পরিচ্ছেদঃ
অবৈধ সম্পর্ক
ঊপদেশ : ১১১
ঊপদেশহাদিস নম্বর ১১১
عَنْ سَمُرَةَ بْنِ جُنْدُبٍ قَالَ: كَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللّٰهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم إِذَا صَلَّى أَقْبَلَ عَلَيْنَا بِوَجْهِهِ فَقَالَ: مَنْ رَأَى مِنْكُمُ اللَّيْلَةَ رُؤْيَا؟ قَالَ: فَإِنْ رَأَى أَحَدٌ قَصَّهَا فَيَقُوْلُ: مَا شَاءَ اللهُ فَسَأَلَنَا يَوْمًا فَقَالَ: هَلْ رَأَى مِنْكُمْ أَحَدٌ رُؤْيَا؟ قُلْنَا: لَا قَالَ: لَكِنِّي رَأَيْتُ اللَّيْلَةَ رَجُلَيْنِ أَتَيَانِي فَأَخَذَا بِيَدَيَّ فَأَخْرَجَانِي إِلَى أَرْضٍ مُقَدَّسَةٍ فَإِذَا رَجُلٌ جَالِسٌ وَرَجُلٌ قَائِمٌ بِيَدِهِ كَلُّوْبٌ مِنْ حَدِيْدٍ يُدْخِلُهُ فِيْ شِدْقِهِ فَيَشُقُّهُ حَتَّى يَبْلُغَ قَفَاهُ ثُمَّ يَفْعَلُ بِشِدْقِهِ الْآخَرِ مِثْلَ ذَلِكَ وَيَلْتَئِمُ شِدْقُهُ هَذَا فَيَعُوْدُ فَيَصْنَعُ مِثْلَهُ. قُلْتُ: مَا هَذَا؟ قَالَا: انْطَلِقْ فَانْطَلَقْنَا حَتَّى أَتَيْنَا عَلَى رَجُلٍ مُضْطَجِعٍ عَلَى قَفَاهُ وَرَجُلٌ قَائِمٌ عَلَى رَأْسِهِ بِفِهْرٍ أَوْ صَخْرَةٍ يَشْدَخُ بِهَا رَأْسَهُ فَإِذَا ضَرَبَهُ تَدَهْدَهَ الْحَجَرُ فَانْطَلَقَ إِلَيْهِ لِيَأْخُذَهُ فَلَا يَرْجِعُ إِلَى هَذَا حَتَّى يَلْتَئِمَ رَأْسُهُ وَعَادَ رَأْسُهُ كَمَا كَانَ فَعَادَ إِلَيْهِ فَضَرَبَهُ فَقُلْتُ: مَا هَذَا؟ قَالَا: انْطَلِقْ فَانْطَلَقْنَا حَتَّى أَتَيْنَا إِلَى ثَقْبٍ مِثْلِ التَّنُّورِ أَعْلَاهُ ضَيِّقٌ وَأَسْفَلَهُ وَاسِعٌ تَتَوَقَّدُ تَحْتَهُ نَارٌ فَإِذَا ارْتَفَعَتِ ارْتَفَعُوْا حَتَّى كَادَ أَنْ يَخْرُجُوْا مِنْهَا وَإِذَا خَمَدَتْ رَجَعُوا فِيهَا وَفِيهَا رِجَالٌ وَنِسَاءٌ عُرَاةٌ فَقُلْتُ: مَا هَذَا؟ قَالَا: انْطَلِقْ فَانْطَلَقْنَا حَتَّى أَتَيْنَا عَلَى نَهَرٍ مِنْ دَمٍ فِيهِ رَجُلٌ قَائِمٌ عَلَى وَسْطِ النَّهَرِ وَعَلَى شَطِّ النَّهَرِ رَجُلٌ بَيْنَ يَدَيْهِ حِجَارَةٌ فَأَقْبَلَ الرَّجُلُ الَّذِي فِي النَّهَرِ فَإِذَا أَرَادَ أَنْ يَخْرُجَ رَمَى الرَّجُلُ بِحَجَرٍ فِي فِيْهِ فَرَدَّهُ حَيْثُ كَانَ فَجَعَلَ كُلَّمَا جَاءَ لِيَخْرُجَ رَمَى فِي فِيْهِ بِحَجَرٍ فَيَرْجِعُ كَمَا كَانَ فَقُلْتُ مَا هَذَا؟ قَالَا: انْطَلِقْ فَانْطَلَقْنَا حَتَّى انْتَهَيْنَا إِلَى رَوْضَةٍ خَضْرَاءَ فِيْهَا شَجَرَةٌ عَظِيمَةٌ وَفِيْ أَصْلِهَا شَيْخٌ وَصِبْيَانٌ وَإِذَا رَجُلٌ قَرِيْبٌ مِنَ الشَّجَرَةِ بَيْنَ يَدَيْهِ نَارٌ يُوْقِدُهَا فَصَعِدَا بِيَ الشَّجَرَةَ فَأَدْخَلاَنِيْ دَارًا أَوْسَطَ الشَّجَرَةِ لَمْ أَرَ قَطُّ أَحْسَنَ مِنْهَا فِيهَا رِجَالٌ شُيُوخٌ وَشَبَابٌ وَنِسَاءٌ وَصِبْيَانٌ ثُمَّ أَخْرَجَانِي مِنْهَا فَصَعِدَا بِي الشَّجَرَة فَأَدْخَلاَنِيْ دَارًا هِيَ أَحْسَنُ وَأَفْضَلُ مِنْهَا فِيهَا شُيُوْخٌ وَشَبَابٌ فَقُلْتُ لَهُمَا: إِنَّكُمَا قَدْ طَوَّفْتُمَانِي اللَّيْلَةَ فَأَخْبِرَانِي عَمَّا رَأَيْتُ قَالَا: نَعَمْ أَمَّا الرَّجُلُ الَّذِي رَأَيْتَهُ يُشَقُّ شِدْقُهُ فَكَذَّابٌ يُحَدِّثُ بِالْكَذْبَةِ فَتُحْمَلُ عَنْهُ حَتَّى تَبْلُغَ الْآفَاقَ فَيُصْنَعُ بِهِ مَا تَرَى إِلَى يَوْمِ الْقِيَامَةِ وَالَّذِي رَأَيْتَهُ يُشْدَخُ رَأْسُهُ فَرَجُلٌ عَلَّمَهُ اللهُ الْقُرْآنَ فَنَامَ عَنْهُ بِاللَّيْلِ وَلَمْ يَعْمَلْ بِمَا فِيهِ بِالنَّهَارِ يُفْعَلُ بِهِ مَا رَأَيْتَ إِلَى يَوْمِ الْقِيَامَةِ وَالَّذِيْ رَأَيْتَهُ فِي الثَّقْبِ فَهُمُ الزُّنَاةُ وَالَّذِيْ رَأَيْتَهُ فِي النَّهَرِ آكِلُ الرِّبَا وَالشَّيْخُ الَّذِيْ رَأَيْتَهُ فِيْ أَصْلِ الشَّجَرَةِ إِبْرَاهِيْمُ وَالصِّبْيَانُ حَوْلَهُ فَأَوْلَادُ النَّاسِ وَالَّذِيْ يُوْقِدُ النَّارَ مَالِكٌ خَازِنِ النَّارِ وَالدَّارُ الْأُولَى الَّتِي دَخَلْتَ دَارُ عَامَّةِ الْمُؤْمِنِيْنَ وَأَمَّا هَذِهِ الدَّارُ فَدَارُ الشُّهَدَاءِ وَأَنَا جِبْرِيْلُ وَهَذَا مِيكَائِيْلُ فَارْفَعْ رَأْسَكَ فَرَفَعْتُ رَأْسِي فَإِذَا فَوْقِي مِثْلُ السَّحَابِ وَفِي رِوَايَةٍ مِثْلُ الرَّبَابَةِ الْبَيْضَاءِ قَالَا: ذَلِكَ مَنْزِلُكَ قُلْتُ: دَعَانِيْ أَدْخُلْ مَنْزِلِي قَالَا: إِنَّهُ بَقِيَ لَكَ عُمُرٌ لَمْ تَسْتَكْمِلْهُ فَلَوِ اسْتَكْمَلْتَهُ أَتَيْتَ مَنْزِلَكَ.
সামুরা ইবনে জুনদুব (রাঃ) হতে বর্ণিতঃ
রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর অভ্যাস ছিল তিনি ফজরের ছালাত শেষে প্রায় আমাদের দিকে মুখ করে বসতেন এবং জিজ্ঞেস করতেন, তোমাদের কেউ আজ রাত্রে কোন স্বপ্ন দেখেছ কি? বর্ণনাকারী বলেন, আমাদের কেউ স্বপ্ন দেখে থাকলে সে তাঁর নিকট বলত। আর তিনি আল্লাহর হুকুম মোতাবেক তার তা‘বীর বর্ণনা করতেন। যথারীতি একদিন সকালে জিজ্ঞেস করলেন, তোমাদের কেউ (আজ রাত্রে) কোন স্বপ্ন দেখেছে কি? আমরা বললাম, না। তখন তিনি বললেন, কিন্তু আমি দেখেছি। আজ রাত্রে দুই ব্যক্তি আমার নিকট আসল এবং তারা উভয়ে আমার হাত ধরে একটি পবিত্র ভূমির দিকে (সম্ভবত তা শাম বা সিরিয়ার দিকে) নিয়ে গেল। দেখলাম, এক ব্যক্তি বসে আছে আর অপর এক ব্যক্তি লোহার সাঁড়াশি হাতে দাঁড়ানো। সে তা উক্ত বসা ব্যক্তির গালের ভিতরে ঢুকিয়ে দেয় এবং তা দ্বারা চিরে গর্দানের পিছন পর্যন্ত নিয়ে যায়। অতঃপর তার দ্বিতীয় গালের সাথে অনুরূপ ব্যবহার করে। ইত্যবসরে প্রথম গালটি ভাল হয়ে যায়। আবার সে (প্রথমে যেভাবে চিরেছিল) পুনরায় তাই করে। আমি জিজ্ঞেস করলাম, এটা কি? তারা উভয়ে বলল, সামনে চলুন। সম্মুখের দিকে চললাম। অবশেষে আমরা এমন এক ব্যক্তির কাছে এসে পৌঁছলাম, যে ঘাড়ের উপর চিৎ হয়ে শুয়ে রয়েছে, আর অপর এক ব্যক্তি একখানা ভারী পাথর নিয়ে তার মাথার কাছে দাঁড়িয়ে আছে। সে তার আঘাতে শায়িত ব্যক্তির মাথা চুর্ণ-বিচুর্ণ করছে। যখনই সে পাথরটি নিক্ষেপ করে (মাথা চুর্ণ-বিচুর্ণ করে) তা গড়িয়ে দূরে চলে যায়, তখনই সে লোকটি পুনরায় পাথরটি তুলে আনতে যায় সে ফিরে আসার পূর্বে ঐ ব্যক্তির মাথাটি পূর্বের ন্যায় ঠিক হয়ে যায় এবং পুনরায় সে তা দ্বারা তাকে আঘাত করে। আমি জিজ্ঞেস করলাম, এটা কি? তারা উভয়ে বলল, সামনে চলুন। আমরা সম্মুখের দিকে অগ্রসর হলাম। অবশেষে একটি গর্তের নিকট এসে পৌঁছলাম, যা তন্দুরের মত ছিল। তার উপর অংশ ছিল সংকীর্ণ এবং ভিতরের অংশটি ছিল প্রশস্ত। তার তলদেশে আগুন প্রজ্জ্বলিত ছিল। আগুনের লেলিহান শিখা যখন উপরের দিকে উঠত, তখন তার ভিতরে যারা রয়েছে তারাও উপরে উঠে আসত এবং উক্ত গর্ত হতে বাইরে পড়ে যাওয়ার উপক্রম হত আর যখন অগ্নিশিখা কিছুটা শিথিল হত, তখন তারাও পুনরায় ভিতরের দিকে চলে যেত। তার মধ্যে রয়েছে কতিপয় উলঙ্গ নারী ও পুরুষ। আমি জিজ্ঞেস করলাম, এটা কি? তারা উভয়ে বলল, সামনে চলুন, সুতরাং সম্মুখের দিকে অগ্রসর হলাম এবং একটি রক্তের নহরের নিকট এসে পৌঁছলাম। দেখলাম, তার মধ্যস্থলে এক ব্যক্তি দাঁড়িয়ে আছে এবং নহরের তীরে একজন লোক দণ্ডায়মান। আর তার সম্মুখে রয়েছে প্রস্তরখণ্ড। নহরের ভিতরের লোকটি যখন তা থেকে বের হওয়ার উদ্দেশ্যে কিনারার দিকে অগ্রসর হতে চায়, তখন তীরে দাঁড়ানো লোকটি ঐ লোকটির মুখ লক্ষ্য করে পাথর নিক্ষেপ করে এবং সে লোকটিকে ঐ স্থানে ফিরিয়ে দেয় যেখানে সে ছিল। আমি জিজ্ঞেস করলাম, এটা কি? সঙ্গীদ্বয় বলল, সামনে চলুন। আমরা সম্মুখে অগ্রসর হয়ে শ্যামল সুশোভিত একটি বাগানে পৌঁছলাম। বাগানে ছিল একটি বিরাট বৃক্ষ। আর উক্ত বৃক্ষটির গোড়ায় উপবিষ্ট ছিলেন, একজন বৃদ্ধ লোক এবং বিপুল সংখ্যক বালক। এ বৃক্ষটির সন্নিকটে আরেক ব্যক্তিকে দেখতে পেলাম, যার সম্মুখে রয়েছে আগুন, যাকে সে প্রজ্বলিত করছে। এরপর আমার সঙ্গীদ্বয় আমাকে ঐ বৃক্ষের উপরে আরোহণ করালো এবং সেখানে তারা আমাকে বৃক্ষরাজির মাঝখানে এমন একখানা গৃহে প্রবেশ করালো যে, এরূপ সুন্দর ও মনোরম ঘর আমি আর কখনো দেখিনি। তার মধ্যে ছিল কতিপয় বৃদ্ধ, যুবক, নারী ও বালক। অনন্তর তারা উভয়ে আমাকে সে ঘর হতে বের করে বৃক্ষের আরও উপরে চড়ালো এবং এমন একখানা গৃহে প্রবেশ করালো যা প্রথমটি হতে সমধিক সুন্দর ও উত্তম। তাতেও দেখলাম, কতিপয় বৃদ্ধ ও যুবক। অনন্তর আমি উক্ত সঙ্গীদ্বয়কে বললাম, আপনারা উভয়েই তো আমাকে আজ সারা রাতে অনেক কিছু ঘুরিয়ে ফিরিয়ে দেখালেন। এখন বলেন, আমি যা কিছু দেখেছি তার তাৎপর্য কি? তারা উভয়ে বলল, হ্যাঁ, (আমরা তা জানাবো)। ঐ যে এক ব্যক্তিকে দেখেছেন সাঁড়াশি দ্বারা যার গাল চিরা হচ্ছে, সে মিথ্যাবাদী, সে মিথ্যা বলত এবং তার নিকট হতে মিথ্যা রটানো হত। এমনকি তা সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ত। অতএব তার সাথে ক্বিয়ামত পর্যন্ত ঐ আচরণ করা হবে, যা আপনি দেখেছেন। আর যে ব্যক্তির মস্তক পাথর মেরে ঘায়েল করতে দেখেছেন, সে ঐ ব্যক্তি, আল্লাহ তা‘আলা যাকে কুরআন শিক্ষা দিয়েছিলেন, কিন্তু সে কুরআন হতে গাফেল হয়ে রাত্রে ঘুমাতো এবং দিনেও তার নির্দেশ মোতাবেক আমল করত না। সুতরাং তার সাথে ক্বিয়ামত পর্যন্ত ঐ আচরণই করা হবে, যা আপনি দেখেছেন। আর (আগুনের) তন্দুরে যাদেরকে দেখেছেন, তারা হল যেনাকারী (নারী-পুরুষ)। আর ঐ ব্যক্তি যাকে (রক্তের) নহরে দেখেছেন, সে হল সুদখোর। আর ঐ বৃদ্ধ ব্যক্তি যাকে একটি বৃক্ষের গোড়ায় উপবিষ্ট দেখেছেন, তিনি হলেন হযরত ইবরাহীম (আঃ) তাঁর চতুস্পার্শ্বের শিশুরা হল মানুষের সন্তানাদি। আর যে লোকটিকে অগ্নিকুণ্ড প্রজ্বলিত করতে দেখেছেন, সে হল দোযখের দারোগা মালেক। আর প্রথম যে ঘরটিতে আপনি প্রবেশ করেছিলেন, তা (জান্নাতের মধ্যে) সর্বসাধারণ মুমিনদের গৃহ। আর যে ঘর যে পরে দেখেছেন, তা শহীদদের ঘর। আর আমি হলাম, জিব্রাঈল এবং ইনি হলেন মীকাঈল। এবার আপনি মাথা উপরের দিকে তুলে দেখুন। তখন আমি মাথাটি তুলে দেখলাম, যেন আমার মাথার উপরে মেঘের মত কোন একটি জিনিস রয়েছে। অপর এক বর্ণনায় আছে, একের পর এক স্তরবিশিষ্ট সাদা মেঘের মত কোন জিনিস দেখলাম। তাঁরা বললেন, তা আপনারই বাসস্থান। আমি বললাম, আমাকে সুযোগ দিন আমি আমার ঘরে প্রবেশ করি। তারা বললেন, এখনও আপনার হায়াত বাকী আছে, যা আপনি এখনো পূর্ণ করেননি। আপনার যখন নির্দিষ্ট হায়াত পূর্ণ হবে, তখন আপনি আপনার বাসস্থানে প্রবেশ করবেন’ (বুখারী, মিশকাত হা/৪৬২১; বাংলা মিশকাত হা/৪৪১৬)।