঃ

যখন রাতের এক তৃতীয়াংশ পার হয়ে যেত, তখন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) উঠে দাঁড়াতেন এবং বলতেন, “হে লোক সকল! আল্লাহকে স্মরণ কর। কম্পনকারী (প্রথম ফুৎকার) এবং তার সহগামী (দ্বিতীয় ফুৎকার) চলে এসেছে এবং মৃত্যুও তার ভয়াবহতা নিয়ে হাজির।” আমি বললাম, হে আল্লাহর রসূল! আমি (আমার দুআতে) আপনার উপর দরূদ বেশি পড়ি। অতএব আমি আপনার প্রতি দরূদ পড়ার জন্য (দুআর) কতটা সময় নির্দিষ্ট করব? তিনি বললেন, “তুমি যতটা ইচ্ছা কর।” আমি বললাম, ‘এক চতুর্থাংশ?’ তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, “যতটা চাও। যদি তুমি বেশি কর, তবে তা তোমার জন্য উত্তম হবে।” আমি বললাম, ‘অর্ধেক (সময়)?’ তিনি বললেন, “তুমি যা চাও যদি বেশি কর তাহলে তা ভাল হবে।” আমি বললাম, ‘দুই তৃতীয়াংশ?' তিনি বললেন, “তুমি যা চাও (তাই কর)। যদি বেশি কর, তবে তা তোমার জন্য উত্তম।” আমি বললাম, ‘আমি আমার (দুআর) সম্পূর্ণ সময় দরূদের জন্য নির্দিষ্ট করব!’ তিনি বললেন, “তাহলে তো (এ কাজ) তোমার দুশ্চিন্তা (দূর করার) জন্য যথেষ্ট হবে এবং তোমার পাপকে মোচন করা হবে।” (তিরমিযী ২৪৫৭নং)

সেটিংস

ফন্ট সেটিংস

আরবি ফন্ট ফেস

আরবি ফন্ট সাইজ

২৪

অনুবাদ ফন্ট সাইজ

১৮

আল হাদিস অ্যাপ ডাউনলোড করুন

App Banner

ইসলামের জ্ঞান প্রচারে সহায়ক হোন

আপনার নিয়মিত সহায়তা আমাদের দ্বীনি ভাই-বোনের কাছে ইসলামের দাওয়াত পৌঁছাতে সাহয্য করবে। আমাদের মিশনে আপনিও অংশ নিন এবং বড় পরিবর্তনের অংশীদার হোন।

সাপোর্ট করুন