পরিচ্ছেদঃ

দৃঢ়-প্রত্যয় ও (আল্লাহর প্রতি) ভরসা

মহান আল্লাহ বলেন,(আরবী)অর্থাৎ বিশ্বাসীরা যখন শক্রবাহিনীকে দেখল তখন ওরা বলে উঠল, আল্লাহ ও তাঁর রসূল তো আমাদেরকে এই প্রতিশ্রুতিই দিয়েছেন এবং আল্লাহ ও তাঁর রসূল সত্যই বলেছিলেন। এতে তো তাদের বিশ্বাস ও আনুগত্যই বৃদ্ধি পেল। (সুর আহযাব ২২ আয়াত) তিনি অন্যত্রে বলেন,(আরবী)অর্থাৎ, যাদেরকে লোকেরা বলেছিল যে, তোমাদের বিরুদ্ধে লোক জমায়েত হয়েছে। সুতরাং তোমরা তাদেরকে ভয় কর। কিন্তু এ (কথা) তাদের বিশ্বাস দৃঢ়তর করেছিল এবং তারা বলেছিল, আল্লাহই আমাদের জন্য যথেষ্ট এবং তিনি উত্তম কর্মবিধায়ক। তারপর তারা আল্লাহর নিয়ামত ও অনুগ্রহসহ ফিরে এসেছিল, কোন অনিষ্ট তাদেরকে স্পর্শ করেনি এবং আল্লাহ যাতে সন্তুষ্ট হযন তারা তারই অনুসরণ করেছিল। আর আল্লাহ মহা অনুগ্রহশীল। (সূরা আলে ইমরান ১৭৩- ১৭৪ আয়াত)তিনি আরো বলেন,(আরবী)অর্থাৎ তুমি তাঁর উপর নির্ভর কর যিনি চিরঞ্জীব, যার মৃত্যু নেই। (সূরা ফুরক্বান ৫৮আয়াত)(আরবী)অর্থাৎ, মু’মিনদের উচিত, কেবল আল্লাহর উপরই নির্ভর করা। (সূরা ইব্রাহীম ১১ আয়াত)তিনি আরো বলেন,(আরবী)অর্থাৎ, তুমি কোন সংকল্প গ্রহণ করলে আল্লাহর প্রতি নির্ভর কর (নিশ্চয় আল্লাহ তাঁর উপর নির্ভরশীলদেরকে ভালবাসেন।) (সূরা আলে ইমরান ১৫৯ আয়াত)আরো আল্লাহ বলেন,অর্থাৎ, যে ব্যক্তি আল্লাহর উপর নির্ভর করবে তার জন্য তিনিই যথেষ্ট হবেন। (সূরা ত্বালাক ৩ আয়াত)(আরবী)অর্থাৎ, বিশ্বাসী (মুমিন) তো তারাই যাদের হৃদয় আল্লাহকে স্মরণ করার সময় ভীত হয় এবং যখন তাঁর আয়াত তাদের নিকট পাঠ করা হয়, তখন তা তাদের বিশ্বাস (ঈমান) বৃদ্ধি করে এবং তারা তাদের প্রতিপালকের উপরই ভরসা রাখে।একীন (দৃঢ়প্রত্যয়) ও তাওয়াক্কুল (আল্লাহর উপর ভরসা)র গুরুত্ব সম্বন্ধে আরো অনেক আয়াত রয়েছে। এ মর্মের হাদীসসমূহ নিম্নরূপঃ(আরবী)

হাদিস সম্ভারহাদিস নম্বর ১৯৬

عَن ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنهُمَا قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللّٰهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم عُرِضَتْ عَلَيَّ الأُمَمُ فَرَأيْتُ النَّبيَّ ومَعَهُ الرُّهَيطُ وَالنَّبِيَّ وَمَعَهُ الرَّجُلُ وَالرَّجُلانِ وَالنبيَّ لَيْسَ مَعَهُ أَحَدٌ إِذْ رُفِعَ لي سَوَادٌ عَظيمٌ فَظَنَنْتُ أَنَّهُمْ أُمَّتِي فقيلَ لِي : هَذَا مُوسَى وَقَومُهُ ولكنِ انْظُرْ إِلَى الأُفُقِ فَنَظَرتُ فَإِذا سَوادٌ عَظِيمٌ فقيلَ لي : انْظُرْ إِلَى الأفُقِ الآخَرِ فَإِذَا سَوَادٌ عَظيمٌ فقيلَ لِي : هذِهِ أُمَّتُكَ وَمَعَهُمْ سَبْعُونَ ألفاً يَدْخُلُونَ الجَنَّةَ بِغَيرِ حِسَابٍ ولا عَذَابٍ ثُمَّ نَهَضَ فَدخَلَ مَنْزِلَهُ فَخَاضَ النَّاسُ في أُولئكَ الَّذِينَ يَدْخُلُونَ الجَنَّةَ بِغَيْرِ حِسَابٍ ولا عَذَابٍ فَقَالَ بَعْضُهُمْ : فَلَعَلَّهُمْ الَّذينَ صَحِبوا رسولَ الله صَلَّى اللّٰهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم وَقالَ بعْضُهُمْ : فَلَعَلَّهُمْ الَّذِينَ وُلِدُوا في الإِسْلامِ فَلَمْ يُشْرِكُوا بِالله شَيئاً - وذَكَرُوا أشيَاءَ - فَخَرجَ عَلَيْهِمْ رَسُولُ الله صَلَّى اللّٰهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم فَقَالَ مَا الَّذِي تَخُوضُونَ فِيهِ ؟ فَأَخْبَرُوهُ فقالَ هُمُ الَّذِينَ لاَ يَرْقُونَ وَلا يَسْتَرقُونَ وَلا يَتَطَيَّرُونَ وعَلَى رَبِّهِمْ يَتَوكَّلُون فقامَ عُكَّاشَةُ ابنُ محصنٍ فَقَالَ : ادْعُ الله أنْ يَجْعَلني مِنْهُمْ فَقَالَ أنْتَ مِنْهُمْ ثُمَّ قَامَ رَجُلٌ آخَرُ فَقَالَ : ادْعُ اللهَ أنْ يَجْعَلنِي مِنْهُمْ فَقَالَ سَبَقَكَ بِهَا عُكَّاشَةُ مُتَّفَقٌ عَلَيهِ

ইবনে আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিতঃ

আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, “আমার কাছে সকল উম্মত পেশ করা হল। আমি দেখলাম, কোন নবীর সাথে কতিপয় (৩ থেকে ৭ জন অনুসারী) লোক রয়েছে। কোন নবীর সাথে এক অথবা দুইজন লোক রয়েছে। কোন নবীকে দেখলাম তাঁর সাথে কেউ নেই। ইতোমধ্যে বিরাট একটি জামাআত আমার সামনে পেশ করা হল। আমি মনে করলাম, এটিই আমার উম্মত। কিন্তু আমাকে বলা হল যে, ‘এটি হল মূসা ও তাঁর উম্মতের জামাআত কিন্তু আপনি অন্য দিগন্তে তাকান।’ অতঃপর তাকাতেই আরও একটি বিরাট জামাআত দেখতে পেলাম। আমাকে বলা হল যে, ‘এটি হল আপনার উম্মত। আর তাদের সঙ্গে রয়েছে এমন ৭০ হাজার লোক, যারা বিনা হিসাব ও আযাবে বেহেশ্‌ত প্রবেশ করবে।’এ কথা বলে তিনি উঠে নিজ বাসায় প্রবেশ করলেন। এদিকে লোকেরা ঐ বেহেশ্‌তী লোকদের ব্যাপারে বিভিন্ন আলোচনা শুরু ক’রে দিল, যারা বিনা হিসাব ও আযাবে বেহেশ্‌তে প্রবেশ করবে। কেউ কেউ বলল, ‘সম্ভবতঃ ঐ লোকেরা হল তারা, যারা আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাহাবা।’ কিছু লোক বলল, ‘বরং সম্ভবতঃ ওরা হল তারা, যারা ইসলামে জন্মগ্রহণ করেছে এবং আল্লাহর সাথে কাউকে শরীক করেনি।’ আরো অনেকে অনেক কিছু বলল। কিছু পরে আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাদের নিকট বের হয়ে এসে বললেন, “তোমরা কী ব্যাপারে আলোচনা করছ?” তারা ব্যাপার খুলে বললে তিনি বললেন, “ওরা হল তারা, যারা ঝাড়ফুঁক করে না [১], ঝাড়ফুঁক করায় না এবং কোন জিনিসকে অশুভ লক্ষণ মনে করে না, বরং তারা কেবল আল্লাহর প্রতি ভরসা রাখে।”এ কথা শুনে উক্কাশাহ ইবনে মিহসান উঠে দাঁড়ালেন এবং বললেন, ‘(হে আল্লাহর রসূল!) আপনি আমার জন্য দুআ করুন, যেন আল্লাহ আমাকে তাদের দলভুক্ত ক’রে দেন!’ তিনি বললেন, “তুমি তাদের মধ্যে একজন।” অতঃপর আর এক ব্যক্তি উঠে দাঁড়িয়ে বলল, ‘আপনি আমার জন্যও দুআ করুন, যেন আল্লাহ আমাকেও তাদের দলভুক্ত করে দেন।’ তিনি বললেন, “উক্কাশাহ (এ ব্যাপারে) তোমার অগ্রগমন করেছে।” (বুখারী ৫২৭০, মুসলিম ২২০নং)

[১] এ কথাটি বুখারীতে নেই। তাছাড়া জিবরীল (আঃ) ঝাড়ফুঁক করেছেন, ঝাড়ফুঁক করেছেন মহানবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)। পক্ষান্তরে অন্য বর্ণনায় উক্ত কথার স্থলে ‘দাগায় না’ কথা এসেছে।

সেটিংস

ফন্ট সেটিংস

আরবি ফন্ট ফেস

আরবি ফন্ট সাইজ

২৪

অনুবাদ ফন্ট সাইজ

১৮

আল হাদিস অ্যাপ ডাউনলোড করুন

App Banner

ইসলামের জ্ঞান প্রচারে সহায়ক হোন

আপনার নিয়মিত সহায়তা আমাদের দ্বীনি ভাই-বোনের কাছে ইসলামের দাওয়াত পৌঁছাতে সাহয্য করবে। আমাদের মিশনে আপনিও অংশ নিন এবং বড় পরিবর্তনের অংশীদার হোন।

সাপোর্ট করুন