পরিচ্ছেদঃ
আত্মীয়তা অক্ষুন্ন রাখার গুরুত্ব
আল্লাহ তাআলা বলেন,وَاعْبُدُوا اللهَ وَلا تُشْرِكُوا بِهِ شَيْئاً وَبِالْوَالِدَيْنِ إِحْسَاناً وَبِذِي الْقُرْبَى وَالْيَتَامَى وَالْمَسَاكِينِ وَالْجَارِ ذِي الْقُرْبَى وَالْجَارِ الْجُنُبِ وَالصَّاحِبِ بِالْجَنْبِ وَابْنِ السَّبِيلِ وَمَا مَلَكَتْ أَيْمَانُكُمْ অর্থাৎ, তোমরা আল্লাহর উপাসনা কর ও কোন কিছুকে তাঁর অংশী করো না এবং পিতা-মাতা, আত্মীয়-স্বজন, পিতৃহীন, অভাবগ্রস্ত, আত্মীয় ও অনাত্মীয় প্রতিবেশী, সঙ্গী-সাথী, পথচারী এবং তোমাদের অধিকারভুক্ত দাস-দাসীদের প্রতি সদ্ব্যবহার কর। (সূরা নিসা ৩৬ আয়াত) তিনি আরো বলেন,وَاتَّقُوا اللهَ الَّذِي تَسَاءلُونَ بِهِ وَالأَرْحَامঅর্থাৎ, সেই আল্লাহকে ভয় কর, যার নামে তোমরা একে অপরের নিকট চাওয়া এবং জ্ঞাতি-বন্ধন ছিন্ন করাকে ভয় কর। (সূরা নিসা ১ আয়াত) তিনি অন্যত্র বলেন, وَالَّذِينَ يَصِلُونَ مَا أَمَرَ اللهُ بِهِ أَنْ يُوصَلَঅর্থাৎ, আল্লাহ যে সম্পর্ক অক্ষুন্ন রাখতে আদেশ করেছেন যারা তা অক্ষুন্ন রাখে। (সূরা রা’দ ২১ আয়াত)وَالَّذِينَ يَنْقُضُونَ عَهْدَ اللهِ مِنْ بَعْدِ مِيثَاقِهِ وَيَقْطَعُونَ مَا أَمَرَ اللهُ بِهِ أَنْ يُوصَلَ وَيُفْسِدُونَ فِي الأَرْضِ أُولَئِكَ لَهُمُ اللَّعْنَةُ وَلَهُمْ سُوءُ الدَّارِ অর্থাৎ, যারা আল্লাহর সাথে দৃঢ় অঙ্গীকারে আবদ্ধ হওয়ার পর তা ভঙ্গ করে, যে সম্পর্ক অক্ষুণ্ণ রাখতে আল্লাহ আদেশ করেছেন তা ছিন্ন করে এবং পৃথিবীতে অশান্তি সৃষ্টি করে বেড়ায়, তাদের জন্য আছে অভিসম্পাত এবং তাদের জন্য আছে মন্দ আবাস। (সূরা রা’দ ২৫ আয়াত)
হাদিস সম্ভার : ১৭৫৬
হাদিস সম্ভারহাদিস নম্বর ১৭৫৬
وَعَن عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُا قَالَتْ : مَا غِرْتُ عَلَى أحَدٍ مِنْ نِسَاءِ النَّبيِّ صَلَّى اللّٰهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم مَا غِرْتُ عَلَى خَدِيجَة رَضِيَ اللهُ عَنْهُا وَمَا رَأيْتُهَا قَطُّ وَلَكِنْ كَانَ يُكْثِرُ ذِكْرَهَا وَرُبَّمَا ذَبَحَ الشَّاةَ ثُمَّ يقَطِّعُهَا أعْضَاء ثُمَّ يَبْعثُهَا في صَدَائِقِ خَديجَةَ فَرُبَّمَا قُلْتُ لَهُ : كَأنْ لَمْ يَكُنْ في الدُّنْيَا إلاَّ خَديجَةَ فَيَقُولُ إنَّهَا كَانَتْ وَكَانَتْ وَكَانَ لي مِنْهَا وَلَدٌ متفقٌ عليهوَفِيْ رِوَايَةٍ : وإنْ كَانَ لَيَذْبَحُ الشَّاءَ فَيُهْدِي في خَلاَئِلِهَا مِنْهَا مَا يَسَعُهُنَّ وَفِيْ رِوَايَةٍ:كَانَ إِذَا ذبح الشاة، يقولُأَرْسِلُوا بِهَا إِلَى أصْدِقَاءِ خَديجَةَ وَفِيْ رِوَايَةٍ : قَالَت : اسْتَأذَنتْ هَالَةُ بِنْتُ خُوَيْلِد أُخْتُ خَدِيجَةَ عَلَى رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللّٰهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم فَعرَفَ اسْتِئذَانَ خَديجَةَ فَارتَاحَ لِذَلِكَ فَقَالَ اللَّهُمَّ هَالةُ بِنْتُ خُوَيْلِدٍ قولُهَافَارتَاحَ هُوَ بالحاء وفي الجمعِ بَيْنَ الصحيحين للحُميدِي فَارتَاعَ بالعينِ ومعناه : اِهتَمَّ بهِ
আয়েশা (রাঃ) হতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, খাদীজা (রাঃ) এর প্রতি আমার যতটা ঈর্ষা হতো, ততটা ঈর্ষা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর অপর কোন স্ত্রীর প্রতি হতো না। অথচ আমি তাঁকে কখনো দেখিনি। কিন্তু নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) অধিকাংশ সময় তাঁর কথা আলোচনা করতেন এবং যখনই তিনি ছাগল যবাই করতেন, তখনই তার বিভিন্ন অঙ্গ কেটে খাদীজার বান্ধবীদের জন্য উপহারস্বরূপ পাঠাতেন।আমি তাঁকে মাঝে মধ্যে (রসিকতা ছলে) বলতাম, ‘মনে হয় যেন দুনিয়াতে খাদীজা ছাড়া আর কোন মেয়েই নেই।’ তখন তিনি (তাঁর প্রশংসা ক’রে) বলতেন, “সে এই রকম ছিল, ঐ রকম ছিল। আর তাঁর থেকেই আমার সন্তান-সন্তুতি।”অন্য এক বর্ণনায় আছে, ‘নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) যখন বকরী যবাই করতেন, তখন খাদীজার বান্ধবীদের নিকট এতটা পরিমাণে মাংস পাঠাতেন, যা তাদের জন্য যথেষ্ট হত।’অন্য এক বর্ণনায় আছে, ‘নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) যখন বকরী যবাই করতেন, তখন বলতেন, “খাদীজার বান্ধবীদের নিকট এই মাংস পাঠিয়ে দাও।”অন্য এক বর্ণনায় আছে আয়েশা (রাঃ) বলেন, ‘একদা খাদীজার বোন হালা বিনতে খুআইলিদ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর নিকট আসার অনুমতি চাইল। তিনি খাদীজার অনুমতি চাওয়ার কথা স্মরণ করলেন, সুতরাং তিনি আনন্দবোধ করলেন এবং বললেন, “আল্লাহ! হালা বিনতে খুআইলিদ?”এ বর্ণনায় فَارتَاحَ (আনন্দবোধ করলেন) শব্দ এসেছে। আর হুমাইদীর ‘আল-জামউ বাইনাস স্বাহীহাইন’-এ এসেছে فَارتَاعَ শব্দ। অর্থাৎ, তার প্রতি যত্ন নিলেন ও আগ্রহ প্রকাশ করলেন।