পরিচ্ছেদ - ৩৭০
দাজ্জাল ও কিয়ামতের নিদর্শনাবলী সম্পর্কে
রিয়াদুস সলেহিন : ১৮৫৯
রিয়াদুস সলেহিনহাদিস নম্বর ১৮৫৯
وَعَنْ أَبِي الفَضلِ العَبَّاسِ بنِ عَبدِ الْمُطَّلِبِ رضي الله عنه قَالَ: شَهِدْتُ مَعَ رَسُولِ اللهِ صلى الله عليه وسلم يَومَ حُنَيْن، فَلَزِمْتُ أَنَا وَأَبُو سُفْيَانَ بنُ الحَارِثِ بنِ عَبدِ المُطَّلِبِ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم، فَلَمْ نُفَارِقْهُ، وَرَسُول اللهِ صلى الله عليه وسلم، عَلَى بَغْلَةٍ لَهُ بَيْضَاءَ، فَلَمَّا التَقَى المُسْلِمُونَ وَالمُشْرِكُونَ، وَلَّى المُسْلِمُونَ مُدْبِريِنَ، فَطَفِقَ رَسُول اللهِ صلى الله عليه وسلم، يَرْكُضُ بَغْلَتَهُ قِبلَ الكُفَّارِ، وَأَنَا آخِذٌ بِلِجَامِ بَغْلَةِ رَسُولِ اللهِ صلى الله عليه وسلم، أَكُفُّهَا إِرَادَةَ أَنْ لاَ تُسْرِعَ، وأبُو سُفْيَانَ آخِذٌ بِرِكَابِ رَسُولِ اللهِ صلى الله عليه وسلم، فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم: «أَيْ عَبَّاسُ، نَادِ أَصْحَابَ السَّمُرَةِ». قالَ العَبَّاسُ - وَكَانَ رَجُلاً صَيِّتاً - فَقُلْتُ بِأَعْلَى صَوْتِي : أَيْنَ أَصْحَابُ السَّمُرَةِ، فَوَاللهِ لَكَأنَّ عَطْفَتَهُمْ حِينَ سَمِعُوا صَوْتِي عَطْفَةُ البَقَرِ عَلَى أَوْلاَدِهَا، فَقَالُوا : يَا لَبَّيْكَ يَا لَبَّيْكَ، فَاقْتَتَلُوا هُمْ وَالكُفَّارُ، وَالدَّعْوَةُ فِي الأَنْصَارِ يَقُولُونَ : يَا مَعْشَرَ الأَنْصَارِ، يَا مَعْشَرَ الأَنْصَارِ، ثُمَّ قَصُرَتِ الدَّعْوَةُ عَلَى بَنِي الحَارِثِ بْنِ الخَزْرَجِ، فَنَظَرَ رَسُول اللهِ صلى الله عليه وسلم، وَهُوَ عَلَى بَغْلَتِهِ كَالمُتَطَاوِلِ عَلَيْهَا إِلَى قِتَالِهِمْ، فَقَالَ: «هَذَا حِينَ حَمِيَ الوَطِيسُ»، ثُمَّ أَخَذَ رَسُول اللهِ صلى الله عليه وسلم، حَصَيَاتٍ فَرَمَى بِهِنَّ وُجُوهَ الكُفَّارِ، ثُمَّ قَالَ: «انْهَزَمُوا وَرَبِّ مُحَمَّدٍ»، فَذَهَبْتُ أَنْظُرُ فَإذَا القِتَالُ عَلَى هَيْئَتِهِ فِيمَا أَرَى، فَواللهِ مَا هُوَ إِلاَّ أَنْ رَمَاهُمْ بِحَصَيَاتِهِ، فَمَا زِلْتُ أَرَى حَدَّهُمْ كَلِيلاً وَأَمْرَهُمْ مُدْبِراً. رواه مسلم
আবূল ফায্ল আব্বাস বিন মুত্তালিব (রাঃ) হতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সঙ্গে হুনাইন যুদ্ধে উপস্থিত ছিলাম। আমি ও আবূ সুফয়ান ইবনে হারেস ইবনে আব্দুল মুত্তালিব রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাথে সাথে থাকতে লাগলাম। আমরা তাঁর নিকট থেকে পৃথক হলাম না। [সে সময়] রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একটি সাদা খচ্চরের উপর সওয়ার ছিলেন। তারপর যখন মুসলমান ও মুশরিকদের মধ্যে তুমুল যুদ্ধ শুরু হল এবং [প্রথমতঃ] মুসলমানরা পৃষ্ঠপ্রদর্শন করে [রণভূমি ছেড়ে] চলে গেল, তখন আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) স্বীয় খচ্চরকে কাফেরদের দিকে নিয়ে যাবার জন্য পায়ের আঘাত হানলেন। আর আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর খচ্চরের লাগাম ধরে ছিলাম। তাকে ধরে থামাচ্ছিলাম যাতে দ্রুত বেগে না চলে। অন্য দিকে আবূ সুফ্য়ান আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর [সওয়ারীর] পা-দান ধরে ছিল। সুতরাং রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, ‘‘হে আব্বাস! বাবলা গাছ তলে ‘রিযওয়ান’ বায়‘আতকারীদেরকে ডাক দাও।’’ আব্বাস (রাঃ) উচ্চকণ্ঠের অধিকারী ছিলেন। তিনি বলেন, সুতরাং আমি উচ্চ স্বরে হেঁকে বললাম, ‘বাবলা গাছ তলে বায়আতকারীরা কোথায়?’ আল্লাহর কসম! যখন তারা আমার কণ্ঠধ্বনি শুনতে পেল, তখন গাভী যেমন তার বাচ্চার শব্দ শুনে তার দিকে দ্রুত গতিতে ফিরে যায়, ঠিক তেমনি তারা দ্রুত গতিতে ফিরে এলো। তারা বলে উঠল, ‘আমরা হাজির আছি, আমরা হাজির আছি।’ তারপর আবার তাদের ও কাফেরদের মধ্যে তুমুল সংঘর্ষ চলতে থাকল। সে সময় আনসারদেরকে সাধারণভাবে ডাক দেওয়া হল, ‘হে আনসারগণ! হে আনসারগণ!’ তারপর আহবান কেবল হারেস ইবনে খাযরাজ গোত্রের লোকদের মাঝে সীমিত হল। অতঃপর রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) খচ্চরের উপর থেকেই রণক্ষেত্রের দিকে তাকালেন। তিনি যেন সামরিক সংঘর্ষের কলাকৌশল ও বীরত্বের দৃশ্য গর্দান বাড়িয়ে অবলোকন করছিলেন। তিনি বললেন, ‘‘যুদ্ধ তুঙ্গে উঠার ও সাংঘাতিক রূপ ধারণ করার এটাই সময়।’’ অতঃপর তিনি কিছু কাঁকর হাতে নিয়ে কাফেরদের মুখের দিকে নিক্ষেপ করলেন এবং বললেন, ‘‘মুহাম্মাদের রবের শপথ! ওরা [কাফেররা] পরাজিত হয়ে গেছে।’’ আমিও দেখলাম যে, যুদ্ধ পূর্ণতা ও উত্তেজনার পর্যায়ে পৌঁছে গেছে। আল্লাহর কসম! যখনি তিনি ঐ কাঁকরগুলি কাফেরদের দিকে নিক্ষেপ করলেন, তখনি আমি নিষ্পলক নেত্রে দেখতে থাকলাম যে, তাদের শক্তি ক্রমশঃ কমে যাচ্ছে এবং তাদের ব্যাপারটা পৃষ্ঠ প্রদর্শন করার পর্যায়ে পৌঁছে গেছে।
(মুসলিম ১৭৭৫, আহমাদ ১৭৭৮)