পরিচ্ছদঃ ৭
দৃঢ়-প্রত্যয় ও (আল্লাহর প্রতি) ভরসা
মহান আল্লাহ বলেন,﴿ وَلَمَّا رَءَا ٱلۡمُؤۡمِنُونَ ٱلۡأَحۡزَابَ قَالُواْ هَٰذَا مَا وَعَدَنَا ٱللَّهُ وَرَسُولُهُۥ وَصَدَقَ ٱللَّهُ وَرَسُولُهُۥۚ وَمَا زَادَهُمۡ إِلَّآ إِيمَٰنٗا وَتَسۡلِيمٗا ٢٢ ﴾ [الاحزاب: ٢٢] অর্থাৎ “বিশ্বাসীরা যখন শত্রুবাহিনীকে দেখল তখন ওরা বলে উঠল, আল্লাহ ও তাঁর রাসূল তো আমাদেরকে এই প্রতিশ্রুতই দিয়েছেন এবং আল্লাহ ও তাঁর রাসূল সত্যই বলেছিলেন। এতে তো তাদের বিশ্বাস ও আনুগত্যই বৃদ্ধি পেল।” (সূরা আহযাব ২২ আয়াত)তিনি অন্যত্রে বলেন,﴿ ٱلَّذِينَ قَالَ لَهُمُ ٱلنَّاسُ إِنَّ ٱلنَّاسَ قَدۡ جَمَعُواْ لَكُمۡ فَٱخۡشَوۡهُمۡ فَزَادَهُمۡ إِيمَٰنٗا وَقَالُواْ حَسۡبُنَا ٱللَّهُ وَنِعۡمَ ٱلۡوَكِيلُ ١٧٣ فَٱنقَلَبُواْ بِنِعۡمَةٖ مِّنَ ٱللَّهِ وَفَضۡلٖ لَّمۡ يَمۡسَسۡهُمۡ سُوٓءٞ وَٱتَّبَعُواْ رِضۡوَٰنَ ٱللَّهِۗ وَٱللَّهُ ذُو فَضۡلٍ عَظِيمٍ ١٧٤ ﴾ [ال عمران: ١٧٣، ١٧٤] অর্থাৎ “যাদেরকে লোকেরা বলেছিল যে, তোমাদের বিরুদ্ধে লোক জমায়েত হয়েছে। সুতরাং তোমরা তাদেরকে ভয় কর। কিন্তু এ (কথা) তাদের বিশ্বাস দৃঢ়তর করেছিল এবং তারা বলেছিল, আল্লাহই আমাদের জন্য যথেষ্ট এবং তিনি উত্তম কর্মবিধায়ক। তারপর তারা আল্লাহর নিয়ামত ও অনুগ্রহসহ ফিরে এসেছিল, কোন অনিষ্ট তাদেরকে স্পর্শ করেনি এবং আল্লাহ যাতে সন্তুষ্ট হন তারা তারই অনুসরণ করেছিল। আর আল্লাহ মহা অনুগ্রহশীল।” (সূরা আলে ইমরান ১৭৩-১৭৪ আয়াত)তিনি আরো বলেন,﴿ وَتَوَكَّلۡ عَلَى ٱلۡحَيِّ ٱلَّذِي لَا يَمُوتُ ﴾ [الفرقان: ٥٧] অর্থাৎ “তুমি তাঁর উপর নির্ভর কর যিনি চিরঞ্জীব, যাঁর মৃত্যু নেই।” (সূরা ফুরক্বান ৫৮আয়াত)তিনি আরো বলেন,﴿وَعَلَى ٱللَّهِ فَلۡيَتَوَكَّلِ ٱلۡمُؤۡمِنُونَ﴾ [ابراهيم: ١١] অর্থাৎ “মু’মিনদের উচিত, কেবল আল্লাহর উপরই নির্ভর করা।” (সূরা ইব্রাহীম ১১ আয়াত)তিনি আরো বলেন,﴿ فَإِذَا عَزَمۡتَ فَتَوَكَّلۡ عَلَى ٱللَّهِۚ ﴾ [ال عمران: ١٥٩] অর্থাৎ “তুমি কোন সংকল্প গ্রহণ করলে আল্লাহর প্রতি নির্ভর কর। (নিশ্চয় আল্লাহ তাঁর উপর নির্ভরশীলদেরকে ভালবাসেন।)” (সূরা আলে ইমরান ১৫৯ আয়াত)আরো আল্লাহ বলেন,﴿وَمَن يَتَوَكَّلۡ عَلَى ٱللَّهِ فَهُوَ حَسۡبُهُۥٓ﴾ [الطلاق: ٣] অর্থাৎ “যে ব্যক্তি আল্লাহর উপর নির্ভর করবে তার জন্য তিনই যথেষ্ট হবেন।” (সূরা ত্বালাক ৩ আয়াত)﴿ إِنَّمَا ٱلۡمُؤۡمِنُونَ ٱلَّذِينَ إِذَا ذُكِرَ ٱللَّهُ وَجِلَتۡ قُلُوبُهُمۡ وَإِذَا تُلِيَتۡ عَلَيۡهِمۡ ءَايَٰتُهُۥ زَادَتۡهُمۡ إِيمَٰنٗا وَعَلَىٰ رَبِّهِمۡ يَتَوَكَّلُونَ ٢ ﴾ [الانفال: ٢] অর্থাৎ “বিশ্বাসী (মু’মিন) তো তারাই যাদের হৃদয় আল্লাহকে স্মরণ করার সময় ভীত হয় এবং যখন তাঁর আয়াত তাদের নিকট পাঠ করা হয়, তখন তা তাদের বিশ্বাস (ঈমান) বৃদ্ধি করে এবং তারা তাদের প্রতিপালকের উপরই ভরসা রাখে।”একীন (দৃঢ়প্রত্যয়) ও তাওয়াক্কুল (আল্লাহর উপর ভরসা)র গুরুত্ব সম্বন্ধে আরো অনেক আয়াত রয়েছে। এ মর্মের হাদীসসমূহ নিম্নরূপঃ
রিয়াদুস সলেহিন : ৮৪
রিয়াদুস সলেহিনহাদিস নম্বর ৮৪
عن أنس رضي الله عنه قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم : "من قال-يعني إذا خرج من بيته-: بسم الله توكلت على الله، ولا حول ولا قوة إلا بالله ، يقال له: هديت وكفيت ووقيت، وتنحى عنه الشيطان". رواه أبو داود والترمذي، والنسائي وغيرهم. وقال الترمذي: حديث حسن، زاد أبو داود: "فيقول :-يعني الشيطان-لشيطان آخر: كيف لك برجل قد هدي وكفي ووقيّ ؟
আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘‘যে ব্যক্তি সবীয় গৃহ থেকে বের হওয়ার সময় বলে, ‘বিসমিল্লাহি তাওয়াক্কালতু আলাল্লাহ, অলা হাওলা অলা ক্বুউওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ।’ (অর্থাৎ আল্লাহর উপর ভরসা করলাম। আল্লাহর সাহায্য ছাড়া পাপ থেকে ফিরা এবং পুণ্য করা সম্ভব নয়।) তাকে বলা হয়, ‘তোমাকে সঠিক পথ দেওয়া হল, তোমাকে যথেষ্টতা দান করা হল এবং তোমাকে বাঁচিয়ে নেওয়া হল।’ আর শয়তান তার নিকট থেকে দূরে সরে যায়।’’ (আবূ দাউদ, তিরমিযী, নাসাঈ প্রমুখ)তিরমিযী হাদীসটিকে হাসান বলেছেন। আবূ দাউদ এই শব্দগুলি বাড়তি বর্ণনা করেছেন, ‘‘ফলে শয়তান অন্য শয়তানকে বলে যে, ‘ঐ ব্যক্তির উপর তোমার কিরূপে কর্তৃত্ব চলবে, যাকে সঠিক পথ প্রদর্শন করা হয়েছে, যাকে যথেষ্টতা দান করা হয়েছে এবং যাকে (সকল অমঙ্গল) থেকে বাঁচানো হয়েছে?’[১]
[১] তিরমিযী ৩৪২৬, আবূ দাউদ ৫০৯৫