পরিচ্ছেদঃ
মুজাহাদাহ বা দ্বীনের জন্য এবং আত্মা, শয়তান ও দ্বীনের শত্রদের বিরুদ্ধে নিরলস চেষ্টা, টানা পরিশ্রম ও আজীবন সংগ্রাম করার গুরুত্ব
আল্লাহ তাআলা বলেন,অর্থাৎ, যারা আমার উদ্দেশ্যে সংগ্রাম করে আমি অবশ্যই তাদেরকে আমার পথসমূহে পরিচালিত করব। আর আল্লাহ অবশ্যই সৎকর্মপরায়ণদের সঙ্গেই থাকেন। (সূরা আনকাবুত ৬৯ আয়াত)তিনি অন্যত্রে বলেন, অর্থাৎ, আর তোমার মৃত্যু উপস্থিত হওয়া পর্যন্ত তুমি তোমার প্রতিপালকের ইবাদত কর। (সূরা হিজর ৯৯ আয়াত) তিনি আরো বলেন, অর্থাৎ, সুতরাং তুমি তোমার প্রতিপালকের নাম স্মরণ কর এবং একনিষ্ঠভাবে তাতে মগ্ন হও। (সূরা মুয্যাম্মিল ৮ আয়াত)তিনি অন্য জায়গায় বলেছেন,অর্থাৎ, সুতরাং কেউ অণু পরিমাণ ভালো কাজ করলে সে তা দেখতে পাবে। (সূরা যিলযাল ৭ আয়াত)তিনি আরো বলেছেন, অর্থাৎ, তোমরা তোমাদের আত্মার মঙ্গলের জন্য ভাল যা কিছু অগ্রিম প্রেরণ করবে তোমরা তা আল্লাহর নিকট উৎকৃষ্টতর এবং পুরস্কার হিসাবে মহত্তর পাবে। (সূরা মুয্যাম্মিল ২০ আয়াত)তিনি আরো বলেছেন,অর্থাৎ, আর তোমরা যা কিছু ধন-সম্পদ দান কর, আল্লাহ তা সবিশেষ অবহিত। (সূরা বাকারাহ ২৩ আয়াত) এ বিষয়ে সুবিদিত আয়াত অনেক রয়েছে। উক্ত মর্মের হাদীসসমূহ নিম্নরূপঃ
হাদিস সম্ভার : ৪১৭
হাদিস সম্ভারহাদিস নম্বর ৪১৭
عَنْ أَبيْ عبد الله حُذَيفَةَ بنِ اليمانِ رضي الله عَنهما قَالَ : صَلَّيْتُ مَعَ النَّبيّ ﷺ ذَاتَ لَيلَةٍ فَافْتَتَحَ البقَرَةَ فَقُلْتُ : يَرْكَعُ عَندَ المئَةِ ثُمَّ مَضَى فَقُلْتُ : يُصَلِّي بِهَا في ركعَة فَمَضَى فقُلْتُ : يَرْكَعُ بِهَا ثُمَّ افْتَتَحَ النِّسَاءَ فَقَرَأَهَا ثُمَّ افْتَتَحَ آلَ عِمْرَانَ فَقَرَأَهَا يَقرَأُ مُتَرَسِّلاً : إِذَا مَرَّ بآية فِيهَا تَسبيحٌ سَبَّحَ وَإذَا مَرَّ بسُؤَالٍ سَأَلَ وَإذَا مَرَّ بتَعَوُّذٍ تَعَوَّذَ ثُمَّ رَكَعَ فَجَعَلَ يَقُولُ سُبْحَانَ رَبِّيَ العَظِيمِ فَكَانَ رُكُوعُهُ نَحواً مِنْ قِيَامِهِ ثُمَّ قَالَ سَمِعَ اللهُ لِمَنْ حَمِدَهُ رَبَّنَا لَكَ الحَمْدُ ثُمَّ قَامَ طَويلاً قَريباً مِمَّا رَكَعَ ثُمَّ سَجَدَ فَقَالَ سُبْحَانَ رَبِّيَ الأَعْلَى فَكَانَ سُجُودُهُ قَريباً مِنْ قِيَامِهِ رواه مسلم
আবু আব্দুল্লাহ হুযাইফা ইবনে ইয়ামান (রাঃ) হতে বর্ণিতঃ
আমি এক রাত নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সঙ্গে নামায পড়লাম। তিনি সূরা বাক্বারাহ পড়তে আরম্ভ করলেন। অতঃপর আমি (মনে মনে) বললাম যে, ‘তিনি একশো আয়াত পড়ে রুকুতে যাবেন’। কিন্তু তিনি (তা না ক’রে) কিরাআত করতে থাকলেন। তারপর আমি (মনে মনে) বললাম যে, ‘তিনি এই সূরা এক রাকাআতে সম্পন্ন করবেন; এটি পড়ে রুকু করবেন’। কিন্তু তিনি (সূরা) নিসা আরম্ভ করলেন। তিনি তা সম্পূর্ণ পড়লেন। পুনরায় তিনি (সূরা) আলে ইমরান শুরু করলেন। সেটিও সম্পূর্ণ পড়লেন। (এত দীর্ঘ কিরাআত সত্ত্বেও) তিনি ধীর শান্তভাবে থেমে থেমে পড়ছিলেন। যখন কোন এমন আয়াত এসে যেত, যাতে তাসবীহ (আল্লাহর পবিত্রতার বর্ণনা) আছে, তখন তিনি (কিরাআত বন্ধ করে) তাসবীহ (অর্থাৎ সুবহানাল্লাহ) পড়তেন। আর যখন প্রার্থনা সম্বলিত আয়াত এসে যেত, তখন প্রার্থনা করতেন। যখন আশ্রয় চাওয়ার আয়াত আসত, তখন আশ্রয় চাইতেন। অতঃপর তিনি রুকু করলেন; তাতে তিনি বলতে লাগলেন, ‘সুবহানা রাব্বিয়াল আযীম।’ সুতরাং তাঁর রুকুও তাঁর কিয়ামের (দাঁড়ানোর) মত দীর্ঘ হয়ে গেল! অতঃপর তিনি ‘সমিআল্লাহু লিমান হামিদাহ’ বললেন ও (রুকু হতে উঠে) প্রায় রুকু সম দীর্ঘ কিয়াম করলেন। অতঃপর তিনি সাজদাহ করলেন এবং (সাজদায়) তিনি ‘সুবহানা রাব্বিয়াল আ'লা’ (দীর্ঘ সময় ধরে) পড়লেন ফলে তাঁর সাজদাহ তাঁর কিয়ামের সমান হয়ে গেল! (মুসলিম ১৮৫০নং)