৪০১
রিয়াদুস সলেহিন
অধ্যায় : বিবিধ
হাদীস নং : ৪০১
عَنِ ابنِ مَسعُودٍ رضي الله عنه، قَالَ: حَدَّثَنَا رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم وَهُوَ الصَّادِقُ المَصدُوقُ: إنَّ أحَدَكُمْ يُجْمَعُ خَلْقُهُ في بَطْنِ أُمِّهِ أربَعِينَ يَوماً نُطْفَةً، ثُمَّ يَكُونُ عَلَقَةً مِثْلَ ذلِكَ، ثُمَّ يَكُونُ مُضْغَةً مِثْلَ ذلِكَ، ثُمَّ يُرْسَلُ المَلَكُ، فَيَنْفُخُ فِيهِ الرُّوحَ، وَيُؤْمَرُ بِأرْبَعِ كَلِمَاتٍ: بِكَتْبِ رِزْقِهِ وَأجَلِهِ وَعَمَلِهِ وَشَقِيٌّ أَوْ سَعِيدٌ . فَوَالَّذِي لاَ إِلٰهَ غَيْرُهُ إنَّ أحَدَكُمْ لَيَعْمَلُ بِعَمَلِ أهْلِ الجَنَّةِ حَتَّى مَا يَكُونُ بَيْنَهُ وبيْنَهَا إلاَّ ذِرَاعٌ فَيَسْبِقُ عَلَيهِ الكِتَابُ، فَيَعْمَلُ بِعَمَلِ أهْلِ النَّارِ فَيدْخُلُهَا، وَإنَّ أَحَدَكُمْ لَيَعْمَلُ بِعَمَلِ أهْلِ النَّارِ حَتَّى مَا يَكُونُ بَيْنَهُ وَبَيْنَهَا إلاَّ ذِرَاعٌ، فَيَسْبِقُ عَلَيهِ الكِتَابُ فَيعْمَلُ بِعَمَلِ أهْلِ الجَنَّةِ فَيَدْخُلُهَا . مُتَّفَقٌ عَلَيهِ
ইবনু মাসঊদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
যিনি সত্যবাদী ও যাঁর কথা সত্য বলে মানা হয় সেই রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে বলেছেন, ‘‘তোমাদের এক জনের সৃষ্টির উপাদান মায়ের গর্ভে চল্লিশ দিন যাবৎ বীর্যের আকারে থাকে। অতঃপর তা অনুরূপভাবে চলিলশ দিনে জমাটবদ্ধ রক্তপিন্ডের রূপ নেয়। পুনরায় তদ্রূপ চল্লিশ দিনে গোশে্তর টুকরায় রূপান্তরিত হয়। অতঃপর তার নিকট ফেরেশতা পাঠানো হয়। সুতরাং তার মাঝে ‘রূহ’ স্থাপন করা হয় এবং চারটি কথা লিখার আদেশ দেওয়া হয়; তার রুযী, মৃত্যু, আমল এবং পাপিষ্ট না পুণ্যবান হবে তা লিখা হয়। সেই সত্তার শপথ, যিনি ছাড়া কোন সত্য উপাস্য নেই! (জন্মের পর) তোমাদের এক ব্যক্তি (বাহ্যদৃষ্টিতে) জান্নাতবাসীদের মত কাজ-কর্ম করতে থাকে এবং তার ও জান্নাতের মাঝে মাত্র এক হাত তফাৎ থেকে যায়।
এমতাবস্থায় তার (তাকদিরের) লিখন এগিয়ে আসে এবং সে জাহান্নামীদের মত আমল করতে লাগে; ফলে সে জাহান্নামে প্রবেশ করে। আর তোমাদের অন্য এক ব্যক্তি প্রথমে (বাহ্যদৃষ্টিতে) জাহান্নামীদের মত আমল করে এবং তার ও জাহান্নামের মাঝে মাত্র এক হাত তফাৎ থাকে। এমতাবস্থায় তার (তাকদীরের) লিখন এগিয়ে আসে। তখন সে জান্নাতীদের মত ক্রিয়াকর্ম আরম্ভ করে; পরিণতিতে সে জান্নাতে প্রবেশ করে।’’ (বুখারী-মুসলিম) [১]
৪০২
রিয়াদুস সলেহিন
অধ্যায় : বিবিধ
হাদীস নং : ৪০২
وَعَنهُ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم: «يُؤتَى بِجَهَنَّمَ يَومَئذٍ لَهَا سَبْعُونَ ألفَ زِمَامٍ، مَعَ كُلِّ زِمَامٍ سَبعُونَ ألْفَ مَلَكٍ يَجُرُّونَهَا ». رواه مسلم
উক্ত সাহাবী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘‘কিয়ামতের দিন জাহান্নামকে এ অবস্থায় নিয়ে আসা হবে যে, তার সত্তর হাজার লাগাম থাকবে। প্রত্যেক লাগামের সাথে সত্তর হাজার ফিরিশতা থাকবেন। তাঁরা তা টানতে থাকবেন।’’ (মুসলিম) [১]
৪০৩
রিয়াদুস সলেহিন
অধ্যায় : বিবিধ
হাদীস নং : ৪০৩
وَعَنِ النُّعمَانِ بنِ بَشِيرٍ رَضِيَ اللهُ عَنهُمَا، قَالَ: سَمِعْتُ رَسُولَ الله صلى الله عليه وسلم، يَقُولُ: «إنَّ أهْوَنَ أهْلِ النَّارِ عَذَاباً يَوْمَ القِيَامَةِ لَرَجُلٌ يُوضَعُ في أخْمَصِ قَدَمَيْهِ جَمْرَتَانِ يَغْلِي مِنْهُمَا دِمَاغُهُ . مَا يَرَى أنَّ أَحَداً أشَدُّ مِنْهُ عَذَاباً، وَأنَّهُ لأَهْوَنُهُمْ عَذَاباً ». مُتَّفَقٌ عَلَيهِ
নু‘মান ইবনু বাশীর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি যে, ‘‘কিয়ামতের দিবসে ঐ ব্যক্তির সর্বাপেক্ষা হাল্কা আযাব হবে, যার দু’ পায়ের তলায় জ্বলন্ত দু’টি অঙ্গার রাখা হবে। যার ফলে তার মাথার মগজ ফুটতে থাকবে। সে মনে করবে না যে, তার চেয়ে কঠিন আযাব অন্য কেউ ভোগ করছে। অথচ তারই আযাব সবার চেয়ে হাল্কা!’’ (বুখারী ও মুসলিম) [১]
৪০৪
রিয়াদুস সলেহিন
অধ্যায় : বিবিধ
হাদীস নং : ৪০৪
وَعَن سَمُرَةَ بنِ جُندُبٍ رضي الله عنه: أنَّ نَبيَّ الله صلى الله عليه وسلم، قَالَ:«مِنْهُمْ مَنْ تَأخُذُهُ النَّارُ إِلَى كَعْبَيهِ، وَمنْهُمْ مَنْ تَأخُذُهُ إِلَى رُكْبَتَيهِ، وَمنْهُمْ مَنْ تَأخُذُهُ إِلَى حُجزَتِهِ، وَمِنْهُمْ مَنْ تَأخُذُهُ إِلَى تَرْقُوَتِهِ ». رواه مسلم
সামুরাহ ইবনু জুনদুব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আল্লাহর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘‘জাহান্নামীদের মধ্যে কিছু লোকের পায়ের গাঁট পর্যন্ত আগুন হবে, কারো হাঁটু পর্যন্ত, কারো কোমর পর্যন্ত এবং কারো কারো কণ্ঠাস্থি (গলার নিচের হাড়) পর্যন্ত হবে।’’ (মুসলিম) [১]
৪০৫
রিয়াদুস সলেহিন
অধ্যায় : বিবিধ
হাদীস নং : ৪০৫
وَعَنِ ابنِ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنهُمَا: أنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم، قَالَ: «يَقُومُ النَّاسُ لِرَبِّ العَالَمِينَ حَتَّى يَغِيبَ أحَدُهُمْ في رَشْحِهِ إِلَى أنْصَافِ أُذُنَيهِ ». مُتَّفَقٌ عَلَيهِ
ইবনু উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘‘কিয়ামতের দিন লোকেরা বিশ্বজাহানের প্রতিপালকের সামনে দণ্ডায়মান হবে (এবং তাদের এত বেশি ঘাম হবে যে,) তাদের মধ্যে কেউ তার ঘামে তার অর্ধেক কান পর্যন্ত ডুবে যাবে।’’ (বুখারী ও মুসলিম) [১]
৪০৬
রিয়াদুস সলেহিন
অধ্যায় : বিবিধ
হাদীস নং : ৪০৬
وَعَن أَنَسٍ رضي الله عنه، قَالَ: خَطَبَنَا رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم خُطبَةً مَا سَمِعْتُ مِثلَهَا قَطُّ، فَقَالَ: «لَوْ تَعْلَمُونَ مَا أعْلَمُ، لَضحِكْتُمْ قَلِيلاً وَلَبَكَيتُمْ كَثِيراً » فَغَطَّى أصْحَابُ رَسُولِ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَجُوهَهُمْ، وَلَهُمْ خَنِينٌ. مُتَّفَقٌ عَلَيهِ وفي رواية: بَلَغَ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم عَنْ أَصْحَابِهِ شَيْءٌ فَخَطَبَ، فَقَالَ: «عُرِضَتْ عَلَيَّ الجَنَّةُ وَالنَّارُ، فَلَمْ أرَ كَاليَومِ في الخَيرِ وَالشَّرِّ، وَلَوْ تَعْلَمونَ مَا أعلَمُ لَضَحِكْتُمْ قَلِيلاً وَلَبَكَيْتُمْ كَثِيراً» فَمَا أتَى عَلَى أصْحَابِ رَسُولِ اللهِ صلى الله عليه وسلم يَوْمٌ أَشَدُّ مِنْهُ، غَطَّوْا رُؤُسَهُمْ وَلَهُمْ خَنِينٌ .
আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একদা আমাদেরকে এমন ভাষণ শুনালেন যে, ওর মত (ভাষণ) কখনোও শুনিনি। তিনি বললেন, ‘‘যা আমি জানি, তা যদি তোমরা জানতে, তাহলে তোমরা কম হাসতে এবং বেশি কাঁদতে।’’ (এ কথা শুনে) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাহাবীগণ তাঁদের চেহারা ঢেকে নিলেন এবং তাদের কান্নার রোল আসতে লাগল। (বুখারী ও মুসলিম) [১]
৪০৭
রিয়াদুস সলেহিন
অধ্যায় : বিবিধ
হাদীস নং : ৪০৭
وَمِنْهُمْ مَنْ يُلْجِمُهُ العَرَقُ إلْجَاماً». قَالَ: وَأَشَارَ رَوَعَنِ المِقدَادِ رضي الله عنه، قَالَ: سمِعْتُ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم، يَقُولُ: «تُدْنَى الشَّمْسُ يَوْمَ القِيَامَةِ مِنَ الخَلْقِ حَتَّى تَكُونَ مِنْهُمْ كَمِقْدَارِ مِيلٍ ». قَالَ سُلَيْم بنُ عَامِرٍ الرَّاوِي عَنِ المِقدَادِ: فَوَاللهِ مَا أدْرِي مَا يَعنِي بِالمِيلِ، أَمَسَافَةَ الأرضِ أَمِ المِيلَ الَّذِي تُكْتَحَلُ بِهِ العَيْنُ ؟ قَالَ: «فَيكُونُ النَّاسُ عَلَى قَدْرِ أعْمَالِهِمْ في العَرَقِ، فَمِنْهُمْ مَنْ يَكُونُ إِلَى كَعْبَيْهِ، وَمِنهُم مَن يَكُونُ إِلَى رُكبَتَيهِ، وَمِنهُم مَنْ يَكُونُ إِلَى حِقْوَيْهِ، سُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم بيدهِ إِلَى فِيهِ . رواه مسلم
মিক্বদাদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি, ‘‘কিয়ামতের দিন সূর্যকে সৃষ্টজীবের এত কাছে করে দেওয়া হবে যে, তার মধ্যে এবং সৃষ্টজীবের মধ্যে মাত্র এক মাইলের ব্যবধান থাকবে।’’ মিক্বদাদ থেকে বর্ণনাকারী সুলাইম ইবনু আমের বলেন, আল্লাহর কসম! আমি জানিনা যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ‘মীল’ শব্দের কী অর্থ নিয়েছেন, যমীনের দূরত্ব (মাইল), নাকি (সুরমাদানীর) শলাকা যার দ্বারা চোখে সুরমা লাগানো হয়? ‘‘সুতরাং মানুষ নিজ নিজ আমল অনুযায়ী ঘামে ডুবতে থাকবে। তাদের মধ্যে কারো তার পায়ের গাঁট পর্যন্ত, কারো হাঁটু পর্যন্ত (ঘাম হবে) এবং তাদের মধ্যে কিছু এমন লোকও হবে যাদেরকে ঘাম লাগাম লাগিয়ে দেবে।’’ (অর্থাৎ নাক পর্যন্ত ঘামে ডুববে।) এ কথা বলে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর মুখের দিকে ইশারা করলেন। (মুসলিম) [১]
৪০৮
রিয়াদুস সলেহিন
অধ্যায় : বিবিধ
হাদীস নং : ৪০৮
وَعَن أَبي هُرَيرَةَ رضي الله عنه: أَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم، قَالَ: «يَعْرَقُ النَّاسُ يَومَ القِيَامَةِ حَتَّى يَذْهَبَ عَرَقُهُمْ في الأَرضِ سَبْعِينَ ذِراعاً، وَيُلْجِمُهُمْ حَتَّى يَبْلُغَ آذَانَهُمْ ». مُتَّفَقٌ عَلَيهِ
আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘‘কিয়ামতের দিন মানুষের প্রচণ্ড ঘাম হবে। এমনকি তাদের ঘাম যমীনে সত্তর হাত পর্যন্ত নিচে যাবে। আর তাদের মুখ পর্যন্ত ঘামে নিমজ্জিত থাকবে। এমন কি কান পর্যন্তও।’’ (বুখারী ও মুসলিম) [১]
৪০৯
রিয়াদুস সলেহিন
অধ্যায় : বিবিধ
হাদীস নং : ৪০৯
وَعَنهُ، قَالَ: كُنَّا مَعَ رَسُولِ اللهِ صلى الله عليه وسلم إذْ سَمِعَ وَجْبَةً، فَقَالَ: «هَلْ تَدْرُونَ مَا هَذَا ؟ » قُلْنَا: اللهُ وَرَسُولُهُ أعْلَمُ . قَالَ: «هذَا حَجَرٌ رُمِيَ بِهِ في النَّارِ مُنْذُ سَبْعينَ خَريفاً، فَهُوَ يَهْوِي في النَّارِ الآنَ حَتَّى انْتَهَى إِلَى قَعْرِها فَسَمِعْتُمْ وَجْبَتَهَا ». رواه مسلم
উক্ত সাহাবী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি হলেন, একদা আমরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাথে ছিলাম। অকস্মাৎ তিনি কোনো জিনিস পড়ার আওয়াজ শুনলেন। অতঃপর তিনি বললেন, ‘‘তোমরা জান এটা কি?’’ আমরা বললাম, ‘আল্লাহ ও তাঁর রাসূল বেশী জানেন।’ তিনি বললেন, ‘‘এটা ঐ পাথর, যেটিকে সত্তর বছর পূর্বে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হয়েছিল, এখনই তা জাহান্নামের গভীরতায় (তলায়) পৌঁছল। ফলে তারই পড়ার আওয়াজ তোমরা শুনতে পেলে।’’ (মুসলিম) [১]
৪১০
রিয়াদুস সলেহিন
অধ্যায় : বিবিধ
হাদীস নং : ৪১০
عَن عَدِي بنِ حَاتمٍ رضي الله عنه، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم: «مَا مِنْكُمْ مِنْ أَحَدٍ إلاَّ سَيُكَلِّمُهُ رَبُّهُ لَيْسَ بَينَهُ وَبَيْنَهُ تَرْجُمَانٌ، فَيَنْظُرُ أَيْمَنَ مِنْهُ فَلاَ يَرَى إلاَّ مَا قَدَّمَ، وَيَنْظُرُ أَشْأَمَ مِنْهُ فَلاَ يَرى إلاَّ مَا قَدَّمَ، وَيَنظُرُ بَيْنَ يَدَيهِ فَلاَ يَرَى إلاَّ النَّار تِلقَاءَ وَجْهِهِ، فَاتَّقُوا النَّارَ وَلَو بِشِقِّ تَمْرَةٍ» . متفق عليه
আদী ইবনে হাতেম (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘‘তোমাদের প্রত্যেকের সঙ্গে তার প্রতিপালক কথা বলবেন; তার ও তাঁর মাঝে কোন আনুবাদক থাকবে না। (সেখানে) সে তার ডানদিকে তাকাবে, সুতরাং সেদিকে তা-ই দেখতে পাবে যা সে অগ্রিম পাঠিয়েছিল। বামদিকে তাকাবে, সুতরাং সেদিকেও নিজের কৃতকর্ম দেখতে পাবে। আর সামনে তাকাবে, সুতরাং তার চেহারার সামনে জাহান্নাম দেখতে পাবে। অতএব তোমরা জাহান্নাম থেকে বাঁচো; যদিও খেজুরের এক টুকরো সাদকাহ করে হয়।’’ (বুখারী-মুসলিম) [১]
৪১১
রিয়াদুস সলেহিন
অধ্যায় : বিবিধ
হাদীস নং : ৪১১
وَعَن أَبي ذَرٍّ رضي الله عنه، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم: «إنِّي أَرَى مَا لاَ تَرَوْنَ، أطَّتِ السَّمَاءُ وَحُقَّ لَهَا أنْ تَئِطَّ، مَا فِيهَا مَوضِعُ أرْبَعِ أصَابعَ إلاَّ وَمَلَكٌ وَاضِعٌ جَبْهَتَهُ سَاجِداً للهِ تَعَالَى . وَاللهِ لَوْ تَعْلَمُونَ مَا أعْلَمُ، لَضَحِكْتُمْ قَلِيلاً وَلَبَكَيْتُمْ كَثِيراً، وَمَا تَلَذَّذْتُمْ بالنِّسَاءِ عَلَى الفُرُشِ، وَلَخَرَجْتُمْ إِلَى الصُّعُدَاتِ تَجْأرُونَ إِلَى اللهِ تَعَالَى - رواه الترمذي، وَقالَ: حديث حسن
আবূ যার্র (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ বলেছেন, ‘‘অবশ্যই আমি দেখি, যা তোমরা দেখতে পাও না। আকাশ কটকট্ করে শব্দ করছে। আর এ শব্দ তার করা সাজে। এতে চার আঙ্গুল পরিমাণ এমন জায়গা নেই, যেখানে কোনো ফেরেশতা আল্লাহর জন্য সিজদায় নিজ কপাল অবনত রাখেননি। আল্লাহর কসম! তোমরা যদি জানতে যা আমি জানি, তবে তোমরা কম হাসতে এবং বেশী কাঁদতে এবং বিছানায় তোমরা স্ত্রীদের সাথে আনন্দ উপভোগ করতে না। (বরং) তোমরা আল্লাহর আশ্রয় নেওয়ার জন্য পথে পথে বের হয়ে যেতে।’’(তিরমিযী, ইবনে মাজাহ) [১]
৪১২
রিয়াদুস সলেহিন
অধ্যায় : বিবিধ
হাদীস নং : ৪১২
وَعَن أَبي بَرزَةَ نَضْلَةَ بنِ عُبَيدٍ الأسلَمِي رضي الله عنه، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم: لاَ تَزُولُ قَدَمَا عَبْدٍ يَومَ القِيَامَةِ حَتَّى يُسْأَلَ عَنْ عُمُرِهِ فِيمَ أفنَاهُ ؟ وَعَنْ عِلمِهِ فِيمَ فَعَلَ فِيهِ ؟ وَعَنْ مَالِهِ مِنْ أيْنَ اكْتَسَبَهُ ؟ وَفيمَ أنْفَقَهُ ؟ وَعَنْ جِسمِهِ فِيمَ أبلاهُ ؟ رواه الترمذي، وَقالَ: حديث حسن صحيح
আবূ বারযাহ নাদ্বলাহ ইবনে উবাইদ আসলামী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘‘কিয়ামতের দিন বান্দার পা দু’খানি সরবে না। (অর্থাৎ আল্লাহর নিকট থেকে যাওয়ার তাকে অনুমতি দেওয়া হবে না।) যতক্ষণ না তাকে প্রশ্ন করা হবে; তার আয়ু সম্পর্কে, সে তা কিসে ক্ষয় করেছে? তার ইলম (বিদ্যা) সম্পর্কে, সে তাতে কী আমল করেছে? তার মাল সম্পর্কে, কী উপায়ে তা উপার্জন করেছে এবং তা কোন্ পথে ব্যয় করেছে? আর তার দেহ সম্পর্কে, কোন কাজে সে তা ক্ষয় করেছে?’’ (তিরমিযী, হাসান সূত্রে) [১]
৪১৩
রিয়াদুস সলেহিন
অধ্যায় : বিবিধ
হাদীস নং : ৪১৩
وَعَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ، رضي الله عنه، قَالَ: قَرَأَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم: « يَوْمَئِذٍ تُحَدِّثُ أَخْبَارَهَا ثُمَّ قَالَ: أَتَدْرُوْنَ مَا أَخْبَارَهَا؟ قَالُوْا: اَللهُ وَرَسُوْلُهُ أَعْلَمُ . قَالَ: فَإِنَّ أَخْبَارَهَا أَنْ تَشْهَدَ عَلىٰ كُلِّ عَبْدٍ أَوْ أَمَةٍ بِمَا عَلىٰ ظَهْرِهَا، تَقُوْلُ: عَمِلْتَ كَذَا وَكَذَا فِيْ يَوْمٍ كَذَا وَكَذَا، فَهَذِهِ أَخْبَارَهَا - رواه الترمذي وقال: حديث حسن.
আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ আয়াতটি তিলাওয়াত করলেনঃ ‘‘সেদিন তা (যমীন) তার প্রত্যেক বিষয় বর্ণনা করবে’’- (সূরা আয্-যিলযালঃ ৪)। অতঃপর তিনি জিজ্ঞাসা করলেনঃ তোমরা কি জানো যমীন সেদিন কী বর্ণনা করবে? উপস্থিত সকলেই বললেন, আল্লাহ ও তাঁর রাসূলই ভাল জানেন। তিনি বললেনঃ যমীন বলবে, এই এই কর্ম তুমি এই এই দিন করেছো। এগুলো হলো তার বর্ণনা।[১]
৪১৪
রিয়াদুস সলেহিন
অধ্যায় : বিবিধ
হাদীস নং : ৪১৪
وَعَن أَبي سَعِيدٍ الخُدرِي رضي الله عنه، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم: كَيْفَ أنْعَمُ ! وَصَاحِبُ القَرْنِ قَدِ التَقَمَ القَرْنَ، وَاسْتَمَعَ الإذْنَ مَتَى يُؤمَرُ بالنَّفْخِ فَيَنْفُخُ فَكَأنَّ ذلِكَ ثَقُلَ عَلَى أصْحَابِ رسولِ الله صلى الله عليه وسلم فَقَالَ لَهُمْ: قُولُوا: حَسْبُنَا الله وَنِعْمَ الوَكِيلُ . رواه الترمذي، وَقالَ: حديث حسنٌ
আবূ সা‘ঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘‘আমি কেমন করে হাসিখুশি করব, অথচ শিঙ্গা ওয়ালা (ইস্রাফীল তো ফুৎকার দেওয়ার জন্য) শিঙ্গা মুখে ধরে আছেন। আর তিনি কান লাগিয়ে আছেন যে, তাঁকে কখন ফুৎকার দেওয়ার আদেশ দেওয়া হবে এবং তিনি ফুৎকার দেবেন।’’ অতঃপর এ কথা যেন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাহাবীদের জন্য ভারী বোধ হল। সুতরাং তিনি তাঁদেরকে বললেন, ‘‘তোমরা বল, ‘হাসবুনাল্লাহু অনি‘মাল অকীল।’ অর্থাৎ আল্লাহই আমাদের জন্য যথেষ্ট এবং উত্তম সাহায্যকারী।’’ (তিরমিযী, হাসান) [১]
৪১৫
রিয়াদুস সলেহিন
অধ্যায় : বিবিধ
হাদীস নং : ৪১৫
وَعَن أَبي هُرَيرَةَ رضي الله عنه، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم: مَنْ خَافَ أدْلَجَ، وَمَنْ أدْلَجَ بَلَغَ المَنْزِلَ. أَلاَ إنَّ سِلْعَةَ اللهِ غَالِيَةٌ، ألاَ إنَّ سِلْعَةَ الله الجَنَّةُ . رواه الترمذي، وَقالَ: حديث حسن
বূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘‘যে ব্যক্তি গভীর রাত্রিকে ভয় করে সে যেন সন্ধ্যা রাত্রেই সফর শুরু করে। আর যে ব্যক্তি সন্ধ্যারাত্রে চলতে শুরু করে সে গন্তব্যস্থলে পৌঁছে যায়। সাবধান! আল্লাহর পণ্য বড় দামী। শোনো! আল্লাহর পণ্য হল জান্নাত।’’ (তিরমিযী, হাসান)[১]
৪১৬
রিয়াদুস সলেহিন
অধ্যায় : বিবিধ
হাদীস নং : ৪১৬
وَعَن عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنهَا، قَالَتْ: سَمِعْتُ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم، يَقُولُ: «يُحْشَرُ النَّاسُ يَوْمَ القِيَامَةِ حُفَاةً عُرَاةً غُرْلاً قُلْتُ: يَا رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم، الرِّجَالُ وَالنِّسَاءُ جَمِيعاً يَنْظُرُ بَعضُهُمْ إِلَى بَعْضٍ؟! قَالَ: يَا عائِشَةُ، الأمرُ أشَدُّ مِنْ أنْ يُهِمَّهُمْ ذلِكَ
وفي رواية: الأَمْرُ أهمُّ مِنْ أنْ يَنْظُرَ بَعضُهُمْ إِلَى بَعضٍ . مُتَّفَقٌ عَلَيهِ
আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘‘মানুষকে হাশরের ময়দানে উঠানো হবে খালি পা, উলঙ্গ ও খাতনাবিহীন অবস্থায়।’’ আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা বলেন, আমি বললাম, ‘হে আল্লাহর রাসূল! পুরুষ ও মহিলারা একে অপরের প্রতি দৃষ্টিপাত করবে?’ তিনি বললেন, ‘‘হে আয়েশা! তাদের এরূপ ইচ্ছা করার চাইতেও কঠিন হবে তখনকার অবস্থা।’’ (বুখারী ও মুসলিম) [১]