পরিচ্ছেদঃ
মঙ্গলের প্রতি পথ-নির্দেশনা এবং সৎপথ অথবা অসৎপথের দিকে আহবান করার বিবরণ
আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা বলেন,﴿وَادْعُ إِلَى رَبِّكَ﴾অর্থাৎ, তুমি তোমার প্রতিপালকের দিকে আহবান কর। (সূরা ক্বাস্বাস্ ৮৭)। তিনি আরো বলেন,﴿ادْعُ إِلَى سَبِيلِ رَبِّكَ بِالْحِكْمَةِ وَالْمَوْعِظَةِ الْحَسَنَة﴾অর্থাৎ, তুমি মানুষকে তোমার প্রতিপালকের পথে আহবান কর হিকমত ও সদুপদেশ দ্বারা। (সূরা নাহল ১২৫)।তিনি সুবহানাহু ওয়া তা’আলা আরো বলেন,﴿وَتَعَاوَنُوا عَلَى الْبِرِّ وَالتَّقْوَى﴾অর্থাৎ, সৎকাজ ও আত্মসংযমে তোমরা পরস্পর সহযোগিতা কর এবং পাপ ও সীমালংঘনের কাজে একে অন্যের সাহায্য করো না। (সূরা মায়েদাহ ২)। তিনি তা’আলা অন্যত্র বলেছেন,﴿وَلْتَكُنْ مِنْكُمْ أُمَّةٌ يَدْعُونَ إِلَى الْخَيْرِ﴾অর্থাৎ, তোমাদের মধ্যে এমন একটি দল থাকা উচিত, যারা (লোককে) কল্যাণের দিকে আহবান করবে। (সূরা আলে ইমরান ১০৪)
হাদিস সম্ভার : ১৬১৩
হাদিস সম্ভারহাদিস নম্বর ১৬১৩
وَعَنْ أَبِي العَبَّاسِ سَهلِ بنِ سَعدٍ السَّاعِدِيْ أنَّ رَسُولَ الله صَلَّى اللّٰهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم قَالَ يَومَ خَيبَرلأُعْطِيَنَّ الرَّايَةَ غَداً رَجلاً يَفْتَحُ الله عَلَى يَدَيهِ يُحبُّ اللهَ وَرَسولَهُ ويُحِبُّهُ اللهُ وَرَسُولُهُ فَبَاتَ النَّاسُ يَدُوكُونَ لَيْلَتَهُمْ أيُّهُمْ يُعْطَاهَا فَلَمَّا أصْبَحَ النَّاسُ غَدَوْا عَلَى رسولِ الله صَلَّى اللّٰهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم كُلُّهُمْ يَرْجُو أنْ يُعْطَاهَا فَقَالَ أينَ عَلِيُّ ابنُ أَبي طالب ؟ فقيلَ: يَا رَسُولَ اللهِ، هُوَ يَشْتَكي عَيْنَيهِ قَالَفَأَرْسِلُوا إِلَيْه فَأُتِيَ بِهِ فَبَصَقَ رسولُ الله صَلَّى اللّٰهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم في عَيْنَيْهِ وَدَعَا لَهُ فَبَرِىءَ حَتَّى كأنْ لَمْ يكُن بِهِ وَجَعٌ فأعْطاهُ الرَّايَةَ فقَالَ عَليٌّ يَا رَسُولَ اللهِ أقاتِلُهمْ حَتَّى يَكُونُوا مِثْلَنَا ؟ فَقَالَ انْفُذْ عَلَى رِسْلِكَ حَتَّى تَنْزِلَ بسَاحَتهمْ ثُمَّ ادْعُهُمْ إِلَى الإسْلاَمِ وَأخْبِرْهُمْ بِمَا يَجِبُ عَلَيْهِمْ مِنْ حَقِّ اللهِ تَعَالَى فِيهِ فَوَالله لأَنْ يَهْدِيَ اللهُ بِكَ رَجُلاً وَاحِداً خَيرٌ لَكَ مِنْ حُمْرِ النَّعَم مُتَّفَقٌ عَلَيهِ
আবূল আব্বাস সাহল ইবনে সা’দ সায়েদী (রাঃ) হতে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) খায়বার (যুদ্ধের) দিন বললেন, “নিশ্চয় আমি আগামীকাল যুদ্ধ-পতাকা এমন এক ব্যক্তিকে দেব, যার হাতে আল্লাহ বিজয় দান করবেন, আর সে ব্যক্তি আল্লাহ ও তাঁর রসূলকে ভালবাসে এবং আল্লাহ ও তাঁর রসূলও তাকে ভালবাসেন।” অতঃপর লোকেরা এই আলোচনা করতে করতে রাত কাটিয়ে দিল যে, তাদের মধ্যে কোন ব্যক্তিকে এটা দেওয়া হবে। অতঃপর সকালে তারা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর নিকট গেল। তাদের প্রত্যেকেরই এই আকাঙ্খা ছিল যে, পতাকা তাকে দেওয়া হোক। কিন্তু তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, “আলী ইবনে আবী ত্বালেব কোথায়?” তাঁকে বলা হল, ‘হে আল্লাহর রসূল! তাঁর চক্ষুদ্বয়ে ব্যথা হচ্ছে।’ তিনি বললেন, “তাকে ডেকে পাঠাও।”সুতরাং তাঁকে ডেকে আনা হল। তারপর রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তার চক্ষুদ্বয়ে থুথু লাগিয়ে দিলেন এবং তাঁর জন্য দু’আ করলেন। ফলে তিনি এমন সুস্থ হয়ে গেলেন; যেন তাঁর কোন ব্যথাই ছিল না। অতঃপর তিনি তাঁকে যুদ্ধ-পতাকা দিলেন। আলী (রাঃ) বললেন, ‘হে আল্লাহর রসূল! তারা আমাদের মত (মুসলমান) না হওয়া পর্যন্ত কি আমি তাদের বিরুদ্ধে লড়তে থাকব?’ তিনি বললেন, “তুমি প্রশান্ত হয়ে চলতে থাক; যতক্ষণ না তাদের নগর-প্রাঙ্গনে অবতরণ করেছ। অতঃপর তাদেরকে ইসলামের দিকে আহবান কর এবং তাদের উপর ইসলামে আল্লাহর যে জরুরী হক রয়েছে তাদেরকে সে ব্যাপারে অবগত করাও। আল্লাহর কসম! যদি আল্লাহ তাআলা তোমার দ্বারা একটি মানুষকে হিদায়াত দান করেন, তাহলে তা তোমার জন্য (আরবের শ্রেষ্ঠ সম্পদ) লাল উট অপেক্ষাও উত্তম।” (বুখারী ২৯৪২, ৩০০৯, ৩৭০১, মুসলিম ৬৩৭৬)